স্কাইপ সংলাপের পোস্টমর্টেম

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রতি চার বছর পরপর হয়, এবং সেটা নভেম্বর মাসের প্রথম মঙ্গলবারে হয়ে থাকে। ওরা জাতি হিসেবে অভ্যাস গড়ে তুলেছে যেন পরিকল্পিত জীবনযাপন করা যায়। অনুরূপভাবে ১৯৭২ সালের নভেম্বর মাসেও নির্বাচন হয়েছিল এবং ১৯৭৩ সালের জানুয়ারিতে বিজয়ী প্রার্থী ফের শপথ নিয়েছিলেন। বিজয়ী প্রার্থী ছিলেন রিচার্ড নিক্সন। ওটা ছিল তার দ্বিতীয় মেয়াদ। তিনি ছিলেন রিপাবলিকান দলীয় প্রার্থী। কিন্তু ১৯৭২-এর নভেম্বরের নির্বাচনের আগে রিচার্ড নিক্সনের সম্মতিতে বা মৌনসম্মতিতে বা পরোক্ষ জ্ঞাতসারে, তার কিছু কর্মকর্তা একটা গোয়েন্দাগিরি করেছিলেন। ওই কর্মকর্তারা প্রতিদ্বন্দ্বী বা বিরোধীয় রাজনৈতিক দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির জাতীয় কমিটির হেড কোয়ার্টারের বিভিন্ন কক্ষে আঁড়িপাতার যন্ত্র বসিয়েছিলেন যেই যন্ত্রের মাধ্যমে, টেলিফোনের তার বেয়ে ওই হেড কোয়ার্টারে যা কিছু আলোচনা হতো তাই রিচার্ড নিক্সনের কর্মকর্তারা জেনে যেতেন। এই গোয়েন্দাগিরি করতে গিয়ে রিচার্ড নিক্সনের কর্মকর্তারা অনেক অন্যায় কাজ এবং অনেক আইন অমান্য করেছিলেন। ডেমোক্র্যাটিক পার্টির জাতীয় কমিটির হেড কোয়ার্টার (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি মহানগরে) যেই দালানগুলোতে অবস্থিত সেই দালানগুলোর অবস্থান এবং ওই দালানগুলোর নাম ওয়াটার গেট। প্রেসিডেন্ট নিক্সন কর্তৃক অনুমোদিত বা পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানকৃত এই কেলেঙ্কারি সাংবাদিকদের বদৌলতে ওয়াটার গেট কেলেঙ্কারি বা ওয়াটার গেট স্ক্যান্ডাল নামে পরিচিত হয়। ওয়াটার গেট কেলেঙ্কারির তদন্ত একাধিক সরকারি আঙ্গিকে বা পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু দু’জন সাংবাদিক এ কেলেঙ্কারিকে প্রথম আমেরিকাবাসীর বা বিশ্ববাসীর নজরে আনেন। ওয়াশিংটন পোস্ট নামক পত্রিকার রিপোর্টার বব উডওয়ার্ড এবং কার্ল বার্নস্টেইন প্রথম এই অনুসন্ধিত্সু রিপোর্টটি করেছিলেন। চূড়ান্ত পর্যায়ে বহু দোষী লোকের চাকরি যায় এবং প্রেসিডেন্ট নিক্সন ১৯৭৪ সালের আগস্ট মাসের ৯/১০ তারিখে নিজে পদত্যাগ করেছিলেন। রিচার্ড নিক্সনই হলেন ইতিহাসে একমাত্র মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যিনি মেয়াদকালে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এসব কিছুর কৃতিত্ব ওই সাংবাদিকদ্বয়ের যথা—উডওয়ার্ড এবং বার্নস্টেইন। কেউ প্রশ্ন করেননি, প্রেসিডেন্ট যেসব কাজে সম্মত ছিলেন, সেসব কাজের ওপর কেন আপনারা সাংবাদিকরা অনুসন্ধান করলেন বা রিপোর্ট করলেন? বরং উল্টোটা হলো। এ দু’জন সাংবাদিক পুরস্কৃত হয়েছিলেন। ওই সময়ের অন্যতম বিখ্যাত সিনেটর হাওয়ার্ড বেকার একটি প্রশ্ন করেছিলেন যেটি ইতিহাসে বিখ্যাত হয়ে আছে। সিনেটর হাওয়ার্ড বেকার প্রশ্ন তুলেছিলেন, (ইংরেজি ভাষায়) ‘হোয়াট ডিড দি প্রেসিডেন্ট নো, অ্যান্ড হোয়েন ডিড হি নো ইট’? মানে হলো, এই কেলেঙ্কারি এবং অন্যায় অনিয়মগুলোর কথা প্রেসিডেন্ট নিক্সন কতটুকু জানতেন এবং প্রথম কখন জানতে পেরেছিলেন? সম্পূরক প্রশ্ন হচ্ছে, জানার পর তিনি কী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন! সম্মানিত পাঠক নিশ্চয় অনুধাবন করবেন, প্রেসিডেন্ট নিক্সনের পক্ষ থেকে উত্তরগুলো সন্তোষজনক ছিল না বিধায়, চূড়ান্ত পর্যায়ে তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। সাংবাদিকতার জগতে সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার হচ্ছে পুলিটজার প্রাইজ। একটি অনুসন্ধানী সিরিজ রিপোর্ট প্রকাশ করা শুরু হয়েছিল ২০১১ সালে এবং ২০১২ সালের প্রথম কয়েক মাস পর্যন্ত এটা প্রকাশ হতেই থাকে। এই অনুসন্ধানী সিরিজ রিপোর্ট (ইংরেজিতে ইনভেস্টিগেটিভ রিপোর্টিং) প্রকাশ করার কারণেই এপি (বা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস)-এর চারজন সাংবাদিক ২০১২ সালে পুলিটজার পুরস্কার পেয়েছেন। তারা হচ্ছেন ক্রিস হওলি, অ্যাডাম গোল্ডম্যান, এইলিন সুলিভান এবং ম্যাট আপুজো। তাদের রিপোর্টিংয়ের বিষয়ের কেন্দ্রবিন্দু ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক মহানগরীর পুলিশ বিভাগ কর্তৃক সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী বিশেষত মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর বিভিন্ন প্রকারের গোয়েন্দাগিরি। নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট সংখ্যালঘু অধ্যুসিত আবাসিক এলাকাগুলোতে, সংখ্যালঘু এলাকার ছাত্র সমাজের মধ্যে এবং সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোর মধ্যে ছদ্মবেশে গোয়েন্দা পাঠাত, তাদের সব খবরাখবর সরবরাহ করার জন্য। এরূপ গোয়েন্দাগিরির মাধ্যমে সংখ্যালঘু জনগণ বিশেষত মুসলিম জনগণের ওপর মানসিক নির্যাতন চালানো হতো, যদিও সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এমন কোনো অভিযোগ ছিল না যে, তারা কোনো দাগি আসামি বা সন্ত্রাসী বা টেরোরিস্টকে আশ্রয় দান করছেন! সম্মানিত পাঠক উপলব্ধি করবেন, নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ আনেননি, কেন তারা সরকারি কর্তব্য পালনের নিমিত্তে নিযুক্ত গোয়েন্দাগিরি সম্বন্ধে গোপন তল্লাশি করলেন এবং রিপোর্ট করলেন। উপরের অনুচ্ছেদগুলোতে দুটি উদাহরণ তুলে ধরেছি। এখন বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনার ব্যাপারে আলোচনা করব। আমার দেশ পত্রিকা পরপর চারদিন, ধারাবাহিকভাবে, যতটুকু সম্ভব বিস্তারিতভাবে হুবহু স্কাইপ সংলাপ মুদ্রিত করে দিয়েছে। আলাপকারী ছিলেন বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম এবং আহমেদ জিয়াউদ্দিন। সরকার পক্ষের লোকজন বলাবলি করছেন, বিচার প্রক্রিয়াকে বিতর্কের বাইরে রাখার জন্যই, বিচারপতি নিজামুল হক পদত্যাগ করেছেন। সরকারপন্থীরা যেটা মুখ ফুটে বলছেন না সেটা হচ্ছে, পদত্যাগের মাধ্যমে বিচারপতি মহোদয় স্বীকার করে নিয়েছেন, এই আলোচনা তিনি করেছেন এবং এটা অনাকাঙ্ক্ষিত আলোচনা ছিল। কারণ, আলোচনা যদি কাঙ্ক্ষিত হতো তাহলে বিচারপতি মহোদয়ের শরম পাওয়া বা বিচার প্রক্রিয়া বিতর্কিত হওয়ার কোনো আশঙ্কা থাকত না। বিচারপতি মহোদয় শরম পেয়েছেন বিধায় এবং বিচারপ্রক্রিয়া বিতর্কিত হওয়ার আশঙ্কা আছে বিধায় তিনি পদত্যাগ করেছেন। আরও একটি বিষয় প্রচুর লোকে বলাবলি করছেন। বিষয়টি হলো, আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান তার পত্রিকায় এ সংলাপ প্রকাশ করে কাজটি কি ভালো করেছেন না মন্দ করেছেন? সরকার পক্ষের লোকজন বলছেন, কাজটি মন্দ এবং যুদ্ধ অপরাধের বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র যে বিভিন্ন লোকজন করছেন, বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নিয়মে বিভিন্ন সময়ে, এই প্রকাশ করার কাজটিও তার অংশ। তবে সরকার পক্ষের লোক ব্যতীত বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ এবং বিবেক বুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তিরা বলছেন, জনাব মাহমুদুর রহমানের সম্পাদনায় আমার দেশ পত্রিকা স্কাইপ সংলাপ প্রকাশ করে জাতির জন্য অনেক বড় একটি উপকার করেছে। এটি একটি ব্যতিক্রমধর্মী সাহসী জনমুখী সাংবাদিকতার উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে ইতিহাসে চিহ্নিত থাকবে বলে বিবেকবান মানুষ মন্তব্য করছেন। আমি এই মন্তব্যের সঙ্গে একমত। বিষয়টিকে এরূপ বিতর্কিত অবস্থায় ছেড়ে দেয়াটা মঙ্গলজনক হবে না। এ বিষয়টির তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। এর জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি তদন্ত প্রয়োজন। তদন্তটি কে করবেন বা কার মাধ্যমে করা হবে, কার আদেশে করা হবে সেটি সম্বন্ধে আমি নিশ্চিত নই, কিন্তু করা প্রয়োজন তাই এখানে তুলে ধরছি। দীর্ঘমেয়াদি তদন্তে উদঘাটন করতে হবে কয়েকটি বিষয়: প্রথম বিষয় : পূর্ণ স্কাইপ সংলাপের বিবরণকে পর্যালোচনা করার পর, কী কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তার বিষয়ভিত্তিক তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। যথা—বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়া, বিচারপতির ব্যক্তিগত অভ্যাস ও চরিত্র, রায় লেখার পদ্ধতি, বিদেশ সফরের সময়সূচি ইত্যাদি। তালিকা করার পর বোঝা যাবে আলাপের কোন অংশ ব্যক্তিগত বা প্রাইভেট এবং কোন অংশ জনস্বার্থের সঙ্গে জড়িত। দ্বিতীয় বিষয় :  খুঁজে বের করতে হবে, বিচারপতি মহোদয় আদালতের বাইরে জনাব আহমেদ জিয়াউদ্দিনের সঙ্গে এরূপ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে পারেন কি না। সবগুলো বিষয় না পারলেও কোন্ কোন্ বিষয় পারেন? তৃতীয় বিষয় : দেখতে হবে, বিচারপতি মহোদয় আলোচনা যদি করেই থাকেন তাহলে, ইকোনমিস্ট পত্রিকার প্রতিনিধির কাছে ৫ ডিসেম্বর তারিখে কেন স্বীকার করেননি এবং স্বীকার না করার কারণে নিজেকে অসত্য বক্তব্য প্রদানকারী হিসেবে স্থাপন করলেন কি না! চতুর্থ বিষয় : সংলাপের পর্যালোচনায় দেখা যায়, বিচারপতি মহোদয় অন্যান্য কয়েকজন সম্মানিত ব্যক্তি বা সম্মানিত বিচারপতি সম্পর্কে অনেক কথা বলেছেন যেগুলো নেতিবাচক সমালোচনা বা বদনামের পর্যায়ে পড়ে। খতিয়ে দেখতে হবে, এরূপ কথা বলা ন্যায়সঙ্গত ছিল কি না? পঞ্চম বিষয় : সংলাপের পর্যালোচনা থেকে মনে হয়, বাংলাদেশের সরকারের মন্ত্রিপরিষদের কোনো না কোনো সদস্য বিচারপতি মহোদয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করত রায় তাড়াতাড়ি প্রদান করার জন্য চাপাচাপি করছেন। উদঘাটন করতে হবে, এ কথাটি সত্য কি না। ষষ্ঠ বিষয় : সংলাপের পর্যালোচনা থেকে দেখা যায়, সম্মানিত ব্যক্তিকে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এতে প্রক্রিয়ার অনেক দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। খুঁজে বের করতে হবে, দুর্বলতাগুলো সত্য কি না। সপ্তম বিষয় : ১৬ ডিসেম্বর ২০১২-এর আগে বা অন্ততপক্ষে ডিসেম্বর মাসে একটি রায় দিলে, এটি বর্তমান রাজনৈতিক সরকারের অনুকূলে যাবে, এ ধরনের একটি মানসিকতা কথোপকথনের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। যদিও বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম মহোদয় মনে করেন, তাড়াহুড়ো করে রায় লেখা উচিত নয়। আসলে সরকার কী চাচ্ছিলেন সেটি বের করতে হবে। অষ্টম বিষয় : সরকার সন্তুষ্ট হয় এরকম একটি বা একাধিক রায় দ্রুত দিয়ে দিতে পারলে, বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম মহোদয়কে দ্রুত সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হবে বা হতে পারে এমন কিছু ইঙ্গিত ওই সংলাপের মধ্য দিয়ে প্রকাশ পেয়েছে। খতিয়ে দেখতে হবে, ওইরূপ কথাবার্তার প্রভাব বিচারপতি মহোদয়ের মনে ওপর পড়েছিল কি না, বা পড়ার সম্ভাবনা ছিল কি না। নবম বিষয় : স্কাইপ সংলাপ থেকে মনে হয়, মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ বা তার বিরুদ্ধে প্রদত্ত সাক্ষ্যগুলো খুবই দুর্বল প্রকৃতির এবং জনাব সাঈদীর বিরুদ্ধে কঠোর রায় দিয়ে এর দ্বারা, জনগণের মনে প্রভাব বিস্তার করা যাবে না। তাহলে জনাব দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে কেন এ তত্পরতা, এটা উদ্ঘাটন করা প্রয়োজন। দশম বিষয় : স্কাইপ সংলাপ প্রকাশিত হওয়ার পর বিচারপতি মহোদয় ট্রাইব্যুনাল থেকে পদত্যাগ করলেন, ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠিত হলো এবং বিচার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা হচ্ছে। যদি স্কাইপ সংলাপ প্রকাশ করা না হতো তাহলে এরূপ সংলাপ অব্যাহত থাকত, এটাই সবার ধারণা। যদি সংলাপ অব্যাহত থাকত, তাহলে বিচারপতি মহোদয়ের মনের ওপর এবং বিচারপতি মহোদয় কর্তৃক প্রদত্ত বা প্রদেয় মৌখিক বা লিখিত মন্তব্য ও আদেশ বা রায় ইত্যাদির ওপর সেই সংলাপের কী প্রভাব পড়ত এটা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। বাইরের লোকের সঙ্গে কথা বলা বৈধ কী অবৈধ এটা আইন বিশারদরা যতটুকু নিশ্চিতভাবে বলতে পারবেন, আমি হয়তো ততটুকু বলতে পারব না। তবে সাধারণ সচেতন নাগরিক হিসেবে বলতে পারি, যদি বিচারপতির নিজস্ব জ্ঞান না থাকে তাহলে তিনি দুর্বল এবং অযোগ্য। অতিরিক্ত এটাও বলতে পারি, বিচারপতি মহোদয় আইনগতভাবে বৈধ উত্স থেকে জ্ঞান-অর্জন সহায়তা নিতে পারেন, কিন্তু যদি উত্স নির্বাচনে ভুল করেন তাহলেও বলতে হবে, তিনি দুর্বল এবং অযোগ্য। সম্মানিত বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম এবং জনাব আহমেদ জিয়াউদ্দিনের মধ্যকার কথোপকথন লিখিতভাবে দেশবাসীর উদ্দেশে প্রকাশ করে দেয়ার কারণে, এখন অভিযোগ আনা হচ্ছে এ মর্মে, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া বানচাল করার জন্যই, বাংলাদেশের ‘আমার দেশ’ পত্রিকা এরূপ কথোপকথন প্রচার করেছে’! এ পরিপ্রেক্ষিতে একটি সম্পূরক মন্তব্য হলো এরকম—আলোচনাটা যদি আসলেই না হতো তাহলে দি ইকোনমিস্ট এ আলোচনার সূত্রপাত ঘটাত না বা আমার দেশ পত্রিকা আলোচনার বিবরণ প্রকাশ করার সুযোগই পেত না। তাহলে যারা আলোচনা করেছেন তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল? তাহলে কি সম্মানিত বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম মহোদয় এবং জনাব আহমেদ জিয়াউদ্দিন মহোদয়ের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা হবে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া বানচাল করার জন্যই এ দু’জন সম্মানিত ব্যক্তি এসব বিষয় আলোচনা করেছেন!!!

পূর্ব প্রকাশিত: আমারদেশ

Loading


Comments

স্কাইপ সংলাপের পোস্টমর্টেম — 2 Comments

  1. In his young age Muntasir Mamun didnot join the armed liberation war. He saw the mass killing in the DU Halls and fled away and took refuge in his uncle M K Alamgir’s home in Mymensing. Uncle Alamgir was in charge recruiting razakar. Mr Mamun returned to his father’s resident in the Ctg Port area and stayed there safely till the victory in 16th Dec 1971.
    Similar is the history with Dr Zafar Iqbal, Mr Hasan Shahriar. They remained safely away from war in their young age. These cowards are now showing heroism, simply to mask the past truth. They are agitating the young generation. They have proved their specialisation in mixing truth and lies. As they are aging old their lust for blood is visibly increasing day by day.

  2. অত্যন্ত যুক্তিসংগত কথা বলা হয়েছে। আ’লীগের ফেসিস্ট নেতারা তাদের দলীয় আদর্শ ও ধ্যান-ধারণাকে ধর্ম-বিশ্বাসের মত চালিয়ে যাচ্ছেন। স্কাইপ কেলেঙ্কারিতে কি জঘণ্য ঘটনা ঘটেছে সেটা তাদের ফ্যাসিস্ট মানসিকতায় ঢুকছে না। তারা তাদের ‘দুশমন’ পক্ষকে একটি বিশেষ তারিখে রশিতে ঝুলাতে পারে নাই -এটা হয়ে পড়েছে তাদের আক্ষেপের বিষয়। মুনতাসির সরাসরি বলছে, এটা তাদের “যুদ্ধ”।. তারা যেকোনোভাবেই সেই যুদ্ধে জয়ী হতে হবে। (দেখুন, পুস্পিতা (২০১২), দালাল পুত্র বীরউত্তম মুক্তিযোদ্ধার খেতাব কেড়ে নেয়ার হুমকি দেয়?!http://www.sonarbangladesh.com/blog/puspita/141246 )এতে সতত প্রতীয়মাণ হয় যে এই ফেসিস্ট পক্ষ যা করছে তা তাদের ‘যুদ্ধের’ অংশ, যুদ্ধ জয়ের জন্য করছে। এতে রয়েছে মিথ্যা-সাক্ষ্য, বানোয়াট কল্পকাহিনী, মিথ্যা প্রচার প্রোপাগাণ্ডা। মূলত এরাই জাতির দুশমন।

মন্তব্য দেখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *