একদিনের রোজনামচা

খুব ভোরে ঘুম ভেঙেছে বৃষ্টির রিমিঝিমি শুনে।
আলস্য ভুলে বিছানা ছেড়েছি।
এমন দিনে কী মর্নিং ওয়াকে বের হওয়া যায়?

ফজরের নামাজ শেষে গরম এক কাপ চা
সাথে টোস্ট মুড়ি আর ছিল কলা।
ঝমঝম ঝমঝম একটানা বৃষ্টি
থামবার নেই কোন লক্ষণ!
স্বল্পগতির আন্তর্জালের এ ডাল ও ডালে বিচরণ কিছুক্ষণ।
এ ব্লগ ও ব্লগ ঘুরে ফেসবুকে আড্ডা।

ঘরে আছে চাল ডাল মাছ মাংস ডিম
শব্জি আটা তেল নুন চা বিস্কুট দুধ।
গ্যাস সিলিন্ডার ভরা গ্যাসও আছে।
কাজেই চিন্তা কিসের?

ড্রেন আটকে পানি জমে আছে।
ছাতা এক হাতে আর, এক হাতে লম্বা চটা নিয়ে
আধ ভেজা হয়ে রুদ্ধ পানির বদ্ধ পথ খুলে দেওয়া।
গতকাল কাজ শেষে রাজমিস্ত্রী পলিথিন দিয়ে
রেখে গেছে ঢেকে তার করা কাজ।
বৃষ্টিতে আজ আর সে আসবে না যে।
পলিথিন আবরণের উপরে পানি থৈ থৈ
তা সরাতে হলো আরও খানিক ভিজে।

প্রতিদিন বিকেলে কাজ শেষ করে
রাজমিস্ত্রী আর তার যোগালে
সারাদিনের প্রাপ্য বুঝে নিয়ে যায় বাজারে।
আজ বিকেলে তারা বাজারে কী যাবে?
আজকের সদাই কেনার টাকা কী আছে তাদের কাছে?

বিকেলে এসেছিল অমর গোলদারের বোন।
সুদূর অতীত নয়, কিছুদিন আগেও
আমাদের এই বাড়িসহ আশপাশের যত জমি সব
তাদেরই তো ছিল।
অমর গোলদার মিছে এক কেসে ফেঁসে
হাজতে এখন।
বৌ তার ঘোরে দ্বারে দ্বারে
ছোট এক নাতনির এক হাত ধরে,
কখনো বা কোলে কাঁখে নিয়ে।
একখানা মাত্র শাড়ি গেছে ভিজে বলে
বোন তার পরবে কী,
তার চায় সমাধান।

আকাশে ফোটেনি তারা টিপ টিপ বৃষ্টি তো পড়ে
লক্ষণ সুবিধার নয়।
মনে হয় যেন
আরো কয়েকদিন এমনই চলবে।
আজ আমার দিন কেটেছে ভালোই,
বিকেল গিয়েছে বয়ে টাইটানিক দেখে।
ঘরে যা আছে তা শেষ হলে আবারও
কেনা হবে সব!

রাজমিস্ত্রী, তার যোগালে, অমরের বোন আর বৌ
মেয়ে আর নাতনির সমস্যা তো আরো বাড়বে।

Loading


Comments

একদিনের রোজনামচা — 2 Comments

  1. “রাজমিস্ত্রী, তার যোগালে, অমরের বোন আর বৌ
    মেয়ে আর নাতনির সমস্যা তো আরো বাড়বে।”
    সবাই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত অন্যের সমস্যা নিয়ে কয়জনইবা ভাবে?
    ভাল লাগল। ধন্যবাদ।

    • ঠিকই বলেছেন। নিজেদের সমস্যারই অন্ত নেই।
      অনেক ধন্যবাদ আগন্তুক ভাই।

মন্তব্য দেখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *