আমার যত অভিমান

আমার যত অভিমান, সবই ঈশ্বরের সাথে

জগত্-সংসারে সৃষ্টি প্রেরণ করে
কি খেলা খেলছেন তিনি!

কবে কোন কালে আমার ভ্রুণ
সৃষ্টি করেছিলেন তিনি
বোধকরি আমার মা-ও
সঠিক সময় বলতে পারতেন না;
বাবা- তিনি তো পদ্মা নদীর মাঝে
অকুল পাথারে- এক মাঝি মাত্র।

কোন এক শুভ লগণে
মাতুলালয়ের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর
শংকা আর আনন্দের মাঝে
আমার সুতীব্র চিত্কার
শ্রবণ করেছিল ধরণী-
সহদর সকলে আনন্দে আত্মহারা।

ছেলেবেলা- বাবা-মা’র হাত ধরে
চলেছি বহু পথ, গ্রাম-গ্রামান্তরে
ভাই বোন- একপাল জানোয়ারের মত
ক্ষুধা-দারিদ্র; অথচ সততার মুখোশে
সমাজ সংসারে আগাছার মত বেড়ে উঠেছি।

সদা সত্য বলা’র দীক্ষায়
আপনার মাঝে ধিক্কার মিলেছে
সে-ই ছোট্ট কালে, বলতে পারিনি
দু’বেলা মুঠো অন্নে চাহিদা
তবু সমাজের কানুন মেনে নিয়ে
চলতে হয়েছে, ভদ্র্যতার নীরিখে।

মানুষ হয়ে আরেক মানুষের পদস্পর্শ
যেমন ভাল লাগেনি, প্রতিবাদে শাস্তি
মিলেছে অবিরত। কেউ খাবে
কেউ খাবেনা’র দৃপ্ত শপথে পথ চলা
কেমন করে যেন রক্তে মিশে যায়-
পথ-প্রদর্শক আজ পথহারা সকলে।

স্বাধীকার সংগ্রামে, বিশ্বাস ঘাতকের দর্শন
মনকে পীড়া দেয়, রক্ষক হয় ভক্ষক
দু’মুঠো অন্ন কোথায়? না খাওয়ার
দল ভারি হয়। সমাজ চলে উল্টোপথে
পেছনে কদম বাড়াতে হয়, হাতছানি দেয়
অশুভ কামনা, জীবন হয়ে ওঠে যন্ত্রণাময়।

পথচলা থমকে দাড়ায় না কভু
দু’একজন সাথী যদিবা জোটে-
নির্বাচনে দ্ধিধা। ঈশ্বর তবু বোধ করি
গোপনে জাল ভোট দিয়ে
নির্বাচনে সহায়তা করেন। শুরু হয়
নতুন পথ যাত্রা, বুক ভারা আশা নিয়ে।

পথ চলিতে হঠাত্ পেছনে তাকানো-
মিছিল বাড়ছে ধীরে ধীরে, সংখ্যাতত্তে¡
মনে দোলা লাগে, অনুগামীর সঙ্গ পাবার আশায়।
মীর জাফরেরা নির্বংশ হয়নি তখনো
আচমকা ভাঙ্গে আবাসন, তবু বাঁচতে হয়
চলে গ্রামান্তরে যাত্রা- নতুন ঠিকানার আশায়।

পথহারা পাখি ফিরে আসে গৃহে
পেছনে তাকাতে চায় না আর
নতুন করে বাঁচতে চায়।
বিদ্রোহ করে প্রিয়জন- কাছের মানুষ
স্বপ্ন চূড়মার হয়ে যায়, হতাশায় বুক ভরে
তবু নৌকার হাল শক্ত হাতে- বাঁচতে হবে।

বিধাতার সঠিক পথ বাঁচতে দেয় না তাকে
ঘরে-বাইরে চলে হটকারিতার অবাধ শাসন
বাঁচতে চায় সে, নিত্য নতুন ভাবনায়
নিজ দেহে ক্যান্সারের মত অপরাধ জন্ম নেয়
নিজকে রক্ষার পথ খুঁজে পায় না
যে করেই হোক- বাঁচতে তাকে হবেই।

যত অভিমান আজ, সব ঈশ্বরের সাথে
কোন্ কুক্ষণে তিনি সৃজন করে
ধরণী নামক ঘূর্ণয়মান গোলক পিন্ডে
ছুড়ে ফেলেছিলেন- মাতৃজঠরে
কি-ই বা ইচ্ছে তাঁর, কেনই বা এ খেলা
কখনই বা হবে শেষ- এ নরক যন্ত্রণার?

এক নরম মাটির নির্বোধ সন্তান
কোথায় যাবে, কোন পথে- হতাশার বালুকায়
বুক ভরা অভিমান নিয়ে?

Loading


Comments

আমার যত অভিমান — 4 Comments

  1. ‘ মুহিত হবে দেখে সেথায়
    আনন্দ-শান্তি আর চারি পাশের ফুলগুলি ‘–

    কোন ফুলের আশায় তো-
    জীবন যাপন করি না ভাই।
    মানুষ হিসেবে বাচতে চাই।

  2. অভিমান করে লাভ নাই হে স্রষ্টার সৃষ্টি
    চেয়ে দেখ তোমার উপর বর্ষিত তাঁর রহমতের বৃষ্টি।
    মেনে চল তার নির্দেশিত হুকুমগুলি
    একদিন গিয়ে পৌছিবে যেথায়
    মুহিত হবে দেখে সেথায়
    আনন্দ-শান্তি আর চারি পাশের ফুলগুলি

  3. স্বাগতম সংলাপে! আশাকরি যখন সময় পাবেন তখন লেখা দিয়ে কমেন্ট করে ব্লগের চলার পথকে একটু ঝাকি দিয়ে যাবেন।

    কবিতাটি ভাল লেগেছে!

    ধন্যবাদ।

  4. আপনার দীর্ঘ কবিতা ভালো লেগেছে । ধন্যবাদ ।

মন্তব্য দেখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *