প্রতিদিন তড়িঘড়ি পড়ন্ত বেলা
গলির বুক মাড়িয়ে চুপচাপ
হেঁটে যায় যে মেয়েটি কাঁধে তার
রংচটা লাল ব্যাগ ডান হাতে ঘড়ি
বাম হাতে সুর তোলা কাঁচের চুড়ি
খাড়া নাকে নাকফুল ঝিলিক মারা ।
মেঘ কালো চুলে তার রূপালী কিলিপ
থেকে থেকে খেলা করে বাতাসের সাথে
সুতনুর ভাঁজে ভাঁজে বিজলী চমক
টলোমলো যৌবন হৃদয় কাড়া ।
গলির শেষ মাথায় দাঁড়িয়ে যে বাড়িটি
আকালের চির সাথী মরোমরো
সেখানে বসতি তার ভয়ে জড়োসড়ো ।
বিধির অকাল বলি নির্বাক বাবা তার
বিছানায় শুয়ে শুয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনে
পৃথিবী নিরব হলে কান পেতে শোনে
খেঁকশিয়ালের ডাক নেড়ি কুত্তার মরণ কান্না ।
বছর চারেক আগে তার মারা গেছে বউ
একপাল ছেলেমেয়ে সকাল বিকাল
সুর করে পাঠ করে কোরান শরীফ ।
কপালে সোনালী টিপ মনে হাহাকার
ইতিহাস মনে রেখে বিকালের রোদে
হেঁটে যায় যে মেয়েটি বাতাসে উড়িয়ে শাড়ির আঁচল
খবর মিলেছে তার অন্য পাড়ায় টিউশনী আছে
রাত দশটা নাগাদ ।
রাত দশটার পর ঘোমটায় মাথা ঢেকে
বাড়ি ফেরে যে মেয়েটি হাতে টর্চ লাইট
আমি হতে চাই তার সুবোধ ছাত্র আজীবন
পড়ার টেবিলে বসে চুপচাপ ডুবে যাবো
তার চোখের নদীতে পাতা উল্টিয়ে
ধীরে ধীরে পড়ে নেবো তার কষ্টের ইতিহাস ।