হেফাজতে ইসলামের ১৩ দাবী, তারা নিজেরাই কি চায় এটা বাস্তবায়ন হোক?

হেফাজতে ইসলামের দাবী নিয়ে সকল জায়গায় আলোচনা সমালোচনা। কি হচ্ছে দেশে, কি হবে দেশে, কোথায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দেশকে? সেই আলোচনা সমালোচনার রেশ ধরেই আমি বলব, হেফাজতে ইসলাম, নিজেরাই কি চায় ১৩ দফা দাবী বাস্তবায়ন হোক? তারা তাদের দাবীতে অটল। তারা বলছে এটা সকল মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব। এই ঈমানী দায়িত্বকে তারা বাস্তবায়ন করবেই, দরকার হলে তারা দেশকে অচল করে দিবে। আজকে যারা এই কথা বলছেন আমি তাদের বলব, আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমীতে অনেক অলি-আউলিয়া, গাউস-কুতুব, পীর-মাশায়েখ চির নিদ্রায় শুয়ে আছে তারা কি ঈমানী দায়িত্ব পালন করেন নাই? তারা কি বেঈমান হয়ে মারা গেছে? আল্লাহ্‌ সকল অলি-আউলিয়া, গাউস-কুতুব, পীর-মাশায়েখদের বেহেশত নসিব করুক। অনেকেই বলছেন বা বলার চেষ্টা করছেন তখন হয়ত এমন পরিবেশ তৈরি হয়নি। এটা একটা ভুল কথা, কারণ নাস্তিক আগেও ছিল এখনও আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। এ্যামিন্যাস্টি ইনটারন্যাশনাল যেখানে সারা বিশ্বে মৃত্যুদণ্ড বন্ধের জন্য জোর প্রচার প্রচারনা এবং চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সেখানে এরা মৃত্যুদণ্ড বাস্তবায়নের জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছে। হাই হোক এটা ধর্মীয় ব্যপার, ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী নাস্তিকদের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। আমরা যার ইসলাম ধর্ম পলন করি , তারা সবাই বিশ্বাস করি হেফাজতে ইসলামের ১৩ দাবী যথার্থ, কিন্তু কে বাস্তবায়ন করবে এই দাবী? বাংলাদেশে কি কখনো ১০০% শরিয়া আইন ছিল বা ১০০% শরিয়া আইন চালু করা কি সম্ভব? আজকে যারা এই দাবী করছে তারা বলছেন যারা ক্ষমতায় থাকবে বা যারা ক্ষমতায় যেতে চায় তাদেরকে এই ১৩ দফা দাবী মেনেই তা করতে হবে। এটা বিশ্লেষণ করলে কি দাড়ায়? ১৩ দফা দাবী মানলে তো শেখ হাসিনার ক্ষমতায় থাকার কোন প্রস্নই আসেনা। আবার না মানলেও সরকার পতনের আন্দোলন। আমি আওয়ামীলীগ সরকারের কথা বাদই দিলাম, দেশের আরেকটি বৃহত্তম দল বিএনপি কি এই দাবী মেনে ক্ষমতায় যেতে পারবে? প্রস্নই আসেনা কারণ খালেদাও যে একজন নারী। তাহলে এই দাবীর যুক্তি কি? যুক্তি একটাই হতে পারে, তা হল বর্তমান রাজনৈতিক দল দিয়ে এই ১৩ দফা দাবী বাস্তবায়ন হবে না তাই হেফাজতে ইসলামকেই এই দায়িত্ব নিতে হবে। তাদেরকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশন হতে অনুমোদন নিতে হবে। লংমার্চে জনগনের যে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহন, আসল বিষয় তখন বুঝা যাবে। আজকে আওয়ামীলীগ ছাড়া অন্যান্য যারা হেফাজতে ইসলামের ১৩ দাবীকে সমর্থন জানিয়েছেন তারা সকলে হেফাজতে ইসলামকে ভোটের মাধ্যমে তাদের ঈমানের পরীক্ষা দিবেন। তখন যদি বিএনপি এবং তার অনুসারীরা হেফাজতে ইসলামকে ভোট না দেয় তাহলেই মুনাফের চরিত্র জনগনের কাছে পরিষ্কার হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে অবশ্য কিছুটা পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, বিএনপির কিছু নেতা বিভিন্ন টকশোতে বলেছেন এই দাবী গুলি সব মানা সম্ভব নয়। হেফাজতে ইসলামের সাথে সরকার বহু চেষ্টা করেছেন এবং এখনও করছেন আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আসতে। আমি আল্লামা শফি শাহেবকে বলব , নবী করিম (সঃ) যদি শান্তির জন্য কাফেরদের সাথে শান্তি চুক্তি করতে পারেন তাহলে আপনারা কেন পারবেন না। আমি আল্লামা শফি শাহেবকে অনুরোধ করব, আপনারা রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশন হতে অনুমোদন নিয়ে ক্ষমতায় গিয়ে ১০০% শরিয়া আইন চালু করুন অথবা সরকারের সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আসুন। আপনাদের বুঝতে হবে আপনাদের এই দাবিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য বিভিন্ন ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। সর্বশেষে আমি বলব রাজনৈতিক দলও যদি গঠন না করেন আবার আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানও না করেন, শুধু আপনারা আপনাদের দাবীতে অটল থেকে জনগনের দ্বারা নির্বাচিত সরকারকে পতনের হুমকি দেন, তাহলে আমরা বুঝে নিতে পারিনা যে, আপনারা নিজেরাই চান না আপনাদের দাবী বাস্তবায়ন হোক এবং এই দাবীকে পুঁজি করে কোন একটি গোষ্ঠীর সাথে যোগসাজশ করে সরকার পতনের আন্দোলনের খেলায় মেতে উঠেছেন।

মোহাম্মাদ সহিদুল ইসলাম (সিঙ্গাপুর প্রবাসী )

(M.com _Management, N.U._BD._1998)

মেইল_ [email protected]

Loading

About শাহিদুল ইসলাম

I AM MOHAMMAD SAHIDUL ISLAM (M.COM._MGT._N.U._BD), 1998-2008_ WORKING IN BANGLADESH IN NGO AS AN ACCOUNTS OFFICER 2009-STILL NOW STAY IN SINGAPORE, WORKING IN INTERNATIONAL COMPANY AS A COMPUTER OPERATOR আমি মোহাম্মদ সহিদুল ইসলাম (এম,কম_ব্যবস্থাপনা-ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি_বাংলাদেশ), ১৯৯৮ হতে ২০০৮ পর্যন্ত বাংলাদেশের বিভিন্ন এন,জি,ও তে কাজ করেছি ২০০৯ হতে অদ্যাবধি কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে সিঙ্গাপুরের একটি আন্তর্জাতিক কোম্পানিতে কাজ করছি।

মন্তব্য দেখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *