লেখার জন্য বিষয়বস্তুর কোনো অভাব নেই। ৪ মে ও ৫ মে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিবস ছিল। এ দু’দিনে যথাক্রমে ১৮ দলীয় জোট ও হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচি ছিল। সাভারে রানা প্লাজা নামের বিল্ডিং ধসে পড়া এবং সেই সাথে হাজারের ওপরে মানুষের মৃত্যুর ঘটনা তো আছেই! আমাদের দেশে মিডিয়া অত্যন্ত সক্রিয়, যদিও মাঝে মধ্যে কোনো না কোনো প অবলম্বন করে বলে দর্শক বা পাঠকগণ অভিযোগ করেন।
একটি উদাহরণ নিয়ে আলোচনা করি। কয়েক মাস আগে হরতাল চলাকালে বিশ্বজিৎ নামে এক তরুণকে রাজধানীতে পিটিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছিল সরকারদলীয় বা তার অঙ্গসংগঠনের কর্মীরা। টেলিভিশনের এ ছবি বা ফুটেজ অনেক দিন ধরে বিভিন্ন চ্যানেল বারবার দেখিয়েছে। যারা বিশ্বজিৎকে আক্রমণ করেছিল, তারা মনে করেছিল যে, বিশ্বজিৎ জামায়াত বা ইসলামী ছাত্রশিবিরের অথবা বিএনপির কর্মী। সরকারের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিরা তাৎণিক ঘোষণা দিয়েছিলেন, আক্রমণকারীরা সরকারদলীয় কেউ না; কিন্তু পরে নির্ভরযোগ্যভাবে প্রচারিত ও প্রকাশিত হলো যে, আক্রমণকারীরা অবশ্যই ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের অনুসারী। মিডিয়ার সক্রিয় ভূমিকার কারণে সত্য উপস্থাপন সহজ হয়েছিল। মিডিয়াকে ধন্যবাদ।
আরেকটি উদাহরণ দিই। সাভারের রানা প্লাজা ধসে পড়ার পূর্বেকার দৃশ্য, ধসে পড়ার পর বিধ্বস্ত দালানের দৃশ্য, উদ্ধারকাজের দৃশ্য মিডিয়া যেভাবে প্রচার করেছে, সেটি অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার পরিচয় নিয়ে বিশ্বজিতের আক্রমণকারীদের মতোই ‘নাটক’ হয়েছে। সরকারদলীয় সিনিয়র নেতৃবর্গ তো বটেই, স্বয়ং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করেছেন যে, রান্না প্লাজার মালিক সোহেল রানা যুবলীগের কেউ না বা সে আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত নয়; কিন্তু প্রিন্ট মিডিয়া ও টেলিভিশনের সাহসী ও সক্রিয় ভূমিকার কারণে দেশবাসী জানতে পারলেন, সোহেল রানা গভীর নিষ্ঠাবান এবং ব্যক্তিস্বার্থে দারুণ পরিশ্রমী একজন আওয়ামী কর্মী। সত্য উপস্থাপনে সাহায্য করার জন্য মিডিয়াকে ধন্যবাদ।
দু’টি উদাহরণ দিলাম। তৃতীয় ইতিবাচক উদাহরণ এখনো সাম্প্রতিক ঘটনাবলি থেকে সৃষ্টি হয়নি। গত ৫ মে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচি চলাকালে বায়তুল মোকাররম এলাকায় কী হয়েছে বা কী হয়নি, সেটি নির্ভরযোগ্যভাবে প্রচারিত ও প্রকাশিত হয়নি বলে অনেকের অভিযোগ আছে। টেলিভিশনের ফুটেজ দেখে দেখে বের করা সম্ভব, কারা কারা কি কী আক্রমণাত্মক কর্মে নিয়োজিত ছিল। ওই দিনের বায়তুল মোকাররমের ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাটি কেন টেলিভিশনে বারবার দেখানো হচ্ছে না, এটি আমার একটি প্রশ্ন। আওয়ামী লীগ কর্তৃক প্রচারিত একটি টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে খণ্ডচিত্র দেখানো হচ্ছে বায়তুল মোকাররমে বইপুস্তকের দোকানে অগ্নিসংযোগের ঘটনা প্রসঙ্গে; কিন্তু পুড়ে যাওয়া পবিত্র কুরআন শরিফের পৃষ্ঠা যেভাবে দেখানো হচ্ছে, সেভাবে আগুন লাগানোর কাজে ব্যস্ত ব্যক্তিদের দেখানো হচ্ছে না। তা হলে কি আমরা ধরে নেবো যে, কোনো টেলিভিশন চ্যানেলেই এর কোনো ফুটেজ নেই? নেই বলে বিশ্বাস করছি না। আমি বিশ্বাস করি যে, ফুটেজ আছে। এর কারণ হচ্ছে যে, সেখানে অনেক টেলিভিশন ক্যামেরা ছিল। অতএব কোনো-না-কোনো ক্যামেরায় ওই দৃশ্যগুলো অবশ্যই বন্দী হয়েছে। ওই আগুন লাগানোর যে ঘটনা তার সাথে সমাজের শান্তিশৃঙ্খলার সম্পর্ক আছে। কারণ সর্বপ্রকার রাজনৈতিক মতের ঊর্ধ্বে উঠে বলতে চাই যে, আমি সব ধর্মের অনুসারীদের সম্মান করি। আমি চাই, প্রতিটি ধর্মের অনুসারীরা পারস্পরিকভাবে সম্মান করুক। প্রত্যেকেই নিজ নিজ ধর্ম বিনা বাধায় ও সাবলীলভাবে চর্চা করুক। আমি চাই প্রত্যেক ধর্মের বিশ্বাস, প্রত্যেক ধর্মের পবিত্র গ্রন্থগুলোকে অন্য ধর্মের সবাই সমানভাবে শ্রদ্ধা করুক। আমি অবশ্যই চাই, আমার ধর্মের পবিত্র গ্রন্থ তথা মহান আল্লাহ তায়ালার বাণীসংবলিত পবিত্র কুরআন শরিফ সম্মানিত হোক। টেলিভিশনের পর্দায় পবিত্র কুরআন শরিফের অগ্নিদগ্ধ পৃষ্ঠা মনকে যুগপৎ ব্যথিত ও বিুব্ধ করছে। নিজেকে আক্রান্ত ও বিপদগ্রস্ত মনে করছি। মহান আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ মোতাবেক, বিপদের দিনে নামাজ ও ধৈর্যের মাধ্যমে সাহায্য কামনা করছি। আমার মন বারবার জানতে চায়, পবিত্র কুরআন শরিফে আগুন কারা লাগাল? আজ হোক, কাল হোক, শিগগির বা বিলম্বে হোকÑ এ রহস্য উদঘাটন করতেই হবে এবং নিশ্চিতভাবেই তা উদঘাটিত হবে। পবিত্র কুরআন শরিফে আগুন লাগানোর মতো জঘন্য কাজ যে বা যারাই করে থাকুক না কেন, তাদের চিহ্নিত করতেই হবে। চিহ্নিত করার পর হয় তাকে হেদায়াতের পথে অথবা তাকে শাস্তির পথে আনতে হবে। বেশ কয়েক মাস আগে বাংলাদেশের দণি-পূর্ব কোণে কক্সবাজার জেলার রামু ও অন্য দু-একটি জায়গায়, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়ে তথা বৌদ্ধমন্দির বা কেয়াংয়ে কিছু লোক আক্রমণ করেছিল। মহামতি গৌতম বুদ্ধের মূর্তিকে অসম্মান করেছিল, বৌদ্ধ ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ ত্রিপিটকের অমর্যাদা করেছিল। বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী না হলেও আমার মন ব্যথিত ও বিুব্ধ হয়েছিল। বাংলাদেশে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা সংখ্যালঘু। সেই সময় অনেকেই বলেছিলেন, সংখ্যালঘুরা বাংলাদেশে নিরাপদ নয়। আমার প্রশ্ন, সংখ্যাগরিষ্ঠরা কি নিরাপদ?
সার্বিকভাবেই বাংলাদেশ কঠিন সময় পার করছে। এই কলাম লিখছি সোমবার ২০ মে দুপুরে। আজ দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় পঞ্চম পৃষ্ঠায় আমার একটি কলাম প্রকাশিত হয়েছে। কলামের বিষয় : ১৯৯৬ সালের মে মাসের ২০ তারিখ সংঘটিত ঘটনাবলি। আজকে ২০ মে ২০১৩ তারিখে যখন কলাম লিখছি, তখন মনের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে, কলাম লেখা কখন সরকারি নির্দেশে বন্ধ হবে? অথবা কলাম লেখার কারণে কখন সরকার কলাম লেখকগণকে শায়েস্তা করবে? মনের মধ্যে এই প্রশ্ন আসার কারণ, গত ১৯ মে মৌখিক ও লিখিতভাবে জারি করা একটি সরকারি সিদ্ধান্ত। মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আগামী এক মাস বাংলাদেশে সভা-সমাবেশ প্রভৃতি নিষিদ্ধ। ঢাকা মহানগরে জাতীয় প্রেস কাবের সামনের রাজপথটি ঐতিহ্যবাহী হয়ে উঠেছিল মানববন্ধন কর্মসূচির জন্য। ১৮ মে সকাল থেকেই সেখানে মানববন্ধন করা নিষিদ্ধ হয়ে গেছে। বর্তমান সরকারের আমলে তিনটি টেলিভিশন চ্যানেল সম্প্রচার নিষিদ্ধ হয়েছে। একটি পত্রিকার প্রকাশনা নিষিদ্ধ হয়েছে। একটি টেলিভিশন চ্যানেল সর্বোচ্চ আদালত থেকে অনুকূল রায় পাওয়ার পরও সম্প্রচারে যেতে পারেনি। সার্বিকভাবে বলতে হয়, বর্তমান রাজনৈতিক সরকার ভিন্ন মত সহ্য করতে পারছে না। সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা প্রসঙ্গেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা মন্ত্রণালয় এবং তথ্যমন্ত্রী বা মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য ভিন্নমুখী (অন্তত এই কলাম লেখার মুহূর্ত পর্যন্ত)। একটা নিষেধাজ্ঞা জারি করার জন্য উপযুক্ত ব্যক্তি বা মন্ত্রণালয় বা মাধ্যম কিংবা উপযুক্ত ভাষা সরকার নির্ণয় করতে পারেনি, এটি বিশ্বাস করতে আমার কষ্ট হচ্ছে। বর্তমান সরকার প্রচুর বিষয় বা ঘটনাকে লেজে-গোবরে করে ফেলেছে। কিন্তু সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির মতো সাধারণ বিষয়টিকেও অসাধারণ করেছে সমন্বয়হীনতার কারণে, অসংলগ্ন চিন্তার কারণে। মধ্যরাতের টেলিভিশন টকশোগুলোতে বিশ্লেষণ হচ্ছে, পত্রিকায় কলামের ও সংবাদের মাধ্যমে বিশ্লেষণ হচ্ছে। আমি মনে করি, নিষেধাজ্ঞা জারির কাজটি এ মুহূর্তে জ্বলন্ত আগুনে কেরোসিন বা পেট্রল ঢালার মতোই একটি উসকানিমূলক কাজ। কেন উসকানিমূলক মনে করছি, তার ব্যাখ্যা এ রকমÑ সরকার ও প্রধান বিরোধী দলের মধ্যে সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে, এ রকম একটি আশাবাদ মানুষের মনে জাগ্রত হয়েছে। প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত একটি জরিপের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ সচেতন মানুষ চান আগামী নির্বাচন যেন একটি নির্দলীয়-নিরপে বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়। ওই রূপ একটি সরকার প্রতিষ্ঠা করতে গেলে বাংলাদেশের সংবিধানে সংশোধনী আনতে হতে পারে। এ জন্য সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে সমঝোতা লাগবে। সমঝোতা সৃষ্টি করতে গেলে লাগবে সংলাপ। অর্থাৎ সংবিধান সংশোধন, সমঝোতা ও সংলাপ একটি অবিচ্ছেদ্য সুতোয় গাঁথা। সেখানে হঠাৎ করে সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি নিশ্চিতভাবেই অসহনীয় রাজনৈতিক পরিবেশকে শীতল করার পরিবর্তে অধিকতর উত্তপ্ত করবে। তাই বলেছি, ঘটনাটি আগুনে পেট্রল ঢালার মতো।
আমাদেরকে কঠিন কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর সন্ধান করতেই হবে। আমরা কি আসলেই আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দর হোক এটি চাই? যদি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন চাই, তাহলে আমরা নির্বাচনকালীন সরকার প্রসঙ্গে সিদ্ধান্ত নেবো। বিশ্বের কোন গণতান্ত্রিক দেশ কোন নিয়মে নির্বাচন করল, তা আমাদের কাছে বড় প্রশ্ন, নাকি আমার দেশের মানুষ কোন নিয়মটিকে গ্রহণযোগ্য ও আপন মনে করে, সেটি বড় প্রশ্ন? অনেকেই বলেন, আমেরিকায় মতায় থাকাবস্থায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেন। অনেকেই বলেন, ব্রিটেনে বা ভারতে মতায় থাকাবস্থায় প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রীরা নির্বাচনে অংশ নেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো, আমরা আমেরিকা বা বিলাতের মতো গণতন্ত্রমনস্ক নই। আমাদের দেশের নির্বাচনসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো আমেরিকা বা বিলাতের মতো শক্তিশালী নয়। এমনকি আমাদের নির্বাচন কমিশনও ভারতের মতো শক্তিশালী নয়। আমেরিকা বা বিলাতে ১৭৩ দিন হরতাল হয় না। আমেরিকা বা বিলাতে রানা প্লাজা বিধ্বস্ত হয় না। আমেরিকা বা বিলাতে শেয়ার কেলেঙ্কারি হয় না। ডেসটিনি নামক কোম্পানি মানুষের ডেসটিনি তথা ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে না। আমেরিকা বা বিলাতে সরকারদলীয় ছাত্রসংগঠন শিাপ্রতিষ্ঠানে বারবার রক্তাক্ত যুদ্ধে লিপ্ত হয় না। সেসব দেশে সাধারণ মানুষ তাদের দেশের ধর্মীয় গুরু বা পাদ্রি বা ফাদার বা বিশপগণকে পোশাক নিয়ে, নাম নিয়ে, বিদ্রƒপ করেন না। আমেরিকা বা বিলাতে কোনো মন্ত্রীকে কালো বিড়াল নামে প্রতীকী অর্থে সমালোচনা করা হয় না। সেখানে মোটামুটিভাবে মানবাধিকার রতি, যা বাংলাদেশে প্রায় রতি তা। আমেরিকা বা বিলাতে ঘুমন্ত মানুষের ওপরে অন্ধকারে রাবার বুলেট বা সাধারণ বুলেট বৃষ্টির পানির মতো বর্ষণ করা হয় না। আমেরিকা বা বিলাতে বিরোধীদলীয় নেত্রীর সমাবেশে মারাত্মক গ্রেনেড আক্রমণ হয় না। বিরোধীদলীয় নেত্রীকে বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদও করা হয় না। আমেরিকা বা বিলাতে সাবেক অর্থমন্ত্রী গ্রেনেড আক্রমণে মারা যান না। অতএব, আমেরিকা বা বিলাতের উদাহরণ টেনে বাংলাদেশকে বিচার করলে এতে এ দেশের প্রতি অবিচার করা হবে।
একটি বড় কথা, আমাদের দেশের জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মধ্যে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বা ভাষার শালীনতার যেমন অভাব আছে; আমেরিকা বা বিলাতে বা ভারতে তা নেই। সবচেয়ে বড় কথা, আমাদের দেশের প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে যে আস্থার অভাব, তা অমেরিকা বা বিলাত বা ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনের জন্য প্রযোজ্য নয়। একজন নাগরিক হিসেবে যদি মনে করি, বর্তমান সরকারের অধীনে নাগরিকদের ধর্মবিশ্বাস, সহায়-সম্পদ নিরাপদ নয়, এমনকি বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বও নিরাপদ নয়; তা হলে কিভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের মতো অতীব গুরুত্বপূর্ণ কর্মযজ্ঞকে সে সরকারের অধীনে নিরাপদ মনে করব? আপনি আমার শরীরকে ধ্বংস করতে পারেন, আমার কথা বলার জন্য দায়ী যে অঙ্গ তথা জিহ্বা কেটে ফেলতে পারেন, আপনি আমার চুকে ধ্বংস করতে পারেন। কিন্তু আপনি আমার অন্তরে প্রোথিত বিশ্বাসকে ধ্বংস করতে পারবেন না। আমার বিশ্বাস ও আমার মূল্যায়ন এই যে, আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে মতায় যাওয়া বা মতায় থেকে যাওয়াটা বর্তমান শাসক দলের জন্য অত্যন্ত জরুরি। অতএব, তারা আগামী নির্বাচনকে ওই নিয়মেই পরিচালনা করবে, যেভাবে পরিচালনা করলে তারা জিততে পারে। নিজের কাছে আমার প্রশ্ন, আমি কি চাইব যে, আমার রাজনৈতিক প্রতিপ আমার ওপর জুলুম এবং আমাকে সুযোগবঞ্চিত করে নির্বাচনে জিতে যাক? আমি কি চাইব যে, আমার রাজনৈতিক প্রতিপ আমার ওপর অন্যায় করার সুযোগ আরো বেশি বেশি পাক এবং সে জন্য আমি প্রতিপকে নির্বাচনে সহযোগিতা করব? আমার প থেকে উত্তর হলো, আমি রাজনৈতিক প্রতিপকে সুযোগ দেবো না। উপসংহারে আমার মূল্যায়ন হচ্ছে, সব রাজনৈতিক দল যেন নির্বাচনী খেলায় সুন্দরভাবে খেলতে পারে, তার জন্য ‘খেলার মাঠ’টি সমান ও সুন্দর করতে হবে। এ কাজটি করতেই হবে, বাংলাদেশকে এবং এ দেশের মানুষকে গণতন্ত্রের পথে, আলোর পথে ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাওয়ার জন্য।
লেখক : চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি