পরিবর্তনের প্রত্যাশায়

বর্তমান বিশ্বে চলছে অন্যায়, অবিচার, জুলুম, খুন, ধর্ষণ, বেকারত্ব, ক্ষুধা, দারিদ্র্য, বঞ্চনা তথা যাবতীয় অশান্তি। তাই তো আজ বিশ্ব জুড়ে কোটি কোটি শান্তি প্রিয় মানুষের মনের আকুতি, " এ পৃথিবী এভাবে চলতে দেয়া যায় না এ পরিস্থিতির পরিবর্তন হওয়া চাই।" কিন্তু কে আনবে পরিবর্তন, কিভাবে আসবে পরিবর্তন? এ প্রশ্ন মুসলিম ও অমুসলিম সবার মনে।

এক জন মুসলিম হিসাবে বিরাজমান বিশ্ব পরিস্থিতির দিকে একটু সতর্ক দৃষ্টিতে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে তাগুতি শক্তি দেশে দেশে আক্রমণ, বিভেদ বিচ্ছেদ, সন্ত্রাস, গুম, হত্যা ও যুদ্ধ লাগিয়ে দিয়ে  ইসলামকে বিশ্ব থেকে মুছে দিতে বদ্ধপরিকর। তবে এ পৃথিবীর কোথাও  ইসলাম বাস্তবায়িত হলে যে আসবে শান্তি তা জেনেও এ পরিস্থিতি নিয়ে একটু চিন্তা করলে দেখা যায় মুসলিম বিশ্বেই চলছে সব চেয়ে বেশী অন্যায় ও অত্যাচার।  এ বিষয়ে আলোচনার আগে প্রয়োজন আজকের যুগের মুসলিম ও নবীর যুগের মুসলিমদের অবস্থার তুলনা করা।

ইসলামি ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায় আজ থেকে চৌদ্দ শত বছর আগে যে ছোট্ট জাতিটি, যার মোট জনসংখ্যা চার পাঁচ লাখের বেশি হবে না তারা মোহাম্মদ (দ:) এর সঙ্গে থেকে তাঁকে আল্লাহর দেয়া জিবন ব্যবস্থার দায়িত্ব পালন করতে এবং বিশ্বাসীদের আত্মরক্ষায় তারা জানমাল দিয়ে সাহায্য করল।  তাঁর  কাছ থেকে সরাসরি সে জিবন ব্যবস্থার শিক্ষা তারা হৃদয়ঙ্গম করল এবং সে আদর্শের প্রাণ কোথায়, দেহ কোথায়, উদ্দেশ্য কী, সেই উদ্দেশ্য অর্জন করার প্রক্রিয়া কী এসব বুঝলো এবং বাস্তব জিবনে প্রয়োগ করল।  তার পর সেই মহামানব, আল্লাহর প্রেরিত শেষ নবী পৃথিবী থেকে চলে যাবার পর তাঁরই প্রদত্ত  জীবন ব্যবস্থা পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠার জন্য তাদের সব কিছু ছেড়ে বের হয়ে পড়লো ও তদানীন্তন দুনিয়ার দুইটি মহাশক্তিকে একই সঙ্গে পরাজিত করে আটলান্টিকের উপকূল থেকে চীন সীমান্ত পর্যন্ত সে জীবন ব্যবস্থার বিশ্বজনিন আদর্শ  প্রতিষ্ঠা করে মানুষের জীবনে নিরাপত্তা, ন্যায় ও সুবিচার প্রতিষ্ঠা করে এক মহা সভ্যতার জন্ম দিলো। এ ঐতিহাসিক সত্যের কিছু তথ্য পেতে লে নিচের ভিডিওটা দেখা উচিৎ

এ বিষয়ে আলোচনার আগে প্রয়োজন আজকের যুগের মুসলিম ও নবীর যুগের মুসলিমদের অবস্থার তুলনা করা। মনে করেন – এই জাতিটাকে যদি কোন মন্ত্র বলে আজকের এই পৃথিবীতে কিছুক্ষণের জন্য ফিরিয়ে আনা যায় তবে কি হবে? তারা সত্যিই কি করতেন তা সম্পূর্ণ করে হয়তবা বলা সম্ভব নয়,  তবে কয়েকটি জিনিস যে হবে তা অনুমান করা যায়।

প্রথমত: নিশ্চয় তারা বিস্ময় বিস্ফোরিত চোখে বর্তমান পৃথিবীটাকে দেখবেন এবং আমারা যখন তাদের উত্তরসূরী বলে নিজেদেরকে পরিচয় দিয়ে বর্তমান দুনিয়াটা তাদের ঘুরিয়ে দেখাবো। আমাদের কোটি কোটি টাকার জাঁকজমকপূর্ণ মসজিদগুলো দেখে তারা চোখ বড় বড় কোরে বলবেন “সোবহান আল্লাহ, আমাদের খেজুর পাতার ছাদ আর মাটির মেঝের মসজিদগুলোর চেয়ে তোমাদের মসজিদগুলি কত সুন্দর, কত শান-শওকতওয়ালা, রাজপ্রাসাদকেও হার মানায়।”

তারা হয়তো প্রশ্ন করবেন, আচ্ছা তোমরা এখন পৃথিবীতে সংখ্যায় কত? আমরা বুক ফুলিয়ে জবাব দিব আমরা দেড় বিলিয়নের অধিক মুসলিম বিশ্বজুড়ে। তারা বিস্মিত হয়ে প্রশ্ন করতে পারেন,  মাশা’আল্লাহ, কিন্তু আমরা চার পাঁচ লাখ হয়ে ৬০/৭০ বছরের মধ্যে অর্ধেক পৃথিবীতে আল্লাহর দেয়া দীন প্রতিষ্ঠা করেছিলাম আর আজ তোমরা শত শত  কোটি হয়েও তোমাদের একি অবস্থা?

আমারা তখন সে প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে হয়তবা বলব দেখ কত মাদ্রাসা কত ইসলামি বই পুস্তকের সমাহার আমাদের মাঝে, দেখ কত লোক নামাজ পড়ছে তারপর একটা পাহাড় সমান কেতাবের স্তূপ দেখিয়ে বলব- এগুলো হোচ্ছে ফেকাহ। তারা বিস্মিত হয়ে বলবেন ফেকাহ?  এত বিরাট হল কি করে?  তখন ফেকাহকে আমরা কিভাবে, কত পরিশ্রম করে এত বিরাট আকারে রুপ দিয়েছি তা তাদেরকে ভাল করে বুঝিয়ে দেবার পর তারা প্রশ্ন করবেন, ঐ স্তূপগুলো কি? আমরা বুঝিয়ে দেব ওগুলো হাদিসের কেতাব। তারা আবার বিস্মিত হয়ে বলবেন, মাশা’আল্লাহ! এতো হাদিস তোমরা সংগ্রহ করেছ। আমাদের তো হাদিসের কোন বইই ছিলো না। ঐগুলি কি? আমরা তাদের অজ্ঞতা দেখে করুণা করে তাদের বুঝাব, ঐ বইয়ের পর্বত হোচ্ছে কোর’আনের তফসীরের, ঐ পর্বত হোচ্ছে দীনিয়াতের, ঐ পাহাড় উসুলে ফেকাহর, ঐ পাহাড় উসুলে হাদিসের, ঐ পর্বত মসলা মাসায়েলের, ঐ পর্বত তাসাওয়াফের, ঐ পাহাড় কিয়াসের, ঐ পর্বত ইজমার, এই পাহাড়… এই পর্যন্ত বলতেই তারা ভয় পেয়ে বলবেন, ব্যস! আর দরকার নেই। আমরা এগুলোর কোনটা সম্বন্ধে জীবনেও শুনি নাই। আমাদের মাত্র একটা বই ছিলো কোর’আন, তাও মাত্র কয়েকটি কপি। আর আমাদের মধ্যে পড়তে পারতেন মাত্র কয়েকজন, তারা পড়তেন আমরা শুনতাম আর তা কাজে পরিণত করতাম। আমরা বলতাম, “সামি’য়ানা ওয়াতা আনা” আল্লাহ কিন্তু কোরআনেও একথার স্বাক্ষী দিয়েছেন।

যাই হোক, তোমরা আমাদের বেশ বুঝিয়ে দিলে যে, ফেকাহ কী জিনিস, কোর’আনের আইনের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ। এতো ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ আমরা করিনি। তখন হয়তবা তারা প্রশ্ন করবেন তোমাদের মসজিদে কোন মুসলিমা (মহিলা) দেখছিনা কেন? আমরা বলব ওনারা ঘরে নামাজ পড়েন। মসজিদে আসতে আমরা সুযোগ দেই না। তবে মেয়েরা সিরিয়্যল দেখতে গিয়ে এবং ছেলেরা ওয়র্ল্ডকাপ দেখতে কোন সময় মন চাইলে নাও পড়েন! তা হলে অফিস আদালতে বাজারে যে মহিলারা চলাচল করেন ওরা কি করেন যখন নামাজের সময় হয়? আমরা বলব মহিলাদের মসজিদে নামাজ না পড়লেও চলবে তাই তারা কাজা পড়েন। আমরা ইসলামে বেদাত করতে চাই না! মহিলাদের ব্যাপারে প্রচুর ফতোয়ার বই আছে, তাদের অধিকারের কথা লিখা আছে আবশ্য এগুলা সবই পুরুষের লিখা, মেয়েরা তাদের অধিকার খুঁজে পাচ্ছেন না বলে কিংবা ইসলামী জ্ঞানের অভাবে পুরুষেরা লিখতে হচ্ছে  চিন্তার কারন নাই। আর কোরআনের ব্যাখারও প্রচুর বই আছে।

এত কিছু শুনে তারা হয়তো বলবেন অকারণে এতো ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করা আল্লাহর রসুল (দ:) নিষেধ করে দিয়েছেন, বলেছেন,  এ কোর’আন মুবিন, পরিষ্কার, সকলের সহজবোধ্য। রসুলাল্লাহও (স:) কোর’আনের ব্যাখ্যার বাড়াবাড়ি নিয়ে মতান্তরকে একেবারে কুফর বলে সতর্ক করেছেন। যাই হোক, এত বিশ্লেষণ, ব্যাখ্যা আর পাণ্ডিত্যের পর তোমাদের জীবনে তাহলে কোর’আনের আইন ও চেতনা আমাদের জীবনের চেয়ে আরও ভালোভাবে প্রভাব প্রতিফলন হয়েছে নিশ্চয়? তোমরা আমাদের চেয়েও ভালো মুসলিম হতে পেরেছো। 

তখন আবার সেই প্রশ্ন তাহলে তোমাদের কোন একটি দেশেও মুসলিমরা আল্লাহর জিবনব্যস্থা প্রতিষ্ঠা করতে পারছ না কেন?  ও ভালো কথা! এ পৃথিবীর দিকে চেয়ে দেখছি তোমরা যেন নিকৃষ্টতম জাতি, অন্যান্য জাতির ঘৃণা ও অবজ্ঞার পাত্র। ওদের ধার, ঋণ, আর খয়রাতের উপর তোমরা বেঁচে আছো। সারা পৃথিবীজুড়ে তোমরা অন্যান্য সকল ধর্মের অনুসারীদের দ্বারা মার খাচ্ছ। তোমাদের খনিজ সম্পদ, রাষ্ট্রিয় সম্পদ ধন দৌলত, কৌশলগত  (strategic) ভৌগলিক আস্থান, এত কিছু আছে তোমাদের, তাহলে তোমরা এত মার খাচ্ছো কেন? বসনিয়া হারজেগোভেনায়, সুদান, ফিলিপাইন, ইথিওপিয়া, ইরাক, আফগানিস্তান, পাকিস্তানে মার খাচ্ছ অমুসলিমদের হতে; পশ্চিম এশিয়া, ফিলিস্তিনে, সিরিয়াতে মার খাচ্ছ; মায়ানমার, থাইল্যান্ড, কমপুচিয়া, চীনে, ভিয়েতনামে মার খাচ্ছ বৌদ্ধদের হাতে; http://vimeo.com/98342739 সমস্ত ভারত ও কাশ্মিরে মার খাচ্ছ হিন্দুদের হাতে। সকল ধর্মের মানুষ তোমাদের কুকুরের মতো পেটাচ্ছে, পাখির মতো গুলি করে মারছে, ধারালো অস্ত্র দিয়ে, ট্যাংক দিয়ে পিষে মারছে, তোমাদের বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছে, তোমাদের মেয়েদের ধরে নিয়ে ধর্ষণের পর হত্যা করা হচ্ছে, বেশ্যালয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। তোমাদের দেশে বিদেশী গুপ্তচরের দল এসে তোমাদেরকে দিয়ে তোমাদের মানুষকেই হত্যা করাচ্ছে, শুধু যে পৃথিবীর বড় বড় জাতিগুলোই এরকম করছে তাই নয়, ভারতের আসামের গাছ পাথরের উপাসক একটি পাহাড়ী উপজাতিও তোমাদেরকে গুলি কোরে, তীর মেরে, কুপিয়ে হত্যা করছে, বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে দিয়ে উচ্ছেদ করছে। যে বৌদ্ধদের  ভারত থেকে হিন্দরা বিতাড়িত করেছে যাদের সাথে মুসলিমদের কোন বিরোধ ছিলনা তারাও এখন মুসলিম নিধনে নেমেছে!  সমস্ত পৃথিবীজুড়ে তোমরা এরকম লা’নতের পাত্র হোলে কেন? আল্লাহ তোমাদেরকে হেফাজত কোরছেন না কেন? আল্লাহ বলেছেন আমরা যদি তাকে একমাত্র প্রভু স্বীকার করে তাঁর আদেশ নিষেধকে, তাঁর দীনকে পৃথিবীর মানুষের জীবনে প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম কর তবে তিনি আমাদের পৃথিবীতে সবার উপর আধিপত্য দেবেন, আমাদের শ্রেষ্ঠ জাতি করে রাখবেন (কোর’আন সুরা আন-নূর-৫৫)। আমরা সরাসরি তাই করতাম এত ব্যাখ্যায় যাইনি, আমাদের কাপড়ও বদলাতে হয়নি কোন বিশেষ ভূষণও নিতে হয়নি। যে যেভাবে কাপড় পড়ত সে ভাবেই ছিল। কার কত ইন্চি দাড়ী হতে হবে তা নিয়ে কোন সমস্যা ছিল না। ইসলামের আসল মর্ম আমরা হৃদয়ঙ্গম করতে পেরেছিলাম এবং রাসুলের দেখানো পথ সেরাতুল মোস্তাকীমে চলতে আমাদের কোন সমস্যা ছিল না কারণ ইসলাম হচ্ছে সহজ, সরল জিবনব্যবস্থা তার জন্য যে তাকওয়া অবলম্ভন করে খোদাকে সবসময় মনে রাখে জিবনের সকল ক্ষেত্রে সেই হল মুসলিম। আল্লাহর প্রতিশ্রুতি যে সত্য তাতো আমরা দেখলামই। আমাদের তিনি শ্রেষ্ঠ জাতিতেই পরিণত করেছিলেন। কিন্তু আমরা একটা কথা বুঝতে পারছি না তোমরা এত উন্নতি করে এত ভালো মুসলিম হলে কিন্তু পৃথিবীতে তোমাদের এ অবস্থা কেন?

এইবার আমাদের ফুলানো বুকগুলি চুপসে যাবে। মুখগুলি কাচুমাচু হোয়ে যাবে। আমতা আমতা করে বলব যদিও কোরআন হাদিসের আইন শরিয়াহ নিয়েই আমরা এতো সব ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করেছি এবং বিরাট শাস্ত্র গড়ে তুলেছি, আমাদের মাঝে অনেক দল হয়েছে এবং তাদের মধ্যে মারামারিও হচ্ছে। কিন্তু সত্যি বলতে কি, ও আইন, শরিয়াহ আমরা জাতীয় জীবন থেকে বাদ দিয়েছি, জাতীয় জীবনে আমরা এখন পাশ্চাত্যের আইন, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, বিচার ও দণ্ডবিধি গ্রহণ ও প্রতিষ্ঠা করেছি তাদের শিক্ষ্যা ব্যবস্থায় শিক্ষিত বিচারক বনিয়েছি। তারপর হয়তবা বলতে চাইব, আপনারা কিছু মনে কোরবেন না, জাতীয় জীবনে আল্লাহর আইন ইত্যাদি চালু করলে পাশ্চাত্যের সভ্য জাতিরা হাসবে, আমাদের অসভ্য ভাববে। কিন্তু তাই বলে আমাদের খারাপ মুসলিম ভাববেন না, আমরা খুব নামাজী, আমাদের মসজিদে জায়গা পাওয়া যায় না, আমাদের মধ্যে বহুলোক নিয়মিত তাহাজ্জুদ পড়েন, আমরা রমজানের রোজা রাখি, হজ্ব করি এবং অনেকেই যাকাত দেই। শুধু তাই নয়, আমাদের মধ্যে বড় বড় পীর ফকীর আছেন, তারা তাসাওয়াফের কঠিন রেয়াযত করেন এবং আমাদের কোটি কোটি লোক তাদের মুরীদ আছেন। শুধু তাই নয়, আমরা লক্ষ লক্ষ লোকের বিশ্ব এজতেমা করি। জাতীয় জীবন থেকে আল্লাহ রসুলের আইন-কানুন বাদ দিলেও ব্যক্তি জীবনে আমরা তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পালন করি। আমাদের বক্তব্য শোনার পর তারা বলতে বাধ্য হবেন, এইবার আসল কথা বুঝলাম। আমরা তো তোমাদের অসংখ্য বই পত্তর, আলিশান মসজিদ, তোমাদের বিরাট বিরাট মাহফিল এজতেমা দেখে ভেবেছিলাম মুসলিম জাতি হিসাবে আমাদের সময়ের চেয়ে তোমরা অনেক এগিয়ে গিয়েছ, আমাদের তো তোমাদের সামনে নিজেদের মুসলিম বলতে লজ্জাই হচ্ছিল। কিন্তু এখন বুঝলাম তোমরা আর আমরা এক জাতি, এক উম্মাহই নই। যে আল্লাহর আইন, জীবনব্যবস্থা পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা করে এ পৃথিবীতে অন্যায়, অশান্তি, অবিচার, রক্তপাত বন্ধ করে ইবলিসের চ্যালেঞ্জকে প্রতিহত করতে ও আল্লাহর জিবন ব্যবস্থাকে জয়ী করতে আল্লাহর রসুল (স:) ও আমরা স্বর্বস্ব ত্যাগ কোরে সংগ্রাম করেছিলাম আর তাঁর আনুসরনে আমরা ছিলাম আন্তরিক আমাদের নিয়্যাত ছিল স্বচ্ছ ও নির্ভেজাল। আল্লাহর সেই আইনকেই, সেই জাতীয় জীবন ব্যবস্থাকেই তোমরা বর্জন করে বস্তুতান্ত্রিক ও পৌত্তলিকতার জিবন দর্শনের অনুসারীদের তৈরি আইন ও জীবন ব্যবস্থাকে আধুনিকতার নামে মনে প্রানে ভালবাস এবং অনুসরন কর। দুনিয়ার জিবনের চাওয়া পাওয়া ছাড়া আর কোন লক্ষ্য নাই। আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের গুরুত্ব তোমাদের প্রানে নাই। তোমাদের বিবেক বিবেচনা সবকিছুই দুনিয়া কেন্দ্রিক। দু একটা ভাল কাজ যা কর তাও লোক দেখানো বা “রি’য়া” ছাড়া আর কিছুই তোমাদের উদ্দেশ্য নয়। তোমরা তো মোশরেক- আল্লাহর অংশীবাদী। তোমরা দুনিয়াকে বদলে দিতে চাও অথচ নিজেরা বদলাতে চাওনা। জানিনা, কোন্ মন্ত্রবলে আমাদের তোমরা ক্ষণকালের জন্য তোমাদের এই যুগে নিয়ে এসেছো। আমাদের প্রভু মহান আল্লাহ তাই বলেছেন, “ছুল্লাতুম মিনাল আওয়ালিন ওয়া ক্ষালিলুন মিনাল আখেরিন”তবে শুন এখনও সময় আছে, নিজেদের মাঝে একতা কায়ম কর, ইসলামের আসল মর্ম “তাকওয়া ও হুসনে খুলুক” বুঝে সংগ্রামে নেমে পড় তা না হলে আল্লাহ তার দিনকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য অন্য কাউকে ব্যবহার করবেন আর তোমরা হবে ক্ষতিগ্রস্থ।

“আল্লাহ ও তাঁর রসূল কোন কাজের আদেশ করলে কোন ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীর সে বিষয়ে ভিন্ন (মতের) ক্ষমতা নেই যে, আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আদেশ অমান্য করে সে প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতায় পতিত হয়। (সুরা : ৩৩:৩৬) 

রাসুল (স) বলেন,“তোমাদের মধ্যে আমার অতি প্রিয় ও কিয়ামতের দিন আমার অতি নিকটে আসন গ্রহণকারী সে, যে তোমাদের মধ্যে অধিক সুন্দর চরিত্রের অধিকারী”। (সুত্র:)

পরিশেষে বলতে চাই আজ আমাদের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন আল্লাহর সেই বানী চিন্তা করা, “ Invite to the way of your Lord with wisdom and good instruction, and argue with them in a way that is best. Indeed, your Lord is most knowing of who has strayed from His way, and He is most knowing of who is [rightly] guided. (সুরা ১৬:১২৫)  আমেরিকার প্রখ্যাত ইসলামি শিক্ষক যথার্থই বলেছেন,  “wisdom is wisdom. Know when to talk and when to be silent. Know what to talk at most opportune time. Do not waste your time and energy than is required.

 

বি: দ্র:
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ:
 
এ পোষ্টি লিখতে কয়েকটি কথা জনৈক ব্লগার, জনাব এমামুয্যামানের ব্লগ “দেশের পত্র” থেকে সংগৃহীত ও সম্পাদিত করেছি।

Loading


মন্তব্য দেখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *