উন্নতি পরে, আগে বাঁচতে দিন

মারিও পুজোর বিশ্ববিখ্যাত উপন্যাস ‘গডফাদার’ পড়েছি। কিন্তু ফেডারেল রিপাবলিক অব নারায়ণগঞ্জের ঘরে ঘরে সাপের মতো বংশবিস্তার করা গডফাদাররা ‘কারলোন’ ক্রাইম ফ্যামিলিকেও লজ্জা দেয়। এমনকি এরশাদ শিকদারের মতো ভয়ঙ্কর গডফাদারকেও পেছনে ফেলে দিলো নারায়ণগঞ্জ। এই গডফাদাররা প্রশাসনকে পুঁজি করে প্রতিদিন গড়ে দুই-তিনটা খুন করে, দিনে কয়েক কোটি টাকার চাঁদাবাজি করে, খুনের মামলা গুম করে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদেরকে কুর্নিশ করে… প্রতিদিন ১৮০টা খাম বানিয়ে রকদের হাতে পৌঁছায় নূর হোসেনরা, যেন রকেরা নৌকা নিয়ে শীতল্যায় ভকের কাজটি বারবার করতে পারে। জানি না শীতল্যায় চিরুনি অভিযান চালালে আরো কত লাশ পাওয়া যাবে কিন্তু একটি কথা নিশ্চিত জানি, এখানেই হয়তো হতভাগ্য লুনা আর চৌধুরী আলমের স্ত্রীর বৈধব্য নিশ্চিত হবে। সুতরাং ভারত যদি কয়েক দিনের জন্য শীতল্যার পানি প্রত্যাহার করে বরং তা হতে পারে দৈবিক কারণ, ইলিয়াসের লাশ হয়তো পাওয়া যাবে না, হাড়গোড় পাওয়া গেলে মন্দ কী! রকেরা কী দারুণ ভক আজ! আইন পকেটে না রাখলে যেমন সফল ক্রাইম ফ্যামিলি গড়ে ওঠে না, তেমনই প্রশাসন না চাইলে গডফাদাররাও এক মুহূর্ত টিকতে পারে না। সরকারি ও বেসরকারি, ৫৬ হাজার বর্গমাইলজুড়ে সর্বত্রই হাজার হাজার মাফিয়া ডনরা ৪৩ বছর নিয়ন্ত্রণ করছে ঘুড়ির নাটাই যেন এদের হাত থেকে কখনোই মুক্তি নেই। যেন সব ক’টা নদীর তলদেশ পেট কাটা লাশের বস্তায় ভরে গেলেও কিছুই হবে না। অন্য কোনো সভ্য দেশ হলে বারবার ব্যর্থতার দায়দায়িত্ব নিয়ে পদত্যাগ করতেন সরকারের সব নীতিনির্ধারক।

সভ্য দেশে বলি, পুলিশ ডাকব, আদালতে যাবো, মামলা করব। বাংলাদেশে কী বলি? আমি ওমুক, কাউরে পরোয়া করি না, দল মতায়, মামলা করলে লাশ পড়বে। সুতরাং নূর হোসেনদের মতো মাফিয়া ডনদের কারণে বাংলাদেশ তো ব্যর্থ রাষ্ট্রের দিকে যাবেই। দুই বছরে নারায়ণগঞ্জে ১৫৩টি লাশের সংখ্যাকে চার দিয়ে গুণ দিতে হবে কারণ প্রতি মাসেই যখন ২০০-৩০০ লাশ পড়ে, গুম-খুনের সংখ্যাটা বরফের মাথা, শরীর পানির তলে।

ইহুদি বংশীয় মার্কিন স্কলার নোয়াম চমস্কি কেন মার্কিন রাষ্ট্রকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র মনে করেন সেই ব্যাখ্যায় যাচ্ছি না কিন্তু বাংলাদেশের এখনকার গণতন্ত্রে ধোলাই তালেবানি সন্ত্রাসী বলতেন কি না সেটাই প্রশ্ন। সন্ত্রাস শুধুই তালেবান নয়, বরং গণতন্ত্র যখন বিপজ্জনক হাতে পড়ে সেই সন্ত্রাস তার চেয়েও ভয়ঙ্কর। নাইজেরিয়ার বোকো হারামের মতো নয়, বরং প্রশাসনের ভেতরেই গুম-খুন চলছে বাংলাদেশে। মানুষ যখন সন্ত্রাসী হয় তখন ভরসা রাষ্ট্র। আর রাষ্ট্র যখন নিজেই সন্ত্রাসের ভূমিকায়, কী বলবেন নোয়াম চমস্কি?

বেশ কয়েক বছর ধরে রাষ্ট্রের কর্মকাণ্ডে প্রতীয়মান, সরকার ঠিক করেছে সংবিধানে যেসব আইনের কথা বলা হয়েছে, তারা তা মানবে না। অর্থাৎ জানমালের নিরাপত্তা দেবে না, বিচার বিভাগে হস্তপে করবে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে গুম-খুনের কাজে ব্যবহার করবে, ক্রসফায়ার থামবে না, ইচ্ছামতো যত খুশি ছুরি চালাবে সংবিধানে। (আমেরিকাতে যখন সংবিধান সংশোধন হয়, দুই কে শুধু দুই-তৃতীয়াংশে শুধু মেজরিটি ভোটেই নয়, ৫০টি অঙ্গরাজ্যেও দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে পাস হতে হবে)।

বলছি বাংলাদেশের মাফিয়া ডনদের উৎপত্তির কথা। দেশটাকে এই পর্যায়ে আনার জন্য বর্তমান কর্তৃত্বপরায়ণ নেতৃত্বই দায়ী, কারণ তারা শুধু অসীম নন, সব মতার অধিকারী এবং পরীার ফলাফল ঘোষণা থেকে গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি জব্দ, সব কিছুই তাদের আমানত। তাদের অনুমতি ছাড়া বিধাতার বাতাস পর্যন্ত নড়ে না। সুতরাং ৫৬ হাজার বর্গমাইলজুড়ে অতি আওয়ামীকরণ ছাড়া এই মাপের ক্রাইম ফ্যামিলি কিছুতেই সম্ভব না। ভূরি ভূরি প্রমাণ সত্ত্বেও মতা কামড়ে থাকতে কী কুৎসিত প্রয়াস! যেসব কারণে এ সরকারের পদত্যাগ সময়ের দাবি।

কেস হিস্ট্রি ১

বিশ্বজিৎ হত্যা : গ্রেফতারের দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আর রাষ্ট্র চালাবেন রাষ্ট্রপ্রধান। একজন নেতানেত্রী কখনোই বলতে পারেন না কাকে গ্রেফতার করতে হবে কিংবা সেই নির্দেশও দেবেন না, যাতে সন্দেহের তীর তাদের দিকে। মিডিয়ার চাপে বাধ্য হয়ে বিশ্বজিৎ খুনিদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়ার আগে সংসদে তারা যা বলেছিলেন, ছাত্রলীগের নয় বরং অতীতে এরা সব বিএনপি। সুতরাং হত্যাকাণ্ডের ভিডিও কিপ বারবার প্রচার সত্ত্বেও খুনিদের গ্রেফতারের সাহস আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ছিল না, কিন্তু মিডিয়ার চাপে নেতানেত্রীরা বলতে বাধ্য হলে শুধু তার পরই গ্রেফতার হলো চাপাতি শাকিল গ্যাং। নেতা-নেত্রীদের এ ধরনের বক্তব্য অপরাধকে আরো উসকে দেয় এবং সেটাই হচ্ছে ধারাবাহিকভাবে (দেখুনÑ কয়েক বছরের মিডিয়ার রিপোর্ট)। নেতানেত্রীদের জন্য আইন আলাদা হলে নিক্সনকে পদত্যাগ করতে হলো কোন দুঃখে? সুতরাং চাপাতি শাকিল যদি ‘লীগ’ পরিবারেরও কেউ হয়, তার পরও তাৎণিক আইন প্রয়োগ করা উচিত ছিল।

কেস হিস্ট্রি ২

শাহবাগ থেকে সংসদ : রায়ের বিরুদ্ধে কথা বললে নাকি আদালত অবমাননা হয়। সাম্প্রতিককালে কতই না শাস্তি ভোগ করছেন সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান ও গয়েশ্বর রায়…। কিন্তু রায় দেয়ার পরও যারা সুনির্দিষ্টভাবে আদালত অবমাননা করল, সেই শাহবাগীদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ কোথায়? রায় তারা মানেনি বরং ফাঁসির দাবিতে প্রায় দাঙ্গার বন্দোবস্ত করে ১০০ ভাগ আইন লঙ্ঘন। সুতরাং শাহবাগীদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ আনার বদলে সংসদে যা বলা হলো অবশ্যই ডাবল স্ট্যান্ডার্ট এবং আদালত অবমাননার শামিল। এরপর আসিফ নজরুল বা ডেভিড বার্গম্যানের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগই খাটে না সত্ত্বেও কেন তারা আদালতে গেলেন। শাহবাগীরা কেন উল্টে দিলো বিচার ও শাস্তিÑ জবাব কে দেবে। এটি যদি দেশদ্রোহিতা না হয়, কোনটি? ইমরান সরকার দেশদ্রোহী না হলে বার্গম্যানদের মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত হবে, ফলে ১৬ কোটি মানুষ আরো অনিরাপদ হবে অর্থাৎ ট্রাইব্যুনালের আইন পরিবর্তনের মাধ্যমে বিচার বিভাগকে প্রভাবিত করার জন্য সরকার সরাসরি দায়ী। এ জন্য সুনির্দিষ্ট শাস্তির বিধান থাকলে বিব্রত না হয়ে বরং সেটাই প্রয়োগ করা উচিত ছিল। স্কাইপের ঘটনায় যাদের জেল খাটার কথা, উল্টো জেল খাটছেন মাহমুদুর রহমান অর্থাৎ আইন সবার জন্য সমান নয় বলে ঘোষণা করছে রাষ্ট্র।

কেস হিস্ট্রি ৩

যুদ্ধাপরাধের বিচার : বিচারাধীন বিষয় নিয়ে সভা, সমিতির মাধ্যমে ‘ফাঁসি চাই ফাঁসি চাই’ দাবি তুলে প্রকারান্তরে বিচার বিভাগকেই প্রভাবিত করার কী চরম দৃষ্টান্ত রাখল সরকার নিজেই! যুদ্ধাপরাধীদের বিচার যখন তুঙ্গে, বিচার বিভাগকে প্রভাবিত করতেই সরকার চিরাচরিত কামরুল বাহিনী নামিয়েছিল সংসদে ও বাইরেÑ যার ভিডিও কিপ সর্বত্রই। এটি যদি ট্রাইব্যুনালকে প্রভাবিত করা না হয়, কোনটি? তিনি যখন ফাঁসি চান, আদালত নিরূপায়, সুবিচারের পথ বন্ধ হয়ে যায়। পদ-পদবি সবই যখন রাষ্ট্রপ্রধানের হাতে, খায়রুল হক যখন বিপজ্জনক উদাহরণ, ট্রাইব্যুনাল বিষয়ে সরকারের নীতিনির্ধারকদের কার্যকলাপ কেন আদালত প্রভাবিত করা নয়। প্রবল মতাধর মানুষটি প্রভাবিত করলে সব কিছুই প্রভাবিত হবে এবং হচ্ছে সেটাই। বলছি, কে যেন সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, রায়ের বিরুদ্ধে কথা বললে নাকি রাষ্ট্রদ্রোহিতা হয়! কে যেন সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিষয়ে নাকি রাষ্ট্র কখনোই হস্তপে করে না! এখন আমি কুপির আলোয় বিচারের অস্তিত্ব খুঁজি।

কেস হিস্ট্রি ৪

রানা প্লাজা : আইনের শাসনের বিরুদ্ধে এখানেও এ সরকারের নীতিনির্ধারকদের

হস্তপে সবাই ল করেছেন। আজ যে ধারাবাহিকতা নূর হোসেনদের বেলায়, তাদের সায় না থাকলে কী করে পালিয়ে গেল সোহেল রানা? সোহেল রানা যদি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যও হয় তার পরও গ্রেফতার করতে হবে এবং সেই ল্েয রেড অ্যালার্ট কেন সব কিছুই জারি করতে হবে। কিন্তু নীতিনির্ধারকদের মুখে উল্টো বয়ান এবং খুনি পালিয়ে বাঁচার অন্তরালে দলীয় লাভ-তির হিসাব লণীয়। অবশেষে চাপের মুখে সংসদে ঘোষণা, ‘সোহেল রানাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছি’। নির্দেশ দিয়েছি? শুধু এরপরই হেলিকপ্টারে তাকে ঢাকায় আনা হলো। তাৎণিক সিদ্ধান্ত নিলে ঢাকা থেকেই বের হতে পারত না, হেলিকপ্টারেরও প্রয়োজন হতো না। এ দৃষ্টান্ত কোনো সভ্য দেশেই নেই, তাহলে আমরা কি অসভ্য দেশের নাগরিক? নীতিনির্ধারকদের কর্মকাে স্পষ্ট, এমপি মুরাদ জংয়ের সাথে তার মাফিয়া ডন সোহেল রানার সম্পৃক্ততা অস্বীকার করতে চেয়েছিলেন কিন্তু পারেননি কিছু মিডিয়া সৈনিকের জন্য। (মানবজমিনের এক রিপোর্টেই দুর্দান্ত প্রভাবশালী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভবিষ্যৎ শেষ। চাইলে একমাত্র মিডিয়াই পারে দেশের ভাগ্য পরিবর্তনে অসম্ভব ভূমিকা রাখতে)। সর্ববৃহৎ শিল্প দুর্ঘটনার দিকে মনোযোগের বদলে বরং রানা কেন ছাত্রলীগ নয় এ নিয়ে নেতৃত্বের অস্বাভাবিক হিসাব-নিকাশের কারণেই শুধু সোহেল রানা পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, সোহেল রানাকে নাকি জামিনও দেয়া হয়েছিল, যা আপিল ডিভিশনে স্থগিত হয়েছে। কী অদ্ভুত এই বাংলাদেশ, আরো অদ্ভুত অসীম মতার অধিকারী সরকার যারা তাৎণিকভাবে দানব গ্রেফতারের বদলে বারবারই দলের লাভ-তির হিসাব কষে রাষ্ট্রের জন্য মারাত্মক হুমকি হচ্ছেন নিজেরাই। বিশ্বজিৎ খুনের তিন মাস পর আবারো যখন নির্দেশ দেয়া হলো, শুধু তখনই গ্রেফতার হলো সোহেল রানা, তার আগে নয়। এসব কিসের ইঙ্গিত? কর্তৃত্বপরায়ণরা না বললে খুনিরা গ্রেফতার হবে না কেন? রাষ্ট্রের ভেতরেই যখন মাফিয়া ডনরা এভাবে বিস্তার করে, নারায়ণগঞ্জের ঘটনা বারবারই ঘটবে, ১৬ কোটি জানমাল অনিরাপদ হবে। বিষয়টি কি আদালতের নজরে নেই!

কেস হিস্ট্রি ৫

এ বি সিদ্দিক : আইনের শাসন এখন এ-পর্যায়ে যখন খুনিকে গ্রেফতারের জন্য প্রত্যেককেই পুলিশের বদলে নেতৃত্বের স্মরণাপন্ন হতে হয়। সবারই অগাধ বিশ্বাস, যেন অন্তর্যামীর মতো সরকারের নীতিনির্ধারক জানেন খুনি কে এবং অলিগলির ঠিকানা! যেন একমাত্র তারা

হস্তপে করলেই ভিকটিম মুক্ত হবে, অন্যথায় নয়। সুতরাং সরাসরি হস্তপে ছাড়া রেজওয়ানার বৈধব্যও প্রায় সুনিশ্চিত ছিল। এর অর্থ কী দাঁড়াল? আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি কী এ রকম হওয়া ঠিক? ‘নোয়াম চমস্কি’ যখন আমেরিকাকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র মনে করেন, তখনো আমাদের বুদ্ধিজীবীরা কেন আবোল-তাবোল বলেন? ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তার স্বামীকে কেন ফেরত পাননি সেটি আমরা জানি; কিন্তু নেতৃত্বের হস্তপে কামনা করার পরই শুধু বিধবা হওয়া থেকে কেন খালাস পেলেন রেজওয়ানা চৌধুরী, স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চেয়ে প্রশ্ন করতেই পারি। স্বামীকে ফেরত পেয়ে সরকারের কর্তৃত্বপরায়ণদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন রেজওয়ানা। তবে সিদ্দিকের অপহরণকারীরা এখনো অধরা হলেও প্রকাশ হয়েছে এর সাথে জড়িত র‌্যাব। প্রশ্ন, র‌্যাবের দায়িত্বে কে? বিশ্বজিৎ ও রানা প্লাজাসহ অনেক ঘটনার পর এ বি সিদ্দিকের মুক্তিও সরাসরি নীতিনির্ধারকদের হস্তেেপই সম্ভব হওয়ায় ১৬ কোটি জানমালের দুশ্চিন্তার কারণ হলেন সরকারের নীতিনির্ধারকেরাই। তারা না চাইলে খুনি গ্রেফতার হয় না, বোকা হারাম তো সরকার নয়, তাহলে কাকে সন্ত্রাসী বলবেন নোয়াম চমস্কি?

কেস হিস্ট্রি ৬

‘ফেডারেল রিপাবলিক অব নারায়ণগঞ্জ’ : মারিও পুজোর কালজয়ী গডফাদার উপন্যাসের মতোই বাংলাদেশী গডফাদারের রাজত্ব নারায়ণগঞ্জ যেখানে সাপের মতো ঘরে ঘরে গডফাদারদের ৯৯ শতাংশই আওয়ামী কর্মী। অতীতে প্রাচ্যের ‘ডান্ডি’ নামে খ্যাত শীতল্যার তীরঘেঁষে গড়ে ওঠা গডফাদারদের অভয়ারণ্যে নূর হোসেন, নজরুল বা ওসমান পরিবারের মতো হাজার হাজার মাফিয়া ডনরা কিভাবে ৪৩ বছর ধরে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বিস্তার লাভ করল, ইতিহাসের সেই অধ্যায়ে যাচ্ছি না। তবে চাঁদাবাজি আর গুম-খুনের রাজত্বে পাশ্চাত্যের মাফিয়াদেরও টপকে গেছে নূর হোসেনেরা। দল মতায় থাকলে দেশে, না থাকলে বিদেশে পালিয়ে যায়। এই দাগে বিচার প্রভাবিত করতে বিটিভি মার্কা টকশোগুলোর ক্যামেরা পর্যন্ত কব্জা করে কোনো কোনো অপরাধী প্রমাণ করতে চাইছে কত বড় সন্ন্যাসী তারা। নারায়ণগঞ্জের এক ডনের দাবি, দলীয় প্রধান নাকি তার বড় বোন এবং আল্লাহর পরেই তার নির্দেশ পালন করেন। এ কথা তো মিথ্যে নয়, গডফাদারের কীর্তি জানার পরেও তাকেই নমিনেশন দিয়েছেন। মন্ত্রীরাও কি পিছিয়ে? মায়ার পরিবারের অভিযুক্ত দুই পাষণ্ডকে রিমান্ডে নেয়ার কোনো লণই দেখছি না অথচ ’৯৮ সালে দিপু চৌধুরীকে নেতৃত্বের হস্তেেপই আদালতে সোপর্দ করার শর্তে মায়ার মন্ত্রিত্ব বহাল। এর পরেও মায়াকে বরখাস্ত না করার কোনো কারণ নেই সত্ত্বেও মিডিয়ার মাধ্যমে বিচার প্রভাবিত করার চেষ্টা চলছে। চুন খেয়ে মুখ পুড়েছে, কর্র্তৃত্ববাদীদের সুমসাম নীরবতায় ভয়, ৫ জানুয়ারির মতো ৭ মার্ডারের পরিস্থিতি উল্টে দিতে আবার কোনো অশুভ অঙ্ক কষছে আওয়ামী লীগ!

কেস হিস্ট্রি ৭

পদ্মা সেতু : বিস্তারিত না লিখে সংেেপ বলছি, আবুলদের বিচারে প্রধান প্রতিবন্ধক নীতিনির্ধারকেরাই। সংসদ টিভিতেই আছে আবুলকে বাঁচাতে কী তুঘলকি কা! সুতরাং কুলহারা কলঙ্কিনী বাংলাদেশ এবার তলে তলে নাকে খত দেয়া অর্থমন্ত্রীর মাধ্যমে বিশ্বব্যাংককে ফিরিয়ে আনার চেষ্টায় মরিয়া। এরই অংশ হিসেবে দুদকের মাধ্যমে বিচার দেখতে চায় বিশ্বব্যাংক এবং সেটাই হচ্ছে অন্যথায় পদ্মা সেতুতে হাত দিলেই ভূমিকম্প। আইন যখন ঘুড়ির মতো নিয়ন্ত্রিত হয়, কী বলবে আইন!

কেস হিস্ট্রি ৮

বিজিএমইএ ভবন : আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে এখনো কিভাবে দাঁড়িয়ে আছে অবৈধ বিজিএমইএ ভবনটি, উত্তর জানেন কর্তৃত্বপরায়ণেরা। কারণ তাদের হস্তপে ছাড়া কিছুই সম্ভব নয়। বিচার নীরব, মূর্খ জাতিকে এভাবেই মাশুল দিতে হয়।

কেস হিস্ট্রি ৯

বিডিআর হত্যাকাণ্ড : একটা কথা সবাই জানে, আইনের কী ভীষণ ব্যত্যয় ঘটল এখানে!

কেস হিস্ট্রি ১০

সন্ত্রাসীদের মা : রেকর্ডসংখ্যক ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত অপরাধীদের মা করেছেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি। অতি আওয়ামীকরণে বিশ্বাসী প্রশাসনের হাত দিয়ে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসীদের মার ফাইল যাচ্ছে বর্তমান রাষ্ট্রপতির কাছে।

কেস হিস্ট্রি ১১

গুম-খুন র‌্যাব : ডেডলাইন ২৭ এপ্রিল, সাতজন গুম। সব জানার পরেও মে দিবসের অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়াকে কেন দায়ী করলেন প্রধানমন্ত্রী? তার বক্তব্য আইনবিরুদ্ধ কি না দেখা যাক। ইনডিপেডেন্ট টেলিভিশনে লাইভ অনুষ্ঠানে শামীম ওসমান বলছেন, ঘটনার ১০ মিনিটের মধ্যে পিএমকে ঘটনা জানিয়েছি। গুমের দুই ঘণ্টা পর নূর হোসেনের সাথে কথা বলে নিরাশ হয়ে নফল নামাজ পড়ে সান্ত্বনা খুঁজেছি। নূর হোসেনের শ্বশুর, স্ত্রী, মেয়র ও শামীম ওসমান যেসব স্ববিরোধী কথা বলছেন, মিডিয়ায় আসছে প্রতিনিয়ত; কিন্তু নিজেকে সন্ন্যাসী প্রমাণে ডেসপারেট ওসমানের বক্তব্যে প্রমাণ, গডফাদাররা সব চোরে চোরে মাসতুতো ভাই, অন্যথায় সব ক’টাই কেন শামীম ওসমানের লোক, গুমের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বদলে কেনই বা তাকে রাইফেল স্কোয়ারে নূর হোসেনের সাথে মিটিং করতে হলো। কেনই বা একবার র‌্যাব আবার শামীমের দরগায় দৌড়ালেন নজরুলের শ্বশুর! সন্ত্রাসীদের প্রত্যেকের পোর্টফলিওতেই এক বা ডজন মামলা। ওসমানের দাবি মিথ্যা না হলে গুমের পুরো বিষয়টা ১০ মিনিটের মধ্যে নেত্রী জানতেন কিন্তু ব্যবস্থা নেয়ার বদলে খালেদাকে আবারো দোষারোপ। যেখানে জীবনের প্রশ্ন জড়িত, এটা কোনো দায়িত্বশীল নেতৃত্বের কাজ? অবশেষে অপসারণ এবং বদলির মাধ্যমে প্রমাণ হলো ঘটনা সত্য এবং পুরো বিষয়টাই সন্দেহজনক। যথেষ্ট সময় পার হওয়ার পর মিডিয়ার চাপে বাধ্য হয়ে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে ডেকে পাঠালে প্রতিমন্ত্রী বললেন, চিন্তার কিছু নাই। চিন্তার কিছু নাই? এর মানে কি এমন কিছু বলা হয়েছিল যা তারা জানতেন কিন্তু ঠেকাননি! কিংবা এমনও হতে পারে, গোদের উপর বিষফোড়া নূর হোসেনকে নিরাপদে সরিয়ে দিতেই কালপেণÑ যা এর আগে সোহেল রানা বা চাপাতি শাকিলদের বেলায়ও ঘটেছে। অন্যথায় অপরাধের মাত্রা বিবেচনায় কেন সাত দিন পর খুনির বাড়িতে তল্লাশি এবং রেড অ্যালার্ট! ১০ দিন পর অভিযান করে কী প্রমাণ করতে চাইছে সরকার ও রাষ্ট্র! এখানে অপরাধের ধারাবাহিকতা লণীয়।

পুলিশের হেফাজতে নীলফামারীর ক্রসফায়ারের ঘটনাই প্রমাণ, সচেতনভাবে র‌্যাব-পুলিশ দিয়ে গুম-খুন-ক্রসফায়ার চালাচ্ছে রাষ্ট্র। মানবাধিকার সংস্থাগুলো কি বারবারই কিলিং মেশিন র‌্যাব বিলুপ্ত করার কথা বলছে না! সাত খুনের সাথে জড়িতদের মধ্যে মন্ত্রীর খুনি জামাতা ও পুত্রÑ যাদের দু’জনের বিরুদ্ধেই অতীতে গুম-খুনের প্রমাণ। সবগুলো ভিকটিম পরিবার এবং শহীদ চেয়ারম্যানের অভিযোগ সত্যি হলে সংসদ সদস্যসহ সব গডফাদার গ্রেফতারে নীতিনির্ধারকদের অনীহায় রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস দৃঢ় হচ্ছে। দৈনিক ইনকিলাব ৮ মে, ‘খুনিদের রায় মরিয়া প্রভাবশালীরা’, অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ লেখা। ‘ডিসি মনোজকান্তি বড়ালকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় এবং পুলিশ সৈয়দ নূরুল ইসলামকে প্রাইজ পোস্টিং দিয়ে পুলিশের বিশেষ শাখায় বদলি করা হয়েছে। র‌্যাব-পুলিশ, প্রশাসনের অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের স্বপদে বহাল বা প্রাইজ পোস্টিং দিয়ে তদন্ত করলে নিরপে হবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। নীতিনির্ধারকদের নির্দেশে লে. কর্নেল তারেকসহ তিন সামরিক কর্মকর্তাকে অবসরে পাঠানো হয়েছে।’ অথচ গার্বেজ ট্রাকে আগুন দেয়ার জন্য জেল খাটতে হয় ফখরুলকে! ‘কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না’ কথাগুলো পরিহাস যেন কর্তৃত্ববাদীরা চাইলে ছাড় দেয়া যায়, না চাইলে যায় না। এদিকে ম: খা: আলমগীরের ব্যক্তিগত সুপারিশে আইন ভঙ্গ করে যে এসপি-ডিসি ১১টি অস্ত্রের লাইসেন্স দিলেন, তাদেরকেই পদোন্নতি! অর্থাৎ রিমান্ড মানেই শুধু বিরোধী দল পেটাও। এভাবে আইন ইঞ্জিনিয়ারিং করলে সাত মার্ডারের ঘটনা ঘটবে না তো কী ঘটবে! বাস্তবতা এই, সন্দেহের তীরবিদ্ধ সংসদ সদস্য, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তায় বহাল তবিয়তে (প্রথম আলো, ১০ মে)। আদালতের মতা কতটুকু যখন কেউ-না-কেউ বলে দেন এর সাথে জড়িত বিএনপি! কিছু কিছু অতি কথনদুষ্ট মন্ত্রী থামছেনই না। সুতরাং বিচার সেখানেই শেষ হয়ে যায়। এমনকি ত্বকী হত্যার চার্জশিট পর্যন্ত প্রভাব খাটিয়ে গুম করল নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত গডফাদার। সুতরাং তাকে যে রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করল, এ জন্য জজ মিয়াকে দায়ী করতে পারি না।

নূর হোসেনদের বরখাস্ত করলে রক্তের দাগ ধুয়েমুছে যাবে না। কিন্তু এ কাজটা আগে না করায় রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস স্পষ্ট হয়েছে। খালেদা বলেছেন, সাপকে বিশ্বাস করা যায়, এ সরকারকে নয়। বিষয়টি ভাবতে হবে। নূর হোসেনের পোর্টফলিও লোমহর্ষক। শামীম ওসমানের হাত ধরে রাজনীতিতে এসেছেন। শামীম ওসমান যখন দেশ ছাড়েন তিনিও যান, ফেরেন একসাথে। তার বিরুদ্ধে ছয়টি হত্যা মামলাসহ ২২টি মামলা রয়েছে নারায়ণগঞ্জের দুই থানায়। রেড অ্যালার্ট সত্ত্বেও তাকে গ্রেফতারের সাহস নাকি কারো নেই। হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে নদী দখল করে বালু-পাথরের ব্যবসায় করছেন, কিন্তু আদালত অবমাননার শাস্তি হয়নি। নদী দখলের বিরুদ্ধে মামলা, সরকারি কর্মকর্তাদের হুমকি ও জমি দখলের অভিযোগ করেছেন স্বয়ং বন্দর কর্মকর্তা। সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ২২টি চিঠি দেয়া হলেও কাজ হয়নি। নূর হোসেন আইনের ঊর্ধ্বে থাকা মানুষ। প্রশাসন নাকি কিছুই করতে পারে না দৈনিক ৫০ লাখ টাকা চাঁদার ৮০ ভাগ যায় মূল গডফাদারের হাতেÑ লিখেছে মানবজমিন। ‘র‌্যাব বলল, শামীম ওসমান তোমার জামাইকে গুম করেছে। ক্যাম্পে গিয়ে র‌্যাব-১১ অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেকের পা জড়িয়ে ধরে বলেছিলাম, দুই কোটি টাকা দিবো নজরুলকে ভিা দেন। কিন্তু তিনি আমাকে বললেন, আমার কাছে এসেছেন কেন? সেই আপনার জামাইকে গুম করেছে। এরপর র‌্যাবের ক্যাম্পে আটকে রেখে তিনি আমাদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন।’

আন্ডারওয়ার্ল্ড নিয়ে গবেষণা করবেন অপরাধ গবেষকেরা। কিন্তু দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে ত্বকী হত্যার চার্জশিট দাখিল নিশ্চিত করার বদলে বরং শামীম ওসমানকেই নমিনেশন দিতে হলো কেন? কী সেই নৈতিকতা বা দরদটুকু নেই! ১০ মে দৈনিক মানবজমিন, ‘যে কারণে খুন হলো নজরুল’ লেখাটিতে ওসমান পরিবারের সাথে ত্বকী হত্যার সম্পৃক্ততা খোলাসা হয়েছে। এ দিকে ব্লগার রাজিব খুন হলে তার বাড়িতে গিয়ে সান্ত্বনা দিলেও বিশ্বজিতের বাড়িতে যাননি তারা। একইভাবে সাত খুনের ভারে নারায়ণগঞ্জ যখন কাঁদছে, পরিবারগুলোকে ডেকে কিংবা নিজে গিয়ে

সান্ত্বনা না দিয়ে বরং নাসিম ওসমানের জানাজায় শামীম ওসমানের মাথায় হাত বুলিয়ে তাকে সান্ত্বনা দিলে কী বার্তা দেয়া হয়!

পড়ালেখা কম করলে বড় বড় ভুল করে মানুষ। সরকার যা করছেনÑ বেশির ভাগই অনুচিত, যা করা উচিত বেশির ভাগই করেন না। যেমন আমার বিষয়টি। আমি নাকি যুদ্ধাপরাধীদের প নিয়েছি যে জন্য আমাদের ৭০ বছরের মন্দির-বাড়িটির ওপর সরকারের দখলবাজদের ষড়যন্ত্র। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মামলা দিতে ভয় পায় কারণ তারা জানে বিষয়টি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, যে জন্য গোপনে গোপনে স্থানীয় প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছে নিষেধাজ্ঞার। খুনিদের না দিয়ে রেড অ্যালার্ট দিতে চায় আমার বিরুদ্ধে। অর্থাৎ সরকার যদি এই ধরনের আকাম-কুকাম নিয়ে ব্যস্ত থাকে তাহলে প্রকৃত অপরাধীরা তো পালিয়ে যাবেই। তলে তলে দেশ চালাচ্ছে অন্যরা আর প্রকাশ্যে দমনপীড়ন নিয়ে ব্যস্ত সরকার। কার্যত তাদের ব্যর্থ হওয়ায় পদত্যাগ না করা পর্যন্ত নৈরাজ্য বন্ধ হবে না।

‘স্থানীয়দের অভিযোগ, র‌্যাবের সিইও এমন কোনো কাজ নেই যা করতে পারেন না। শ্বশুর মন্ত্রী হওয়ার সুবাদে তিনি র‌্যাব সদর দফতর, পুলিশ সদর দফতরের কারো কমান্ড মানতেন না। এ ঘটনার পর র‌্যাব-১১-এর সিইও তারেক তার শ্যালক দিপু চৌধুরীর সাথে ঘটনা নিয়ে বৈঠক করেন। শোনা গেছে, দিপু চৌধুরী নূর হোসেনসহ অন্যদের অবস্থান সম্পর্কে অবহিত আছেন। তিনিও চেষ্টা করেছিলেন নূর হোসেনকে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দিতে।’ লিখেছে মানবজমিন। আরো লিখেছে, ‘মন্ত্রীপুত্রের মধ্যস্থতায় খুন নিশ্চিত হয়, জামাতা তা পূর্ণ করে।’ সুতরাং উন্নতি পরে, আগে বাঁচতে দিন।

সবাই দোষ দিচ্ছে গডফাদারদের কিন্তু আমি বলছি অন্য কথা। বিটিভিতে ‘কে তুমি বঙ্গললনা’ নামক ভিডিও মিউজিকটি দেখে থাকলে লেখার বিষয়টি বুঝতে সুবিধা হবে। বলছি, যোগ্য নেতৃত্বের ফর্মুলা। অনেকেই দোষ দেন অতিরাজনীতিকরণ, আমি বলছি, অতি-আওয়ামীকরণ এমনপর্যায়ে যখন গোটা দেশটাই গোপালগঞ্জ। দোষ নূর হোসেনদের নয়, বরং ৪৩ বছর ধরে যারা এদেরকে সৃষ্টি করল তাদের। এরা সুযোগ না দিলে নূর হোসেনদের কী সাহস! আসল কথা, নূর হোসেনরা থাকলে আজীবন মতার জন্য যা প্রয়োজন সব দেবে। এদেরকে ক্ষমতায় রাখার জন্যই তো শক্তিশালী নূর হোসেনরা দুটো পুকুর পর্যন্ত ভরে ফেলেছে মাদক ও অস্ত্র দিয়ে। তাই আজীবন ক্ষমতায় থাকতে হলে নূর হোসেনদের বিকল্প নেই। যার জেলে থাকার কথা সে কেন সংসদে, বুঝে নিতে হবে? যে ব্যক্তি নিজে বিশৃঙ্খল, সে কখনো সুশৃঙ্খল পরিবারের জন্ম দিতে পারে না। স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরেও মাথাপিছু আয় যখন এক হাজার ডলারের নিচে। এর অর্থ হলো, দেশের উন্নতির জন্য কেউই অনিবার্য ছিল না, এখনো নয়। বরং থাইল্যান্ড কোর্টের অনুসরণ করে জানমালের নিরাপত্তায় এ দেশের নীতিনির্ধারকপর্যায়ে পরিবর্তন আনা জরুরি।

নিউ ইয়র্ক প্রবাসী

Loading


মন্তব্য দেখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *