আসুন সহজে আরবি শিখি – (তৃতীয় পর্ব )

দ্বিতীয় পর্ব

গত পর্বে আমরা নির্দিষ্ট,অনির্দিষ্ট ( Definite and Indefinite) ইসম এবং ইসম এর লিঙ্গ (Gender) সম্পর্কে জানতে পেরেছি। আমরা দেখেছি অনির্দিষ্ট Indefinite শব্দের শেষে তানইউন থাকে। আর নির্দিষ্ট Definite শব্দের পূর্বে আলিফ লাম থাকে।

আরবি ব্যাকরণে সকল বস্তুকে হয় পুংলিঙ্গ বা স্ত্রীলিঙ্গের কোন এক লিঙ্গে গণ্য করা হয়। উভয় লিঙ্গের বস্তু সমূহকেও সাধারণত স্ত্রীলিঙ্গে ধরা হয়। স্ত্রীলিঙ্গের শব্দের বৈশিষ্ট্য হল সে সব শব্দের শেষে “তা-মারবুতা” থাকে (এর উচ্চারণ হয় হা) কিংবা শব্দের শেষে ى/آء থাকে (কিছু ব্যতিক্রম আছে)। আবার অনেক শব্দ আছে যার স্ত্রীলিঙ্গের জন্য ভিন্ন শব্দ ব্যবহার হয় অর্থাৎ পুংলিঙ্গের শব্দের সাথে কোন মিল থাকেনা। বুঝতে অসুবিধা হলে এই ভিডিওটি দেখতে পারেন।

সে যাক আজকের পর্বে আমরা সংখ্যা/বচন (Number) নিয়ে আলোচনা করা হবে।  আমরা এখনও ইসম নিয়ে আলোচনা করছি। আশা করি আগামী পর্বে ইসমের  আলোচনায় ইতি টানতে পারবে এবং ফেইল ও হুরুফের আলোচনায় যেতে পারব ইনশাআল্লাহ।

স্মরণ থাকার কথা যে আমরা ইতিপূর্বে (প্রথম পর্বে) ইসমের স্ট্যাটাস বা অবস্থান সম্পর্কে এবং মারফুউ, মানসুব ও মাজরুর সম্পর্কে জেনেছি । আজকের পাঠে আমরা শিখতে পারব এই বিভিন্ন অবস্থার ইসম (noun) বিভিন্ন বচনে কিভাবে লিখা হয়?

এ পর্বেও বেশ কিছু মূল্যবান ভিডি লিংক আছে এবং ছোট ছোট অডিও ক্লিপ সংযোজন করা হয়েছে আলোচ্য বিষয় সহজে বুঝাতে। কোন প্রশ্ন থাকলে মন্তব্যের কলামে রাখতে পারেন।

প্রথমেই দেখা যাক আরবিতে বচন (Number) কত প্রকার?
ইংরেজি বা বাংলা ব্যাকারণে আমরা সাধারণত একবচন ও বহুবচনের বর্ণনা দেখি কিন্তু আরবি ব্যাকারণে তিন প্রকারের বচন নিয়ে চর্চা হয়।
যেমন,

  • একক (Singular)
  • দ্বিবচন (dual) 
  • বহুবচন (more than two)
    তবে এই বচন বা সংখ্যা প্রকাশ পুংলিঙ্গে ও স্ত্রীলিঙ্গে তফাৎ আছে যার উদারণ নিচের তালিকায় দেখানো হয়েছে।

পুংলিঙ্গের ইসমে দ্বিবচন ব্যবহার

**** নিচের অডিওটি শুনতে পারেন উপরের chart বা তালিকাটি বুঝতে। এখানে উদাহরণ দেয়া হয়েছে রাফা, নাসাব ও জার কিভাবে একবচন থেকে দ্বৈতবচন (Dual) পুলিঙ্গে লিখা হয়।

নিচের ভিডিওটিতে দ্বৈতবচন আরো সহজে ব্যাখা করা হয়েছে।

স্ত্রীলিঙ্গের ইসমে দ্বিবচন ব্যবহার

  উপরের তালিকা (Chart) বুঝতে নিচের অডিওটি শুনতে পারেন। এখানে দেখানো হয়েছে রাফা, নাসাব ও জার এর স্ত্রী লিঙ্গে কিভাবে একবচন থেকে দ্বৈত-বচন (Dual) লিখা হয়।

নিচের ভিডিওটি শুনলে বিষয়টি  বুঝতে আরো সহজ হবে।

একক এবং দ্বৈত বচনের শব্দ লিখা সহজ । তাদের শব্দের প্যাটার্ন পরিবর্তন হয়না কিন্তু বহুবচন শব্দের ব্যপারে একটু জটিল তাদের প্যাটার্ন সব সময় এক রকম নয়। বহুবচন ছয় প্রকারের হয়:

১) মানব পুংলিঙ্গের বহুবচন

২) মানব স্ত্রীলিঙ্গে বহুবচন

৩) জড় বস্তু স্ত্রীলিঙ্গে বহুবচন।

৪) মানব বহুবচন ভগ্ন (Broken Plural)

৫) অমানব(Non-human) জীবন্ত ( সত্তা) বহুবচন

৬) ইসমুল জামাহ

 

১) মানব পুংলিঙ্গের বহুবচনের উদাহরণ দেয়া যাক নিম্নের অডিওটি শুনেন।

২) মানব স্ত্রীলিঙ্গে

বহুবচনের উদাহরণ দেয়া যাক

উপরের “মুসলিমাতুন” স্ত্রীলিঙ্গ শব্দ রাফা ইসমকে বহুবচন করতে ت এর উপর দুটি দাম্মা ব্যবহার করতে হয়। নাসাব এবং জার শব্দের বহুবচন উভয়ের বেলায় এক রকম হয়। ت এর নিচে দুটি কাসরা ব্যবহার হয়।

৩) জড় বস্তু স্ত্রীলিঙ্গে বহুবচন।

আরবিতে কোন  জড় বস্তু বহুবচন হলেই তা স্ত্রীলিঙ্গের শব্দ হয়ে যায়। একবচন- كلمت বহুবচন- كالماتْ আমরা জানি যে কোন শব্দের শেষে তা বা তা-মারবুতা থাকলে সাধারনত সেটি স্ত্রীলিঙ্গের শব্দ হয়ে কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া। যেমন হামজা – حمزة

৪) মানব বহুবচন ভগ্ন (Broken Plural)

যখন কোন শব্দ যেমন; নবী, রাসুল ইত্যাদি বিভিন্ন শব্দকে বহুবচন করতে তাদের আসল শব্দের সাথে বাড়তি অক্ষর সংযোগ বা পরিবর্তন করে বহুবচন করা হয় তাকে বলা হয় ভগ্ন বহুবচন। নবীউন বহুবচনে হয় أمبياة (আম্বিয়াহ্)

৫) অমানব(Non-human) জীবন্ত ( সত্তা) বহুবচন

এগুলোকে সব সময় স্ত্রীলিঙ্গে গন্য করা হয়। যেমন , এক বচন مصْباحٌ (মিস্ বাহুন) এর বহুবচন হচ্ছে    بيحُ مصا  (মাসা-বিহু)

৬) ইসমুল জামাহ

আবহমান কাল থেকে আরবরা যেগুলোকে বহুবচন হিসাবে ব্যবহার করে আসছে (Irregular Plural)। যেমন কাউম, নাসউন কার্-নি ইত্যাদি। قوم,; ناسٌ , قَرْنٌ ইত্যাদি শব্দ দেখতে এক বচন হলেও এগুলো সব সময় বহুবচন।

নিচের ভিডিওটিতে উপরের আলোচনা অত্যন্ত বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। ধৈর্য্য ধরে দেখলে লাভবান হবেন। তবে ছোট একটি ভিডিও আছে এখানে ।

আজকের পর্ব এখানেই শেষ করতে চাই।

আগামী পর্বে থাকছে ইসম কয় প্রকার? সে বিষয়ে আলোচনা । বিশেষ করে সাধারণ ইসম (Common Noun) এবং সংজ্ঞাবাচক ইসম (Proper Noun) যা ৭ প্রকারের হয় সে বিষয়ে আলোচনা থাকবে। সাথে থাকেন।
ধন্যবাদ।

৪র্থ পর্ব আসছে …

কোরআনে এই বচনের ব্যবহারের বিস্ময়কর কিছু বর্ণনার এক চমৎকার ব্যাখা দিয়েছেন নোমান আলী খান  (লিংক এখানে)।

Comments are closed.