আধুনিকতার আদ্যোপান্ত

টিপাইমুখ একটি জলবোমা। রিখটার স্কেলে সাত মাত্রার ভূমিকম্প বরাক সুরমা অববাহিকার ২০০ কিলোমিটার এলাকা প্রত্নতত্ত্ব হয়ে যেতে পারে। কালনিরবধি প্রবাহমান ধারা শৃঙ্খলিত করে বাঁধ। ভারত উন্নয়নের ক্ষেত্রে সমুদ্র মন্থন নীতি গ্রহণ করেছে সে-ই নেহেরুর আমল থেকে। ভাটি শেষ হলে উজানও বাঁচে না। টিপাইমুখ একটি গ্রামের নাম। এইখানে এসে বরাক বাঁক নিয়েছে। এইখান থেকে ১ হাজার ৬০০ ফুট দূরে বরাক নদীতে ৫০০ ফুট উঁচু ও ১ হাজার ৬০০ ফুট লম্বা বাঁধ অজগরের মতো হিস হিস করবে। সাপের মুখ থেকে পানি পড়ছে। এই বাঁধের এক্সট্রিম হার্ডকোর ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে আমার কোনো আগ্রহ নাই। আমার আগ্রহের জায়গা হলো এই বাঁধ নির্মাণের রাজনৈতিক দিক। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় ভারতের পাত্তা না দেবার নীতির প্রতি নতজানু থাকার যে গোলামির ভাব আমাদের ‘সার্বভৌমত্বের’ চিরায়ত ধারণাকে শুকিয়ে মারছে– সে-ই দিকে তাকাবার সময় এসে গেছে। ঘাড়ের উপর জল বোমা নিয়ে তো আর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের স্বপন নিদ্রাকুসুমেও ফুটবে না। ভারতীয় শাসকশ্রেণী তথ্য গোপন করেছে। তিপান্ন অভিন্ন নদীর উপর প্রতিটি বাঁধই আমাদের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি। কোন কোন হুকুমত, বিধি বিধান হুমকি হয়ে ঘাড়ের উপর থাকে।
সীমান্ত থেকে একশ’ কিলোমিটার উজানে এই বাঁধ সমস্ত প্রাকৃতিক বিন্যাস, প্রাণসম্পদ, আদিবাসীদের জীবনযাপন প্রণালী, স্রোতধারা (যেমন- টুইভাই নদীর ধারা, হাজার পাহাড়ি ঝরণা, ছড়া ইত্যাদি) সব বিনাশ করবে। টুইভাই ও বরাক টিপাইমুখ গ্রামে এসে পরষ্পরের দীনদশা ঘূচিয়ে মিলনমুখরিত সঙ্গম আজুদায়। স্রোতের দোস্তালি গলাগলি। নদীর মরফোলজির ধারা উজানেই দেখা দেয়। এই মরফোলজির গঠনগাঠন ভূ-প্রকৃতির যে গর্ভে নদী হয়ে উঠার কারণ ধারণ করে সেই মূলের আবেদন উশুল হয় ধারা যতো ভাটি ভাঙে। আগায়। ভাটি ও উজানের সম্পর্ক সমুদ্রে বিলীন হয় না। ধারার ধারাবাহিক সম্পর্কই নদী। ফলে নদীর জন্মস্থান নাই। তা-ই অববাহিকা ভিত্তিক পানি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে উৎপত্তি-উজানের নিয়ন্ত্রণ সে-ই দেশের বা ভূ-গোলখণ্ডের সার্বভৌম নীতি প্রণয়নের পরিধির অন্তর্ভুক্ত নয়। হতে পারে। কারণ ভাটিও উজানের সম্পর্কের বাইরে নদীর ধারণাই নাই। টিপাইমুখ টান টান উত্তেজনায় খাসিয়া খাসা তীরের মতো। বাংলাদেশে যারা দেশপ্রেমের বুলিবাগীশ ও সত্যিকারের দেশপ্রেমিক- এই দু’ভাগের মধে দূরত্ব বাড়বে। নিরবধি ও কালাবধি যে সঞ্চরণশীল; তার উপর বাঁধবন্ধন সে নিজেই তো সইবে না।
ফান্দের বগা ফান্দের বগার জন্য কান্দন থামে না, জেলখানার বন্দীর জন্য চক্ষে পানি আসে না হাওরে হাওর ঘুরে হাছনের হাহাকার, জলে আর ফুটে না গানের অঙ্গার টাঙ্গুয়া হাকালুকি হাহাকার করে- কতো পাখী ডুবে মরে অস্তিত্বের চিক্কুরে বন্দে আলীর কথা মনে পড়ে যায়; শাপলাশৈলী তার ছন্দের বয়ান শুনেছি সঙ্ঘজীবী ডাহুকের শৈশবের সীমানায় জল ফোটে শাপলায় নাকি জলে শাপলা ফুটে এই কথা ভেবে ভেবে ডাহুক মরেছে নাচে নাচে শাপলা নাচে মণিপুরী নাচে বা’হাল ঠমকে নাচুইন লাইনৃত্য ধাঁচে
গোপন পানির স্রোত মাছের মর্তবায় দাঁড়পালে বাঁধা জ্ঞান স্রোতের জিজ্ঞাসায় পানিপূর্ণ হাকালুকি বক পাঠ করে আপনাদেরই প্রণীত আন্তর্জাতিক রামসাইর কনভেশন
শাইর করে উড়ে যায় জালালি কইতর তরফ রাজ্যের দিকে শ্রীহট্ট থেকে
পাখিরাও সংবাদ দেয় হানাদার আসে বগী বলে যায়, ফাঁদ পাতা আছে কোথায় কোথায় ফাঁদ পাতা আছে, জলের শব্দে বগী কুচকাওয়াজ দেখে
টাঙ্গুয়ার হাওয়ার এসে বগার বগলে উষ্ণ ক্লান্তি খানিক জিরায় ঠোঁটে
ঠাহর করে দেখো, বন্দী জল কুচকাওয়াজের কুলকুলধ্বনি ঠাহর করে দেখো, বন্দী জল শ্যাওলা-খাকি আস্তরণে ঢাকা লক্ষ্য করে দেখো, ছেচল্লিশটা হাওর মহাশোল হয়ে চাঁদনী হাছিন রাতে হাছনরাজার কাছে প্রাণভিক্ষা করে প্রতিরক্ষার ঠাহর ঠার আড় ও আড়িপাতা প্রতিবেশে থাকে
যুদ্ধের কোন পরিবেশবাদী তত্ত্ব নাই ধনুক ত্যাজ্য তীর তূণচ্যূত হয়ে বিঁধারবিধান ধনুকের জ্য্যমিতির কাছে নাই অস্ত্র স্বয়ং লক্ষ্যস্থির করে
আমি তো পাহাড়ের দ্রবীভূত হয়ে পড়া দেখি আর দেখি আমার জন্য, আমাকেই নির্বংশ করার জলমঞ্চ দেখছি আমি তো আগামীর যুদ্ধের ফ্রন্ট দেখছি আমি সম্পর্ক সমাপিকা একটি ক্রিয়াপদের কুচকাওয়াজ দেখছি।।
আমি তো আগ্নেয়াশ্রু দেখছি মণিপুর থেকে চীন নেত্রকোণা থেকে কুড়িগ্রাম
নদীর মতো আর্তনাদ করে উঠতে দেখেছি আমি দেখছি পাগলপন্থীদের মিছিল
আমি সম্পর্ক আলোচনা করি, পরিবেশ নয় আমি তীরবিদ্ধ বুনো কাঁঠালকে আমার যুদ্ধের অংশ মনে করি যুদ্ধ করতে করতে হাকালুকি হাওড়ের সব মাছ খেয়ে ফেলি আমি ডলফিনের পিঠে চড়ে সাঁতারের পাঠাভ্যাস গড়ে তুলি আমি আগামীর গজব নয়, এখনই গজব দেখি।।
অচেনা হাজার জলা হাওরে হাওরে হাওয়া হাহাকার করে জলজুড়ি করে হাওয়া শাওনী বাসরে সাজাও হাওয়ার পাল শাপলা সুন্দর নকশা খচিত নাও ঘাটেতে নোঙর বউ সেজে বসে আছে বিকালের বিষাদ হাওরে হাওরে আজ শুধু মনস্তাপ
হাকালুকি হাওর বলে, মানুষেরা আমাদের প্রতিনিধি নয়, ওরা জলে নামে না, জেলে নয় টাঙ্গুয়া হাওর বলে, ঢাকার মানুষেরা ঢেঁপ খায়নি, শাপলা রাঁধে, শাপলার শোভা শুভস্য কাব্য করে টাঙ্গুয়া হাওর বলে, টাঙানো পোস্টারে, প্ল্যাকার্ডে, মিছিলে, ঠাঁয় দাঁড়ানো সমাবেশে, আমারই রুপ রূপকথা মাত্র টাঙ্গুয়া হাওর কয়
টিপাইমুখীন চলো নিজেরাই যাই। নিজের প্রাণের শর্ত নিকারিরা কাটে কাটা ধারা রক্তাক্ত ধড়ফড় করে। ইতিহাসের কাটা কল্লা মাথা ছাড়া মাছ আমারই বুকের খুব কাছাকাছি ফরিয়াদ করে। আমি তো জলের ধারা নি:শর্তে ভিজাই। ধারার ধড়ফড় যারা প্রসবের কালে দেখে নাই মৃত্যুর মুখোশ পড়ে বসে আছি স্রোতরিক্ত বুক হাহাকার করে
টগার হাওর কয়, মাঝে মাঝে মেঘনাও ধীরে বয় অনন্ত অব্যয় কালে পাটায় পুতায় মরিচের ঝাল যেন নিজেই চমকায় হাওয়ার হিয়ায় যতোটা ছড়াই আমি বাসন্তী নিদান আপন অস্তিত্বের বিধান রচে অন্যজনা আদিগন্ত বিকালের ছায়া সূত্রপাত আমি চাই আমারই শাপলা ফোটা নিজস্ব প্রভাত
ফুল হয়ে উঠার রাজনীতি করি। প্রস্ফুটনউন্মুখ ইতিহাসের জন্য একসাথে আত্মস্ফুরণ অধীর।
লঙ্গাই স্টেশনে কিছুক্ষণ লঙ্গাই স্টেশনে এসে ঝিরঝির করে সব জিরানীর দায় ভুলে দাঁড়িয়েই থাকলাম। অবুঝ শিশুর মতো কান্নাকরুণ নয়, চটপটে, জন্ম হলে নাম হয়, নাম হলেই নিন্দা হয়; বেনামী নিন্দায় কিছু আসে যায় না।
স্রোতদের ভাগ থাকে, থাকে ভাই ভগিনী- কলস্বর খরতাল কিংবা থাকে সঙ্গীত সাংকেতিক অপেরা অপর করে যাত্রা। গান হয়ে ভেসে যাই মহিমা আমি কিংবা মনীষা। জম্পাই থেকে লঙ্গাই কোন রেলপথ নাই। শাশ্বত স্বাধীন নদী অন্তর্গত সংকল্পে জম্পাই পাহাড় থেকে জম্পেশ জামাই আদরে আসেন নিজেই বাজিয়ে সানাই এইখানে এই লঙ্গাই স্টেশনে
স্টেশনে আচকান পড়ে মৌজ মেহফিল কবি দাঁড়িয়ে আছেন এতো সুন্দর কবি কেউ দেখেনি আগে কখনো অবোধ তটিনী জানে এইখানে প্রবাহ অভ্যর্থনা সারাংশ সাধন অন্য পথ ধরে, প্রবাহ বলেছে, চোখাচোখি হলে হয় ভক্তের বোধন
এই লঙ্গাই স্টেশনে জলঘড়ি হাতে কবি সময় দেখেন প্রবাহ পরিক্রমণ ঘড়ি কালের সাঁতারের পাঠ বিদ্যাবিমোহিত কবি তটিনীকটির খাঁজে আলগোছে জড়ান অক্ষরের আদি সীমা অতিক্রম করে প্রবাহিনী তোমাকেই দূরে ঠেলে দেয় এটাকেই আমরা বলি বিদ্যামোহিনী হরফবিজ্ঞান ঢেউয়ে ঢেউয়ে উতরোল সাধকের শান কালের কুজন অনুচ্চারিত সম্পর্কের আজান প্রতিধ্বনিময় উষালগ্ন উজান আসে একেবারে কবির পাদদেশে
ভাটি ও উজানের প্রতিরক্ষার পয়গাম এই লঙ্গাই স্টেশনে ভাটি ও উজানের সম্পর্ক বিরচিত এই প্রতিরক্ষার পয়গাম
হাকালুকি হাওরের বুকে রেল ঝকঝক পথে উড়ে যায় আসমানী জালালী কইতর
লঙ্গাই চলে গেছে হাকালুকি হয়ে জুড়ি নদীর কাছে জুড়ি জোড়া লাগে ধারার ধর্ম মেনে কুশিয়ারা সমীপে তার বুক সুরমার শান্তি খুঁজে
আমাদের প্রবাহ প্রকৃতি আমরা উত্তর থেকে দক্ষিণে, পূর্ব থেকে পশ্চিমে প্রবাহিত
হেমন্তে আমারই লহুপয়োধরেম আমারই বুকের ঠিক মাঝখানে জমাট বেঁধেছে আমারই দুখী অশ্রু আকুল জল
সুরমা কুশিয়ারা কালনীর পাড়ে রাজা হাছন লিখে যান অশ্রুর অক্ষরে
আমি তো একা এক কবি লঙ্গাই স্টেশনে ইতিহাসের মেইল ট্রেন আমারই অপেক্ষায় থাকে
এই পথ তিনশ কিলোমিটার ঘুরে বারাকি বারাকির সেই পথ ধরে উজানের ইঞ্জিনে উজানী ভবিষ্যত ভাটি থেকে তুলে আমরাই ইতিহাসের আগামী ভাটিই উজানের সার
কোথাও পঁচানব্বই মাইল জুড়িতে জোড় হয়ে যায় লঙ্গাই ভাটিতে এসেই ইতিহাসের নতুন আকাকিয়ায় প্রবাহের প্রয়োজনে আমাদেরই জন্য শান্ত ধীর, নিটোল শৈশবের দুষ্টুমি ছেড়ে দীর্ঘ পথ পরিক্রমার প্রস্ততি নেয়। আমরাও স্রোত, তোমারই স্রোতের সমীক্ষায় ইতিহাসের প্রধান পরীক্ষক
এই লঙ্গাই থেকে আমি যাবো বিপন্ন সুরমার কাছে এই লঙ্গাই থেকে আমি যাবো আমাদের আগামীর ইতিহাসের কাছে।।
টিপাইমুখ গ্রামে প্রমীলাবিহার চার সহস্র বছর একটু একটু করে কাঁদছি পাহাড়িকা চোখ ফাটে নাই তখনো অশ্রুকন্যারা তখন মাত্র ছুটে ছুটে খুঁজে হয়রান নদী সাগর গর্ভবতী হলো পলিপ্রকরণে এক বিমূর্ত রেখারুমঝুম, নাচুনিনাব্যতায় উদাসী উৎসর্গ করে বুকের মিহিন পলি চারপাশে চোখ ফুটে প্রাণপ্রকৃতির
প্রমীলাকে বলছি, মনে পড়ে জৈন্তার দরবারে ছিলাম একমাত্র চারণ কবি আমার চারুবাক, অক্ষরের জন্য হাহাকার করে উঠা পদ্যময় চারু সুরমাখচিত চোখ আমি লাই নাচে লাস্যময়ী পদ্য হয়ে নিজেই কাব্যময়
এমন সময় কবিতাকালকন্ঠ আমি আপনারই প্রেমে গ্রেফতার করি যজ্ঞের ঘোড়া সে-ই ঘোড়া ফিরে পেতে কুরুক্ষেত্র থেকে অর্জুন ছুটে আসে আমি আপনারই প্রেমে বার বার ফিরে যাই টিপাইমুখে মনে পড়ে, দুরন্ত ঘোড়ার মতো বরাকের ঝরণার মতো আমারই কটিদেশে আপনারই হাত আমাকে পাহাড়ী লতার মতো হিয়াহিন্দোল অঙ্গবিনোদিনী
জৈন্তার পাহাড় থেকে সেই যজ্ঞের ঘোড়া হিঁয়া হিঁয়ো, তাকালাম নীচে অই তো সাগর, আমাদের আগর কাঠের নাও অই তো দেখা যায়, অর্জুনের দূরাপেক্ষিক দূরে অর্জুনের নাও যুধিষ্ঠির সত্য হারায় জৈন্তায় বাংলার ভূমিষ্ঠ হবার সেই সব মুহুর্ত আমরা দেখেছি প্রমীলা একসাথে
না, এটা অর্জুনের নাও নয় গোষ্ঠ জ্ঞানহীন গোপিনী সংস্রবহীন অর্জুন জৈন্তার উপকূলে নাওনিনাদিত ঢেউয়ে আসে নাই আগে চারটি ঘোটক আর চার সেনা পিঠে তার তীর তূণচ্যূত ধনুক বেশী বাঁকে সশস্ত্র সাধনায় তার কেটে গেছে কাল তপোবনে তপস্যার সহস্র বিকাল
সত্য শরমে মুখ ঢেকেছে গোষ্ঠ ঘুম ঘুম পশ্চিমের আকাশ
আমিও যজ্ঞের ঘোড়া নিয়ে ঠিক দাঁড়িয়েছি টিপাইমুখে এসো অর্জুন, পাহাড়ি লতার মতো বহমান ধারায় প্রমীলার সাথে দেখা ভাটিভূমে প্রতিদিন নদীর জনম সাগরের নীরব প্রসব, বাংলার প্রসার, আমরা নেমে গেছি প্রতিটি জন্মের ক্ষণে স্রোতধারা হয়ে নদীর জন্ম হয় ভাটিভূমে ভাটি যতো ভাটি হয় নদী হয় ততো উজানে পাহাড়িকা অশ্রু সদা শাশ্বত।।
শরাবতী নদী করাতের কীর্তনে করাতির সুখ, বৃক্ষের তাজা গুড়া, কোষ করাতসঙ্গত আর্তনাদ, মাঁচায় শায়িত তার কাষ্ঠতণু আমি কাঁদি
আর্তনাদ উতরোল সময় এখন যতো মেঘ চোখের কোণে এই বৃষ্টিবৎসল অসমে গীতল গেরিলা মন শিস দিয়ে যায় মায়াবী কামরুপ-কামাখ্যায়
আমার বাংলার নারী প্রমীলা বিহারের আগে বলেছিলো, যেয়ো জৈন্তিয়ায় যাদুর বাক্স আছে কামাখ্যায়
কুহকী মেঘের ছায়ায় আসাম ঘুমায় ঠাডা পড়া বাজ বাজে কিরাতিয়ায় স্রোতের করাত কাটে ফুলের তোল পুরা ফুলের তোল জলের তলে মিজোরাম –মনিপুর জলের তলে
আসমান থেকে ঘুড়ি বেয়ে বিদ্যুত নামে নৌ গেরিলারা সব বাঁধ কেটে দেয়
রুখে দাঁড়াও আন্তর্জাতিক বাঁধ ব্যবসায়ীদের টিপাইমুখের নীচে ফুলের তলে ব্যরেজ কেটে দাও আটচিল্লিশ বিলিয়ন কিঊবিক মিটার পানি চাই সিলেট, নেত্রকোণা, মৈমনসিঙ্গহের পাঁচ কোটি মানুষ জেগে উঠো এক শত আটচল্লিশ প্রজাতির মাছ বিদ্যুতের টারবাইনে খুন করা হবে পাহাড়ে বেড়াতে যাওয়া ইলিশ আর ফিরে আসবে না
ব্রক্ষ্মপুত্রের উপর একশ আটচল্লিশটি বাঁধ নির্মিত হচ্ছে
সাবধান!! এখনই কুচকাওয়াজের সময় এখনই হরিণের সাথে কুচকাওয়াজ করো এখনই বাঘের সাথে হামাগুড়ি শিখো এখনই হে গেরিলাগণ! পুরাতন ইশতেহার আবার লিখে ফেলো এক প্রাণ প্রকৃতির সম্মিলিত কংগ্রেসে
এখন একা হওয়ার সময় নয়, ঐক্যের সময় এখন কান্নার সময়, অগ্নি অশ্রু কাল, বয়ে যায় এই সব বাঁধ সমুদ্রের ফাঁস এই সব বাঁধ সমুদ্র মন্থনের বাসরঘরের দেয়াল নয় এই সব বাঁধ রাজনীতির বন্ধ্যাত্ব এই সব বাঁধ বিকাশের বিনাশ এই সব বাঁধের বেড়ি পরে মরে যাবে সে-ই পাখী, হরিণের কুচকাওয়াজে মুখর বনজোড়া প্রাণী ও প্রকৃতির পরাণ সুদূর আশ্রমে যাওয়ার আগে, বঙ্গীয় শরণার্থী শিবিরে আসার আগেই আহা! শেষ! আহা! নাই
এই বাঁধ প্রাণের মহাশ্মশান এই বাঁধ তা-ই সমরতান্ত্রিক
উজানে ষোলটি গ্রাম পানির তলায় যাবে মণিপুরে ছিয়ানব্বই গ্রাম বন্যার কবলে কোথায় তোমরা!! আসামে- মনিপুরে-মিজোরামে-সিলেটে-নেত্রকোণার গেরিলা ও পাগলপন্থিরা এসো!! ধনুকের মতো বাঁকানো ভূগোলে কর্পোরেট মণিপুর-মিজোরাম- বাঙ্গালায় ভূ-বিভাগ বিভঙ্গের
আমার জন্ম কোষ পলি চাই আমার পলিপাগল বাংলার প্রাণ চাই।। করাতিয়া রাজ্যে সুরমাও ছিলো শরাবতী শরাফত স্রোত আজ শুকায় যদি তবে আমি প্রাণ দেবো আমি জানি, জানে সবাই, নদী পূণ্যবতী।।
কিরাতিয়া স্বাস্থ্যসুন্দর রোদ, ঘোড় দৌড়, আকাশে তপ্তকুণ্ড প্রস্রবণে গোধূলির গোসল, স্নান যদি সত্য হয় দেহ সত্য নয় স্রোতেরা স্নাত হয় ধারার সত্তায় আকাশের পাহারায় বিজলি আচমকা চমকায় ডানা কাটা সুরে আজ সন্মিলিত সীমানায় কিরাতিয়া রাজ্য জোড়া কুহক কনকনে শীতল মেঘ জালারির ডানায় বরফকুচির কান্না_ এমন ঊড়াউড়া, এমন উড়ন্ত উদাস কাল উজানিয়া হাওয়া নিঃসঙ্গ নিস্তরঙ্গ ডানায় হাওয়া নাই, হিন্দোল নাই, হাহাকারময় আমি এক জালালী কইতর
তপ্তকুণ্ডের স্নান আবেশ আভায় কিছুটা বাষ্পছিটায় এক প্রাগৈতিহাসিক পূর্ণিমায় ইতিহাস ফরজ গোসল সারে
এখন ঘুমের সময় নয়, এখন ওজুর সময় মোনাজাত মহব্বতে ডানার দুন্দভি যেন বাজে যেন ঊড়াল উদ্দাম কাল স্বয়ম্ভু কায়ায় ডানায় ঠিকরায়
এমন রুপরসায়ন দেখিনি কতোকাল তপ্তকুণ্ড প্রস্রবণে গিয়ে আমিই অন্তর্গত অগ্নিকুণ্ড।। কিরাতিয়া টেডিটনটনে প্যণ্টালুনের আগে চল ছিলো না দুইবার দেখা গেলো বেলবটমের আগে ও পড়ে, গোড়ালির কাছে থলথলে পেট
শিবের পঞ্চম সংস্করণ গ্রীবাপিঠে হে মহামতি শিব! আমি সতী সাহর্চযেই আছি। সাঁতারকূলে জন্ম আমার। শরাবতী সুরমার পানি ধুয়ে দেয় পাপ। আমি পবিত্র হয়ে পৃথিবীর গ্রীবাপিঠে তিল হয়ে থাকি। অমর নিয়েছে স্বাদ মরণের। একান্ন পীঠের পাঠে মনোযোগী আমি। গ্রীবাপিঠে হে মহামতি শিব, আমি প্রাণ প্রদায়ক হয়ে আপনারই মতো ঘোর ঘোর ঘুমঘুম। একটিই নাচ আমায় শিখিয়েছেন। প্রলয়প্লাবনিকা নাচ যবনিকাহীন। সিলট’র গ্রীবাপীঠে আজ আবারো একান্ন খণ্ড সীতার সংসার। আবারো বিষ্ণুচক্র তাণ্ডব তল্লাটে আমাদের উত্থিত হাতেরই অপেক্ষায় থাকে।
গ্রীবা পড়েছিলো খাদিম নগরে বাম জঙ্ঘা পড়েছিলো জৈন্তায়
অমর আরণ্যক ভাটিভূমে স্রোত হয়ে বঙ্গজ পংকজ পদ্ম হয়ে নিজেরে ভাসায় হায়! আমি তো আছি গ্রীবাপীঠে ইতিহাসের খাদিম
মনুর হাওয়ায় জালালি কইতর উড়ে প্রবাহ পবিত্র হয় কুসুমিত ঊর্মির ঊর্ণি খসে গেলে শিবানীসত্য নাচে প্রাণপুষ্ট হলে মাছের মন্দিরে স্বাক্ষীর সম্মানে অতলে অটল শৈল বিছানায় স্রোতের সাথে একপশলা গড়াগড়ি খেলে
হে মহামতি শিব! সাঁতারকূলে জন্ম আমার। গাঙকূলে বাড়ি। কলসকলকল জল আর নদীর কংকালে নাই। সতী ও সঙ্গগোপনে আমারই সতীর্থ। অভাগার রাই। হরিপুর। মনু। জাহ্নবী জলান্ধ হলে নদী একা কাঁদে। আমি তো পুরাদস্তর মোহনার সঞ্চয়িতা। কখনো মাটির কলসি, কখনো আকাশী আগুন।

 

 

 

 

 

Loading


মন্তব্য দেখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *