বন্ধুত্ব দেশের সাথে, সরকারের সাথে নয়

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ বা রাষ্ট্র ভূখণ্ড ও জনগণ সমন্বয়ে গঠিত। একটি দেশকে অবশ্যই স্বাধীন ও সার্বভৌম হতে হয়। দেশ পরিচালনার জন্য প্রয়োজন সরকার। দেশ অপরিবর্তনশীল; অপর দিকে সরকার পরিবর্তনশীল। পৃথিবীর উন্নত ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে দেখা যায়, সরকারের পরিবর্তন ঘটলেও সরকারের পররাষ্ট্র বা বিদেশনীতির পরিবর্তন ঘটে না। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব লাভ করে। গণতন্ত্রের বিপরীত একনায়কতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায়ও সরকার পরিচালনার জন্য জনসমর্থনের প্রয়োজন রয়েছে। সাম্যবাদী মতবাদে বিশ্বাসী দেশগুলোতেও নিয়ন্ত্রিত গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে দল কর্তৃক মনোনীত প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়ে সরকার পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়।
এশিয়া মহাদেশের রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে একমাত্র চীন ভেটো ক্ষমতাসম্পন্ন জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য। চীন একটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। চীনের মতো জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের অপর চার স্থায়ী সদস্য যথা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও রাশিয়াও পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদবহির্ভূত যে দু’টি দেশ পারমাণবিক শক্তিধর, সেগুলো হলো আমাদের উপমহাদেশভুক্ত ভারত ও পাকিস্তান। ভারতবর্ষ বিভাজনের মধ্য দিয়ে ১৯৪৭ সালে সম্পূর্ণ ধর্মীয় জাতিসত্তার ভিত্তিতে ভারত ও পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টি। পাকিস্তান এখনো ধর্মীয় জাতিসত্তা নীতি প্রশ্নে অটল থাকলেও ভারত এ নীতি থেকে বিচ্যুত হয়ে ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তি ও স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় জাতিগত জাতিসত্তার ভিত্তিতে আমাদের মুক্তি ও স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি প্রত্যক্ষ সমর্থন ব্যক্ত করে। সে নিরিখে বলা যায়, ভারত রাষ্ট্র হিসেবে ধর্মীয় ও জাতিগত জাতিসত্তা উভয় নীতির প্রবক্তা। বাংলাদেশ বাঙালি জাতিভুক্ত মুসলিম ও হিন্দু ধর্মাবলম্বী জনগোষ্ঠী সমন্বয়ে গঠিত একটি একক দেশ, যদিও এ দেশটিতে বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী কিছু ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
বাংলাদেশের মুক্তি ও স্বাধীনতা সংগ্রাম চলাকালীন বিশ্ব পরাশক্তি চীন পাকিস্তানের পক্ষে তার অবস্থান ব্যক্ত করে। অপর দিকে আঞ্চলিক পরাশক্তি ভারতের অবস্থান ছিল বাংলাদেশের মুক্তি ও স্বাধীনতাকামীদের সপক্ষে। বাংলাদেশের মুক্তি ও স্বাধীনতা সংগ্রামকে কেন্দ্র করে ১৯৭১ সালের ৩-১৬ ডিসেম্বর অবধি পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধ চলাকালীন ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ ভারত বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, যদিও ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ পাকিস্তান বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে পাকিস্তানের শাসনের অবসান ঘটে। ভারত কর্তৃক বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান-পরবর্তী চীন, সৌদি আরব ও পাকিস্তান ছাড়া পৃথিবীর অপরাপর রাষ্ট্র দ্রুত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। পাকিস্তান বাংলাদেশকে ১৯৭৪ সালে স্বীকৃতি দিলেও সৌদি আরব ও চীন ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট-পরবর্তী বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়।
পাকিস্তান রাষ্ট্রটি সৃষ্টির পর ’৫০-এর দশকের মাঝামাঝি চীনের সাথে পাকিস্তানের সম্পর্ক নিবিড় হতে শুরু করে, যা অদ্যাবধি অুণœ আছে। ব্রিটিশ কর্তৃক ভারতবর্ষ বিভাজনকালীন চীন মাও সে তুংয়ের নেতৃত্বে জাতীয় বিপ্লবে নিয়োজিত থাকাকালীন ১৯৪৮ সালে চীনের জাতীয় বিপ্লব সফলতা পায়। চীনের দাবি, ভারতবর্ষ বিভাজনকালীন ব্রিটিশরা তিব্বতের পশ্চিমাংশের অন্তর্ভুক্ত লাদাখ অঞ্চলকে ভারতভুক্ত কাশ্মিরের অন্তর্ভুক্ত দেখায় এবং তিব্বতের পূর্বাংশ অরুণাচলকে ভারতের অন্তর্ভুক্ত দেখায়। ১৯৬২ সালে চীনের সাথে ভারতের সীমানা যুদ্ধ সংঘটনকালীন চীন কাশ্মিরের লাদাখের বর্তমানে আকসাই চীন নামে অভিহিত অংশটি এবং অরুণাচল দখল করে নেয়। চীন কর্তৃক একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতি ঘোষণাকালীন চীন আকসাই চীনের দখল ধরে রাখলেও কোনো এক অজানা কারণে অরুণাচলের দখল ছেড়ে দেয়, যদিও অরুণাচলের ওপর চীনের দাবি অদ্যাবধি অক্ষুণ্ণ রয়েছে।
ভারত ও পাকিস্তান ব্রিটিশ কর্তৃক স্বাধীনতা প্রদান-পরবর্তী চারটি যুদ্ধে লিপ্ত হয়। ১৯৪৭ ও ১৯৪৮ সালে অনুষ্ঠিত যুদ্ধটি কাশ্মিরকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হয়েছিল। ১৯৬৫ সালে ভারতের সাথে পাকিস্তানের পশ্চিম অংশের সব সীমান্তে এবং কাশ্মিরের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর যুদ্ধ সংঘটিত হয়। ১৯৭১ সালে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধটি বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হয়েছিল। ১৯৯৮ সালে কাশ্মিরের কারগিল সীমান্তে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে একটি সীমিত যুদ্ধ সংঘটিত হয়। পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সংঘটিত চারটি যুদ্ধের সব ক’টির তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে পরিসমাপ্তি ঘটে। পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে সংঘটিত উপরিউক্ত চারটি যুদ্ধ থেকে যে ধারণা পাওয়া যায়, তাতে অনুমান করা যায়, যেকোনো প্রচলিত যুদ্ধে দেশ দু’টির কোনোটির পক্ষেই চূড়ান্ত বিজয় সম্ভব নয়। উভয় দেশ পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হওয়ায় যেকোনো একটি দেশ এটি ব্যবহার করলে তা যে উভয় দেশের জন্য মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনবে, সে বিষয়ে উভয় দেশের নেতৃবৃন্দ সজাগ থাকলেও ব্যবহারের আশঙ্কা থেকে কোনো দেশ মুক্ত নয়।
বাংলাদেশের মুক্তি ও স্বাধীনতা সংগ্রাম চলাকালীন ভারতে কংগ্রেস ক্ষমতাসীন ছিল। বাংলাদেশের মুক্তি ও স্বাধীনতা সংগ্রাম ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে পরিচালিত হয়েছিল। এ কারণে ভারতের কংগ্রেস ও বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের মধ্যে একটি আস্থার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ভারতের কংগ্রেস দলের কিছু নেতৃবৃন্দের মধ্যে বদ্ধমূল ধারণা রয়েছে যে, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন থাকলে যেভাবে ভারতের স্বার্থ সংরক্ষিত হবে, অন্য যেকোনো দলের দ্বারা তা সম্ভব নয়।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বাংলাদেশে দশম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় ভারতে কংগ্রেস রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিল। ওই নির্বাচনের অব্যবহিত আগে ভারতের তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব একটি বিশেষ বিমানযোগে ঝটিকা সফরে ঢাকায় এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং জাতীয় পার্টিপ্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সাথে সাক্ষাৎ করেন। সে নির্বাচনটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অবসানের কারণে যখন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোটের বর্জনের হুমকির মধ্যে ছিল, তখন দেখা গেল ভারতের পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিং এরশাদকে অনুযোগের সাথে বলেনÑ তার দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে বিএনপি-জামায়াতের নেতৃত্বে এ দেশে ধর্মীয় উগ্রবাদের উত্থান ঘটবে। দশম সংসদ নির্বাচনটি যে সংবিধানের অনুচ্ছেদ নম্বর ৬৫(২)-এ বর্ণিত পন্থায় অনুষ্ঠিত হয়নি, সে বিষয়ে দেশবাসী সম্যক অবহিত। দশম সংসদ নির্বাচনে ভারতের তৎকালীন ক্ষমতাসীন কংগ্রেস সরকার যেভাবে এ দেশের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে পুনঃক্ষমতায় আসার ব্যাপারে সমর্থন জুগিয়েছিল, ইতঃপূর্বে কংগ্রেস ক্ষমতাসীন থাকাবস্থায় তৃতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় এরশাদ নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির প্রতি অনুরূপ সমর্থন ব্যক্ত করে সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিশ্চিত বিজয় নস্যাৎ করে জাতীয় পার্টির বিজয়কে সম্ভব করে তুলেছিল। ভারতের কংগ্রেস বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে তার নিজ দেশের জন্য যতটুকু আস্থাভাজন মনে করে, এ দেশের অন্য কোনো রাজনৈতিক দল বিশেষত বিএনপির প্রতি দলটির সে আস্থা নেই।
১৯৫০-এর দশকের মাঝামাঝি-পরবর্তী পাকিস্তানে বিভিন্ন সময় বেসামরিক ও সামরিক সরকার ক্ষমতাসীন থাকলেও দেশটির প্রতি চীনের অকুণ্ঠ সমর্থন ছিল। সে সমর্থনে কখনো ছেদ বা ভাটা পড়েনি। সে সমর্থনের কারণে দেখা গেল পাকিস্তান-চীন সংযোগ করিডোরের মধ্যে রেল ও সড়ক যোগাযোগ, জ্বালানি-নির্ভর বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং গোয়াদর গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে পাকিস্তানে চীনের প্রতিশ্রুত বিনিয়োগকৃত অর্থের পরিমাণ ৪৬ বিলিয়ন ডলার অতিক্রমের পথে। পাকিস্তানে চীনের এ বিনিয়োগ সম্পন্ন হলে তা পাকিস্তানের ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও গড় জাতীয় আয় বৃদ্ধিতে অশেষ অবদান রাখবে। যেকোনো কারণে পাকিস্তানের বর্তমান গণতান্ত্রিক ধারা ও স্থিতিশীলতা বিপন্ন হলে চীনের বিনিয়োগ যে হুমকির মধ্যে পড়ে চীন অর্থনৈতিকভাবে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হবে, সে বিষয়টি মাথায় রেখে চীন পাকিস্তানের যেকোনো সঙ্কটে তার পাশে থাকার অবস্থান ব্যক্ত করে আসছে। পাকিস্তান বিষয়ে চীনের বর্তমান এ অবস্থান নিঃসন্দেহে পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা অক্ষুণ্ণ রাখা ও স্থিতিশীলতার জন্য সহায়ক।
ভারত বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্পে ২ বিলিয়ন ডলার ঋণসহায়তার যে প্রস্তাব দিয়েছে, খোদ ভারতের অনেক অর্থনীতিবিদের অভিমত, ভারতের এ ঋণপ্রস্তাব যতটুকু না বাংলাদেশের জন্য অনুকূল, তার চেয়ে অধিক ভারতের অনুকূল। ভারতের এ ঋণপ্রস্তাব বাস্তবায়নাধীন থাকাবস্থায় গত ১৪ অক্টোবর ২০১৬ চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং দুই দিনের সফরে ঢাকায় এলে বাংলাদেশের সাথে দেশটির সরকারি ও বেসরকারিভাবে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক প্রকল্প সংশ্লেষে যথাক্রমে ২৪ ও ১৩ বিলিয়ন ডলারের ঋণচুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। বাংলাদেশ অভ্যুদয়-পরবর্তী কোনো একক রাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশের জন্য এটি সর্ববৃহৎ ঋণপ্রস্তাব। এ ঋণপ্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নয়নসহ বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এর ফলে এক দিকে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ঊর্ধ্বমুখী হবে, অপর দিকে গড় জাতীয় আয়ের দ্রুত বৃদ্ধি ঘটবে। এ বিনিয়োগের সাথে চীনের অর্থনীতি সংশ্লিষ্ট থাকায় এ বিনিয়োগ যেন নিরাপদ থাকে, সে বিষয়ে দেশটির সচেষ্টতার কারণে আশা করা যায়, এ বিনিয়োগ এ দেশে প্রকৃত গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় এবং স্থিতিশীলতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
বাংলাদেশ একটি অপার সম্ভাবনার দেশ। একটি একক জাতি সমন্বয়ে বাংলাদেশের মতো সমজাতীয় দেশ এ পৃথিবীতে বিরল। বিভিন্ন সময়ে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ার কারণে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হয়েছে, যা বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা ব্যাহত করেছে। বাংলাদেশের জনগণ আশা করে, চীন যেমন বাংলাদেশের কোনো নির্দিষ্ট ক্ষমতাসীন সরকারকে বন্ধু না ভেবে দেশটিকে বন্ধু ভেবে সহযোগিতার অপার দুয়ার উন্মুক্ত করেছে, আমাদের একান্ত নিকট প্রতিবেশী ভারতের কাছ থেকে আমাদের কোনো নির্দিষ্ট সরকার নয়, দেশটি যদি অনুরূপ সহায়তা পায়, সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রকৃত গণতন্ত্র ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হবে, যা প্রকারান্তরে দেশটির উন্নয়ন, সমৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রার সহায়ক হবে।

পূর্ব প্রকাশিত : নয়া দিগন্ত

Comments are closed.