আল্লামা আহমদ শফি এবং তেঁতুল বাদীদের তেঁতুল তত্ত্ব

(লেখাটি অন্য একটি ব্লগে জৈনক নব্য মুফতির লেখার উপর আমার একটি মন্তব্য)

যে দেশে সংসদে মহিলা সদস্য যে নোংরা,কুৎসিত,অশ্রাব্য,অসভ্য,অশ্লীল, হিংস্র, জঘন্য,শিষ্টাচার বর্জিত,বাংলাদেশের জাতীয় সংস্কৃতি বিরোধী বক্তব্য বৈধতা দেওয়া হয়,সেখানে আল্লামা আহমদ শফি সাহেব নারীদের অবস্থা উপমা দিয়ে বুঝাতে গিয়ে বলেছিলেন যে,তেঁতুল যেমন টক,তেঁতুল দেখলে যেমন জিহ্বায় পানি এসে যায়।তেমনি নারীরাও হল তেঁতুলের মত।তারা যখন বেপর্দা বের হয়,তখন পুরুষরাও তাদের দিকে লোলুপ দৃষ্টি তে তাকায়,তাদের জিহ্বায় পানি এসে যায়,এসব বলায়ে আল্লামা আহমদ শফি সাহেব মহাভারত অশুদ্ধ করে ফেলেছেন।অথচ ভিডিওটা ৬বা ৭ বছর আগের।তাও ভিডিওটা ঘরোয়া পরিবেশে বসা একটা ওয়াজের ভিডিও।সেখানে আল্লামা শফী সাহেব ফাইভ পাশের কথা বলেছেন,যদিও উনার বক্তব্য বর্তমান বাস্তবতা বিবর্জিত।কিন্তু আল্লামা শফি সাহেব নারীদের প্রতি উনার অবস্থান হেফাজত ইসলামের ১৩দফার মাঝে ব্যাপারটা ক্লিয়ার করেছেন।তবুও আজ এতো বছর পর গুটিকয়েক মানুষ সেইটা নিয়া লাফালাফি করা শুরু করছে।যখন হরহামেশা টিভি মিডিয়াতে নারীকে অবমাননা করা তখন কোথায় থাকে এসব জ্ঞান পাপী,প্রগতিশীল,নারী বাদী নেতৃতিরা।যখন টিভিতে বিজ্ঞাপনে বলা হয়-“ফেমিকন, যেনও কাশফুলের নরম ছোঁয়া,তখন তা অশ্লীল হয় না।যখন টিভিতে বিজ্ঞাপনে মেয়েকে দিয়ে বলানো হয়-“আমি লাইগেশন করিয়েছি, আপনিও করুন”,তখন তা অশ্লীল হয় না।যখন টিভিতে বিজ্ঞাপনে বলা হয়-“আমি ভ্যাসেকটমি করিয়েছি, আপনিও করুন”,তখন তা অশ্লীল হয় না।যখন টিভিতে দেখানো হয়,সাস্থ্যকর্মী আপা গিয়ে গ্রামের অল্প শিক্ষিত মেয়েকে বোঝাচ্ছে কোন কোন পদ্ধতিতে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করতে হয়,কিভাবে করতে হয়,তখন তা অশ্লীল হয় না।সিনেমাতে যখন দেখানো হয়,কোন মেয়েকে সন্ত্রাসীরা অপহরণ করে,অতঃপর ধর্ষণ করে,তখন এই দৃশ্য আর মেয়ের আহ: উহঃ শব্দ অশ্লীল হয় না।সিনেমায় নায়িকার গায়ের উপর নায়কের শুয়ে পড়ার দৃশ্য অশ্লীল না।বোটানিক্যাল গার্ডেন আর বলদা গার্ডেনে যা হয়,তা অশ্লীল না।ঢাবি’র টিএসসিতে যা হয়,তা অশ্লীল না।যখন ছাত্রলীগ ক্যাডার ধর্ষণের সেঞ্চুরি করে মিষ্টি বিতরণ করেছিল তখন নারীদের সম্মান হানী হয় নাই ?যখন পরিমলের মত শিক্ষকেরা ছাত্রীদের সম্ভ্রম কেড়ে নেয় তখন নারীদের সম্মান হানী হয় না?মহিলা হোস্টেলে যখন অসংখ্য ছাত্রী নেতাদের খাদ্যে পরিণত হয় তখন নারীদের সম্মান হানী হয় নাই? হুমায়ন আজাদ যখন গর্ভবতী নারীদের কে গর্ভবতী পশুর সাথে তুলনা করেছিলো তখন কি নারীদের সম্মান হানী হয় নাই।কাজী নজরুল ইসলাম”নারীকে”কত বড় লোভী হিসেবে প্রকাশ করেছেন। কিন্তু কোন নারী প্রেমিক আজ পর্যন্ত এটা নিয়ে প্রতিবাদ করেছে?কেউ কি নজরুলের লেখা বাতিল ঘোষণা করেছে? “মায়াবন বিহারিণী হরিণী”রবীন্দ্রনাথ এর একটা গানের কথা।নারীকে হরিণের সাথে তুলনা করেছে,এতে রবী জাত যায়নি।বাংলা সাহিত্যে সবচেয়ে উপমা দেয়ার জন্য বিখ্যাত হলেন জীবনানন্দ দাস। অজস্র কবিতায় নারীকে তিনি বিভিন্ন উপমা দিয়েছেন “পাখির নীড়ের মত চোখ তুলে নাটোরের বনলতা সেন”এখানে নারীর চোখের সাথে পাখির নীড়ের তুলনা করা হয় নাই,একজন পূর্ণ নারীকে তুলনা করা হয়েছে।পাখির নীড় যেমন পাখির কাছে শান্ত,মমতা পূর্ণ আশ্রয় কেন্দ্র,তেমনি বনলতা সেন কবির কাছে ছিলো শান্ত মমতা পূর্ণ আশ্রয় কেন্দ্র।এখানে নারীকে পাখির বাসার সাথে তুলনা করা হয়েছে এতে জাত যায় নাই।এমন কি জীবনানন্দ নারীকে বাঁশ ঝাড়ের সাথে তুলনা করেছিলেন।পৃথিবীর অন্যতম বিখ্যাত লেখক ডেল কার্নেগী নারীকে কাঁঠালের রসের সাথে তুলনা করেছে। এ নিয়ে কেউ হাসাহাসি করে নাই।”কাঁঠালের রস যেমন মিষ্টি নারীও তেমনি মিষ্টি কিন্তু তাকে খেতে গেলে হাতে যে আগে সাবধান হতে হয়-ডেল কার্নেগী”।আর যখন আল্লামা আহমদ শফি নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও তাদের  প্রাপ্য অধিকার,মর্যাদার রক্ষায়ে চেষ্টা লিপ্ত তখন যারা দেশজুড়ে ভয়াবহ ধর্ষণ মিছিলের ব্যাপারে মুখে তালা লাগিয়ে নিজেদেরকে নব্য আলেম,মুফতি, কথিত মুসলিম নাম দারি মহিলাদের নেতৃত্বি দাবি করে জ্ঞানী সুলভ ‘ভাব ধরে’ এদেশের ধর্ম প্রাণ মুসলমানদের অষ্টপ্রহর জ্ঞান দিয়ে,নিজেদের কলমকে ধনুকের তীর বানিয়ে,নিজেদের মেধা ও শক্তির সবটুকু একত্র করে আফ্রিকার হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছে আল্লামা আহমদ শফী সাহেবের উপর।যেখানে যার যতটুকু সাধ্য আছে,যার চোয়াল ও কলমে যদ্দূর কুলায় তা দিয়ে আল্লামা আহমদ শফী ওপর প্রতিনিয়ত ঢেলে দিচ্ছে বিষ,বিষোদ্গার,ঘৃণা।আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে তারা যাচ্ছেতাই ভাষায়, কুৎসিত অঙ্গভঙ্গিসহ সব প্রতিহিংসা উগড়ে দিচ্ছে আল্লামা আহমদ শফি ওপর।হিতাহিত জ্ঞানশূন্য অন্ধ বধির পশুর মতো ফাঁকা মাঠে গোল দেয়ার নৃশংস মচ্ছবে মেতে উঠেছে এরা।আর এসব প্রগতিশীলতার ভারিক্কিতে নুয়ে পড়া এসব দলদাস নব্য আলেম,মুফতি,কথিত মুসলিম নাম দারি মহিলাদের নেতৃত্বি দাবি কারি বোঝার ক্ষমতা নেই যে,বার আউলয়িা,শাহজালাল, শাহপরান মত আলেম ওলামা পীর ফকির সুফিদের বয়েৎ মেনেই দাঁড়িয়েছে এদেশে ইসলাম।ইউরোপীয় ঢঙে ধর্মের পর্যালোচনা,বস্তুবাদী দর্শনের আলোকে আমাদের এখনকার চিন্তা কাঠামো, দার্শনিকতাকে স্রেফ ভাববাদী ট্যাগ দিয়ে চর্চাকারি হাত ধরে ইসলাম আসেনি। জ্ঞানের বাহাদুরি করে শ্রদ্ধেয় আলেম,ওলামা দের  টিটকারি(জৈনক আল্লামা) করা বরং নাস্তিক,মুনাফিক দৃষ্টিভঙ্গিকেই জায়েজ করা হবে।

তথ্য আহরণঃ ফেবু এবং ব্লগে করা বিভিন্ন মন্তব্য।

Loading


Comments

আল্লামা আহমদ শফি এবং তেঁতুল বাদীদের তেঁতুল তত্ত্ব — 2 Comments

  1. কথিত ভিডিও ক্লিপসের ওয়াজে নারী, তেঁতুল ও লালা বিষয়ে হেফাজত আমির আল্লামা আহমদ শাহ শফীর বক্তব্যকে কেন্দ্র করে রবিবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সংসদ।

    ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যরা বক্তব্যে আল্লামা শফীকে ‘আচ্ছা’ ধোলাই করেন। ভিডিও ক্লিপসের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে আল্লামা শফীকে ক্ষমা চাওয়ার আহবান জানান তারা।

    তবে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা আল্লামা শফীর পক্ষে অবস্থান নিয়ে জোরাল বক্তব্য তুলে ধরেন। সৈয়দা আসিফা আশরাফী পাপিয়া বলেন, ‘মিডিয়া ক্যুর মাধ্যমে আল্লামা শফীর বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে। বক্তব্য বিকৃত করে মূলত তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।’

  2. ঠিক লিখেছেন। ভাল লেগেছে তবে ঐ সব জ্ঞানপাপীদেরকে কি বলবেন ওরা কোন দিন হেদায়েত প্রাপ্ত হবে বলে মনে হয়না। এদের একমাত্র উদ্দেশ্য কিভাবে মানুষকে বিভ্রান্ত করা যায় এবং ইসলামী আদর্শের অনুসারীদের চরিত্র হনন করা যায়।

মন্তব্য দেখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *