বৈশাখ উদযাপন পূজাও নয়, ইবাদতও নয়

শেরেবাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হককে মনে করা হতো বাঙালিয়ানার মুরুব্বি। আরো মনে করা হতো তিনি আপাদমস্তক মুসলমান। শেরেবাংলা নিজে দাবি করতেনÑ তিনি শত ভাগ বাঙালি, শত ভাগ মুসলমান। বাঙালিয়ানার সাথে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান হওয়ার সাথে কোনো দ্বন্দ্ব-সঙ্ঘাত নেই; যেমন নেই বাংলাদেশী হওয়ার মধ্যেও। ধর্মীয় পরিচয়ের সাথে বাঙালিয়ানার নৃতাত্ত্বিক পরিচয়ের দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করেছেন মূলত ক’জন পশ্চিমবঙ্গীয় ও কলকাতাকেন্দ্রিক লেখক। এ তালিকায় ক’জন অমুসলিম লেখক মগজ ধোলাই করে বোঝাতে চেয়েছেনÑ বাঙালিয়ানা আর হিন্দুত্ববাদ অভিন্ন। বাঙালি হলে তার ধর্মনিষ্ঠ মুসলমান হওয়ার সুযোগ নেই। এ বক্তব্যের পক্ষে তথ্য-উপাত্ত দিতে শরৎ-বঙ্কিমসহ অনেকের নাম বলা সম্ভব। কোনো বাঙালি মুসলিম লেখক এ ধরনের অপকর্ম করেননি। বরং ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠিত বাঙালি মুসলিম লেখকেরা নৃতাত্ত্বিক পরিচয়কে ধর্মীয় পরিচিতির সাথে গুলিয়ে না ফেলার জন্য বারবার সতর্ক করে দিয়েছেন। কলকাতায় এক সময় ‘বাঙালি’ এবং ‘মুসলমানের’ মধ্যে ফুটবল খেলার নজির ছিল। বাংলাদেশের কোনো আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখ কখনো মাতৃভাষার মর্যাদা সমুন্নত রাখার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন, এমন কোনো প্রমাণ নেই। হিন্দু মুনি-ঋষিদের বিরুদ্ধেও কোনো অভিযোগ ওঠেনি। তবে একটা সময় পর্যন্ত এই মুল্লুকে বাংলার সাথে উর্দু, ফারসি, আরবি ভাষা চর্চার প্রচলন ছিল। সেটি হিন্দু-বৌদ্ধ-মুসলিম নির্বিশেষেই প্রচলিত ছিল। আরবির প্রতি যেকোনো ভাষী মুসলমানের সম্পর্ক নিবিড়। এটি আরবের ভাষা হওয়ার জন্য নয়, কুরআনের ভাষা হওয়ার কারণে। একসময় ফার্সি রাষ্ট্রভাষা হওয়ার কারণে ভারতজুড়ে ফার্সি ছিল রাষ্ট্রাচার ও আদালতের ভাষা। এখনো ভূমি ব্যবস্থাপনাসহ বিচারিক ভাষায় ফার্সি শব্দের বহুল প্রচলন রয়েছে। রাজভাষা হিসেবে ইংরেজির মতো ফার্সি ভাষা গ্রহণের ক্ষেত্রেও হিন্দু সম্প্রদায় অগ্রগামী ছিলÑ এ বাস্তব সত্যটি মানতেই হবে।
জানা কথা সব বাঙালির সার্বভৌম দেশ বা রাষ্ট্র নেই। সাবেক পূর্ব বাংলার বাঙালি মুসলিম গরিষ্ঠ মানুষের সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশ। এর নাম বাঙালি দেশ নয়, বাংলাদেশ। আবহমানকাল থেকে এই দেশে সব ধর্মের মানুষের শান্তিপূর্ণ বসবাস যেমন নিশ্চিত করা হয়েছে, তেমনি সব নৃতাত্ত্বিক পরিচয়বাহী ুদ্র নৃগোষ্ঠীর নাগরিকত্বও নিশ্চিত রয়েছে। আমরা তাদের ভাষা, সংস্কৃতি, নিজ নিজ ধর্মীয় ও লোকজ বৈশিষ্ট্যকে সম্মানের সাথে সংরক্ষণের পক্ষে। ধর্মীয় পরিচয় বিশ্বাসবিধৌত। এটি বিশ্বাস পরিবর্তনের সাথে সাথে পাল্টে যায়। কিন্তু নৃতাত্ত্বিক পরিচয় পাল্টানো যায় না। তাই কাউকে বাঙালি হয়ে যেতে বলার মধ্যে বুদ্ধির প্রতিবন্ধিত্বই ফুটে ওঠে। আবার বাঙালিত্ব খারিজ করে দেয়ার এখতিয়ারও কারো নেই।
বাঙালি মুসলমান এই দেশে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ, এই নিয়ে কারো চোখ টাটানোর কিছু নেই। পশ্চিমবঙ্গ হিন্দুপ্রধানÑ এতেও কারো বলার মতো কিছু থাকার কথা নয়। পূর্ব বাংলার মাটির বৈশিষ্ট্যই অসাম্প্রদায়িক। বিশেষ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে জন্ম নিয়েও অসাম্প্রদায়িক থাকার মাঝেই এই জাতিরাষ্ট্রের নাগরিকেরা স্বকীয় বৈশিষ্ট্যের সারবত্তা খুঁজে পায়। আজ পর্যন্ত এই তল্লাটে কোনো আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখ, দ্বীনদার বুদ্ধিজীবী বা প্র্যাকটিসিং মুসলমানকে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পের ভেতর অবগাহন করতে দেখতে পাইনি আমরা। কারণ তারা ভালো করে জানেনÑ বিশ্বাসী হওয়া না হওয়া, হেদায়েত পাওয়া না পাওয়া কোনো ব্যক্তির ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে না। আল্লাহ যাকে হেদায়েত দেন তিনিই হেদায়েত বা সঠিক পথের দিশা পান। তা ছাড়া কোনো মুসলিম দারোগা-পুলিশের মতো জোর জবরদস্তির আশ্রয় নেয়ার এখতিয়ার রাখে না। অন্যের উপাসনালয়কে সম্মান করা, সমীহ করা, সেটির মর্যাদা রক্ষা করা ধার্মিকতারই অংশ। হিন্দু আর হিন্দুত্ববাদও এক বিষয় নয়। যেমন এক বিষয় নয় ইহুদি এবং ইহুদিবাদ। কোনো হিন্দু মুনি ঋষি, সাধু-সন্ন্যাসীও অন্য ধর্মকে আক্রমণ করে বক্তব্য দেন না। তারাও বিশ্বাস করেন যে, হিন্দু হয়ে জন্ম নেয়, হিন্দু বানানো যায় না। ধর্মান্তর ইসলাম ও খ্রিষ্টান ধর্মে রীতিসিদ্ধ। হিন্দু ও ইহুদি ধর্মে সিদ্ধ নয়। হালে ভারতে মানুষের মর্যাদা পশুর নিচে নামিয়ে দেয়ার জন্য হিন্দুত্ববাদের যে বাড়াবাড়ি, সেটি সনাতন ধর্মের সাথে খাপ খায় না। ইসলামের নামে বাড়াবাড়িও সমর্থনযোগ্য নয়। বর্ণবাদ ও বর্ণপ্রথা মানুষেরই সৃষ্টি, বিধাতার নয়।
মুসলিমপ্রধান অনেক দেশে নববর্ষ বা বর্ষবরণ কমপক্ষে তিনটি। হিজরি সনের সাথে ইসলামের বেশ কিছু আনুষ্ঠানিকতা জড়িত। যেমন রোজা, ঈদ, হজ, কোরবানি। আবার অনেক দেশে স্থানীয়ভাবে কোনো কোনো লোকজ ঐতিহ্যবাহী সন-তারিখ প্রচলিত রয়েছে। যেমন পারস্যে ও বাংলায় রয়েছে ফারসি ও বাংলা সন। আবার অফিস-আদালত ও আন্তর্জাতিক লেনদেনে ইংরেজি সাল প্রচলিত রয়েছে। একই সাথে এই তিন রূপের মতো রূপময়তাই অনেক দেশের বাস্তবতা। এর ভেতর সাংঘর্ষিকতার গন্ধ শোঁকা অর্থহীন। যারা তা খুঁজতে যান তারা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী, জ্ঞানপাপী ও মতলববাজ।
পয়লা বৈশাখ বাংলা পঞ্জিকা মতে বছরের প্রথম দিন। বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গসহ আশপাশের কিছু রাজ্যে বাঙালির লোকজ উৎসব হিসেবে এটি পালিত হয়েছে অতীত থেকে। ঋতুনির্ভর কৃষিকাজের জন্য এমন লাগসই একটি পঞ্জিকা বা ক্যালেন্ডারের তাগিদ ছিল মুঘল শাসকদের। এর সাথে সৌর কিংবা চান্দ্র সনের বিরোধ নেই, বরং রয়েছে সুন্দর সমন্বয়। তাই পয়লা বৈশাখকেন্দ্রিক সব লোকজ উৎসব গ্রামকেন্দ্রিক; কৃষি ও কৃষকের জীবনভিত্তিক। নগর জীবনে আজকাল নববর্ষ পালনের একটা তাড়না পরিলক্ষিত হয়। এটি একসময় ছিল না। ফসলি সন হিসেবে সম্রাট আকবর প্রবর্তিত বাংলা সন ষোলো আনা কৃষি ও খাজনার লেনদেনের হালখাতার সাথে জড়িত। এখন নগর সভ্যতায় এটিকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে বহুজাতিক কোম্পানি। নগরকেন্দ্রিক জীবনের মধ্যে যে একঘেঁয়েমি রয়েছে, সেটি দূর করতে এ ধরনের বিনোদনের জোগান দেয়াকে নির্দোষ ভাবতে অসুবিধা কোথায়? সমস্যাটা হলো, বস্তুতান্ত্রিকতার উদর থেকে জন্ম নেয়া কিছু বিচ্যুতি। এখন বণিকের বাণিজ্যিক স্বার্থের কাছে কৃষিজীবী মানুষের সারল্য ও সাংস্কৃতিক ভাবনা পণ্যমূল্যে বিকোবার একটি প্রবণতা ও শঠতা লক্ষ করা যায়। হালখাতা, মিষ্টিমুখ করা, আর গ্রাম্য মেলা-খেলাই ছিল নববর্ষ উৎসবের প্রাণ। কল্পিত দানব ও পশুর মুখোশ পরে মানবিক বৈশিষ্ট্যকে পশুত্বের সাথে মিলিয়ে যারা মঙ্গলের সন্ধান করেন তাদের সাথে পান্তা-ইলিশের ভড়ং জড়িত। বাংলা নববর্ষ ও বর্ষবরণের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। ইলিশ আমাদের জাতীয় মাছ। এর সাথে পয়লা বৈশাখের দূরতম সম্পর্কও থাকতে পারে না। তা ছাড়া একটি ইলিশ কিনে খাওয়ার সামর্থ্যও এখন আর সাধারণ কৃষকের নেই। ধনিক ও বণিক শ্রেণীর রসনার জন্য ইলিশ এখন একধরনের কৃত্রিম কৌলীন্য। একসময় তারাই অ্যালার্জির ভড়ং করে ইলিশ খেতেন না। সেটি ছিল ইলিশের সহজলভ্যতা ও সস্তা যুগের কথা। তা ছাড়া এখন ইলিশের মওসুম নয়। এ সময় ইলিশ ধরাও দণ্ডনীয় অপরাধ। তা ছাড়া দু®প্রাপ্যতার কারণে ও ক্রয়ক্ষমতার অভাবে ইলিশ এখন কৃষিজীবী গ্রামীণ মানুষের সাধারণ জীবনাচারের সাথে বড্ড বেমানান। এটি এখন হয়তো কৃষকের জন্য বিদ্রƒপ; নয়তো আরোপিত পরগাছা সংস্কৃতির বাহুল্য ছাড়া আর কিছু নয়। পয়লা বৈশাখ অবশ্যই পালিত হবে। মাটি ও মানুষের বাঙালিয়ানা ও বিশ্বাস বিধৌত সেই নববর্ষকে স্বাগতম। ককটেল সংস্কৃতির মুখোশধারীরা আপাতত হই হুল্লোড় করে বাড়াবাড়ি করবে। শেষ পর্যন্ত যা কিছু আসল ও স্বাভাবিক, সেটি ঠেকাতে পারবে না। দেখে ও ঠেকে শেখার কারণে সরকার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবার কিছু অপসংস্কৃতি রোধ করার উদ্যোগ নিতে বাধ্য হয়েছে।
পার্বত্যবাসীর নববর্ষ পালনের ভেতর পাহাড়ি ও ুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যের একটা মেলবন্ধন রয়েছে। তার সাথে রয়েছে তাদের বিশ্বাসগত কিছু ধ্যান-ধারণা ও আচার-আচরণ। সেটি অবশ্যই স্বকীয় বৈশিষ্ট্যেরই প্রতিফলিত রূপ। আমাদের নগরজীবনে যা হচ্ছে, তা একধরনের বিনোদন; দুধের স্বাদ ঘোলে মিটানোর মতো। এখানে লোকজ সংস্কৃতিও নেই, জাতীয় সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্বও অনুপস্থিত।
প্রকৃত বাংলা নববর্ষে নগরজীবনের মেকি ভড়ং দেখানোর জায়গা নেই। বরং গ্রামীণ জনপদের সহজ-সরল মানুষকে বোঝানোর এবং তাদের কৃষিকেন্দ্রিক জীবনকে উপলব্ধি করার দায়বোধ থাকা উচিত। নগরজীবনে বাংলা সন-তারিখ অচল। মঙ্গল যাত্রীদের জিজ্ঞাসা করুন বাংলা সন-তারিখ, অনেকেই ইংরেজিতে জবাব দেবেন, জানি না। এখনো আমাদের অর্থনীতি কৃষিকেন্দ্রিক। সেই কৃষকেরই একটি অংশ শ্রমজীবী হয়ে বিদেশে গিয়ে ঘাম ঝরিয়ে রেমিট্যান্স আহরণ করছেন। কৃষি ও জমি জিরাত এখনো আমাদের অর্থনীতির চাকা ঘোরায়। পাটচাষিরা এখনো ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না। পাটকলগুলো ধুঁকে ধুঁকে চলছে। কৃষক তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায়সঙ্গত দাম পান না। আবার কৃষকের সন্তানরা নগরে এসে নগর উন্নয়নের চাকা ঘোরাতে গিয়েও ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত। পোশাক শিল্পের কোনো শ্রমিক নগরের ইটপাথরের কঠিন জীবনের মানুষ নন। এরা গ্রামেরই হতদরিদ্র মানুষ। কোনো না কোনো কৃষকের সন্তান। জীবন-জীবিকার জন্য নগরের বস্তিতে এসে ঠাঁই নিতে হয়। কেউ রিকশা চালায়। পোশাক শিল্পে শ্রমের দাসত্ব করে। বাসাবাড়িতে ঝি’র কাজ। তাদের সবার জন্য পয়লা বৈশাখের ছুটিও বরাদ্দ হয় না। এগার-বারো লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী বিশ ভাগ উৎসব বোনাস পাবেন। এটি আনন্দের খবর। জানার বিষয় হচ্ছে কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষ কী পাবেন? কৃষকের ভাগ্যে কী জুটবে? কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষের এই দেশে নগরজীবনের বৈশাখী ভড়ং নয়, বেশি জরুরি কৃষি ও কৃষকের ভাগ্যবদলের প্রেরণা হয়ে ওঠা; কৃষিপণ্যের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করতে শহরে মধ্যস্বত্বভোগীর লোভাতুর লকলকে জিহ্বা টেনে ধরা। কৃষক উৎপাদন খরচ তুলতে পারেন না। আবার শহরের মধ্য ও নি¤œবিত্ত মানুষ যৌক্তিক মূল্যে কৃষিপণ্য কিনতে পারেন না। কৃষি ও কৃষক বাঁচাতে নগরজুড়ে বসুক না কৃষি পণ্যের হাট। হোক না পিঠা-পুলির উৎসব। জারি, সারি, ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালী, মুর্শিদি-মারফতি, কাওয়ালি ও গজলের আসর বসুক নগরের পাড়ায় পাড়ায়। প্রাণের ও গানের মেলায় উঠে আসুক আবহমান বাংলার মানুষের জীবনঘনিষ্ঠতার রূপময় দিকগুলো। পুঁথিপাঠ আর কবিয়ালের লড়াই চলুক প্রাসাদের হলরুমে। পাঁচতারকা হোটেলে চলুক না কৃষি ও কৃষক নিয়ে নানা আয়োজন। তবেই না বাংলার আবহমানকালের সাংস্কৃতিক পরিচিতি খুঁজে পাওয়া সম্ভব।
পয়লা বৈশাখ উদযাপন কোনো ইবাদত নয়, পূজাও নয়। মানুষের সামগ্রিক জীবনে নির্দোষ বিনোদনের ঠাঁই হলে কারো আপত্তি থাকার কথা নয়। যেকোনো আচার-অনুষ্ঠান পালনে প্রত্যেকের নিজ নিজ ধর্মের ও নৈতিক মূল্যবোধের বেষ্টনী থাকা স্বাভাবিক। অবশ্য মানুষের সব আচার-অনুষ্ঠানে ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা থাকা জরুরি নয়। তবে ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে সাংঘর্ষিক কিছু থাকাও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। লোকজ সংস্কৃতি আত্মস্থ করার সময় সমীচীন হতে পারে না বিশ্বাসের এই বাগডোর কারো ভুলে থাকা।
সবশেষে বলব, বাঙালিয়ানা ও নৃতাত্ত্বিক পরিচয়ের এক চুলও ছাড় দিতে রাজি নই। ধর্মীয় পরিচয় আড়াল করার সাধ্য কারো নেই। এই জনপদের জমিনটা মা-বাবার জায়নামাজ তুল্য। দলমত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষ আত্মার আত্মীয়। এই জমিন বিদেশী ভাষা ও সংস্কৃতি আত্মস্থ করার ক্ষমতা রাখে। অসাম্প্রদায়িক চেতনা লালন করে। কিন্তু অপশক্তি ও অপসংস্কৃতিকে স্থায়ী হতে দেয় না।

 

পূর্ব প্রকাশিত : নয়া দিগন্ত
[email protected]

Loading


মন্তব্য দেখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *