প্রজন্মের ভবিষ্যৎ

মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে খবরের কাগজের একটি শিরোনামে চোখ পড়তেই সারাটা দেহ হিমশীতল হয়ে গিয়েছিল অনেকেরই। মা বাবার একমাত্র মেয়ে মেয়ে কি না তার নিজের মা-বাবাকেই কুপিয়ে হত্যা করেছে ! আমি কার কথা বলছি। সে মেয়েটির নাম উল্লেখ না করলেও এখন কারো অজানা নয়। মা-বাবা যার নামটি বড় আদর করেই রেখেছিলেন ‘ঐশী’। এ মেয়েটির বিরুদ্ধে প্রধান যে অভিযোগ তা হচ্ছে, সে তার মা-বাবাকে নিজের হাতে (জাতীয় দৈনিকগুলোর ভাষ্যমতে) খুন করেছে প্রাণঘাতী ‘খঞ্জর’ (ঐশীর ভাষায়) দিয়ে।

আমাদের সমাজের এধরনের দুরবস্থায়  উপনীত হওয়ায় কারণ কি এবং  আমাদের ভূমিকাই বা কি এব্যাপারে তা নিয়ে আলাপের দরকার বলছেন বিবেকবান প্রতিটি নাগরিক। ভৌগ্যবাদী জীবনের নেশায় মানুষ যেভাবে দৌড়ে চলছে তাতে নিজের পরিবার, ছেলে সন্তান যে কোথায় হারিয়ে যাচ্ছে নিজের অজান্তে সে খেয়ালই যেন কারো নাই। আজ ভেবে দেখার সময় এসেছে  আমরা মা-বাবা হিসেবে, সমাজের বাসিন্দা হিসেবে শিক্ষক হিসেবে চিন্তা করার কারা আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে নেশাগ্রস্থ করে ধ্বংসের দিকে দাবিত করছে?  সবচেয়ে দু:খের বিষয় হচ্ছে মাদক ব্যবসার গডফাদার হচ্ছে একশ্রেণীর সন্ত্রাসী চরিত্রের রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তিরা! অর্থের লোভে এরা আজ সমাজকে বিশেষ করে যুব-সমাজকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে ! সে দিন রংপুর বিরোধী দলের এক জনসভায়  ব্যরিষ্টার আন্দালিবকেও এব্যাপারে প্রকাশ্যে বলতে শুনা যায়।(লিংক এখানে) তরুণ রাজনীতিবিদ আন্দালিবের এ অভিযোগ শুধু রাজনৈতিক কাদা ছুড়াছুড়ি বলা যাবেনা বরং তা বাস্তব সত্য। এসব খবর এখন আর গোপন বিষয় নয়। দেরিতে হলেও আজ এ নিয়ে কথা হচ্ছে সমাজের সর্বস্তরে এমনকি রাজনৈতিক অঙ্গনেও। এটা অবশ্যই শুভ লক্ষণ। কিন্তু শুধু কথা দিয়ে তো আর কাজ হবে না এ ব্যাপারে এখনই সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ভবিষ্যৎ অন্ধকার। গত সপ্তাহের এক পত্রিকার  সংবাদ শিরোনাম ছিল “যাচ্ছে ইলিশ, আসছে মাদক”, খবরে প্রকাশ সাতকিরা সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিনই পাচার হচ্ছে ইলিশ। ইলিশ চোরাচালানিরা মাছ বিক্রির টাকা দিয়ে ভারত থেকে নিয়ে আসছে জিরা, মরিচ, এলাচির সাথে ফেনসিডিলসহ নানা ধরনের মাদকদ্রব্য..

সেদিন অ, এইচ কবির নামে একজন তার এক অন-লাইন নিবন্ধে বাংলাদেশের যুব-সমাজের মাদকাসক্তির ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে প্রশ্ন রেখেছেন: “আমরা বুঝতে পারছি না. দেশের আইন প্রয়োগ কর্তৃপক্ষ কেন এ পর্যন্ত ভারত থেকে ফেনসেডিল (phensedyl) এর চোরাচালান বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে?  আর আমদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতীয় সরকারের কাছে কেন কোন প্রতিবাদ দায়ের করতে বা সার্ক সম্মেলন এ বিষয়ে কোন প্রস্তাব উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হচ্ছেন যাতে বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় পশ্চিমবঙ্গ এবং আসামে যেসব বেআইনি মাদক প্রস্তুতের শিল্প গড়ে উঠেছে তা বন্ধ করতে? ভাবতে বিস্মিত হতে হয়!”

টরন্টো প্রবাসী নুরুল ইসলাম ঐশী উপর লিখা পোষ্টে মন্তব্যে বলেন “ঐশী” নামটি হয়ে গিয়েছে বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের ধ্বংসের প্রতীক। বাংলাদেশের বন্ধু সুলভ প্রতিবেশী দেশ থেকে বন্যা প্রবাহের মত আসছে ফেনসিডিল এবং ইয়াবা সহ ধ্বংসাত্মক মাদকদ্রব্য। দেশের গোটা প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে বা গেছে তা নিয়ে বলার কেউ নেই, ভাবার কেউ নেই। মাদক-আসক্তির সর্বনাশা চিত্র আর ব্যাখ্যা করে বলার প্রয়োজন নেই।  সূর্য উদিত হওয়ার প্রমাণ সূর্যই।

আঞ্চলিক পরা শক্তি ভারত তার সকল প্রতিবেশী দেশের জন্য যে নীতি অবলম্ব করছে তা হল -তোমাকে বাঁচতেও দেব নf মরতেও দেব না। একটি দেশের যুব সমাজকে ধ্বংস করে দিলে সে দেশ আর নিজের পায়ে দাড়াতে পারবে না, সুতরাং বাংলাদেশ— ২০ কোটি মানুষের বাজার একক ভারতের। সম্প্রতি বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টিও প্রধান মেজর জেনারেল ইব্রাহিম এক সাক্ষাতকারে বলেছেন “বাংলাদেশ এখন ভারতের রাজনৈতিক কলোনি ও সাংস্কৃতিক কলোণী।”

আমি তার সাথে একমত পোষণ করে আরো একটি বাক্য যোগ করতে চাই- বাংলাদেশ এখন ভারতের চিরস্থায়ী একটি বাণিজ্যিক কলোণী এবং বাংলাদেশ এখন ভারত ও পশ্চিমা সভ্যতার কালচারেল গার্ভেজ ডাম্প। তবে এ অবস্থা কেন এবং কিভাবে, কাদের সহযোগিতায় সম্ভব হচ্ছে আর এ থেকে বাঁচার কি উপায়? সেটাই হচ্ছে বড় প্রশ্ন।

বলা হয় ছোট পরিবার সুখী পরিবার। আধুনিক পরিবার মানেই তো ছোট পরিবার।  আগের প্রসন্নতায় ভরা একান্নবর্তী পরিবারগুলো দ্রুত ভেঙে গেছে বা যাচ্ছে। সনাতন অ্যারেঞ্জড ম্যারেজের বদলে তরুণ-তরুণীরা আগে থেকে প্রেম করে নিজেদের পছন্দমতো বিয়ে শাদী করছে এবং ছোট্ট পরিবার গড়ে তুলছে। আধুনিক ছেলেমেয়েরা  অ্যারেঞ্জড ম্যারেজে তাদের বিয়ে হয়েছে বলতেও এখন লজ্ঝ্যাবোধ করে বন্ধুবান্ধবদের সামনে, কি জানি নিজেরা পুরানো যুগের মানসিকতার চিহ্নিত না হয়ে যায়! কিন্তু এর কুফলই চোখে পড়ছে বড় বেশি। বস্তুতান্ত্রিক সভ্যতার এ বিশ্বের বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলোর মতো, একই তালে এগিয়ে যেতে যাচ্ছে বাংলাদেশের নারীরাও। এতে খারাপের কিছুই নেই কিন্তু সবকিছুতে বানরের মত অনুকরণ প্রিয় হলেই দেখা দেয় সমস্যা। অবশ্যই তা শঙ্কার একটি বিষয় আছে বৈকি এবং তা হয়! কেন এমন হয় সেটা ভাবতে হবে?

অনেক সময় দেখা যায় অভিভাবকেরা  সময় দিতে না পারায় সন্তান যে বিপথগামী হচ্ছে।  মনোবিজ্ঞানীদের গবেষনায় দেখা যায় যেসব ছেলেমেয়ে মা-বাবার পর্যাপ্ত আদর-যত্ন পায় না, তারা প্রায়ই কুসঙ্গে পড়ে মাদকাসক্ত হয় এবং এর জন্য তিনটি বিষয়  তারা চিহ্নিত করেছেন : Friend, Fun ও Frustration।  আসলে সন্তান ‘রেইজিং’ বা পালন খুবই কঠিন। টিনএজাররা খুবই আবেগপ্রবণ এবং তাদের সমস্যাবলী বেশির ভাগই মা-বাবার অজানা থাকে। এর ফলে তাদের Wonder age এবং মা-বাবার Real world-এর মাঝে সৃষ্টি হয় বিস্তর ব্যবধান এবং গড়ে ওঠে অদৃশ্য এক দেয়াল।

সে দিন ইন্টারনেটে ঐশীর প্রাক্তন  শিক্ষকদের একটি লিখা পড়লাম তাদের প্রশ্ন মা-বাবা হিসেবে, শিক্ষক হিসেবে, সামাজিক জীব হিসেবে, সর্বোপরি, ‘মানুষ’ নামধারী হয়ে ‘পৃথিবী’ নামক ছোট্ট এই গ্রহটির বাসিন্দা হিসেবে, কেন তারা ঐশীকে সময় দিতে পারেন নাই? কেন আমাদের সমাজপতিরা রুক্ষ এ সমাজে সুন্দর ও নিরাপদ শিশুবান্ধব একটি মরূদ্যান প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ? কেন আমরা ব্যর্থ হচ্ছি” ঐশীর মতো আরো অসংখ্য ছেলে মেয়েদের মাঝে  মানবিক মূল্যবোধের বীজ বপন করতে?  তাদের সে লিখার আরো কিছুটা উদ্বৃতি করছি:

“আমরা কি ভুলতে পারব এই সহস্রাব্দের সূচনায় আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়ান হাই স্কুলে ঘটে যাওয়া সেই ট্র্যাজেডির কথা, যেখানে Harris ও Klebold দুজন স্কুলছাত্র তাদের ১২ জন সহপাঠী ও একজন স্যারকে নিজেদের হাতে পাখির মতো গুলি করে মেরে ফেলেছিল এবং যে ঘটনা গোটা আমেরিকায় প্রচণ্ড আলোড়ন তুলেছিল।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই একটি বিশেষ ডিপার্টমেন্টের জনৈক তরুণ প্রভাষকের নিত্যনতুন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে (তৎকালীন পত্রিকার ভাষ্যমতে) অতিষ্ঠ হয়ে তার বাবা একদিন বাধ্য হয়েই নিজ হাতে বন্দুক দিয়ে প্রাণপ্রিয় তরুণ ছেলেটিকে হত্যা করেন, সম্ভবত বনানীর কোনো এক অট্টালিকায়। ওই শিক্ষকের কার্যকলাপ (পত্রিকার ভাষায়) তাঁকে এত নিচে নামিয়ে ছিল যে মৃত্যুকালে পাশের কক্ষে অবস্থানরত নিজের বোনরাও নাকি (পত্রিকা অনুযায়ী) ভাইয়ের সেই অন্তিম দৃশ্যটি দেখতে যাননি। তবে সমাজ কতখানি অধঃপতিত হলে ঐশীর মা-বাবা হত্যা কিংবা বাবার দ্বারা স্বীয় সন্তান হত্যা সম্ভব, তা একমাত্র সমাজবিজ্ঞানী ও প্রাজ্ঞজনরাই ভালো বলতে পারবেন।

এবার আসুন, শিক্ষক সম্পর্কীয় বিষয়ে। এমনতর একটি কথা বহুল প্রচলিত এবং তা হচ্ছে : ‘বাংলাদেশের শিক্ষককুল নিজেদের যথাযথ মূল্যায়িত বলে মনে করেন না। শিক্ষকতায় ঢুকলে অনেক চিন্তাভাবনা করেই ঢোকা উচিত। যদি কাঁচা পয়সা পাওয়াই একজনের লক্ষ্য হয়ে থাকে, তবে তো কোনো রকমে এক রাতে এক কেজি হেরোইন জোগাড় করতে পারলেই তো হলো। সকালে তা বিশেষ স্থান ও নির্দিষ্ট পাত্রের কাছে পৌঁছে দিতে পারলেই কয়েক কোটি টাকা। তবে সেটাই তো ছিল ভালো। অথবা কিডনি জোগাড়ের খামার বানালেই তো একটি একটি শিশুর কিডনি বেচে লাখ লাখ টাকা আয়। সেটাই তো সহজ পথ ছিল। তাহলে আর শিক্ষকতার খাতায় নাম লেখানো কেন? টাকার প্রয়োজন সবারই আছে এবং তা এ দেশে যেমন, উন্নত বিশ্বেও তেমনি। আমি একটি দেশের কথা জানতাম, যেটা ছিল আমার মতো অনেকের কাছেই এক স্বর্গরাজ্য এবং আক্ষরিক অর্থেই এখনো তা-ই। ভাবতাম, সেখানের শিক্ষকরা নিশ্চয়ই সবাই টাকার বস্তার ওপর বসে থাকে। কিন্তু হায়! আমি অবাক বিস্ময়ে একদিন দেখলাম, ম্যানহাটনের প্রশস্ত রাজপথ দিয়ে ফেস্টুন বহনকারী শত শত স্নানমুখী শিক্ষক-শিক্ষিকা হেঁটে চলেছেন। সমাজকে উদ্দেশ্য করে লেখা ফেস্টুনের ভাষাটি ছিল :

IF WE ARE IMPORTANT TO YOUR FUTURE, THEN TAKE CARE OF OUR FUTURE.

ভাবলাম, কী আশ্চর্য! এখানেও সেই একই চিত্র। শিক্ষকদের চাহিদা তো অবশ্যই পূরণ করা উচিত; বিপরীতভাবে, শিক্ষকদেরও তাঁদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সজাগ থাকা উচিত। আমরা যতই জ্ঞান দান করি না কেন শিক্ষার্থীকে, মূল্যবোধের অবর্তমানে ‘সকলি গরল ভেল’ আর সত্যিকারের মিশন অর্জন? সে তো ‘দিল্লি দূরাস্ত’-এর মতোই সুদূরপরাহত। আমরা ভুলে যাই, একজন সুশিক্ষকের সৎগুণ ছাত্রছাত্রীর অন্তরে স্বর্গীয় জ্যোতির মতোই বিকিরণ করে চলে আজীবন। শাশ্বত মূল্যবোধ যেমন- সহানুভূতি, সহমর্মিতা, স্নেহ-মমতা-ভালোবাসা, সহিষ্ণুতা, করুণার আলোড়ন, সংবেদনশীলতা, নারী জাতির প্রতি শ্রদ্ধা, ঔদার্য, ইনটিগ্রিটি, দয়া, ক্ষমা, নৈতিক ও সামাজিক মূল্যবোধ, দেশপ্রেম ও জাত্যাভিমান প্রভৃতি একজন হৃদয়বান শিক্ষক কোমলমতি বিদ্যার্থীদের হৃদয়ে গভীরভাবে প্রোথিত করে দেন তার সহজাত কথাবার্তা, আচার-আচরণ, চালচলন, কার্যকলাপ ও উদাহরণের মাধ্যমে। মা-বাবার যেমন দায়িত্ব আছে তাদের সন্তানদের প্রতি, শিক্ষকেরও তেমনি দায়িত্ব আছে ছাত্রছাত্রীর প্রতি।

হায়রে! এমন তো হওয়ার কথা ছিল না। সমাজ আজ বিভ্রান্ত। মূল্যবোধের মড়ক। জনসংখ্যা বাড়ছে হু হু করে। লেখাপড়ার জন্য যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গজিয়ে উঠছে, সেখানে গুণগত শিক্ষার বড়ই অভাব। ছাত্রছাত্রীর মধ্যে প্রচণ্ড মূল্যবোধের অভাব। শিক্ষার প্রতি বেশির ভাগ শিক্ষকের অঙ্গীকার কম এবং এ জন্য তাদের কাছে Mission ও Profession-এর কোনো তফাত নেই; প্রভেদ নেই ‘মার্সেনারি’ আর ‘মিশনারি’র মধ্যে। অথচ উচ্চশিক্ষা গ্রহণকারীর মধ্যে যদি মূল্যবোধের অভাব থাকে, তবে একটি সময় আসবে, যখন অনিবার্যভাবেই তা তার কাছে ‘বুমেরাং’ হয়েই ফিরে আসবে। এবং আসবেই। ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ককে গড়তে হবে স্নেহ-মায়া-মমতার বন্ধন দিয়ে। সম্পর্ক গড়ে তোলা যদিও কঠিন, এটা নষ্ট করা অতি সহজ। টাইটানিকের কথাই ধরুন না কেন : মানবমস্তিষ্কপ্রসূত কী বিশালই না ছিল এর পরিকল্পনা! বছরের পর বছর ধরে কী বিপুল অর্থ, প্রচণ্ড শ্রম, গভীর নিষ্ঠা আর মধুর স্বপ্নটাই না কাজ করল অদ্ভুত সুন্দর এই অর্ণবপোতটি সৃষ্টিতে। কিন্তু একটি অবিবেচক আর উদাসীন হিমশৈল মাত্র আধা ঘণ্টারও কম সময়ে সলিলসমাধি ঘটাল এই অবিস্মরণীয় কীর্তিটিকে। মোনালিসাকে দেখুন, লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির কী অপূর্ব সৃষ্টি! কিন্তু যেকোনো একটি বড় মাপের গর্দভের জ্বলন্ত একটি সিগারেটের অসতর্ক আগুন এর সর্বনাশটি করে দিতে পারে এক মুহূর্তে। এগুলোই তো আমাদের সামনে অনেক বড় বড় উদাহরণ।

ঐশীর কথা নিয়ে শুরু করেছিলাম আমরা এবং এ লেখা যতই এগিয়েছে, রাত যতই গভীর হয়েছে, আমাদের দীর্ঘশ্বাস ততই গভীর থেকে গভীরতর হয়েছে। বাংলাদেশের সচেতন মা-বাবা আজ বড়ই চিন্তিত ও বিষণ্ণ। তাঁদের বিষাদ আমাদের বুকে বাজছে অতি করুণ হয়ে। তাই আমরা আবারও বুক বেঁধে দাঁড়াতে চাই। কেননা বিপুল মাশুল দিয়েই আমরা এ দেশটি পেয়েছি। আমাদের সামনে আশাবাদ ছাড়া আর তো কোনো পথ খোলা নেই।“  সুত্র: লেখকদ্বয় : প্রিন্সিপাল হেড অব স্কুল ও ইংরেজি বিভাগীয়,প্রধান, ক্যামব্রিজ মিলেনিয়াম ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকা। (অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সাবেক প্রিন্সিপাল, শিক্ষক)

পরিশেষে আরও একটি বিষয় বলা প্রয়োজন তা হচ্ছে ছেলে, মেয়ে, বউ, পরিবার সবাইকে নিয়ে ভারতীয় সিরিয়াল দেখার কুফলও যে সমাজে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে যেমন, সৃষ্টি করছে খুন, ধর্ষণ, রাহাজানি তা অস্বীকার করা যায় না তার জ্বলন্ত প্রমাণ ঐশী নিজে স্বীকার করেছে যে মাবাকে হত্যা করার আইডিয়া প্রথম তার মথায় আসে ভারতীয় এক সিরিয়াল নাটক দেখে।

Loading


মন্তব্য দেখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *