বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক দূর্বৃত্তায়নের জন্য কোন এক ব্যক্তিকে বা কোন এক দলকে দায়ী করা হবে মহা ভূল। এজন্য কম বেশী সব রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজ যে দায়ী তা স্বীকার করতে হবে।
বাংলাদেশের বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের বিরোধিতা করে যারা বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন দেখতে চান এবং সে উদ্দেশ্যে বিরামহীন অ্যাক্টিভিজম এ ব্যস্ত আছেন তাদের অনেকের মনে হয়তবা ক্ষোভ আছে যে আওয়ামী শাসনের বিরুদ্ধে গণহারে মানুষ কেন রাস্তায় নামছে না?
সমস্যা হচ্ছে তারা এটি বুঝতে পারেননা যে কোন রিজিম চেইন্জ এর দাবীকে গণআন্দোলন করতে হলে সে আন্দোলনের চেহারা হতে হয় স্বৈরাচারী শাসক বনাম জনগণের সংগ্রাম সেখানে “বিরোধী দল বনাম ক্ষমতাসীন দল” হলে কাজ হবে না। বিশ্বকে দেখতে হবে এটা স্বৈরশাসক বনাম জনগণের সংগ্রাম। এখানে শুধু বিরোধী দল বনাম সরকারি দলের সংগ্রাম হবে কেন? কিন্তু বাংলাদেশে বাস্তবে সেটিই প্রকাশ পাচ্ছে। সেটি এজন্য যে বিরোধী দলেরা নিজেদের স্বার্থ ত্যাগ করে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে নামতে ব্যর্থ হয়েছে।
যতদিন পর্যন্ত রিজিম চেইন্জ বা পরিবর্তনের সংগ্রাম স্বৈরাচার বনাম জনগণের আন্দোলন এবং সিস্টেম পরিবর্তনের আন্দোলন হিসাবে রূপ নিবে না তত দিন পর্যন্ত গণ মানুষ রাস্তায় নামবে না। এখন আপনি বলতে পারেন এ তো দেখছি মুরগী আগে না ডিম আগে? এত তাত্ত্বিক চিন্তা না করে সাধারণ চিন্তায় কি আসে সেটিই বলছি।
আগামী তিন মাসের মধ্যে সব বিরোধী দল কয়েকটি কমন পয়েন্টের ভিত্তিতে এক হয়ে যত মিটিং মিছিল হবে সেখানে নেতাদের ফটো বা দলীয় ব্যানার পরিচয় থাকবে না। সবার হাতে শুধু থাকবে দেশের পতাকা এবং হুজুরের দলও সে ঐক্যে যোগ দিবেন এবং রাস্তায় নামলে সনাতনী লেবাস খুলে আধুনিক পোষাক পড়ে রাস্তায় নামতে হবে। হুজুরদেরকে বুঝতে হবে যুদ্ধের ময়দানে লাগে ইউনিফর্ম। আর সে মিছিলে থাকবে সিস্টেম পরিবর্তনের কিছু নির্দিষ্ট দাবী।
সেই দাবীগুলো কি হতে পারে রাজনীতির গুনগত পরিবর্তন করতে সেটি আগে ঠিক করতে হবে। সেখানে থাকতে হবে একটি কার্যকর সিস্টেম প্রতিষ্ঠা করার রূপরেখা।
সে উদ্দেশ্যে এখানে কিছু প্রস্তাব রাখা হল। আর এ বিষয়ে সবাই সোচ্চার হলে এবং এ দাবীগুলোকে জনগণের দাবী হিসাবে আলোড়ন সৃষ্টি করাতে পারলে রাজনৈতিক দলেরাও বাধ্য হবে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করতে যে এ দাবী তারা মানবে কি মানবে না? তখন জনগণ বুঝতে পারবে কে দেশপ্রেমিক আর শত্রু কে?
মনে রাখতে হবে আজ আমরা ১৯৭১ সালে বাস করছি না, আমরা ১৯৯০ সলেও নই আজ হচ্ছে ২০২২ সাল This is post millennium era. পৃথিবী অনেক পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে আজকে ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন, মানুষের চিন্তাধারায়ও এসেছে অনেক পরিবর্তন এমন কি ধর্ম বিষয়েও মানুষ অনেক কিছু ভিন্নভাবে চিন্তা করে বা করার যুক্তি পায় যা আগে সম্ভব ছিল না। এখন এই পরিবর্তিত বিশ্বে আপনার চালচলন ও কলা কৌশল হতে হবে ভিন্ন যদি সত্যই কোন পরিবর্তন আনতে চান নিজের দেশে। তবে পৃথিবী বদলানোর আগে নিজেকে বদলাতে হবে। প্রশ্ন হচ্ছে আছে কি সেই হিম্মত?