আমরা নই, অবস্থান পরিবর্তন করেছে রাষ্ট্র

আওয়ামী শাসনামলের ব্যত্যয়গুলোর একটি উদাহরণই যথেষ্ট। ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে ধর্মানুভূতিতে এত বড় আঘাত দেয়া সত্ত্বেও লতিফ সিদ্দিকী আমাদের এমপি। নবীজীকে যা বলেছেন, কার্টুনের বাপ। বর্তমানে ভিআইপি আদরে জেল খাটছেন। সেখানে নাকি ছোটখাটো একটি অফিসও আছে।
কিছু দিন হলো একটি বিষয়ে আমাকে বারবার বিব্রত করা হচ্ছে। প্রশ্ন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার থেকে সরে এসেছি কেন। অভিযোগ, আগে আমি বিচার চেয়ে লেখালেখি করেছি। আমার সমস্যা, যুদ্ধাপরাধ বিষয়ে মোটেও লেখাপড়া নেই কিন্তু সমালোচকদের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন করার খায়েশ। না। বিচার চাওয়া থেকে একচুল সরিনি, সরেছে রাষ্ট্র। এর বহু তথ্যপ্রমাণ আমার হাতে এবং লিখেছিও প্রচুর। কিন্তু কে কার কথা শোনে! বলছি, অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন করার আগে যুদ্ধাপরাধ বিষয়গুলো অল্প হলেও পড়–ন। রাষ্ট্রবিজ্ঞান কিংবা জুরিসপ্র“ডেন্সের বিকল্প ঝগড়াঝাটি নয়। বুদ্ধিচর্চার বিকল্প নেই। যারাই নুরেমবার্গ ট্রায়ালের উদাহরণ দেয়, বেশির ভাগই ট্রায়াল সম্পর্কে জানে কি না সন্দেহ! ওই বিচারটি হয়েছিল সাক্ষীর বদলে প্রায় আট লাখ পেপার কাটিং দিয়ে। হলোকস্টের পর বিপুল উত্তেজনা প্রশমনে এর কোনো বিকল্পও ছিল না। নুরেমবার্গের ত্র“টি নিয়ে বহু গবেষণা হয়েছে। হয়তো সেই ব্যত্যয় ঠেকাতেই পরবর্তী বিচারের প্রায় সবগুলোই সাক্ষীদের ভিত্তিতে এবং আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর উপস্থিতিতে হয়েছে। সুতরাং নিরপেক্ষ বিচার নিশ্চিত করতে, আন্তর্জাতিক মহলের উপস্থিতির বিকল্প যে একেবারেই নেই, বারবার দেখেছি বাংলাদেশে। নির্বাচনী মেনুফেস্টোতে বলেছিল, ক্ষমতায় এলে বিচার করবে এবং আমরাও সেটাই চেয়েছিলাম। পরবর্তী সময়ে বিচার নিয়ে যা হচ্ছে, নিজেরাই বিশ্বাস করে কি না সন্দেহ। অবস্থান নয়-ছয় করার প্রমাণ। সুতরাং বিরোধী দলের ওপর যুদ্ধাপরাধের দোষ চাপালে নিজেদের দায়মুক্তি হবে না। বিচারক ও সাক্ষীদের নিয়ে নানান বিতর্ক। সমালোচকদের বিচারের রেকর্ড। বিষয়গুলো সুবিচার প্রার্থীদের রাডারে। শুরুতেই ব্যত্যয় দেখে, বারবার জানান দিয়েছি, ট্রেন কিন্তু বিচ্যুতির পথে। সম্ভাব্য সাক্ষী হিসেবে ব্যত্যয়ের প্রতিবাদ করার সাথে সাথে উল্টো আমাকেই অভিযুক্ত করতে এক মুহূর্তও সময় নেয়নি ট্রাইবুন্যাল। সত্য বললেই টুঁটি চেপে ধরা যেন নিয়ম।
এখন যে উদাহরণটি টানছি, প্রত্যেকেরই উচিত আমলে নেয়া। নিউ ইয়র্কে একটি মামলায় আদালতে গেলে বিচারক ‘জর্জ হ্যারিস’ আমাকে ডেকে মামলাটি অন্য বিচারকের এজলাসে পাঠিয়ে দিলেন; কারণ ওই বিচারক আমার ব্যক্তিগত উকিলও। বোঝালেন, তিনি আমার মামলাটি করতে পারবেন না; কারণ এটা ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট’। যারাই আইনের দেশে থাকে আমি নিশ্চিত, কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট বোঝে। সুতরাং যারাই আমার অবস্থান নিয়ে বিভ্রান্ত, বলছি, স্কাইপ কেলেঙ্কারি বুঝলে প্রশ্নটি আর কখনোই করবে না। বিচার শেষ হওয়ার আগেই কি রায় লেখা যায়? রায় হওয়ার আগেই কি কাউকে অগ্রিম ফাঁসির ব্যবস্থা করা যায়? রায়ের সাথে প্রমোশন যুক্ত করা কি আইনসিদ্ধ? সন্দেহের পাহাড়টা এখানেই। অর্থাৎ পুলিশের ঘুষ খাওয়াটাও আইনসিদ্ধ। স্কাইপ কেলেঙ্কারিও সে কথাই বলছে। জিয়াউদ্দিন ও নিজামুল হকের কথোপকথন সাথে সাথে প্রকাশ করল ইকনোমিস্ট ম্যাগাজিন, সেখান থেকে ছাপিয়ে দিলো মাহমুদুর রহমান। এই কেলেঙ্কারিতে আন্তর্জাতিক মহল উদ্বিগ্ন, আমরা সন্দিহান, সুবিচার প্রার্থীরা দিশেহারা। আইনের দেশ হলে বলত, মিসট্রায়ালই যথেষ্ট নয়, সংশ্লিষ্ট সবক’টা ষড়যন্ত্রকারীর বিচার হওয়া উচিত। না হওয়ায় সন্দেহাতীত বিচার হয়েছে বলে দাবি করা অসম্ভব; বরং আগামীর জন্য বাজে রেফারেন্স হবে।
আমি অবস্থান পাল্টাইনি, পাল্টেছে রাষ্ট্র। অভিযুক্তদের মানবাধিকার নিশ্চিত করা আন্তর্জাতিক আইনভুক্ত। এই লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক মহলের সম্পৃক্ততা অপরিহার্য। আমি কোনো দলের সদস্য নই, তবে মানবাধিকারসতেচন মানুষ হিসেবে ‘ভলতেয়ারের’ সেই কথাই মনে করিয়ে দিতে চাইÑ ‘আমি তোমার মতের সঙ্গে দ্বিমত কিন্তু মতের প্রতি সম্মান দেখাতে প্রয়োজনে জীবন দেবো।’ ভলতেয়ার শুধুই কথার কথা নয়, চর্চা প্রয়োজন।
মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের সাথে দ্বিমত পোষণ করি; কিন্তু প্রত্যেকেরই সন্দেহাতীত বিচার পাওয়ার অধিকার আন্তর্জাতিক আইন। রাষ্ট্রের সমালোচনার অধিকারও সাংবিধানিক। কেউ অন্যায় করলে রাষ্ট্র অবশ্যই শাস্তি দেবে। কিন্তু আইনের ব্যত্যয় না ঘটলে, ডেভিড বার্গম্যান দোষী আর ইমরান সরকার কেন রায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেও নির্দোষ? রায় নিয়ে মন্তব্য নেই, আছে ইমরান সরকারদের অন্তরালে বিদেশী ষড়যন্ত্র বাহিনী নিয়ে। কারা এই ইমরান সরকার, কারা অর্থ জোগানদাতা, তাদেরকে কি আমরা চিনি? গুরুতর দায়িত্ব রাষ্ট্রের হাতে, সর্বোচ্চ জ্ঞানী ব্যক্তিরা বিচার করছেন; কিন্তু শাহবাগ দখল করে হইচই করার পেছনের অপারেটরদের পরিচয় এবং উদ্দেশ্য কী? ওরা দেশী নাকি বিদেশী? রাষ্ট্রদ্রোহীদেরকে সংসদে দাঁড়িয়ে সমর্থন জানালে সুষ্ঠু বিচার কেন খাদে পড়বে না! স্কাইপ কথোপকথনের কিছুটা ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট’ নামে নয়া দিগন্তে লিখেছিলাম, যা এখন আমার ওয়েবসাইটে। ওই কথোপকথন পড়লে বরং রাষ্ট্রকেই এই প্রশ্নটি করত। সুতরাং ফ্যাক্টস্ না জেনে অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন না করার পরামর্শ। সমালোচকদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ না তোলারও পরামর্শ। বরং দেশকে ভালোবাসলে, ইমরান সরকারদের মতো আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারী নেটওয়ার্কের তদন্ত করুন। অন্যথায় আরেকটা ১৭৫৭ ঘটতে যাচ্ছে।
বিচার চেয়ে আমি কত কাজ করেছি, অনেকেরই জানা। ট্রাইবুন্যাল শুরুর আগে চিফ প্রসিকিউটরের সাথে সাক্ষাৎ করেছি, জবানবন্দী দিয়েছি… সে অনেক কাহিনী। কিন্তু আমিই যখন স্কাইপ কেলেঙ্কারি শুনি, আকাশ থেকে পড়ি। দুই-তিনটা রায় দিলে প্রমোশন হবে? বিচার শেষ হওয়ার আগেই আট হাজার মাইল দূরত্বে ৫০০ থেকে ৬০০ পৃষ্ঠার রায় লেখা নিয়ে জিয়াউদ্দিন এবং বিচারক নিজামুল হকের অগ্রিম কথোপকথন, ট্রাইব্যুনালের সর্বনাশ করেছে। ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট’ মুক্ত করতে জর্জ হ্যারিসের উদাহরণ শুরুতেই টেনেছি। আইন সবার জন্য সমান। আন্তর্জাতিক মহলের উপস্থিতি থাকলে হয়তো এসব ঘটত না। সন্দেহের পাহাড় রাষ্ট্রই হাতে তুলে দিয়েছে। আইনের দৃষ্টিতে বিচারপতি নিজামুল হকের পদত্যাগ, অপরাধেরই স্বীকারোক্তি এবং বিচার না হওয়াটা আইন নিয়ে দরকষাকষি। এ ধরনের অপরাধের জন্য ৩০ বছরের জেলের রেফারেন্স আছে। সাক্ষী সুখরঞ্জন বালিকে যখন আদালতের দরজা থেকে গুম করে ভারতে পাঠিয়ে দেয়া হলো, জেলমুক্ত বালি ফিরে এসে যে কথা শোনাল… হাইব্রিড বিচার প্রমাণে আর কী বাকি! সোহাগপুরে যায়নি সত্ত্বেও সোহাগপুরে খুন-ধর্ষণের অভিযোগে ফাঁসির রায় হয়েছে। এ নিয়ে বহু বিতর্ক কিন্তু কারো কথাই আমলে নিচ্ছে না ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনাল শুরুর বহু আগে সেই গ্রামে গিয়ে ভুক্তভোগীদের কথা শুনেছি। এখানে যে ১৮১ জনকে হত্যা করা হলো, এর মূলে মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সোহাগপুরবাসীর সহায়তার অপরাধ। পাকিস্তানিরা জানতে পেরে কয়েক ঘণ্টা নারকীয় হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল, যার সাথে ট্রাইব্যুনালের অভিযোগগুলো সাংঘর্ষিক। আবারো বলছি, ভলতেয়ারের সেই উক্তি। সুতরাং আর কোনো রায় কার্যকর করার আগে আরো অধিক সম্প্রসারিত তদন্ত করে সন্দেহাতীত বিচারের বিষয়টি পুরোপুরি নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। অন্যথায় সরকার বদল হলে কর্নেল তাহেরের রেফারেন্স পুনরাবৃত্তি হবে না, বলা যাবে না। ‘৩৮ বছর পর সন্দেহাতীত বিচার নিয়ে প্রশ্ন তোলায় ভিন্ন রায় দিলেন আদালত কিন্তু তাহেরকে কি আর ফিরে পাওয়া যাবে!’ সুতরাং কত দ্রুত ফাঁসি দেয়া যাবে, অ্যাটর্নি জেনারেল ও আইনমন্ত্রীর পুনরাবৃত্তিমূলক অস্বাভাবিক বক্তব্যগুলো অন্য কিছুর ইঙ্গিত করে। সন্দেহাতীত বিচার নিশ্চিত না হলে যেকোনো ফাঁসিই হতে পারে হত্যাকাণ্ড। নুরেমবার্গ ট্রায়াল কিংবা মিলোশেভিচের বিচার অথবা আমাদের ট্রাইব্যুনাল, সার্বিক বিষয়গুলো জানি বলেই বলছিÑ আমি নই, মেনুফেস্টোর অবস্থান থেকে বহু দূরে সরে এসেছে রাষ্ট্র।
যদি সন্দেহাতীত বিচার ছাড়াই কারো প্রিয়জনকে জেলে পাঠায়, কেমন লাগবে! মানুষের সর্বশেষ আস্থার জায়গা আদালত। স্বাভাবিক অর্থেই রায় নিয়ে কথা বলার অধিকার আদালতের এখতিয়ার। কিন্তু রায় নিয়ে নির্বাহী বিভাগের সর্বোচ্চপর্যায় থেকে প্রভাবিত করার মতো বক্তব্যগুলো বিচারকদের জন্য বিব্রতকর। বিষয়টি অনেকেরই বডি ল্যাংগুয়েজে পরিষ্কার। ব্যক্তি যত বড়ই হোক, আন্তর্জাতিক মহলের উপস্থিতি এত সাহস কার? ইতিহাসেও নজির নেই। বরং হাটেঘাটে, মাঠেমঞ্চে, ফুটপাথে ফাঁসির রায় কার্যকর করা নিয়ে বক্তব্য দেয়া যেন কামরুলদের রুটিন কাজ। কিভাবে, কখন রায় কার্যকর হবে, ইনুরা অগ্রিম জানেন। মন্ত্রীদের কাজ মন্ত্রণালয়ে, ট্যাক্সের টাকায় জনসেবা করা দায়িত্ব। কিন্তু নাসিম-মায়ারা রাস্তায় সারা দিন কি করেন? মন্ত্রণালয়ে বসেন না, রাস্তায় ফাঁসির রায় ফেউরি আর খালেদার চৌদ্দগোষ্ঠী উদ্ধার? তারা কি ফুটপাথের ফেউরিওয়ালা? ৯৯.৯৯ ভাগ মন্ত্রীর বক্তব্যই পদের সাথে অস্বাভাবিক। আমার পরামর্শ, তারা নিজেদের কাজ করুন, আদালত চলবে নিজের গতিতে।
আর কোনো ফঁসির রায় কার্যকর করার আগে আমি জর্জ হ্যারিসের যে উদাহরণটি দিয়েছি, রাষ্ট্রের উচিত স্কাইপ কেলেঙ্কারি তদন্ত করে রায় থেকে ‘কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্টকে’ মুক্ত করা। বহু বিতর্কের সুষ্ঠু জবাব দিতে ব্যর্থ রাষ্ট্র, যেমন সুখরঞ্জন বালি কিংবা সোহাগপুরের ঘটনার সন্দেহাতীত প্রমাণ। মৃত্যু অপরিবর্তনযোগ্য। আন্তর্জাতিক গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে শতকরা ১৯ ভাগ শাস্তিই ভুল। তাহেরের রায় কার্যকরের ৩৮ বছর পর বিচারকাজকে অবৈধ ঘোষণা করেছে রাষ্ট্র। ১৪ বছরের কৃষ্ণাঙ্গ স্টেনলির ফাঁসির ৭০ বছর পর তাকে নির্দোষ ঘোষণা করল সাউথ ক্যারোলিনার আদালত। আমি নই, অবস্থান পরিবর্তন করেছে রাষ্ট্র নিজে।


অভিজিৎ রহস্য :
তাহলে অভিজিতকে খুন করলো কে? নয়াদিগন্তে লেখা কলামের মাত্র ৬ সপ্তাহ পর আমার সন্দেহই প্রতিধ্বনিত হলো জাতিসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধির মুখে। বাংলাদেশকে নিয়ে আওয়ামী লীগ এবং দোসরদের গভীর আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র না বোঝার সময় এখন আর নেই। বরং খুব বেশি দেরি হয়ে যাচ্ছে। বিডিআর, সাগর-রুনি এবং অভিজিৎ হত্যাকাণ্ড… যত দিন রহস্যগুলো উদঘাটন না হবে, তত দিন পর্যন্ত ২০২১-২০৪১-এর খুঁটির খবর অধরাই থেকে যাবে। আমি সবল, আপনি দুর্বল হলে আপনাকে ধ্বংস করা তুচ্ছ ব্যাপার। প্রয়োজনমতো আপনার আই ফোন, আইপ্যাড, কম্পিউটারে যত অ্যাপস আছে সর্বত্রই এমন ভাইরাস ঢুকিয়ে দেবো যা সব কথোপকথন টেপ করবে। সাম্প্রতিক কালে আমেরিকায় ‘অ্যাংরিবার্ড’ নামে একটি অ্যাপসে এফবিআইর ষড়যন্ত্রমূলক ফোনালাপ হ্যাক করার ঘটনা দারুণ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। বলছি, রাষ্ট্র ফারাবীকে অনুসরণ করতে ব্যর্থ কিন্তু মান্না-খোকার কথোপকথন হ্যাক করতে এতটুকুও সময় নষ্ট করেনি। বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থাগুলো যে প্রশ্ন তুলেছে, বিনা কারণে নয়। নির্বাহীদের বক্তব্যে আইএসআইএস-এর ধুয়া তুলে বাংলাদেশীদের উদ্দেশ্যমূলক বিভ্রান্ত করা বুশের কুখ্যাত ‘এক্সিস অব ইভল’ বক্তব্যের মতোই দুরভিসন্ধিমূলক। বুশের বক্তব্যের পরেই আফগান-ইরাকের দুরাবস্থা। আর হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দুর্ঘটনার পর দুর্ঘটনার মাধ্যমে আওয়ামী নেতৃত্বে জন্ম দেয়া হয়েছে নব্য উগ্রবাদের। নীরব গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে।
অভিজিৎ খুনের সব দায়দায়িত্ব রাষ্ট্রের। এর পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ আছে। ফারাবীকে অনুসরণ করলেই কি অভিজিৎ বাঁচত? না হলে, অভিজিৎকে মরতে হলো কার স্বার্থে? বোমা ফাটালেন অভিজিতের বাবা। তার সন্দেহ, আমাদেরও সন্দেহ। বাবার কথা, ফারাবী তো উসকানিদাতা, আসল হত্যাকারীরা কোথায়? আমরাও জানতে চাই, কে এই হত্যাকারী, রাষ্ট্র যাকে নির্বিবাদে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে! ঘটনাস্থলেই দুই পুলিশ, ২০০ গজ দূরে থানা। বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডেও পুলিশের একই আচরণ। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বারবার একই প্রশ্ন। তাদের কর্মকাণ্ড এতটাই নৈরাজ্যকর যে, বিচার না হলে ভবিষ্যতে নৈরাজ্য এমন বাড়বে যা সামাল দেয়া কঠিন হবে। গোপনে এরাই চালাচ্ছে নীরব জেনোসাইড, যা মিডিয়ায় অনুপস্থিত। দুইভাবে হ্যাক হয় : এক. অ্যাডমিন; দুই. বিটিআরসি। যদি অ্যাডমিন করত তাহলে পুরো সাইটটাই বন্ধ করে দিত। হত্যার দিন এই ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে, জানার পরেও অভিজিতের বইমেলায় না যাওয়াটাই স্বাভাবিক। অভিজিৎ তার ব্লগে অতীতে হুমকির কথা লিখেছেন। তার পরেও কেন বইমেলায় এসে এভাবে নিজেকে চাপাতির কাছে উন্মুক্ত করা! নাকি, দেশে আসার বিষয়ে কারো ষড়যন্ত্র ছিল। মিডিয়ায় চাউর, তাকে নাকি পুরস্কার দেয়ার কথা বলা হয়েছিল। শাহরিয়ার কবির বলছেন, অভিজিতের বাবা তাকে দুই ঘণ্টা আগে ফোন করে বলেছেন, বিদেশে মুক্তমনা চলছে দেশে বন্ধ কেন? কবিরের তাৎক্ষণিক উত্তর, এই সরকার এটা করবে না, নিশ্চয়ই জামাতের কাজ। তদন্ত ছাড়াই কী করে জানল এটা কার কাজ? তাহলে কি শাহরিয়ার কবিরের সঙ্গে অদৃশ্য শক্তির যোগাযোগ! হুমায়ুন আজাদের ঘটনার কথা মনে রেখে, অভিজিতের বাবার সঙ্গে ফোনালাপের পরেই বইমেলায় থাকা অভিজিতকে কেন তাৎক্ষণিক সতর্ক করল না কবির? ২ ঘণ্টা অনেক সময়, হয়তো সে বেঁচেও যেত। সুতরাং ধরে নিতে পারি, তাদের মতো রেডিক্যাল ধর্মনিরপেক্ষবাদীরা অদৃশ্য শক্তির সাথে সর্বদাই যোগাযোগ রেখেছে। অভিজিতের বাবা খুনিদের হয়তো চেনেন, ভয়ে বলছেন না, সেই রকমই ইঙ্গিত। ওয়েবসাইটটি অর্ধেক বন্ধের প্রয়োজন হয়তো রাষ্ট্রেরই এবং শাহরিয়ার কবির কী জানেন, জানতে চাই।
আইন লাগে না, কিছু হলেই জামাত-শিবির করেছে বলে প্রচার। প্রমাণেরও প্রয়োজন নেই। জীবনের নিরাপত্তার বিরুদ্ধে এই সব অধিকার, রাষ্ট্র কিংবা নাগরিকদের কেউই দেয়নি। শাহরিয়ার কবিররা ভালো করেই জানেন, পেট্রলবোমা হাতে যাদের ছবিগুলো ছাপা হচ্ছে, আপদগুলো সরকারের লোক। যাদের বিরুদ্ধে এত অভিযোগ, ঘটনা সন্দেহাতীত হলে, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে ভয় কেন! আমি কোনো দল করি না, কিন্তু সুবিচারের স্বার্থে একতরফা জবানবন্দীর বিরুদ্ধে আমার অবস্থান অবশ্যই কঠিন। আইন বলে, গ্রেফতারের সময় ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতি থাকতে হবে। গ্রেফতারের আগে অধিকারগুলো পড়ে শোনাতে হবে। ম্যাজিস্ট্রেট ছাড়াও স্থানীয় দুইজন গণ্যমান্যকে জানাতে হবে। কিন্তু রাতের অন্ধকারে সাদা পোশাকে এই সব কী? সন্ত্রাসী নামে কাদেরকে হত্যা করছে রাষ্ট্র! ৫৯ দিনে ১২৭ জন ক্রসফায়ার? প্রবাসীরা দেশে যেতে ভয় পায়, দেশীরা দেশে থাকতে ভয় পায়। ২০০৯ সালে নির্বাচনে জিতে দেশকে এই পর্যায়ে আনার প্রয়োজন কি অদৃশ্য শক্তির সঙ্গে দরকষাকষি? বরং আওয়ামী নেতৃত্বে নব্য আইএসআইএস সৃষ্টির প্রমাণ ভূরি ভূরি। এদের অনেকেই তালেবানদের ভাষায় কথা বলছে, জঙ্গি হুমকি দিচ্ছে।
নিঃসন্দেহে অভিজিৎ একজন বুদ্ধিমান লেখক। কিন্তু এখানেও একটি কথা। নিউ ইয়র্ক টাইমস ৬ মার্চ একটি দারুণ কথা উল্লেখ করেছে। ৬ মার্চ মানবজমিনÑ ‘মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের অনেকেই ইসলামী দল জামায়েতে ইসলামীর সদস্য। বাংলাদেশের আইন তেমন একটা সহায়তা করে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন ধর্মনিরপেক্ষ সরকার, ধর্ম অবমাননার দায়ে দেশটির ২০০৬ সালের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা অনুযায়ী বিভিন্নজনকে গ্রেফতার ও বিচার করেছে। ওই আইনে ধর্মানুভূতিতে আঘাত করে কিংবা করতে পারে অথবা কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্ররোচিত করে এমন তথ্য প্রচার করা যাবে না।’ আমাদের সন্দেহ, ঘটনা ঘটার বহু আগেই মুক্তমনা সাইটটি বন্ধ না করার পেছনে রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য অপরিষ্কার। যেমন করে সাম্প্রতিক কালে আইএসআইএস-এর ধুয়া তোলাটাও অস্বচ্ছ। এখানে রাষ্ট্রের কোনো দরকষাকষির বিষয় নিহিত থাকতে পারে। রাষ্ট্র বোঝাতে চাইছে, ‘আইএসআইএস সামাল দিতে এই সরকারকে অগণিতকাল ক্ষমতায় রাখা উচিত।’ এই লক্ষ্যে লাখ লাখ পুস্তিকা ছাপিয়ে দেশে-বিদেশে ছড়িয়েছে, লবিস্টও নিয়োগ দিয়েছে। আইএসআইএস-বোকো হারামের সঙ্গে বিরোধী দলকে তুলনা করা মহা অন্যায়। হলে, ৭০-এর মৌলিক আন্দোলনও সন্ত্রাসী। আমরা নই, বারবার অবস্থান পরিবর্তন করেছে রাষ্ট্র।
সন্ত্রাস ও অবরোধ এক করে দেখা রাষ্ট্রের অন্যতম দুরভিসন্ধি। একটি কথা কিছুতেই বোধগম্য নয়, আইএসআইএস-এর মানে সরকার কি বোঝে? দায়িত্বশীলদের প্রতিটি বাক্যের মূল্যায়ন হয়। এই মূল্যায়ন রাষ্ট্রের সব অঙ্গকে প্রভাবিত করে। আইএসআইএস-এর কার্যকলাপ মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে। অবরোধ চলছে ভোটাধিকার ফিরে পেতে। তার মানে হলো, সরকার আইএসআইএস-এর আন্দোলন সমর্থন করে বলেই মৌলিক অধিকারের ধার ধারে না। আমি শক্তিমান হলে ১০০টা কারণ দিয়ে আপনার দুর্বল জীবন নরক করে দিতে পারি। শুধু কম্পিউটার ও টেলিফোনই নয়, গুপ্তচর ড্রোন দিয়ে আপনার সব গতিবিধি রেকর্ড করতে পারি। আপনার বাড়ির ছাদে দুটো কবুতর বসিয়ে দিতে পারি যাদের ডানায় বসানো থাকবে সূক্ষ্ম স্যাটেলাইট, যা দিয়ে আপনাকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করব। একমাত্র মানুষই মানুষের ক্ষতি করে দিব্যজ্ঞানে। সুতরাং যারাই এ দেশে আইএসআইএস প্রমাণের চেষ্টা করছে তাদের জন্য দুঃসংবাদ, পশ্চিমাদের মুখ থেকে একবারও বের করতে পারেনি অভিজিত হত্যাকাণ্ডের পেছনে কোনো বিশেষ গোষ্ঠীর উগ্রপন্থীদের হাত রয়েছে। বরং এফবিআই পুলিশের নয়-ছয় দেখে কথা না বলেই পুলিশ স্টেশন ত্যাগ করেছে। এরা এফবিআইকেও প্রভাবিত করতে চাইছে। ফারাবীর সঙ্গে কিছুতেই দেখা করতে দেবে না। এফবিআই-এর তদন্ত নিয়ে মিথ্যা প্রচারাণাও চালাচ্ছে।
আসল মোটিভ কী? রাজিবের খুনি সন্দেহে ফারাবী একবার গ্রেফতার, আবার মুক্ত। ব্লগার অভিজিতের খুনি সন্দেহে একই ফারাবীকে গ্রেফতারের আগে অভিজিতের অভিযোগগুলোর হালনাগাদ করেনি রাষ্ট্র এবং বিতর্কিত মুক্তমনা সাইটটিও বন্ধ করেনি। তাহলে বারবার যদি ফারাবীকেই গ্রেফতার করতে হয় তাহলে প্রথম গ্রেফতারের পরে বিচারকাজ শেষ না করে জামিন দেয়া হলো কার স্বার্থে! কিংবা মুক্তমনাকে অনুসরণ করে নাস্তিকতাভিত্তিক উগ্রবাদীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলো না কেন! আসিফ মহিউদ্দিনের মতো ব্লগারদের একবার গ্রেফতার আবার জামিন-খেলা যেন নিয়ম। এই খেলা কেন করছে রাষ্ট্র, এটাই তো বিরাট রহস্য। মুক্তমনা ব্লগ পড়ি। নিউ ইয়র্ক টাইমসের সূত্র ধরে বলছি, ধর্মীয় উসকানির কারণে মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দিগন্ত টিভি বন্ধ। কথায় কথায় বন্ধ করে দিচ্ছে অ্যাপস, অনলাইন পত্রিকা, ওবেসাইটগুলো কিন্তু ‘শার্লি এবদোর’ সঙ্গে তুলনাযোগ্য মুক্তমনা নামে রেডিক্যাল সাইটটি খোলা রাখল কেন? রাষ্ট্র জানে ধর্মের বিরুদ্ধে এখানে কী ধরনের লেখালেখি হয়। যারা ব্লগারদের খুন করতে চায়, তাদের জন্য রসদ জোগানো রাষ্ট্রের কাজ নয়। সালমান রুশদির চেয়ে বড় অভিযোগ মাথায় নিয়ে ভিআইপি আদরে লতিফ সিদ্দিকী এখন পর্যন্ত আমাদের জনপ্রতিনিধি? কোনো ব্যক্তিগত মতামত লিখব না তবে মুক্তমনাতে যেসব সংবেদনশীল লেখা, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত অস্বাভাবিক। এরপর বলতেই হয়, অভিজিৎ খুনের পেছনে রাষ্ট্রের বড় কোনো দরকষাকষির বিষয় ছিল কি না। আমি নই, অবস্থান পরিবর্তন করেছে রাষ্ট্র।


রেডিক্যালইজম :
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বাংলা আইএসআইএস এখন বাস্তবতা। দুই বছরে আল-বাগদাদি প্রায় ৩৫ হাজার যুবসম্প্রদায়কে রেডিক্যালাইজড করেছে। ১৩ বছরে মুসোলিনিরা ৮ লাখ অনার্যকে রেডিক্যালাইজড করেছিল। আর মাত্র সাত বছরে প্রায় আট কোটি বাঙালিকে রেডিক্যালাইজড করেছে আওয়ামী লীগ। এই প্রমাণ সর্বত্রই। ইরাক-আফগানের মতো গণহত্যা চলছে কিন্তু আন্তর্জাতিক মিডিয়ার অনুপস্থিতিতে সত্য জানা যাচ্ছে না। পুতিন অথবা কিম জং উনের মতো যেকোনো মূল্যে ভিন্নমতালম্বীদের প্রায় নিঃশেষ করা শেষ। কম্বল থেকে লোম বাছার মতো, লোমও শেষ। রাস্তায় বিরোধী দলকে দাঁড়াতেই দেয় না। জেলখানাগুলো হাউজফুল। বাকিদের জীবন কাটছে গুহায়। প্রভাবশালী সরকারি জোট নেতা বাদল বলছে, প্রথমে পায়ে গুলি করো, তারপর বুকে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মহাপরিচালকেরা বলছেন, হত্যা করলেই সমাধান। লতিফ সিদ্দিকী বলেছিল, ঘরে ঘরে ঢুকে হত্যার কথা। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তি বলেছেন, ‘দানব দমনে যা করার করুন দায়িত্ব আমার।’ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং মন্ত্রীরা খালেদার বাড়িতে আগুন দিতে চায়। তালেবানরা ঠিক এই ভাষাতেই কথা বলে। সত্তর দশকের আফগান-রুশ যুদ্ধকে কেন্দ্র করে তালেবানদের উৎপত্তির মতো, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বাংলাদেশেও রেডিক্যালিজমের নতুন উপসর্গ যা এখনই নির্মূল না করলে দেশ হতে পারে আফগান-সিরিয়া। তাহলে কি খোকার অভিযোগই সত্য! দেশে জঙ্গিবাদ আছে প্রমাণের জন্য অভিজিতকে খুন!


খুঁটির জোর :
এখন আমাদের সার্বিক বিষয়টির হালনাগাদ জরুরি। খুঁটির জোর কোথায়? আপনি দুর্বল কারণ আমি সবল। তাই যেকোনো মূল্যে আপনাকে ধ্বংস করা অতি সহজ। ’৭৪-এর পর আবারো ‘গণতন্ত্রকে বালুর ট্রাকে’ তোলার জন্য কুরাজনীতিতে আওয়ামী লীগকে নোবেল দেয়া আমাদের দায়িত্ব। বিষয়টি হলো, রাশিয়া এবং চায়নার মতো ভেটো শক্তি যদি কোনো রাষ্ট্রের পক্ষে থাকে, তাহলে সেই সরকারের বিরুদ্ধে কোনোরকম ব্যবস্থা নেয়া অসম্ভব। প্রমাণ ‘বাশার আল আসাদ’। পশ্চিমারা যতই চেষ্টা করুক, ‘ইরান ও রাশিয়ার আপত্তির কারণে আসাদ উৎখাতে কোনো ব্যবস্থাই নিতে পারছে না।’ অন্যথায় সিরিয়ার গণহত্যা বহু আগেই বন্ধ হতো। আমাদের বেলায়ও বান কি মুন, আমেরিকা, ইংল্যান্ড কোনো ব্যবস্থাই নিতে পারবে না। বিষয়টি আগে সাধারণ এবং নিরাপত্তা পরিষদ উঠবে তখন ভেটো দেবে রাশিয়া ও চীন। ভারত-জাপান হাসিনার আরো দুই বড় শক্তি। এই দেশে তাদের স্বার্থ অসীম। শুধু বিনিয়োগই নয়, বঙ্গোপসাগরের তলে বিশাল সম্পদের ভাণ্ডার এবং একে অপরের বিরুদ্ধে ঘাঁটি তৈরির মতো বিষয়গুলোতে চীন-রাশিয়ার প্রতিযোগিতা। পিছিয়ে নেই জাপান-ভারত। সবারই চাই বঙ্গোপসাগর এবং এই ‘জাদুর কাঠিটি’ একমাত্র শেখ হাসিনার হাতে। যেকোনো দরকষাকষির কারণেই হোক, অনেক ধনী দেশই প্রচুর বিনিয়োগ করে ফেলেছে। সার্কসহ অনেক অঞ্চলের জন্য এই ভূখণ্ডের বঙ্গোপসাগরভিত্তিক ভূতাত্ত্বিক রাজনীতি কব্জায় রাখা সুয়েজ খালের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং চীনের বিরুদ্ধে ভারত, রাশিয়ার বিরুদ্ধে চীন, জাপানের বিরুদ্ধে রাশিয়া এবং চীন বনাম নির্বাচনের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের অবস্থান… জাদুর কাঠির মালিক হাসিনাকে উৎখাতের ক্ষমতা কার? এই মাপের নিরাপত্তা খুঁটি যেকোনো মাত্রার দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুত। যে কথা আমি নয়া দিগন্তে আগেই লিখেছিলাম, প্রতিধ্বনিত হলো, জাতিসঙ্ঘে বাংলাদেশ মিশনের প্রতিনিধির মুখে। আশা করি খুঁটির জোর থিওরি বোঝাতে পেরেছি। ২০৪১ সাল নয়, বাংলার মসনদ আরো ২০০ বছর তাদের হাতে থাকতে পারে। এখন এ দেশে বিরোধী দল শেষ। দশম সংসদ নির্বাচনের আগে ভারতের টেলিগ্রাফ পত্রিকাকে প্রধানমন্ত্রীর পুত্র বিনা কারণেই ক্ষমতায় যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।

Loading


মন্তব্য দেখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *