স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে আমাদের দেশে বহু তর্ক বিতর্ক হয়ে আসছে। এই তর্কে অবসান ঘটাতে কোর্টে দ্বারস্ত হতে হয়েছিল- ইতিহাসের গতি নির্ধারণ তো কোন আইন দিয়ে করা যায় না। তবে ইতিহাস যদি সংবিধানের বিষয় বস্তু হয়ে যায় তখন আইন বাধ্য সেই সংবিধানের বিধানকে সমুন্নত করে রাখতে।
তাই বিজ্ঞ আদালত উনার রায়ে জানান-
“এটি জিজ্ঞাস্য হতে পারে যে বিচারকরা ইতিহাস নির্ধারন করতে পারে কিনা । মূলত আমরা ইতিহাস নির্ধারনের দায়িত্ব নিতে পারিনা। কিন্তু বাংলাদেশের সংবিধানে মুজিব নগর সরকারের ঘোষনা মোতাবেক স্বাধীনতা দিবস ২৬ শে মার্চ এবং শেখ মুজিবর রহমান এই ঘোষনা দেন। এর ব্যতয় ঘটলে সংবিধান লংঘন হয় , সংবিধানকে সমুন্নত রাখার জন্যই এই রায় ।”
কিন্তু এই স্বাধীনতা ঘোষণা কখন কেমন করে দিয়েছিলেন তা নিয়েও অনেক ধরণের কথা শুনা যায়। আজ আমি সেই ধরণের এক ঘোষণা প্রচারকারীদের ঘটনা বর্ণনা করছি।
গত ২০০৯ সালের ৭ই জুলাই বাংলাদেশের দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার প্রতিমঞ্চ নামক পৃষ্টার সচিত্র প্রতিবেদনে সর্বসমক্ষে দু’জনের একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছিল। এদের একজন একাত্তরের পঁচিশে মার্চ রাতে ঢাকার মগবাজার টিএন্ডটি ওয়্যারলেসের মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ এবং অন্য জন ওই সময় চট্টগ্রামের সিলিমপুর টিএন্ডটি ওয়্যারলেসে দায়িত্বরত আবদুল কাদের। তারা যৌথভাবে এই প্রকাশ্য সাক্ষাৎকার প্রদান করেছেন সাংবাদিকদের কাছে। তারা প্রকাশ করেছিলেন, পঁচিশে মার্চ মধ্যরাতের বঙ্গবন্ধু বিশ্বখ্যাত স্বাধীনতার ঘোষণাকে তারা কেমন করে দেশে বিদেশে প্রচার করেছিলেন। নিম্নে তারই পূর্ণ বিবরণ তুলে দেওয়া হলো যাতে যারা এখন ইতিহাসের স্বরূপ সন্ধানে নিয়োযিত যদি তাদের কোন উপকার হয়।
১ । তত্কালিন পাকিস্থান টেলিগ্রাফস ও টেলিফোনস ডিপার্টমেন্টের ইঞ্জিনিয়ার সুপারভাইজার জনাব মেজবাহ উদ্দিনের ডিউটি ছিল ২৫শে মার্চ সন্ধ্যা ৮ টা থেকে পরদিন ২৬ শে মার্চ সকাল ৮টা পর্যন্ত।
২৫শে মার্চ সময় সন্ধ্যা ৮ টায় অফিসে যাচ্ছিলেন তখন লোক মূখে শুনছিলেন যে, আজ রাতেই বড় ধরণের কোন ঘটনা ঘটতে পারে। রাস্তায় উত্তেজিত লোকজন ব্যারকেড বসাচ্ছে। স্পর্শ কাতর স্থান হিসাবে টিএন্ডটি ও রেডিও অফিস যে যে কোন সময় আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা মাথায় রেখেই তিনি ডিউটিতে গিয়েছিলেন।
সে দিন সন্ধ্যা ৭টা থেকেই তাদের অফিসের সব গুলো সিগন্যাল ডিজঅর্ডার ছিল। তখন যোগাযোগের একমাত্র ছিল বিভিন্ন স্টেশনের রেডিও কর্মীদের আন্তঃসম্পর্ক রক্ষায় ব্যবহারের জন্য ওয়ারলেস। সেই সন্ধ্যায় ওয়ারলেসের মাধ্যমে অন্য সাব স্টেশন কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছিলেন মেজবাহ উদ্দিন।
রাত আরেকটু বাড়তেই শুরু হল প্রচণ্ড গোলাগুলি। বুঝতে পারলেন ফার্মগেটের দিক থেকে সব চেয়ে বেশি গোলার আওয়াজ আছিল। সে আওয়াজকে ট্যাংক বা মেশিন গানের আওয়াজ মনে হচ্ছিল। রাত আর বাড়লে গোলাগুলির আওয়াজ কানে তালা লাগার যোগাড় হতেই অফিসের সবার সাথে ডিউটি ছেড়ে বাসায় চলে এলেন।
২। মধুবাগের পথে এক সাইকেল আরোহী আব্বাস নামক এক রিক্সা চালকের হাতে একটি কাগজ দিয়ে বলল এটি কোন রেডিওর কারো কাছে পৌঁছে দিতে বলল। রিক্সা চালক আব্বাস ছিল মেজবাহ উদ্দিনের পূর্ব পরিচিত এবং এক এলাকার লোক। রিক্সা চালক জানত যে মেজবাহ উদ্দিন রেডিও অফিসের লোক। তাই সে ঐ কাগজ নিয়ে সোজা মেজবাহ উদ্দিনের বাসায় চলে আসে।
সারা রাত দুশ্চিন্তা, আতংক, আর তী্ব্র গোলগুলির মধ্যে আরো সব ঢাকা বাসীর মত মেজবাহ উদ্দিনও নির্ঘুম রাত কাটিয়ে ভোরে সহকর্মী ফিরোজ কবির সহ কয়েক জন প্রতিবেশীর সাথে বারান্দায় দাঁড়িয়ে,দেশে কি হচ্ছে সে নিয়ে যখন আলাপ চলছিল, তখনই রিক্সাওয়ালা আব্বাস লিফলেট আকারের কাগজটি মেজবাহ উদ্দিনের হাতে দিল।
৩ ।মেজবাহ উদ্দিন সেই লিফলেট পড়ে বুঝলেন এটি বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা। প্রতিবেশী কামাল সাহেবের কথায় সম্বিত্ ফিরে পেলেন। মুহূর্ত্যে সিদ্ধান্ত নিলেন এই মেসেজ জানিয়ে দিবেন মুক্তিকামী মানুষকে। ঘরে বসে দ্রুত সেই মেসেজটির ইংরেজি অনুবাদ করে নিলেন। কারণ টিএন্ডটি মেসেজ মোর্স কোডে ইংরেজিতে পাঠাতে হত। তারপর ফিরোজ কবিরকে নিয়ে অফিসে আসেন।
কন্ট্রোলরুমের কন্ট্রোল কনসোলের হ্যান্ডসেট ধরেই দেখলেন, সব গুলো সার্ভিস চ্যানেলে বাইরের স্টেশনগুলো থেকে সমানে ডাকছে। প্রথমে চিট্টাগাং স্টেশনকে নিলেন।সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে ছিলিমপুর সাব স্টেশনের টেকনিশিয়ান আব্দুল কাদেরকে লাইনে পেয়ে বললেন,- “শেখ সাহেবের একটি মেসেজ আছে- তাড়াতাড়ি টুকে নিন”। আরও বললেন,-“ মেসেজটি সর্বত্র প্রচারের ব্যবস্থা নেওয়া হোক এবং কিছুতেই যেন মেসেজবুকে এন্ট্রি করা না হয়”।
এরপর একই ভাবে খুলনা, সিলেট ও বগুড়া লিংকেও মেসেজটি পাঠালেন। এ সময়ে মেজবাহ উদ্দিনকে সর্বাত্মক সহায়তা করেছিলেন ফিরোজ কবির।
৪। ছলিমপুর স্টেশনের টেকনিশিয়ান আব্দুল কাদির ভিএইচএফ নেটওয়ার্ক সার্ভিস চ্যানেলে প্রাপ্ত মেসেজ দ্রুত লিখে নেন। তারপর চিট্টাগাং এর আওয়মী লীগ নেতা জহুর আহমদের স্ত্রী ডা. নুরুন নাহার জহুর, জনাব এম, আর সিদ্দিকী, এম, এ, হান্নান, মইনুল আলমকে জানান। ডা. নুরুন নাহার জহুর নিজ দায়িত্বে সংগ্রাম পরিষদের নেতাকর্মীর কাছে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার সংবাদ পৌছে দেন।
এরপর আব্দুল কাদির তড়িত্ গতিতে নন্দন কাননের টেলিগ্রাফ অফিস, হালি শহরের ইপিয়ার ক্যাম্প, এবং সংগ্রাম পরিষদের টেলিফোন ও সংশ্লিষ্ট সব মাধ্যমে পৌঁছে দেন। দিদারুল আলমকেও এই মেসেজ হস্তান্তর করেন। যা তিনি আওয়ামী লীগ নেতা জনাব আবুল কাসেম মাস্টার ও সংগ্রাম পরিষদের নেতাকর্মীদের কাছে পৌঁছে দেন। একই সঙ্গে বদিউল আলম, মুস্তাফিজুর রহমান, মোজাফ্ফর আহমদ, আবু জাফর, মফিজুর রহমান ও সিরাজুল ইসলাম সাহেবকেও কার্বন কপি পৌঁছে দেয়া হয়।
৫ । এরপর আব্দুল কাদির মেসেজটি চট্টগ্রাম বন্দরে বহির্নোঙ্গর করা বিদেশী জাহাজ এম,ভি,সারভিস্তা, মিনি-লা-ত্রিয়া, ভারতের এম ভি ভি ভি গিরি সহ আরও একাধিক জাহাজে পৌঁছে দেই। ভারতের জাহাজ মেসেজটি তত্ক্ষণিক ভাবে কলকাতা কোস্টাল স্টেশনে পৌঁছে দেওয়া ছাড়াও আর্জেন্ট হিসাবে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর কাছেও পাঠায়। এরই সূত্র ধরে ইরান ২৬শে মার্চ দুপুরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার কথা বিশ্ববাসীকে জানায়। এর পর ভয়েস অব আমেরিকা, বিবিসি সন্ধ্যাকালীন খবরে এই সংবাদ প্রচার করে। রাত ১০টায় নিজ কানে শুনেন আব্দুল কাদের। ভয়েস অব আমেরিকার খবর, যেখানে বলছে,” বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি গুপ্ত স্থান থেকে পূর্ব পাকিস্থানের স্বাধীনতা ঘোষণা করছেন”।
৬ । চট্টগ্রামস্থ ছিলিমপুর ওয়্যারলেসের একাত্তরের ২৫-২৬ মার্চ দায়িত্বরত টেকনিশিয়ান আবদুল কাদের, ১৯৭২ সালে দেশে প্রত্যাবর্তনের পর বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে সক্ষম হয়েছিলেন চট্টগ্রামের কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার মাধ্যমে। বঙ্গবন্ধু তার কাছে স্বাধীনতা ঘোষণার বার্তা দেশের অনেক স্থানে প্রেরণের কথা শুনে মন্তব্য করেছিলেন, ‘দ্যাখো, আমার সোনার ছেলেরা জীবন বাজি রেখে সেই বার্তাটি পৌঁছে দিয়েছে।’ সাক্ষাত্ শেষে বঙ্গবন্ধুর বাসা থেকে বের হওয়ার পর মিন্টো রোড থেকে তাকে অপহরণ করা হয় এবং ভবিষ্যতে একথা কাউকে না বলার জন্য শাসানো হয়। এমনকি শুইয়ে গলায় ছুরি দিয়ে জবাই করার চেষ্টা করা হয়। ছিনতাইকারীদের একজনের বাধায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান।’ এ ঘটনার পর আবদুল কাদের বিদেশে পাড়ি দেন চাকরি নিয়ে। সম্প্রতি দেশে ফিরে এসে ইঞ্জিনিয়ার মেসবাহ উদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে তারা ‘বিবেকের দায়বদ্ধতা থেকে এবং ইতিহাসের সত্যাসত্য জানাতে’ সাংবাদিকদের সামনে স্বেচ্ছায় এসেছিলেন।
সূত্র- দৈনিক যুগান্তর, প্রতিমঞ্চ, পৃষ্টা ৯, মঙ্গলবার ৭ জুলাই ২০০৯
বিঃদ্রঃ এই সাক্ষাৎকার যুগান্তরের প্রিন্ট ভার্সনে প্রকাশ হলেও আশ্চার্য জনক ভাবে অনলাইন ভার্সনে অনুপস্থিত ছিল।
সংযোজনঃ- ২০১০ সালে মেজবাহ উদ্দিন তিনি উনার গত বছরের দেয়া বর্ণনায় আর কিছু তথ্য সংযোজন করেছেন-
সে বর্ণনায় বলেছিলেন রিক্সা চালক আব্বাসের কাছে মধুবাগে কোন এক সাইকেল আরোহী ঘোষণার লিফটেট দিয়ে যায়। এবার তিনি সেই ঘটনাকে একটু অন্যভাবে বর্ণনা করেছেন-
সূত্র দৈনিক জনকণ্ঠ ২৫শে মার্চ ২০১০
২৬ মার্চ শুরুর সকালে আনুমানিক রাত ১২টা থেকে ১টার মধ্যেই সম্ভবত গ্রেফতার হওয়ার আগেই লোক মারফতে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণাটি মগবাজার ওয়্যারলেসে পাঠান। ঐ লোক টানা ৩/৪ ঘণ্টা কার্ফুর ও হানাদার বাহিনীর এতসব গোলাগুলির মাঝে নির্ঘাত মৃত্যু জেনেও তার এমন দুঃসাহসিক পদক্ষেপের মাধ্যমে ধানমণ্ডি থেকে চোরাগোপ্তাপথে এই গলি সেই গলি করে বাণীটি নিয়ে মগবাজার ওয়্যারলেসে কোনমতে প্রাণে রক্ষা করে সকাল ৫:৩০ মিনিটের দিকে সেখানে আসা সম্ভবপর হলেও পরবর্তি পর্যায়ে ওয়্যারলেসের কাউকে না পেয়ে পরিবর্তিত প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ও কৌশলগত কারণে একজন রিক্সাচালকের মাধ্যমেই মগবাজার ওয়্যারলেসের কর্তব্যরত মেজবাহউদ্দিনের সাথে খুব ভাল পরিচয় আছে ও বঙ্গবন্ধুর অনুসারী হিসাবে নিশ্চিত হওয়ার পর তার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণাটি হস্তান্তর করে বলে গিয়েছিলেন।
স্বাধীনতা পেয়েছি এটাই বড় কথা।
কেউ বলে, শহীদ জিয়া
‘স্বাধীনতার ঘোষক’ ছিলেন
কেউবা বলে, শোষক ছিলেন
দালাল পৃষ্ঠপোষক ছিলেন
বঙ্গবন্ধু দেশের নায়ক
জিয়া দেশের ভিলেন ছিলেন।
২৫ মার্চ একাত্তরে
সেই রাত্রির দ্বিপ্রহরে
বঙ্গবন্ধু বজ্রস্বরে
টেলিফোনে, েটলেক্স করে!
‘স্বাধীনতার ঘোষনা’ দেন
এই ইতিহাস সবাই জানেন।
কেউ বলে, এই কথা ঠিক
আত্মসমর্পনের ক্ষনে
বঙ্গবন্ধু মনে মনে
ঘোষনা দেন ‘টেলিপ্যাথিক’!
‘চাচা আপর পরান বাঁচা’
এমন চরন স্মরন করেন
যুদ্ধে যাবার শ্রেষ্ঠ সময় (পাকবাহিনীর চরন ধরেন!)
মুজিব কারা বরন করেন।
বঙ্গবন্ধু এ্যাজ এ শাসক
ব্যর্থ এবং মন্দ ছিলেন
রীতি-নীতি স্বজন প্রীতি
ক্ষমতা মোহে অন্ধ ছিলেন
দুর্ভিক্ষে, দুঃশাসনে
চোখ কান তার বন্ধ ছিলো।
কেউ বা বলে, জিয়ার গায়ে
পাকিস্তানী গন্ধ ছিলো
মুক্তিযোদ্ধা বনাম জিয়া
জন্মগত দ্বন্দ ছিলো
রাজাকার আর দালালেরা
তার প্রথম পছন্দ ছিলো।
জিয়া নিজে ফরয জ্ঞানে
চালু করেন প্রক্রিয়া টা …
রাজাকারের পুনর্বাসন
বাড়ান তাদের ক্ষমতা টা।
কেউ বলে, বঙ্গবন্ধু
শুরুই করেন উল্টা হাটা
তেহাত্তরেই কাটেন তিনি
রাজাকারের মূল ‘ফাড়া’ টা
শেখ মুজিবই রোপন করেন
বিঁষবৃক্ষের সেই চাড়া টা
কেউ ভোলেনি শেথ মুজিবের
ক্ষমার নামে মমতা টা।
সদ্য স্বাধীন দেশের জন্য
ঘটনা টা দুঃখজনক
ক্ষমা দানে জাতির জনক
‘থ’ করে দেন জাতির টনক!
কেউ বা বলে, জিয়া ছিলেন
মুখোশধারী অত্যাচারী
মুক্তিযোদ্ধা জিয়া ছিলেন
মুক্তিযোদ্ধা হত্যাকারী
দেশদ্রোহী আখ্যা দিয়ে
পথের কাঁটা সরিয়ে দিতেন
ষড়যন্ত্রে জড়িয়ে দিতেন
ফাঁসির মঞ্চে চড়িয়ে িদতেন।
ছেঁড়া গেিঞ্জ লেবাস ধারী
জিয়া ছিলেন ধূর্ত অতি
বহুদলের প্রবর্তনে
গনতন্ত্র গর্ভবতি!
ক্ষমতাতে থাকতে টিকে
প্রসব করেন বি.এন.পি কে
সেনানিবাস, সৈন্য ঘরে
রাজনীতী কে দৈন্য করে
খাকি পোষাক বুটের শাসন
আর সাফারী স্যুটের শাসন
কায়েম করেন স্বাধীন দেশে
দেশপ্রেমিকের ছদ্মবেশে।
কেউ বলে, কেউ ভোলেনি
নির্যাতনের সেই কাহিনী
শেখ মুজিবের নিজের গড়া
লাল বাহিনী, নীল বাহিনী
চামচা গুলি ব্যাস্ত ছিলো
কম্বল আর গম চুরিতে
তার সময়ে দেশ টা ছিলো
শূন্য তলাহীন ঝুড়িতে!
সাক্ষী আকাশ, বাতাস সাক্ষী
পদ্মা মেঘনা আর যমুনা
তার কীর্তি আজ ইতিহাস
এক বাকশাল তার নমুনা।
এমনি করেই দুইটি দলে
সত্য দলে পায়ের তলে
দুই নেতা কে নিয়ে তাদের
সারা বছর যুদ্ধ চলে
দুইটি দলই সমান তালে
গল্প বানায়, নাটক করে
বিভ্রান্তের ধূম্রজালে
দেশবাসি কে আটক করে।
মূর্খগুলি দেশবাসিকেও
গন্ডমূর্খ গন্য করে
স্ব-রচিত ইতিহাসের
ছবক দিয়ে ধন্য করে।
দুই চেয়ারের দুই মালকীন
স্বৈরাচারী প্রক্রিয়াতে
যেমন খুশি ইচ্ছে মতো
দেশ কে নিয়ে খেলায় মাতে।
বাংলাদেশ কে কাটে ছিঁড়ে
এক কলমের একটি সইয়ে
সংবিধানে, দলিল পত্রে
বাংলাদেশের পাঠ্য বইয়ে।
মুজিব দলের দাবি তারাই
মুক্তিযুদ্ধের ধারক-বাহক
জিয়া দলের সব নেতারাই
স্বাধীনতার শত্রু , ঘাতক।
জিয়া দলের এক অভিযোগ
চলছে নাকি সেই চেষ্টা
পাশের দেশের রাজ্য হবে
বিক্রি হবে এই দেশ টা!
বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ
যুগে যুগে দেশ কাল যার –
নাম দিয়েছে ‘জাতিয় সঙ’
বাংলাদেশের ‘ন্যাশনাল ভার’।
(বঙ্গবন্ধু-জিয়াকে নিয়ে করা মন্তব্য গুলো কবির নয়, বিভিন্ন সময় রাজনীতিকদের করা উক্তি গুলোকে স্বপ্নচারী কবি ছন্দে সাজিয়েছেন মাত্র)।।