সংলাপে সরকারি দল অনড় কেন?

রাজনৈতিক সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে বিদেশিরা সরব হলেও আওয়ামী লীগ তার অবস্থানে অনড় রয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত একটি দেশে যখন শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকে না, তখন নাশকতাই একমাত্র উত্তর হয়ে থাকে। সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট ওবামাও এ কথাটি অত্যন্ত স্পষ্টভাবে বলেছেন তার এক বক্তৃতায়। সহিংসতার নিন্দা ও শান্তিপূর্ণ উপায়ে তা বন্ধের লক্ষ্যে সংলাপের উদ্যোগ নিতে গত দুই দিনে সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপ বেড়েছে। এ বিষয়ে যাঁরা কূটনৈতিক ভাষায় অনুরোধ বা আহ্বান জানিয়েছেন, তাঁদের পুরোভাগে আছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সাংসদেরা
গত বছরের ৫ই জানুয়ারির বিতর্কিত ও একতরফা নির্বাচনের বার্ষিকীকে কেন্দ্র করে নতুন করে শুরু হওয়া রাজনৈতিক প্রতিবাদকে ঘিরে সৃষ্ট সহিংসতায় ৪৬ দিনে নিহতের সংখ্যা ১০০ ছুঁই ছুঁই করছে (৯৯)। এঁদের মধ্যে পেট্রল-বোমা ও আগুনে নিহত হয়েছেন ৫৬ জন আর ক্রসফায়ারে ২৩। এ ছাড়া সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন আরও ১৫ জন। আহত ব্যক্তিদের সংখ্যা কয়েক শ, যার মধ্যে শুধু ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন আছেন ১৩০ জন। যানবাহন ধ্বংস হয়েছে হাজারের ওপর। সর্বশেষ বৃহস্পতিবারও চাঁদপুরে ট্রেনে আগুন ও পেট্রল-বোমায় দগ্ধ হয়েছেন ১৩ জন। সূত্র “আমাদের সময় ডট কম”

প্রশ্ন হচ্ছে আওয়ামী লীগ সংলাপের পথে না চলে বিরোধী দলের নেতা কর্মীকে হত্যা গুম ও ক্রস ফায়ারে দিয়ে মনে করছে নাশকতাই বন্ধ করে ফেলবে কিন্তু আজ এক মাসের ঊর্ধ্বে সরকার কি এ ব্যাপারে সফলতা অর্জন করতে পেরেছে ? যদি তা হত তাহলে বিশ্ব মোড়ল সহ দেশে বিদেশে সবাই কেন সংলাপের কথা বলছেন?

আসল কথা হল সংলাপের কথা যখন আসে তখন সকল পক্ষের গ্রহনযোগ্য ব্যবস্থার মাধ্যমে একটি মধ্যবর্তী নির্বাচনের কথা আসবে আর সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভরাডুবির সম্ভাবনাই। অতএব এটা সবাই বুঝে যে কোন অবস্থায়ই সরকার যাতে নির্বাচনে যেতে না পারে হয় সে চেষ্টা তারা চালিয়ে যাবে।

তবে এ কথা স্বীকার করতে হবে যখন কোন দাবী দেশে বিদেশে সর্বত্র আলোচিত হওয়া শুরু হয় তখন তার প্রভাব সর্বস্তরের মানুষের মনে প্রভাব বিস্তার করে এবং এ দাবী দিন দিন প্রখর হতে থাকবে। শক্তি দিয়ে মানুষ হত্যা করে এ দাবী বন্ধ করা সম্ভব নয়।

এ দিকে আর একটা ব্যাপার বাংলাদেশে অত্যন্ত জঘন্য আকারে ও মানবতার অতিশয় বেদনাদায়ক অবস্থা প্রকাশ পাচ্ছে, তা হল এ দেশে বিরোধী দলের বিশেষকরে  বিএনপি ও জামাত শিবিরের মানুষের জীবনের মানবতার কোন মূল্য নাই সরকারের দৃষ্টিতে!

সরকার যে ভাবে তাদের উপর অত্যাচার ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছেন তা অত্যন্ত নিন্দনীয় এজন্য কাউকে বিরোধী দলের সমর্থক হতে হবেনা  কেননা বিচার বহির্ভূত হত্যা কোন অবস্থাতেই গ্রহনযোগ্য নয়।

সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয় এরা দেশে নাশকতায় জড়িত তাই তাদেরকে এভাবে হত্যা করা হচ্ছে। যদি তাই সঠিক হয় তা হলে একই ধরনের অপরাধ যখন দেখা যায় সরকার পক্ষের সন্ত্রাসী ক্যডাররা করে থাকে যেমন ছাত্রলীগ যুবলীগ এবং বাস্তবে এসব সন্ত্রাসীদেরকে পুলিশ র‍্যব ধরেছেও কিন্তু সরকারি মহলের সহায়তায় তাদেরকে বিনা বিচারে মুক্তি দেয়া হয় যা দেশের পত্রপত্রিকায় এসেছে সেটাকে কি ভাবে মেনে নেয়া যায়? অপরাধে অভিযুক্ত কাউকে বিনাবিচরে মুক্তি দিয়ে দেয়া আর অপরাধে অভিযুক্ত সন্দেহে কাউকে ক্রস ফায়ারে হত্যা করা মহা পাপ এবং সভ্য সমাজে দন্ডনীয় অপরাধ।

 

Loading

উড়ন্ত পাখি

About উড়ন্ত পাখি

আমি কোন লেখক বা সাংবাদিক নই। অর্ন্তজালে ঘুরে বেড়াই আর যখন যা ভাল লাগে তা সবার সাথে শেয়ার করতে চাই।

মন্তব্য দেখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *