১৬ কোটি মানুষের দেশে একজনও মানুষ দেখি না !

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার ‘ভয় করিও না হে মানবাত্মা’ কবিতায় লিখেছিলেন : ‘তখতে তখতে আজ দুনিয়ায় কমবখতের মেলা শক্তি-মাতাল দৈত্যরা সেথা করে মাতলামী খেলা। … পুণ্য তখতে বসিয়া যে করে তখতের অপমান রাজার রাজা যে, তাঁর হুকুমেই যায় তার গর্দান।’
আজ থেকে ৬২ বছর আগে লেখা এই কবিতার প্রতিটি শব্দ ও বর্ণ যে শ্রেণীর শাসকদের উদ্দেশে বর্ষিত, তাদেরই আরও নিকৃষ্ট অনুসারীরা এখন বাংলাদেশের শাসন ক্ষমতায় বিপুল বিক্রমে রাজত্ব করে যাচ্ছে। লাখ লাখ শহীদের রক্তে ভেজা, মহান পূর্বপুরুষদের অপরিসীম ত্যাগ ও সংগ্রামের মাধ্যমে গড়ে ওঠা এই দেশটাকে বর্তমান শাসকরা কুশাসন ও দুর্নীতিতে মহাবিশ্বের ডাস্টবিন বানিয়ে ছেড়েছে। বাংলাদেশের ভাগ্যাকাশে আজ দুর্যোগের ঘনঘটা। জাতির সৌভাগ্য সূর্য আজ অস্তাচলগামী। নিপীড়িত, নির্যাতিত, নিষ্পেষিত, লাঞ্ছিত, অপমানিত মানুষের বক্ষফাটা আহাজারিতে থমথমে আজ দেশের আকাশ-বাতাস। বর্তমান শাসকরা দেশকে যে শুধু দুর্নীতিতেই পৃথিবীর এক নম্বর স্থানে স্থায়ী হিসেবে বসিয়ে দিয়েছে তাই নয়, দেশের মানুষের সর্বশেষ আশা-ভরসার স্থল বিচার ব্যবস্থাকেও পরিণত করেছে ধ্বংসস্তূপে। বিচার ব্যবস্থার প্রতি আজ আর কারও আস্থা নেই। গুম, খুন, অপহরণ, ছিনতাই এখন পরিণত হয়েছে ডাল-ভাতে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে রাষ্ট্রের সমর্থনে রক্তপিপাসু হয়ে পড়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জনমনে এখন কেবল আতঙ্ক আর ভীতি। স্বাভাবিক জীবনযাপন হয়েছে তিরোহিত। নিরাপত্তাহীনতায় থরথর কাঁপছে প্রতিটি সংসার। গত চার বছরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গুম করেছে ১৫৬ জন মানুষকে। এদের মধ্যে লাশ পাওয়া গেছে মাত্র ২৮ জনের। বাকিদের ভাগ্যে কী ঘটেছে কেউ জানে না। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে আরও ৪৬২ জন। একই সময়ে সরকারি বহিনীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী নৃশংসভাবে খুন করেছে বাংলাদেশের ২৭০ জন নাগরিককে। বাংলাদেশের মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এটা পরিষ্কার রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস। রাষ্ট্র এখানে খুনির ভূমিকায় আবির্ভূত হয়েছে। রাষ্ট্র এখানে খুনিদের সহায়তা করছে। তাদের বিচার থেকে আড়াল করে রাখছে। গত চার বছরের কুশাসনে দেশে মানবাধিকার বলে আর কিছু নেই। মানবাধিকার পরিণত হয়েছে আওয়ামী অধিকারে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ছাড়া দেশের আর সবাই যেন অপরাধী। তাদের বিচার চাওয়ার অধিকারটুকুও আর নেই। শুধু আওয়ামী লীগ করার কারণে গত চার বছরে স্বয়ং রাষ্ট্রপতি ২১ জন দাগি খুনিকে ক্ষমা করে দিয়েছেন। এটাও নজিরবিহীন ঘটনা। ৩৬ বছরে যেখানে ক্ষমা পেয়েছে ৪ জন, সেখানে গত চার বছরেই ক্ষমা অর্জন করেছে ২১ জন জঘন্য অপরাধী। ফলে দেখা যাচ্ছে রাষ্ট্র এখন পক্ষ নিয়েছে খুনি-ডাকাতদের। আর সন্তানহারা, স্বামীহারা, পিতাহারা মানুষদের এখন একমাত্র ভরসা আল্লাহ। অপরাধীরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে আর নিহতের পরিবার-পরিজন ভয়ে-আতঙ্কে হচ্ছেন ভিটেমাটি ছাড়া। এক অর্থে গোটা জাতি আজ এসব অপরাধীর হাতে জিম্মি। ’৭২-৭৫ এ বর্তমান ক্ষমতাসীনদের পূর্বসূরিরা ব্যাংক ডাকাতি করত। এখন গোটা ব্যাংকই গায়েব করে দিচ্ছে এরা। দুর্নীতির অথৈ পানিতে হারিয়ে গেছে পদ্মা সেতু। চোরকে দেয়া হয়েছে দেশপ্রেমিক উপাধি। কুইক রেন্টাল ও রেন্টাল ডাকাতদের দেয়া হয়েছে ইনডেমনিটি। হলমার্ক কেলেঙ্কারির মোদাচ্ছেরকেও সততার সার্টিফিকেট দিচ্ছে দুদক। যেভাবে রেলের কালো বিড়ালকে দেয়া হয়েছে ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট। অর্থাত্ দুর্নীতি ছাড়া এখন কোনো নীতি নেই। ঘুষ ছাড়া কোনো খাবার নেই। ফলে অর্থনীতি এখন নির্বাণ লাভের পথে। শেয়ারবাজারে কবরের নিরবতা। শিক্ষাঙ্গনগুলো ক্ষমতাসীনদের ছাত্র সংগঠনের সন্ত্রাস করার অভয়ারণ্য। দলবাজ শিক্ষক ও ভিসিদের বদৌলতে এ জগত এখন মৃত্যুশয্যায়। বাজারে আগুন। দিশেহারা মধ্যবিত্ত। ঘরে থাকলে খুন,পথে নামলে গুম। অপহরণকারীদের পাইয়ে দেয়া হচ্ছে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ। অসহায় দর্শকের মতো তাই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ছড়িয়ে পুরো দেশ ও জাতিকে অচল অবশ স্থবির করে রাখা হয়েছে। পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রকে নিয়োজিত করা হয়েছে নিজেদের সেবায়। নিজেদের উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করার মেশিনে। জাতির সব ইতিহাস ও অর্জনকে পায়ে পিষ্ট করে চাপিয়ে দেয়া হয়েছে দলীয় বিকারগ্রস্ত বিকৃত ইতিহাস। সব জাতীয় ব্যক্তিত্ব ও নায়ককে ধুয়ে-মুছে সাফ করে কেবল একজনের মহিমা কীর্তনের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে প্রচার মাধ্যমকে। আবার নিজেদের ব্যর্থতা, অযোগ্যতা, অপদার্থতা ধামাচাপা দিয়ে এদ্দিন দোষ চাপানো হচ্ছিল বিএনপির ঘাড়ে। তারপর বেছে নেয়া হয় বহির্বিশ্বে বাংলাদেশর সবচেয়ে শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে। ইদানীং তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের নাম। তাদের ওপর চলছে আমানুষিক দমন-পীড়ন। জামায়াত বা ছাত্রশিবির যদি কোনো নিষিদ্ধ সংগঠন হতো তাহলে বলার কিছু ছিল না। নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এই দলটি নিবন্ধিত। জাতীয় সংসদেও তাদের প্রতিনিধিত্ব আছে। তারপরও তাদের কার্যালয় দখল করে নেয়া হয়েছে। রাজপথে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করার অধিকারটুকুও করা হয়েছে হরণ। মুফতি আমিনীর মতো বরেণ্য আলেমকে বছরাধিককাল ধরে রাখা হয়েছে গৃহবন্দী করে। দেশের ২০০-এর ওপর সংবাদপত্র আজ বন্ধ হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবার সম্পর্কে সত্য খবর পরিবেশনের জন্য দৈনিক আমার দেশ আজও সরকারি রোষানলে। সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে সত্য প্রকাশের জন্য পুরস্কৃত না করে জেলে পচানো হয়েছে ১০ মাস। কোথায় যাবে মানুষ? কোথাও তো কাউকে দেখি না!
দুই. এখন থেকে সাড়ে চৌদ্দশ’ বছর আগে ইসলামের আবির্ভাবের আগের আরব দেশের সময়কে বলা হয়েছিল ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত’। সেই সময়ে সে দেশে কোথাও কোনো মানুষের নিরাপত্তা ছিল না। আইনের শাসন ছিল না। জোর যার মুল্লুক ছিল তার। ছিল শুধু ষড়যন্ত্র। ছিল বিশ্বাসঘাতকতা। ন্যায়, নীতি, সত্য বলে কোথাও কিছু ছিল না। মেয়েশিশু হলে তাদের জীবন্ত কবর দেয়া হতো। সেই জাহেলিয়াতের সাড়ে চৌদ্দশ’ বছর পর বাংলাদেশে এখন যে সময়টা চলছে, একে তো এক কথায় ‘আওয়ামী জাহেলিয়াত’ই বলা যায়। আর কোন্ নামে চিহ্নিত করা যায় এই নিকষ অন্ধকার সময়কে? এতে আওয়ামী বন্ধুরা হয়তো নাখোশ হবেন। কিন্তু সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলা কি কোনো অপরাধ? দুঃখ-বেদনায় কাতর হয়ে ১৯৯৮ সালের বাংলাদেশে বসে লিখেছিলাম ‘আওয়ামী জাহেলিয়াত’ কবিতা। এখানে আজকের পাঠকদের জন্য তার সামান্য অংশের গদ্যরূপ তুলে দিতে চাই : ‘তোমার ভিতরে ঘুম নেই বাংলাদেশ। কেবল ঘুমের জন্য বোবা হাহাকার মাথা কুটে মরছে সর্বত্র। তুমি অস্থির, তুমি ব্যাকুল। তুমি উন্মত্ত। শিকড় থেকে আলগা হয়ে যাচ্ছে মাটি। টালমাটাল অস্তিত্ব থরথর কেঁপে উঠেছে। ভয়ঙ্করভাবে বিস্ফোরিত তোমার দু’চোখ বেয়ে বেয়ে নামছে অবিরল রক্তের ধারা। আর অকস্মাত্ তুমি নিক্ষিপ্ত হয়েছো গনগনে চুল্লির মধ্যে। তুমি পতিত হয়েছো হৃদয়হীন বিভীষিকাময় দোজখে। তুমি নিক্ষিপ্ত হয়েছো গলিত বিষ্ঠার ভয়াবহ এক দরিয়ায়। তোমার বাকরুদ্ধ দৃষ্টির সামনে তোমারই হিংস্র নখ ছিন্নভিন্ন করছে তোমারই হৃিপণ্ড। তোমাকে ঘিরে তোমার পচা গলিত মাংসের ভোজ। তোমাকে ঘিরে তোমার পোড়া মাংসের বীভত্স উত্সব। শকুনী, গৃহিণীর পাশবিক উল্লাস। আর তুমি এক দৈনিক সন্ত্রাস। দৈনিক খুন। হাইজ্যাকিং। ডাকাতি। দৈনিক নাশকতা। দৈনিক অপহরণ। মিথ্যাচার বিকৃতি বিভেদ, বিশ্বাসঘাতকতা। তুমি এখন দৈনিক জিঘাংসা। ড্রাকুলার হিস হিসে দাঁত। তুমি এখন রক্তপিপাসু কুড়াল। ঘাতক পুলিশ। তুমি এখন দৈনিক প্রতিশোধ। লজ্জায় তোমার ভোরের কোয়েল দেশ ছেড়ে গেছে। অপমানে মাথা নত করে দাঁড়িয়ে আছে তোমার শ্বেত শুভ্র শাপলা। মায়ের জঠর থেকে নেমেই এখন যন্ত্রণায় কুঁকড়ে যাচ্ছে তোমার নবজাতক। আর প্রেম প্রীতি বাত্সল্য ভ্রাতৃপ্রেম সব সব কিছু অন্তঃসারশূন্য চৈত্রের বাতাসে বিলাপ করে করে ফিরছে। আর তুমি এখন কেবলি অবিশ্বাস, বেঈমানী, নৃশংসতা। তুমি এখন কেবলি সন্দেহ, সংশয়, হানাহানি। বিচার না হওয়া। পুত্রহারা আর বিধবার ক্রন্দন। ছিঁড়ে যাওয়া মর্মের বত্রিশ বাঁধন। তুমি কারবালা, তুমি কারবালা, তুমি কারবালা।’ প্রিয় পাঠক, খুব সামান্য অংশই তুলে দিলাম। ভেবে দেখুন ১৯৯৮ সাল এবং ২০১২ সালের মধ্যে কী অদ্ভুত মিল। সেই একই জবাবদিহিতাশূন্য অবস্থা। একই যন্ত্রণা। একই অন্ধকার। সেই অন্ধকারের সামনে দাঁড়িয়ে বলেছিলাম— “হায় ‘বঙ্গবন্ধু’ এ আপনি কোথায় নিয়ে এসেছেন আমাদের? যেখানে দৈনিক কেবল বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু এবং বঙ্গবন্ধু— তারপর বঙ্গবন্ধু অতঃপর বঙ্গবন্ধু অতএব বঙ্গবন্ধু এবং বঙ্গবন্ধু … আর আপনি নিজে কেড়ে নিয়েছিলেন আমাদের কথা বলার অধিকার আর এখন আপনার ফরজন্দ হরণ করছে আমাদের ইজ্জত।”
তিন. কোথায় যাবে মানুষ? কোথাও তো কাউকে দেখি না। ১৬ কোটি মানুষের দেশে তো একজনও মানুষ দেখি না। যে নাকি দুঃশাসনের বিরুদ্ধে তিতুমীরের মতো বাঁশের কেল্লা বানাবে। ফারায়েজী আন্দোলনের অসম সাহসী নায়ক দুদু মিয়াকে এই আকালের দিনে কোথায় পাব? কোথায় ফকির সন্ন্যাসী বিদ্রোহের মহানায়ক মজনু শাহ? কোথায় ভাটির শমশের গাজী? কোথায় বীর ঈশা খাঁ? একজন সূর্যসেনেরও তো দেখা নেই কোথাও। এ মাটি কি তাহলে নিষম্ফল জমিতে পরিণত হয়েছে? হারিয়েছে কি সব উর্বরতা? ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলনের রক্ত কি তাহলে শুকিয়ে গেছে? ১৯৭১-এর চেতনা কি এখন কেবলই স্মৃতি? এই যন্ত্রণা ও অভাবের তাড়না থেকেই ১৯৮৮ সালে লিখেছিলাম ‘ক্যাটলগ’ কবিতাটি। যা ১৯৯১ সালে প্রকাশিত আমার ‘আগুন আমার ভাই’ কাব্যে গ্রন্থিত হয়। আজ এই কবিতাটি দিয়েই শেষ করছি লেখা :

“রাস্তার একপাশে চুপচাপ বসে থেকে দেখি

কখনো দাঁড়িয়ে বসে কোলাহল ভেদ করে দেখি

 হাঁটতে হাঁটতে কিংবা ছুটতে ছুটতে

জিরাতে জিরাতে কিংবা হাঁটাতে হাঁটাতে

সাদামাটা চোখে কিংবা অভিনিবেশ সহকারে দেখি

দূর ও নিকট কিংবা বাহির ও অন্তর দেখি

দেখি বাস ট্রাক টেম্পো রিকশা ও সাইকেল যায়

লেটেস্ট মডেল জাপান ক্রিম কালার যায়

মন্ত্রীর গাড়ি যায়

আমলারা বাড়ি যায়

উঠতি শিল্পপতি রাজনীতিবিদ যায়

বিআরটিসি যায় পাবলিক সার্ভিস যায়

রেলগাড়ি ঠেলাগাড়ি ভ্যান যায়   দেখি স্যুট টাই খিঁচে ইন্ডেন্টের ধড়িবাজ যায়

ঢিলেঢালা পাঞ্জাবি নব সংস্কৃতি যায়

মাইকেল জ্যাকসন ম্যারাডোনা ফ্যান যায়

ন্যালাহাবা ন্যাকা থ্যাকা বুড়ি আহলাদী যায়

বসন্ত ছিটাতে নব দম্পতি যায়

অশীতি বৃদ্ধ যায় সামনের মাটি শুঁকে শুঁকে

কোনো কোনো মেয়ে যায় মুড়ির টিনের মতো ধুঁকে ধুঁকে   দেখি কতো কর্মকর্তা কেরানী পিয়ন

গোয়েন্দা ও গাধার বহর

আদার বেপারী এবং জাহাজ মালিক

চামচা ও চামচিকা আধুলী ও পাঁচসিকা

গরু ও মেয়ের দালাল আমদানী রফতানীকার

উকিল ব্যারিস্টার জজ সেরেস্তা সাহেব

অডিটর স্থপতি ডাক্তার ও মহাকাশবিদ

কবি গল্প লেখক সম্পাদক ও লঘু বাঘা রিপোর্টারগণ

সৈন্য সেনাপতি নাবিক ও উড়োজাহাজি   পুলিশ পেশকার এবং মহল্লার মাস্তান দেখি

পাদ্রী পুরোহিত মওলানা ও মিথ্যাবাদী দেখি

আস্তিক নাস্তিক ভণ্ড প্রতারক বদমাশ দেখি

ঘাতক পাতক এবং স্বেচ্ছাচারী দেখি

অভিনেতা অভিনেত্রী পাপী তাপী লোভী দুঃখী দেখি

টাকার গরম দেখি

সীমাহীন দারিদ্র্য দেখি   দেখি গরু মহিষ ছাগল কুকুর বিড়াল

বাঘ ভাল্লুক কাক ময়না শূকর

কোকিল টিয়া দোয়েল সজারু ও সাপ

দেখি কানিবক এবং অসহায় পুঁটি

কাদাখোঁচা হারগিলা শকুন ও বাজ

তাকিয়ে থেকে থেকে এত কিছু দেখি

অথচ কোটি কোটি মানুষের দেশে

একজনও মানুষ দেখি না।”

________________
লেখক : কবি ও সাংবাদিক

(পুর্ব প্রকাশিত:  আমারদেশ)

Loading


Comments

১৬ কোটি মানুষের দেশে একজনও মানুষ দেখি না ! — 2 Comments

  1. অসাধারণ লেখা,দেশের রাজনীতি রিমোট কন্টোল যে ফাইভ স্টার মেম্বারদের হাতে,তা আর নতুন করা বলার অপেক্ষা রাখে না।অতীতেও আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে এবং ভবিষ্যৎতের এ খেলা আরও বড় করে হবে। বর্তমান সরকারের দুনীতি আকাঙ্ক্ষা জনগণের কাছে দিনের মত পরিষ্কার হয়ে গেছে।

  2. অসাধারণ লেখা!!দেশের রাজনীতি রিমোট কন্টোল যে ফাইভ স্টার মেম্বারদের হাতে,তা আর নতুন করা বলার অপেক্ষা রাখে না।অতীতেও আমাদের ভবিষৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে এবং ভবিষতেৎ এ খেলা আরো বড় করে হবে। বতমান স্রকারের দুনীতি আকাঙ্ক্ষা জনগনের কাছে দিনের মত পরিষ্কার হয়ে গেছে।

মন্তব্য দেখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *