রাজনৈতিক সুবিধা নিতে জঙ্গিবাদ কে লালন করছে?

minah2‘জঙ্গিবাদ’ বোঝার মতো উপযুক্ত কাউকে দেখেছি বললে, অসত্য বলব। যেন প্রত্যেকেই রাজনৈতিকভাবে অন্ধ। ইরাকের উদাহরণ একাধিকবার দিয়েছি। ৯/১১-এর দুর্ঘটনা, মধ্যপ্রাচ্যে ঢোকার সুযোগ করে দিয়েছিল ন্যাটো শক্তিকে। এককালে ইরাককে বলা হতো ‘দ্বিতীয় ইউরোপ’; কিন্তু এখন? সকালে-বিকালে ন্যাটোর বোমা আর মধ্যখানে সুইসাইড ভেস্ট পড়া বিপথগামী যুবকদের অত্যাচারে লণ্ডভণ্ড। হিন্দুস্থান টাইমস বলছে, ৯০ ভাগ বাংলাদেশীই ভারতবিদ্বেষী, আর ৭০ ভাগ ভারতকে ঘৃণা করে। দিল্লি থেকে বিশেষ টাস্কফোর্সের আগমন এবং প্রণবের শুভেচ্ছা বার্তার ইঙ্গিত ভালো মনে হয় না। যথারীতি প্রতিক্রিয়া, সোস্যাল মিডিয়ায়। বাংলাদেশেও ইরাকের পরিস্থিতি সৃষ্টি করার লক্ষ্যে কাজ করছে একাধিক কুশীলব। বীণা সিক্রিদের মুখে তালা পড়ার কোনো লক্ষণই নেই। আমেরিকাকে বারবার প্রত্যাখ্যান করে ভারতীয় হস্তক্ষেপের সুযোগ দেয়ার মতো জবাবদিহি সরকার দেশে নেই।
দিন দিনই পরিচয়হীন আমরা আস্থাহীনও। আস্থার জন্য শাসকগোষ্ঠীকে মাইক মারতে হয়। উপদেশের ভারে জর্জরিত মানুষ, কখন, কেন, কিভাবে প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে ওঠে, বোঝার সাধ্য কার! ইন্টারনেট হয়তো কেড়ে নেয়া যাবে, বায়োমেট্রিক সিমে হয়তো বাধ্য করা যাবে; কিন্তু আস্থাহীনতার অভাব পূরণ হবে কি? গুলশান ঘটনার পরও মন্ত্রীদের হালকা জিহ্বা বন্ধ না হওয়াটা লজ্জাজনক। অথচ শিশুরও লজ্জাবোধ আছে। সুনিল গাঙ্গুলির দুঃখ, নাদের আলী কখনোই বড় হলো না। দোষারোপের রাজনীতির সুযোগে, বিশাল জনসমুদ্রে সন্ত্রাসীরা কিভাবে ঢুকে পড়ছে কারোরই ধারণা নেই। এমনকি ক্ষমতাসীনদের সন্তানেরাও একই মহামারীতে আক্রান্ত।
২.
সন্ত্রাসীদের চোখে বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার দু’টি কারণ। দুর্বল আর্থসামাজিক পরিস্থিতি এবং সহিংস রাজনীতি। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের অর্ধেক জনসংখ্যা এর অঙ্গরাজ্য আইডাহোর সমান দেশে। আইডাহোর জনসংখ্যা মাত্র ৫ মিলিয়ন। ১৭০ মিলিয়ন এবং ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা মাত্র ৫৬ হাজার বর্গমাইলের জন্য অত্যন্ত অবাস্তব ও বিপজ্জনক। রয়েছে একাধিক কর্তৃত্ববাদী সরকারের ইতিহাস এবং ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের মারাত্মক অভাব। মানবসম্পদ নিয়ে গর্বিতরা দিনদুপুরে বিভ্রান্ত করছে। মানবসম্পদে ব্যবহার করছে কার্যত ওয়ানপার্টি স্টেট কায়েমের কাজে। আমরা আমাদের সমস্যার গভীরতা জানি না। মার্কিন ইনটেলিজেন্স ডিরেক্টর জেমস ক্লিপার বলছেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে যেভাবে দমন-পীড়ন চলছে, সেটাই বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর উপস্থিতি বাড়িয়ে দিচ্ছে। বিদেশী হত্যার সব দোষ চাপানো হচ্ছে বিরোধী দলের ওপর এবং সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র হিসেবেই এটাকে দেখা হচ্ছে।
প্রমাণিত হলো, সন্ত্রাস সারানোর মতো যোগ্য ডাক্তার আগেও ছিল না, এখনো নেই। তবে এই দফায় অনির্বাচিত পার্লামেন্ট বজায় রাখতে জামায়াত-বিএনপির ওপর চলছে জঙ্গি খোঁজাখুঁজি। অবৈধরা নিজের প্রয়োজনেই জজ মিয়ার দলকে বাঁচিয়ে রেখেছে। বন্দুকযুদ্ধে মেরেও ফেলা হচ্ছে। জবাবদিহির পার্লামেন্ট না থাকলে যা হওয়ার, সেটাই হচ্ছে। গুলশানের ঘটনায়, ‘অতি কঠোর’ হওয়ার ঘোষণা, বিপদের পূর্বাভাস। যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির বিষয়েও শর্টকাটের ঘোষণা? অতঃপর, অরিন্দম কহিলা বিষাদে।
৩.
কেউ যদি চামচ দিয়ে সমুদ্র সেঁচে তিন মাইল তলে ভূমিকম্পের উৎস আবিষ্কার করতে চায়, আমরা নিষেধ করার কে? গুলশানের ঘটনার গোড়া বের করতে হলে বিডিআরের গোড়া খুঁড়তে হবে। রানা প্লাজার কিছু ঘটনাও একই রকম। এখানেও আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলে, নিহতের সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ। ছিল রেশমা আবিষ্কারের আশ্চর্য ঘটনা। অর্থাৎ ঘটনাগুলো নিজেদের মধ্যে সীমিত রেখে, অপারেশন চালিয়েছে প্রতিবার। রেশমা ও রোহানের ঘটনা নিজেদের মতো করে বুঝতে হবে।
সাইট ইন্টেলিজেন্সের রিটা ক্যাটস যতবারই সতর্ক করল, ততবারই রাষ্ট্রের অস্বীকৃতি। রাষ্ট্র তার দুর্বলতা প্রকাশ করতে চায় না বলেই বিএনপি-জামায়াতের ওপর চড়াও। কিন্তু সাঁড়াশি অভিযানের ব্যাখ্যা প্রয়োজন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেই বলতে হবে, ২০ হাজারের বেশি গ্রেফতার করলেন, কিন্তু ওই পাঁচ জঙ্গি কোথায় ছিল? বিডিআর থেকে গুলশান, উত্তর মিলছে না। ‘পশ্চিমাদের লাইভ কভারেজে বারবার উঠে এসেছে সরকারের অপরিপক্বতা ও অদক্ষতা’। চামচ দিয়েই সমুদ্র সেঁচছে ১৪ দল।
সমস্যা তাদের মেগা উন্নতি। উন্নতির খবর প্রত্যেক দিন মিডিয়ায় থাকতেই হবে। অবৈধদের ভয়, উন্নতি কম দেখালে ক্ষমতায় থাকা কঠিন। রোগী মারা গেছে কিন্তু অপারেশন সাকসেসফুল। ম্যানহোলের ঢাকনা ছাড়াই আসছে বুলেট ট্রেন। বিস্ময়কর উন্নতির ট্রেনটির শেষ কোথায়? মেগা উন্নতির চুক্তি থেকে জনগণ বাদ। এর কোনো প্রতিক্রিয়া হবে না? গুলশান বিভীষিকার পরেই সেতুমন্ত্রীর আশ্বাস, মেট্রোরেলের ওপর প্রভাব পড়বে না। পোশাক ব্যবসায়ীদের আশ্বাস, বায়ার থাকবে। রাষ্ট্রের আশ্বাস, ২০৪১ সালেই ৫০ বিলিয়ন ডলার টার্গেট পূরণ হবে। মন্ত্রী সাহেব! এমন একটা সময়ে উন্নতির আশ্বাস কে জানতে চায়? যারা লাশের মধ্যেও উন্নতি খোঁজে, তারা জঙ্গিদের টিকিটিও ধরতে পারবে না, বরং বিএনপি-জামায়াতেই সীমাবদ্ধ থাকবে জঙ্গিবিলাস।
৪.
রানা প্লাজার দুর্ঘটনা থেকে বিদেশী সাংবাদিকদের দূরে রাখা গেলেও গুলশান ঘটনার পর বাংলাদেশের খবর মুক্তবাজারে। ‘লাইভ কভারেজ নিয়ে মিডিয়ার ওপর চরম বিষোদ্গারের কারণ কি রোহান?’ ‘সাইট ইনটেলিজেন্সে’ জঙ্গিদের ছবি প্রকাশের পরই উচ্চমহলে ভূমিকম্প। ৯ বছর ধরেই বিরতিহীন কলাম লিখছে পশ্চিমের মিডিয়াগুলো। সম্পাদকীয় লিখতে লিখতে কলম ভেঙে ফেলছে নিউ ইয়র্ক টাইমস আর দ্য গার্ডিয়ান। বাংলাদেশের ওপর এই পরিমাণ কলাম লেখাÑ ঐতিহাসিক। মনে হচ্ছে বাংলাদেশ এবার সত্যিই গিনেসবুকে উঠবে। গুলশানের ঘটনায় উল্লেখ করার মতো কিছু খবরÑ
দ্বারে দ্বারে ঘুরেও সহায়তা পায়নি, খুনি মোবাশ্বরের বাবা (৪ জুলাই, কালের কণ্ঠ)।
কেন শেখ হাসিনার জেগে ওঠা প্রয়োজন (হিন্দুস্থান টাইমস, ৫ জুলাই)।
জিম্মি মুক্তির অভিযান নিয়ে নানা প্রশ্ন (প্রথম আলো, ৩ জুলাই)।
রাষ্ট্রের সিদ্ধান্তে অভিযান চালাতে দেরি হয়Ñ ডিএমপি কমিশনার (আমার দেশ, ৪ জুলাই)।
জঙ্গি নিয়ে রাজনৈতিক সুবিধা নিচ্ছিল সরকার (২ জুলাই, দ্য গার্ডিয়ান)।
যেভাবে অপারেশন ‘থান্ডারবোল্ট’ সফল হলো (যুগান্তর, ৩ জুলাই)…
খবরের মহামারী থেকে যা আহরণযোগ্য। ‘রাজনৈতিক সুবিধা নিতে জঙ্গিবাদ লালন করছে সরকার’। বিডিআর ঘটনা হারিয়ে ফেললেও গুলশানের ঘটনার কিছু ধারাবাহিকতা।
ক) ঘটনার রাতেও অস্বীকার, আইএস নয়, ঘরের জঙ্গিরা সরকার উৎখাতে এসব করছে। ঘটনার সাথে সাথে ‘সাইট ইন্টেলিজেন্স’ প্রকাশ করল হামলাকারীদের ছবি। ১ ঘণ্টা পর আপডেট, সব বিদেশী খুন। উল্টো রাতভর অপারেশন থান্ডারবোল্টের প্রস্তুতি। একপর্যায়ে লাইভ কভারেজ দেয়ায় মিডিয়ার ওপর তীব্র ক্ষোভ। রাতের প্রথম অভিযানে রাজধানীতে ব্যাপকসংখ্যক পুলিশ সদস্য সত্ত্বেও মাত্র চারটি পুলিশ স্টেশনকে সম্পৃক্ত করা। অপরিপক্ব অভিযানের ফুটেজ মিডিয়ায়।
খ) পরদিন আইজিপির স্বীকার, ২০ মিনিটেই হত্যা করা শেষ, যা সাইটকেই সমর্থন করল।
গ) রাষ্ট্রের সিদ্ধান্তে অভিযান চালাতে দেরি হয়, বলেছেন ডিএমপি কমিশনার এবং এই দেরির ওপরই আলোকপাত প্রয়োজন।
ঘ) অপারেশন থান্ডারবোল্ট নিয়ে একটি সত্যিকার কলামটি সঠিক নয়। সব জানাজানি সত্ত্বেও প্রথম অভিযানেই সর্বশক্তি প্রয়োগ করা থেকে বিরত থেকেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কারণ সেই অনুমতি তাদের দেয়া হয়নি, যা করার তাৎক্ষণিক করলে, একাধিক জঙ্গি জ্যান্ত ধরা যেত। রোহান বিষয়ে কালক্ষেপণের কারণ বোধগম্য। ৯ জুলাই নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছে, আওয়ামী নেতার ছেলেই জঙ্গি।
ঙ) সাধারণত হোস্টেজ ক্রাইসিস হলে এ ধরনের কালক্ষেপণের প্রয়োজন। হোস্টেজদের জীবিত উদ্ধার করার লক্ষ্যে বিশেষ বাহিনী নিয়োগ করার নিয়ম; কিন্তু এই ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ছিল না। তার পরও অপারেশন থান্ডারবোল্টের পরিকল্পনায় প্রায় ১১ ঘণ্টা পার করার মধ্য দিয়ে জঙ্গি অপারেশনের আলামত নষ্ট হয়েছে।
চ) লাইভ কভারেজ বন্ধ করার জন্য রাষ্ট্রের আগ্রহ নিয়ে সন্দিহান হওয়াই যুক্তিযুক্ত। টিভি কী এমন দেখাতে পারল যে জন্য লাইভ কভারেজ বন্ধ করতে হলো? তারা কি জ্যান্ত জঙ্গি এবং হোস্টেজ উদ্ধার করেছে? বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে, পূর্বে ও পশ্চিমের বহু দুর্ঘটনার লাইভ কভারেজ প্রচার হচ্ছে বিশ্বমিডিয়ায়। ফলে জঙ্গি হত্যা নিয়ে সন্দেহ তীব্রতর হচ্ছে।
ছ) সাইটের পাঁচজনের মধ্যে রোহানের ছবি সরিয়ে সাইফুলের ছবি ঢুকিয়ে দেয়ার অভিযোগ। তবুও সফল হয়নি অপারেশন।
জ) প্রথম প্রহরেই সর্বশক্তি দিয়ে অপারেশন চালালে হয়তো একাধিক জঙ্গিকে জীবিত ধরে গুরুত্বপূর্ণ খবর সংগ্রহ করা যেত। কিন্তু সেটা না করে বরং মেরে ফেলা হয়েছে।
ঝ) জঙ্গিদের কারো শরীরেই সুইসাইড ভেস্ট ছিল না। গুলশান সন্ত্রাসীরা ভিন্ন ধরনের। বাঙালি সন্ত্রাসীদের ধরতে রাতের অন্ধকারটাই বড় পুঁজি। অনেকের মতে, ইলেকট্রিক লাইন কেটে দিয়ে যথেষ্ট টিয়ারগ্যাস ছাড়লে, পথ হারাত। ঢাকাতেই হাজার হাজার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যের সুযোগ নিয়ে জঙ্গিদের জীবিত ধরা যেত। ১১ ঘণ্টা দেরিতে অপারেশন করে বরং সেই সম্ভাবনা নষ্ট করা হয়েছে।
ঞ) হোস্টেজ ক্রাইসিস না থাকায় ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’ অপ্রয়োজনীয়। জাপানি প্রধানমন্ত্রী তার রাষ্ট্রকর্ম বাতিল করে, মনোযোগ ঢাকার দিকে। পরদিন রাস্তা উদ্বোধনের কাজেই বিশাল আয়োজনের মধ্যে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা, যাদের কিনা সন্ত্রাস বিষয়ে ব্যস্ত থাকার কথা। জাতির ক্রান্তিকালে, উন্নতির সংবাদ এক সপ্তাহ পরও দেয়া যেত। ওই দিনের অনুষ্ঠান বাতিল না করাটা, নিহতদের সাথে প্রহসন। সবচেয়ে বড় কথা, এই ধরনের ঘটনার পর রাষ্ট্রপ্রধানদের নিরাপত্তা আরো জোরদার করা হয়। তাদের বাইরে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। এই ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম কেন?
ট) উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, ১৩ জনকে উদ্ধার করেছি ইনশাআল্লাহ, পাঁচ জঙ্গি নিহত, একজনকে জীবিত ধরা হয়েছে, কয়জন মারা গেছে এখনো বলা যাচ্ছে না। ঘটনার প্রায় ১৫ ঘণ্টা পর এই বক্তব্য। ততক্ষণে সারা বিশ্ব জানে, গুলশানে কয়জন মারা গেছে।
ঠ) সকালবেলার বন্দী মুক্তির ভিডিও ক্লিপে, মুক্ত ছয়জন। তাদের পেছনে শিশুসহ তিনজন। প্রথম ৩ ঘণ্টার মধ্যে নিজেরাই লুকিয়ে প্রাণে বাঁচল বিদেশীসহ তিনজন। মোট উদ্ধার হয়েছে ১৩ জন। তাহলে অভিযান করে হোস্টেজ বাঁচানোর দাবি কি সঠিক? জঙ্গিরা তো বলেই দিয়েছে, ‘তোমরা চলে যাও, বেহেস্তে দেখা হবে।’ জীবিতদের বের করে দিয়ে পুলিশের গুলিতে মরার জন্য তৈরি হচ্ছিল সন্ত্রাসীরা। প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায়, মুসলমানদের সাথে তারা ইতিবাচক ব্যবহার করেছিল।
ড) সন্দেহভাজন টাকওয়ালা লোকটা কোথায়? বন্দুকযুদ্ধ কিংবা পুলিশ কাস্টডি, কোথাও পাওয়া যায়নি রোহান এবং হাসনাতকে। এদের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নীরবতা সন্দেহজনক।
ঢ) রোহানের বাবা কোনো রাখঢাক ছাড়াই বললেন, ছেলে হারানোর খবর পুলিশে দিয়ে লাভ হয়নি। জিডি করেও সহায়তা পাননি।
ণ) কালক্ষেপণের ফলে বিডিআরের সৈন্যদের যেমন বাঁচানো যায়নি, তেমনি গুলশানের জঙ্গিদেরও জ্যান্ত ধরা যায়নি। তাহলে এই কালক্ষেপণ কেন?
ত) প্রমাণিত হয়েছে, বাঘের মুখে রাষ্ট্রের অসহায়ত্ব এবং জঙ্গিবাদ সারানোর অযোগ্যতা।
থ) ক্রিস্টিয়ান আমানপুর হতে টকশো হোস্টদের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা। চলমান রাজনীতিতে ষড়যন্ত্র থিওরি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সবুজ সাংবাদিকতা এ দেশে গুরুত্বপূর্ণ নয়। তবে ৯/১১ ষড়যন্ত্র থিওরিস্টরা এখন পর্যন্ত খোঁড়াখুঁড়িতে ব্যস্ত। গুলশান ঘটনার আসল নায়ক কে? এটা কি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র নাকি ওই পাঁচ জঙ্গিই সব?
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কোনো প্রশ্নেরই জবাব পাওয়া যাবে না। তবে ভারত-ইসরাইল মধুর কানেকশনকে আমলে নিতে হবে। সাম্প্রতিককালে কিছু তৎপরতা লক্ষণীয়। মেন্দি সাফাদি কেন বারবার ভারতে আসেন, সেটা দিল্লিকে জিজ্ঞেস না করে বরং আসলামকে গ্রেফতার করলে ফায়দা হবে না। ভারত-ইসরাইল সম্পর্ক আলোচনায় নেই। অথচ দুই দেশের মধ্যে বার্ষিক প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসায়। ২০১৪ সালে এক্স-প্রেসিডেন্ট শিমন পেরেজ ভারতে এসেছিলেন। দ্য হিন্দুর খবর, মোদি যাচ্ছেন ইসরাইলে। সেখান থেকে বিপুল পরিমাণে অস্ত্র কেনে ভারত। তাদের সীমান্ত নিরাপত্তার টেকনিকও ব্যবহার করছে আমাদের সীমান্তে। আরো প্রযুক্তি কিনছে ইসরাইল থেকে। সাম্প্রতিককালে ভারতের চাঞ্চল্যকর অ্যাক্টিভিটিজ লক্ষণীয়। ওই পাঁচ জঙ্গি আসলেই জঙ্গি নাকি জজ মিয়া, স্পষ্ট নয়।

Loading


মন্তব্য দেখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *