মা মালাকাত আইমানুকুম

মা মালাকাত আইমানুকুম যার অর্থ করা হয়েছে যুদ্ধবন্দী যৌণদাসী। অমুসলিম ও ইসলাম বিদ্বেষীদের  ইসলাম বিরোধী প্রপাগান্ডার একটি বড় হাতিয়ার হলো ,  কোরানে নাকি যুদ্ধবন্দী যৌণদাসী মুসলমানদের জন্য হালাল করা হয়েছে। অবশ্য ওদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। এর জন্য দায়ী হলো মুসলমান খলিফাদের অনুগ্রহপুষ্ট রাজ দরবারের পারস্য ঈমামগণ (বুখারি , মুসলিম , তিরমিজি ,  শাফেঈ প্রমূখ) ও ইহুদী-নাসারা পারিষদবর্গ। খলিফারা ঈমামদের বিকৃত অনুবাদের মাধ্যমে  নুতন নুতন রাজ্য জয় করতে সৈন্যদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য যুদ্ধবন্দী যৌণদাসীর টোপ ব্যবহার করেছেন।

“মা মালাকাত আইমানুকুম” এর অর্থ যুদ্ধবন্দী যৌণদাসী ও নয় বা তোমার ডান হাতের অধীনস্ত ও নয়। এর প্রকৃত অর্থ হলো – “তারাই , যারা তোমার শপথ বা অঙ্গীকারের আওতাধীন”

“আইমানু” শব্দটি হলো “ইয়ামিন” শব্দের বহুবচন , যার অর্থ হলো – শপথ বা অঙ্গীকার , ইংরেজিতে OATH.

নিচে কোরান থেকে কিছু উদাহরন দেয়া হলো – আর তোমাদের শপথের (আইমানুকুম) জন্য আল্লাহর নামকে লক্ষ্যবস্তু বানিও না…………[2:224]

যারা আল্লাহর নামে কৃত তাদের অঙ্গীকার(আইমানুহুম) এবং প্রতিজ্ঞা সামান্য মুল্যে বিক্রয় করে …[3:77]

তারা তাদের জোর শপথ(আইমানুহুম) নিয়ে আল্লাহর কসম খায় যে, যদি তাদের কাছে কোন নিদর্শন আসে, তবে অবশ্যই তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে। …[6:109]

আল্লাহর নামে অঙ্গীকার করার পর সে অঙ্গীকার পূর্ণ কর এবং পাকাপাকি শপথ (আল-আইমান) করার পর তা ভঙ্গ করো না, …[16:91]

এইরুপ আরো অনেক আয়াত আছে কোরানে , যেখানে ‘আইমানুকুমের’ অর্থ শপথ হলেই কেবল আয়াতের মানে অর্থবহ হয়।

মজার ব্যাপার হলো “মা মালাকাত আইমানুকুম” শুধুমাত্র নারীর জন্য প্রযোজ্য তা কিন্তু নয়। “মা মালাকাত আইমানুকুম” পুরুষ ও হতে পারে। এর প্রমাণ স্বরূপ নিচের আয়াতটি পড়ে দেখতে পারেন –

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত দাঁস (আইমানুহুন্না), যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো কাছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, …[24:31]

তাহলে এই আয়াতের কি এটাই অর্থ করব যে , ঈমানদার নারীরা যৌণদাঁস রাখতে পারবে??

কোরানের “মা মালাকাত আইমানুকুম” কোন যৌণ দাঁস বা দাঁসী রাখার স্বীকৃতি দিচ্ছে না , যেমনটি অতীতের ঈমামগণ , তাফসীরকারগণ ও তাদের অন্ধ অনুসারী বর্তমানের অনুবাদকগণ অনুবাদ করেছেন। বরং সেই সকল অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পতিত হতভাগ্য পুরুষ ও নারীদের কথা বলেছে , যাদের ভরনপোষনের ভার নিতে ইমাণদার পুরুষ ও নারীরা শপথ করেছেন। অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পতিত এই হতভাগ্য পুরুষ ও নারী, এরা কারা?

এর উত্তর কোরানেই আছে। কোরান থেকেই আমরা জানতে পারি ইসলামের সুচনালগ্নে আত্মরক্ষার্থে বিভিন্ন যুদ্ধে বহুসংখ্যক পুরুষ শহিদ হন , ফলে তাদের পরিবার মারাত্মক অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পতিত হয় বা নিঃস্ব হয়ে পড়ে। এছাড়াও ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার কারনে বহু সংখ্যক পুরুষ ও নারী নিজবাসভূমি থেকে বিতাড়িত হয়ে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পড়ে। অনেক নারী ইসলাম গ্রহণ করার কারনে তাদের পৌত্তলিক স্বামী কতৃক বিতাড়িত হয় বা পৌত্তলিক স্বামীকে ছেড়ে এসে মুসলমানদের আশ্রয় গ্রহণ করে , ফলে তারাও মারাত্মক অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে পতিত হয় বা নিঃস্ব হয়ে পড়ে। নিচের আয়াতটি পড়ুন-

মুমিনগণ, যখন তোমাদের কাছে ঈমানদার নারীরা হিজরত করে আগমন করে, তখন তাদেরকে পরীক্ষা কর। আল্লাহ তাদের ঈমান সম্পর্কে সম্যক অবগত আছেন। যদি তোমরা জান যে, তারা ঈমানদার, তবে আর তাদেরকে কাফেরদের কাছে ফেরত পাঠিও না। এরা কাফেরদের জন্যে হালাল নয় এবং কাফেররা এদের জন্যে হালাল নয়। কাফেররা যা ব্যয় করেছে, তা তাদের দিয়ে দাও। তোমরা, এই নারীদেরকে প্রাপ্য মোহরানা দিয়ে বিবাহ করলে তোমাদের অপরাধ হবে না। তোমরা কাফের নারীদের সাথে দাম্পত্য সম্পর্ক বজায় রেখো না। তোমরা যা ব্যয় করেছ, তা চেয়ে নাও এবং তারাও চেয়ে নিবে যা তারা ব্যয় করেছে। এটা আল্লাহর বিধান; তিনি তোমাদের মধ্যে ফয়সালা করেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়। …[60:10]

যেমনটি দেখা যাচ্ছে এই সেই বিবাহিতা নারীরা , যাদেরকে মোহরানার বিনিময়ে বিবাহ করা হালাল করা হয়েছে , কোন যৌণ দাসীকে হালাল করার কথা কোরানে বলা হয় নি। আরো একটি আয়াতের কথা না বল্লেই নয় –

আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি স্বাধীন মুসলমান নারীকে বিয়ে করার সামর্থ্য রাখে না, সে তোমাদের শপথভুক্ত মুসলিম নারীকে(আইমানুকুম) বিয়ে করবে। আল্লাহ তোমাদের ঈমান সম্পর্কে ভালোভাবে জ্ঞাত রয়েছেন। তোমরা পরস্পর এক, অতএব, তাদেরকে তাদের পরিবারের (أَهْلِهِنَّ) অনুমতিক্রমে বিয়ে কর এবং নিয়ম অনুযায়ী তাদেরকে মোহরানা প্রদান কর এমতাবস্থায় যে, তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবে-ব্যভিচারিণী কিংবা উপ-পতি গ্রহণকারিণী হবে না। অতঃপর যখন তারা বিবাহ বন্ধনে এসে যায়, তখন যদি কোন অশ্লীল কাজ করে, তবে তাদেরকে স্বাধীন নারীদের অর্ধেক শাস্তি ভোগ করতে হবে। এ ব্যবস্থা তাদের জন্যে, তোমাদের মধ্যে যারা ব্যভিচারে লিপ্ত হওয়ার ব্যাপারে ভয় করে। আর যদি সবর কর, তবে তা তোমাদের জন্যে উত্তম। আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়। …[4:25]

এই আয়াতে দেখা যাচ্ছে পরিবারের অনুমতি নিয়েই এবং মোহরানা দিয়েই কেবল কোন “মা মালাকাত আইমানুকুমের” সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া যায়। যারা “মা মালাকাত আইমানুকুমের” অর্থ যৌণদাসী করেছেন , তারা বোধহয় এই আয়াতের কথা ভুলে গিয়েছিলেন।

Loading


Comments

মা মালাকাত আইমানুকুম — 8 Comments

  1. আপনি কি আহমাদিয়া বা কদিয়ানী?

    No.

    আয়াতের অর্থ যেটা লিখেছেন , সেটাই বুঝলাম। রসূলুল্লাহর মধ্যে অবশ্যই উত্তম নমুনা রয়েছে। তিনি তো রসূল , নয় কী? সকল নবী রসূলদের মাঝেই উত্তম নমুনা রয়েছে। এবার একটি আয়াত দেখুন হুবহু এক , শুধু রসূলের জায়গায় ইব্রাহিমের নাম দেয়া আছে-

    ৬০:৪- قَدْ كَانَتْ لَكُمْ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ فِي إِبْرَاهِيمَ وَالَّذِينَ مَعَهُ তোমাদের জন্যে ইব্রাহীম ও তাঁর সঙ্গীগণের মধ্যে চমৎকার আদর্শ রয়েছে।

    তাহলে এখন কি আমরা ইব্রাহীম ও তাঁর সঙ্গীগণের হাদীস খুজে বেড়াব? আর খুজলেও পাব কোথায় বলতে পারেন? নাকি কোরানেই তাদের ও রসূলুল্লাহর আদর্শ খুজব? কোরানেই খুজুন , দেখবেন সেখানে রসূলুল্লাহর সুন্দর সুন্দর আদর্শ খুজে পাবেন। না পেলে বলবেন , আয়াতগুলোর নং দিয়ে দেব।

  2. আপনার সঙ্গে বিতর্কে জড়িত হওয়ার আগে আপনার অবস্থান কি জানা দরকার।
    আপনি কি আহমাদিয়া বা কদিয়ানী? Yes or No?

    لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِّمَن كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ وَذَكَرَ اللَّهَ كَثِيرًا 21
    (নিশ্চয়) রসূলুল্লাহর (চরিত্রের) মধ্যে উত্তম নমুনা রয়েছে যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্যে ।
    Indeed in the Messenger of Allâh (Muhammad SAW) you have a good example to follow for him who hopes in (the Meeting with) Allâh and the Last Day and remembers Allâh much.
    সুরা আহজাব (৩৩-২১)
    এই আয়াতের অর্থ কি বুঝলেন? রাসুল (স:)চরিত্রের সঠিক সন্ধান তার দেয়া নির্দেশ ও উপদেশ ইত্যাদি হাদিস ছাড়া কীভাবে জানা সম্ভব?

  3. ফারুক সাহেব। আমি মনে করি যুদ্ধবন্দিনীদের ব্যাপারে আপনার বক্তব্য অন্যান্য ব্যাখ্যার চেয়ে অধিক যুক্তিযুক্ত। বিশেষ করে ‘যুদ্ধবন্দী যৌনদাসী’ কথাটি ইসলামের মূল আকিদার সহিত মোটেই মানানসই নয়। তবে ‘মুসলমান খলিফা’ কথাটি দিয়ে আপনি মুসলমান রাজা-বাদশা, উমাইয়্যা-আব্বাসীয় খলিফা, এবং চার খলিফা সবকিছু একাকার করে ফেলেছেন। ফলে আপনি যে সত্যটি বলতে চেয়েছেন তা হয়ে গিয়েছে ভুমে রাং। মুসলমানদের এটা একটি বিরাট সমস্যা। আমরা কোন কিছু বলা বা লেখার সময় ইমোশন কন্ট্রোলে রাখতে পারিনা। হাদীসের ব্যাপারেও আপনি একই সমস্যা তৈরী করেছেন। মোহাম্মদ (সাঃ) বিদায় হজ্জ্বে আমাদেররেকে জীবনের সর্বক্ষেত্রে কোর’আন-সূন্নাহ্ মেনে চলতে বলেছেন। হাদীস যদি সূন্নাহ্র স্কংলন হয়ে থাকে তাহলে সংকলনের কোন সমস্যার জন্য যদি হাদীসের পুরো সংকলন অস্বীকার করেন, সত্যই কি আপনি কোর’আন অনুশীলন করতে পারবেন? পারবেন না। উদহারন সরুপ, কোর’আনে নামাজ পড়তে বলা হয়েছে কিন্তু কিভাবে পড়তে হবে তা বলা নেই। রাসূল (সাঃ) যে ভাবে পড়েছেন এবং আমাদেরকে যে ভাবে পড়তে বলেছেন, আমরা সেভাবেই নামাজ পড়ে থাকি। রাসুল (সাঃ) এর এই ঊীধসঢ়ষব ই আমাদের জন্য সূন্নাহ্। এবং এরকম সকল সূন্নাহ্র রেফারেন্স সহ লিখিত সংকলনকে হাদীস বলে অভিহিত করা হয়। হাসীস বা সূন্নাহ্ ছাড়া কোর’আনের বাস্তবায়ন সম্ভব নয় বলেই রাসূল (সাঃ) আমাদেরকে সর্বক্ষেত্রে কোর’আন সুন্নাহ্ অনুশীলন করতে বলেছেন।

    তবে এটাও ঠিক যে রাসূল (সাঃ) এর প্রতি অনেকেই আমরা অনেক সময় অত্যন্ত অতিউৎসাহী হয়ে যাই। তিনি শুধু একজন নবী বা রসুল (সাঃ) ছিলেন না। তিনি অন্যান্যদের মতো ঘরসংসার করেছেন, যুদ্ধ করেছেন, দেশ গড়েছেন, দেশ পরিচালনা করেছেন। কিন্তু এসকল ক্ষেত্রে প্রদত্ত তাঁর সকল সিদ্ধান্ত ওহায়ীর অন্তর্ভুক্ত ছিলনা। তাই আমরা যদি মোহাম্মদ (সাঃ) এর জীবনের প্রত্যেকটি কথাকে সুন্নাহ্ মনে করি এবং অনুসরন না করাকে সুন্নাহ্র বরখেরাফ মনে করি তাহলে ইসলাম চৌদ্দশ বছর আগের অবস্থাতেই আটকে থাকবে। অথচ আদম (আঃ) থেকে ইসলামের যাত্রা শুরু। এবং এই যাত্রা কেয়ামত পর্যন্ত দুনিয়ার সকল মুহুর্তের সকল কাজের জন্য প্রযোজ্য বলেই ইসলাম একটি প্রাকৃতিক ধর্ম। ইসলামের এই শাশ্বত চরিত্র অক্ষুন্ন রাখার জন্যই রাসুর (সাঃ) এর সকল কথা ও কাজকে সুন্নাহ্ বা হাদীসে অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি। যা অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে তা নেহায়তই ধর্মীয় অনুশাসনের ব্যাখ্যা বিশ্লেষন। আর এই ব্যাখ্যা বিশ্লেষন গুলোকেই আমরা হাদীস বলে অবিহিত করে থাকি। হাদীস সংকলন, ভাষান্তর, বলা ও বুঝার মধ্যে ভুল থাকতে পারে কিন্তু এজন্য রাসুল (সাঃ) এরকম সকল কথাকে বাতিল বলে অগ্রা য্য করা ঠিক নয়। আসলে নিয়ত ঠিক থাকলে সবই ঠিক (ইন্নামাল আ’মালা বিন্নিয়াত)। কবি বলেছেন, বিশ্বাসে মিলায় স্বর্গ তর্কে বহুদুর। আল্টিমেটলি, আমরা যে যা করিনা কেন, আল্লাহ্ ও তাঁর রসুল (সাঃ) ই জানেন কোনটা ঠিক আর কোনটা বেঠিক। তাই ব্লগ একজন আর এক জনকে গায়েল করার মাধ্যম না হয়ে ব্লগ হোক আমাদের জ্ঞানচর্চার একটি অনন্য মাধ্যম।

    পরিশেষ, “না আমি মানিনা। আমি মনে করি ও বিশ্বাস করি — মোত্তাকীন হওয়ার জন্য যে সকল ধর্মীয় অনুশাসন যতটুকু পালন করা প্রয়োজন, তার বিস্তারিত বর্ননা কোরানেই আছে। এর জন্য অন্য কোন গ্রন্থ বা কারো মুখাপেক্ষি হওয়ার প্রয়োজন নেই।” প্রশ্ন উত্তরে প্রদত্ত আপনার এই বক্তব্যটি কি আপনি বুঝে শুনে বলেছেন না কোন জিদ বা আবেগের বশবর্তী হয়ে বলেছেন তা ভাল করে ভেবে দেখবেন। ঈসা (আঃ) বলেছেন, ÒNot what enters into the mouth defiles the men, but what proceeds out of the mouth, this defiles the men.” অর্থাৎ মুখে যা ঢুকে তা মানুষকে অপবিত্র করে না কিন্তু মুখ থেকে যা বের হয় তা’ই মানুষকে অপবিত্র করে। কোর’আনের সাথে সুন্নাহ্র কোন সম্পর্ক না থাকেলে রাসুল (সাঃ) অবশ্যই আমাদেরকে সকল কাজে কোর’আন-সুন্নাহ্ মেনে চলতে বলতেন না।

    • সালামুন আলাইকুম।
      এই পোস্ট পড়ে মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।

      আমরা কোন কিছু বলা বা লেখার সময় ইমোশন কন্ট্রোলে রাখতে পারিনা। হাদীসের ব্যাপারেও আপনি একই সমস্যা তৈরী করেছেন। মোহাম্মদ (সাঃ) বিদায় হজ্জ্বে আমাদেররেকে জীবনের সর্বক্ষেত্রে কোর’আন-সূন্নাহ্ মেনে চলতে বলেছেন।

      ইমোশন ছাড়া মানুষ আছে কী? নেই। মানুষ তো আর রোবট না। এর ভিতর থেকেই সত্যটা খুজতে হবে।

      হাদীসের ব্যাপারে সমস্যাটা আমার তৈরি নয়। সমস্যা হলো যারা হাদীস মানে তাদের। তাদের যেটা পছন্দ সেটা গ্রহণ করে এবং পছন্দ না হলে সহীহ হাদীস হলেও সেটা পরিত্যাগ করে। এই যেমন ধরুন আপনি বলেছেন- “মোহাম্মদ (সাঃ) বিদায় হজ্জ্বে আমাদেররেকে জীবনের সর্বক্ষেত্রে কোর’আন-সূন্নাহ্ মেনে চলতে বলেছেন।” এ ব্যাপারে ৩ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়-

      ১) আমি তোমাদের জন্য আল্লাহর কোরান ও আমার পরিবার রেখে গেলাম। যারা এদেরকে আঁকড়ে থাকবে , তারা পথ ভ্রষ্ট হবে না। সহীহ মুসলিম।

      ২) আমি তোমাদের জন্য আল্লাহর কোরান ও আমার সুন্নাহ রেখে গেলাম। যারা এদেরকে আঁকড়ে থাকবে , তারা পথ ভ্রষ্ট হবে না। মুয়াত্তা।

      ৩) আমি তোমাদের জন্য আল্লাহর কোরান রেখে গেলাম। যারা একে আঁকড়ে থাকবে , তারা পথ ভ্রষ্ট হবে না। সহীহ মুসলিম।

      এখন আপনিই বলুন বিদায় হজ্জ্বে হাজার হাজার মুসলমান যে ভাষন শুনেছে , তার ৩ টি ভার্ষান কেমনে হয়? এত লোক সাক্ষী থাকার পরে ও যদি হাদীস বিকৃত হতে পারে , তাহলে আহাদ হাদীসগুলোকে কিভাবে বিশ্বাস করা যায়? সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন হলো — ১ ও ৩ নং হাদীস বাদ দিয়ে কোন যুক্তিতে আপনি ২ নং হাদীসটি গ্রহণ করলেন , জানাবেন কী?

      আল্টিমেটলি, আমরা যে যা করিনা কেন, আল্লাহ্ ও তাঁর রসুল (সাঃ) ই জানেন কোনটা ঠিক আর কোনটা বেঠিক। তাই ব্লগ একজন আর এক জনকে গায়েল করার মাধ্যম না হয়ে ব্লগ হোক আমাদের জ্ঞানচর্চার একটি অনন্য মাধ্যম।

      আপনি বুঝে কি একথা বলেছেন? বর্তমানে আমরা যে যা করছি , সেটা একমাত্র আল্লাহ জানেন। রসূল মৃত , তার পক্ষে জানা সম্ভব নয়। আল্লাহ শিরক ছাড়া আর সকল গোনাহ মাফ করেন , এটা আমার কথা নয় কোরানের কথা।

      আল্লাহর সাহায্য কামনা করে কোরাণ বুঝে পড়ুন , ইনশাল্লাহ (আল্লাহ চাহেতো) হেদায়েতপ্রাপ্ত হবেন।

  4. কোরআনের আয়াতের ব্যখায় যা বলেছেন তাতে যুক্তি থাকলেও চার ইমামদের নামে যে অপবাদ দিতে চেয়েছন তা খুবই আপত্তিকর।

    মহান ইমামদের জিবন সম্পর্কে কিছুটা ধারনা পেতে হলে নিচের ওয়েব সাইট দেখেন।
    http://www.deen-ul-islam.org/the-four-great-imams/

    • সালামুন আলাইকুম।

      বৃক্ষ তোমার পরিচয় কী?
      ফলে পরিচয়।

      ভক্তদের রচিত জীবণী না পড়ে , তাদের কর্ম (অনুবাদ , তাফসীর , বানোয়াট হাদিস সংগ্রহ করে সহীহ সার্টিফিকেট দেয়া , ইসলামের দুশমন রচিত রসূলের উপরে মিথ্যা কলঙ্ক অপবাদ চাপানো হাদীস কে সত্য সার্টিফিকেট দিয়ে তা প্রচার করা , ইত্যাদি) বিচার করুন।

  5. “এর জন্য দায়ী হলো মুসলমান খলিফাদের অনুগ্রহপুষ্ট রাজ দরবারের পারস্য ঈমামগণ (বুখারি , মুসলিম , তিরমিজি , শাফেঈ প্রমূখ) ও ইহুদী-নাসারা পারিষদবর্গ। খলিফারা ঈমামদের বিকৃত অনুবাদের মাধ্যমে নুতন নুতন রাজ্য জয় করতে সৈন্যদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য যুদ্ধবন্দী যৌণদাসীর টোপ ব্যবহার করেছেন।”
    খুবই আপত্তিকর বক্তব্য। আপনি কি কোরআন ওনলি দলের “পন্ডিত” !

    • খুবই আপত্তিকর বক্তব্য। আপনি কি কোরআন ওনলি দলের “পন্ডিত” !

      কেন আপত্তিকর কেন? এমনটা যে ঘটেনি , তার কোন প্রমাণ কি আপনার কাছে আছে? আমার তো মনে হয় এমনটাই ঘটা স্বাভাবিক। কারন তারা (ইরানি ঈমাম ও তাফসিরকারক গণ) যে ভাবে কোরানের অন্যান্য আয়াতকে উপেক্ষা করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ভিন্ন ও নুতন অনুবাদ উপস্থাপন করেছে , তাতে এমনটা হওয়াই বেশি সম্ভব।

      আমি কোন পন্ডিত নই। কোরান পড়ছি ও শিখছি। বলতে পারেন – কোরানের ছাত্র।

মন্তব্য দেখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *