বাবা

সীমাহীন অভিযোগ,

কেন এত বাঁধা

কেন শুধু শাসন

কেন তুমি বসিয়েছ হুকুমের আসন?

 

কেন বকো এত বকা

যদি ভুল করি,

মাঝে মাঝে মনে ভাবি

ছেড়ে ছুরে দিয়ে সবি

নিজের মনের মত যা যা খুশী করি।

 

পড়ালেখা ভারি তেঁতো

ভালো লাগেনা তা,

মন মাঠে পড়ে থাকে

উঁকি দেই ফাঁকে ফাঁকে

পড়ার টেবিলে বসে ভেবে যাই যা তা।

 

মাঝে মাঝে লুকিয়ে

বইয়ের মাঝে, খাতার ভাঁজে,

গল্পের বই পড়ি।

ধরা খেলে, তুমি বলো-

সময় নষ্ট করি শুধু বাজে কাজে।

 

আমিও তো জেদি ভারী

মনে মনে নেই আঁড়ি

একবারে যদি পারি

গল্পটা শেষ করি,

মনে মনে হাসি।

 

প্রতিবেশী এসে বলে

আমি নাকি ডানপিটে

দুষ্টুমি গিঁটে গিঁটে

তুমি ঘেটে বের করো

অপরাধ ছোট বড়

মার পড়ে এক চোঁট, পিঠে।

 

কেঁদে কেঁদে জিদে লাল হই,

আর ভাবি, পালিয়ে যাব সেখানে

যেখানে দুচোখ যায়।

 

তবুও দিনের পরে,

পালাতে না পেরে ফিরি, ঘরে।

 

ঘুমিয়ে যখন পড়ি ঘোরে-

শুনেছি মায়ের কাছে

তুমি নাকি পাশে এসে

শিয়রের কাছে বসে

মাথায় বুলাও হাত চুপি,

চোখ দুটি ছল ছল

হৃদয়ের ভালবাসা

হৃদয়ের কোণে রাখো সঁপি।

 

 

ভোর হলে ছুটে যাও

সবাইকে ফেলে,

রাতে ফেরো কাজ শেষে

ক্লান্ত শ্রান্ত হেসে;

সবাইকে শুধু দিয়ে গেলে।

ভাবিনি কখনও, কি কি পেলে?

জানিনি কখনও,

না খেয়ে না পড়ে, আগে,

কি এমন অনুরাগে,

আমাদের প্রেমে ছিলে বাঁধা।

আজ তা-ই রয়ে গেল ধাঁধা।

 

সাদা কাফনটির ভিতর

স্থির, শান্ত, ক্লান্তিহীন নিদ্রায় শুয়ে আছো

আজ আমার অভিযোগ নেই

আছে অভিযোগ করতে না পারার

অসহ্য শূন্যতা ।

 

 

আবদুল্লাহ সাঈদ খান

ঢাকা, ২৩শে জানুয়ারী, ২০১৩।

Loading


মন্তব্য দেখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *