ব্লগের সম্মানিত পাঠক/পাঠিকাদেরকে প্রথমেই জানাতে চাই যে এখানে যে সব তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে তা আমার নিজস্ব কোন বক্তব্য নয় বরং এসব তথ্য ইতিমধ্যে বিভিন্ন মহলে ও ইন্টারনেটে আলোচিত হচ্ছে গত কয়েক বছর থেকে। তাই এখানে আমার কোন কৃতিত্ব বা দায়িত্ব-হীনতার বিষয় বিবেচনার প্রশ্নই আসে না। বস্তুত আমার উদ্দেশ্য হচ্ছে আলোচিত তথ্যকে যাতে বুদ্ধির মাধ্যমে যাচাই বাচাই করা তথা আমাদের উপলব্ধির প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেয়া যায় এবং তা মানব কল্যাণে আসে সে প্রচেষ্টা করা।
সম্প্রতি অক্সফাম (Oxfam) থেকে প্রকাশিত এক নিরীক্ষা বিশ্লেষণে জানা যায় পৃথিবীর মাত্র ৮০ জন ধনী ব্যক্তির যে পরিমাণ সম্পদের পাহাড় জমেছে তা বিশ্বের ৩.৬ বিলিয়ন দরিদ্রতর মানুষের মোট সম্পদের পরিমাণের সমান। (Eighty people hold the same amount of wealth as the world’s 3.6 billion poorest people) Source Link এদিকে Global anti-poverty organization তথা "গ্লোবাল দরিদ্রতা বিরোধী সংস্থার" হিসাবে দেখা যায় ২০০৯ সাল থেকে সেই ৮০ জন ধনী ব্যক্তিদের সম্পদ বেড়েছে দ্বিগুণ অথচ বিশ্বের জনসংখ্যার দরিদ্রতম মানুষের সম্পদ উল্টা আরো কমে গেছে ৫০ শতাংশ! (Global anti-poverty organization finds that since 2009, the wealth of those 80 richest has doubled in nominal terms — while the wealth of the poorest 50 percent of the world’s population has fallen).
এ কোন এক ন্যায়পরায়ণ বিশ্বে আমরা বাস করছি ভাবতে অবাক লাগে!
এ পৃথিবীতে ধনী ও দরিদ্রের মাঝে তফাৎ আদি কাল থেকে ছিল ও থাকবে কিন্তু বর্তমান যুগে অতি অল্প সংখ্যক মানুষের হাতে এভাবে এত সম্পদ কুক্ষিগত হতে থাকলে পৃথিবীতে মানবতার কল্যাণ আশা করা যায় না।
ভাবনার বিষয়:
সে দিন আমার এক বন্ধুর পিতার মৃত্যুতে মরহুমের আত্মার মাগফিরাতের জন্য দোয়ার অনুষ্ঠানে কিছু বলতে যেয়ে আমি বলেছিলাম, এই পৃথিবীতে এমন কোন মানুষ নাই সে হিন্দু , মুসলিম, ক্রীষ্টান, আস্তিক নাস্তিক যেই হউক না কেন যে কিনা মৃত্যুতে বিশ্বাস করেনা। কিন্তু দু:খের বিষয় হল মানুষ তার জীবনের চলার পথে অর্থাৎ দৈনন্দিন আচার আচরণে মৃত্যুর কথা ভুলে যায় এবং এটা শুধু নাস্তিকের বেলা নয় এমন কি বিশ্বাসীরা তথা মুসলিমরাও মনে রাখেনা এবং সে ব্যাপারে সম্পূর্ণ উদাসীন থাকে। মানুষ যদি সবসময় সত্যিই মৃত্যুর কথা স্মরণ রাখতে পারত তা হলে সে অনেক কাজ থেকেই বিরত থাকত যা সে করে থাকে। চিন্তা করে দেখেন আজ আমরা যারা উদাসীন মুসলিম আমাদের মনে মৃত্যুর কথা স্মরণ থাকলে আমাদের পক্ষে ইসলামী ন্যায় নীতির অনুসরণে কখনই অলসতা করতে পারতাম না। সে জন্যই আল্লাহর রাসুল মোহাম্মদ (স:) আমাদেরকে বেশী বেশী মৃত্যুর কথা মনে রাখতে বলেছেন। কেননা এই মৃত্যুর কথা মনে রাখতে পারলে মানুষের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা তার বৈষয়িক চাওয়া পাওয়ার সীমাহীন আকাঙ্ক্ষা বা কামনায় লাগাম দেয়া সম্ভব হবে। তখন মানুষ তার চাওয়া পাওয়ার দাসে পরিণত না হয়ে আল্লাহর দাসে পরিণত হওয়ার সুযোগ পাবে।বিশ্বের বর্তমান অবস্থা বিবেচনা করে তাই আজ অনেকই বলে থাকেন যে মানুষের মাঝে এই শুভ চেতনাকে ধ্বংস করতে বর্তমান বস্তুতান্ত্রিক সভ্যতার মোড়লরা নানা চক্রান্তে জড়িত। আর এ সবই হচ্ছে অর্থের প্রচণ্ড লোভ ও লালসার বাস্তবায়ন করতে যার ফলে তারা এমন সব কুকর্মে জড়িত হচ্ছে যা চিন্তা করা যায় না।
এমনি এক ষড়যন্ত্রের ফসল ছিল আমেরিকার বুকে ৯/১১ সন্ত্রাসী হামলা যার প্রেক্ষিতে বিশ্বের বিবেক আজ হারিয়ে গিয়েছে, সমাজ থেকে সুস্থ চিন্তা বিদায় নিচ্ছে। মিডিয়া ও প্রোপাগান্ডার প্লাবনে মানুষকে অমানুষে পরিণত করা হচ্ছে যাতে সাধারণ মানুষকে শুধু মাত্র খেল তামাশায় মত্ত রেখে ভোগবাদী সমাজের উপযুক্ত দাসে পরিণত করা যায় এবং তাদের অবস্থা যাতে অনেকটা জীয়ন্ত লাশ (zombie) হতে সহজ হয়। তাই তো দেখা যায় যখনই কেউ তথাকথিত মূল ধারা মিডিয়ার ( main stream media) বাহিরে কথা বলার চেষ্টা করেন তখন তাকে "ষড়যন্ত্র তত্ত্বের অনুসারী" (conspiracy theory follower) বলে থামিয়ে দিয়ে সর্বত্র চলছে "সন্ত্রাস দমনের" যুদ্ধ। এ যুদ্ধের কারিগর হচ্ছে অর্থ লোভী, অস্ত্র ব্যবসায়ী সাম্রাজ্যবাদীরা আর তাদের সহযোগী হচ্ছে ৩য় বিশ্বের যত স্বৈরাচারী শাসকেরা যাদের কালো থাবা থেকে রক্ষা পাচ্ছে না মানবতা, গণতন্ত্র লাখো লাখো মানুষের প্রাণ! আর তাতে সব চেয়ে বড় শিকার হচ্ছে মুসলিম দেশগুলা।
মুসলিম শব্দের অর্থ হচ্ছে আল্লাহর কাছে তাঁরই দেয়া শর্তে সম্পূর্ণ আত্ম সমর্থন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে মানুষ যখন আল্লাহর কাছে আল্লাহর দেয়া শর্তে আত্ম সমর্থন করবে তখন তার পক্ষে তার বৈষয়িক চাওয়া পাওয়ার সীমাহীন আকাঙ্ক্ষায় লাগাম না দেয়া এবং মানবতা, মানবাধিকার ও জবাবদিহিতার উপেক্ষা করা কি সম্ভব?
যে অশুভ চক্র ( axis of evil) বিশাল চক্রান্তে লিপ্ত তার প্রমাণ অনেকেই দিচ্ছেন তাদের বিভিন্ন উপস্থাপনায়,এমনি এক উদাহরণ মিলে এখানে।
যাদের হাতে সময় আছে তাদেরকে নিচের ভিডিওটা শুনার অনুরোধ রইল। না শুনলে আসলেই অনেক কিছু অজানা থেকে যাবে।