তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একটি বিকল্প প্রস্তাব

পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দিয়েছে। বিএনপি সংবিধানের এয়োদশ সংশোধনীর হারিয়ে যাওয়া ওই বিশেষ সরকারের ধারা উপধারা ফিরিয়ে আনতে চায়। আপাত দৃষ্টিতে যদিও মনে হচ্ছে দু’দলের অবস্থান সম্পূর্ণরূপে বিপরীতমুখি, সাংঘর্ষিক, এবং নন-নিগোশিয়েবল ও রিজিড, আসলে কিন্তু তা নয়। এখানে সুপ্তভাবে দুদলের মধ্যে তলেতলে একটি আংশিক আপোষ রফা অলরেডি হয়েই গেছে। পঞ্চদশ সংশোধনীতে যদিও আওয়ামী লীগ একটি অন্তবর্তীকালীন সরকারের রূপরেখা দিয়েছে তথাপি তারা জানে এবং মানে যে এটাই শেষ এবং চূড়ান্ত কথা নয় বরং আলোচনা এবং দরকাষাকষির জন্য এটি একটি ভিত্তি বা সূচনাসূত্র মাত্র। অন্যভাবে বলতে গেলে তারা এটা স্বীকার করছে যে আলোচনা সাপেক্ষে তাদের অন্তবর্তীকালীন সরকার পরিবর্তনযোগ্য একটি অস্থায়ী বা অ্যাডহক ব্যবস্থা ছাড়া আর কিছুই নয়। এই অ্যাডহক ব্যবস্থা বিএনপি যে হুবহু মানে না এবং শেষ পর্যন্ত মানবে না এটা আওয়ামী লীগ ভাল করেই জানে এবং বুঝে। আর তাই তো তারা বিএনপিকে বিকল্প প্রস্তাব সংসদে এসে উপস্থাপন করতে বারবার অনুরোধ করছে। তারা আরো বলছে বিএপির প্রস্তাব যুক্তিসঙ্গত হলে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে তারা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আনতেও রাজি। তাই আওয়ামী লীগ মুখে যাই বলুক তত্ত্বাবধায়ক প্রশ্নে তার অবস্থান একেবারে অনড় কিংবা রিজিড কিছু নয়।

এবার একটু তলিয়ে দেখা যাক বিএনপির অবস্থানটি কী। তারাও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে চাইলেও সংবিধানে এয়োদশ সংশোধনীর হুবহু পুনরুদ্ধার চায় না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা পদে বিএনপিও আর বিচার বিভাগকে জড়াতে চায় না। তত্ত্বাবধায়ক নামের ব্যাপারেও তাদের মোহভঙ্গ হয়েছে। নাম যা-ই হোক, কাম হলেই হল। অর্থাত নামে
অন্তর্বর্তীকালীন, বা নির্বাচনকালীন সরকার যা-ই বলা হউক না কেন এতে তাদের কিছু আসে যায় না। ওই সরকার যদি নির্দলীয় এবং নিরপেক্ষ হয় তাতেই তারা খুশি। নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থায় রাজি হলেই তারা প্রধান উপদেষ্টা কে হবেন, এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনায় বসতে এক পায়ে খাড়া। তাই দু’দলই আনুষ্ঠানিক আলোচনা, লেনদেন, এবং দরকষাকষির আগেই নিজেদের তথাকথিত শক্ত অবস্থানে এক দফা ছাড় দিয়ে ফেলেছেন।

এখন বিষয়টি যে কঠিন জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে সেটা হল, আওয়ামী লীগ বলছে আমরা অনির্বাচিত সরকারের হাতে কোনো অবস্থাতেই ক্ষমতা হস্তান্তর করব না। এবং বিএনপি বলছে আমরা দলীয় সরকারের অধীনে কোনো অবস্থাতেই নির্বাচনে যাব না। এখানেও বরফ গলবে এবং গলতে বাধ্য। কারণ বিএনপি যদি তার ঐক্য ধরে রাখতে পারে এবং ১৮ দলীয় জোট নিয়ে বসে থাকে, তা হলে আওয়ামী লীগ যেভাবেই, যত সুষ্ঠু-সুন্দর, ও সফল নির্বাচনই করুক না কেন, কাস্ট ভোট যত শতাংশই দেখাক না কেন, এ নির্বাচন দেশের ভেতরে কিংবা বাইরে কোথাও কোনো গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। বিরোধী দল যতই দূর্বল হউক, আন্দোলনে যতই ব্যর্থ হউক, নড়বড়ে নৈতিক ভিত্তি নিয়ে নবনির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকার বেশি দিন ক্ষমতায় টিকতে পারবে না। যে কোনো একতরফা নির্বাচনের ভাগ্য যে ১৯৯৬র ১৫ ফেব্র“য়ারির ভোটারবিহীন ভোটের মতই হবে, এতে আমার কোনো সন্ধেহ নেই। এ সম্ভাব্য পরিণতির কথা আওয়ামী লীগ ভাল করেই জানে এবং বুঝে। তাই বিরোধী দলকে নির্বাচনে আনার জন্য যা যা করা দরকার, শেষ পর্যন্ত এর সবই তাদেরকে করতে হবে। এভাবে আপোষ রফার জন্য আওয়ামী লীগের ওপর আছে মারাত্মক রকমের দেশি বিদেশি চাপ।

অন্যদিকে বিএনপিও ঘরে বসে থাকতে চাইলেও পারবে না। তাকেও নির্বাচনে আসতেই হবে। কারণ তার ও তার জোটের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য তাদেরকে ক্ষমতা নামক ঘোড়ার পিঠে চড়তেই হবে এবং এইবারই। আর এজন্য নির্বাচনে যাওয়া ছাড়া তাদের সামনেও বিকল্প কোনো রাস্তা খোলা নেই। কারণ বাংলাদেশে এখন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নির্বাচনই একমাত্র পথ। তাদের নাকের ডগায় এখন ক্ষমতার মূলো ঝুলছে। অর্থাত তারা মনে করে, মোটামুটি একটি নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলেই তাদের জয় সুনিশ্চিত। কারো কারো মতে বিএনপি যদি ১৮ দলীয় ঐক্যজোট ঠিকমত ধরে রাখতে পারে এবং এরশাদের জাতীয় পার্টি যদি মহাজোট থেকে বেরিয়ে যায়, তাহলে জাতীয়তাবাদী জোটের পক্ষে আগামী নির্বাচনে ২০০ আসন জোগাড় করা অসম্ভব হবে না। এমতাবস্থায় প্রথম আলোর আব্দুল কাইয়ুম মুকুলের ভাষায়, ‘বিএনপি নির্বাচনে যাবে না তো কে যাবে’? তাই সমঝোতার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনকে সম্ভব করে তোলার জন্য বিএনপির ওপর আভ্যন্তরীণ চাপ আওয়ামী লীগের চেয়ে বেশি বই কম নয়।

এ মুহূর্তে আওয়ামী লীগের চ্যালেঞ্জ হল বিএনপিসহ ১৮ দলীয় জোটকে নির্বাচনের মাঠে নামানো, অন্যথায় নির্বাচন হবে অর্থহীন। আরেকদিকে বিএপির চ্যালেঞ্জ হল যে কোনো মূল্যে আওয়ামী লীগকে নির্দলীয় সরকারে রাজি করানো, কারণ এ কাজটি করতে পারলে তারা সহজেই মকসুদে মঞ্জিলে পৌঁছে যাবে। এ দর কষাকষিতে বিএনপি আওয়ামী লীগের চেয়ে বেশি নমনীয় থাকবে, কারণ সুষ্ঠু নির্বাচনের ফসল এবার বিএনপির ঘরেই ওঠার কথা। এই পঠভূমিকায় বিএনপি জোটে যদি কোনো রকম ভাঙ্গন না ধরে এবং মধ্যপন্থিদের অর্থাত আসম রব, কাদের সিদ্দিকী, বি. চৌধুরী, কামাল হোসেন, মঞ্জুরুল আহসান খান, গংদের তাদের দিকে টানতে পারে, তাহলে এ ইস্যুতে এরশাদ-ইনু-মেনন আওয়ামী লীগের সঙ্গে না থাকার সম্ভাবনা খুব বেশি। এ পরিস্থিতিতে বিচার বিভাগকে সম্পৃক্ত না করে পুরনো নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পুনরুদ্ধার সম্ভব।

এ ছাড়া ‘সেকেন্ড বেস্ট সলিউশন’ আরেকটা হতে পারে। আগামীতে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার একটি বিকল্প প্রস্তাব আমি দেশবাসীর সামনে তুলে ধরছি। আমি যে সরকারের কথা বলছি তার নাম হতে পারে ‘মধ্যবর্তীকালীন সরকার’ ইংরেজিতে যাকে বলা যায় ‘মিডটার্ম গভর্ণমেন্ট’। এটা হবে দলীয় এবং নির্দলীয়ের মিশ্রণে। বর্তমান সংসদের পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরপরই শপথ নেবে এই সরকার, তার আগে নয়। কারণ সংসদ, মন্ত্রী-এমপিদের স্বপদে বহাল রেখে বাংলাদেশে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কোনো ক্রমেই সম্ভব নয়। একথা মহাজোটের শরিক রাশেদ খান মেননও ইদানীং বলতে শুরু করেছেন। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য মধ্যবর্তী সরকারের মেয়াদ হবে ১৮০ দিনের। সরকার প্রধান হবেন সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী সকল দলের এবং জোটের কাছে গ্রহণযোগ্য একজন নির্দলীয় ব্যক্তি। সব দলের সাংসদরাই সংসদে বসে তাঁকে মনোনীত করবেন। তাঁর টাইটেল হবে ‘মধ্যবর্তী প্রধানমন্ত্রী’ কিংবা ‘মিডটার্ম প্রাইম মিনিস্টার’। মধ্যবর্তী প্রধানমন্ত্রী তাঁর পছন্দমত নির্দলীয় ভিত্তিতে মনোনয়ন দেবেন ৫ জন মন্ত্রী। এবং সরকার দলীয় জোট থেকে আসবে ৫ জন এবং বিরোধী দলীয় জোট থেকে আসবে বাকি ৫ জন। এই ১৫ জন মন্ত্রী এবং একজন প্রধানমন্ত্রী নিয়ে হবে মধ্যবর্তী সরকার। ড. আকবর আলী খানের প্রস্তাব অনুযায়ী মন্ত্রীপদে সরকার দলীয় জোটের ৫ জন বিগত সাংসদের নাম প্রস্তাব করবে বিরোধী জোট এবং একই পদে বিরোধী জোটের ৫ জন বিগত সাংসদের নাম প্রস্তাব করবে সরকারি জোট। মধ্যবর্তী প্রধানমন্ত্রীর হাতে থাকবে প্রতিরক্ষা, স্বরাষ্ট্র, স্থানীয় সরকার, ক্যাবিনেট, সংস্থাপন, ও জনপ্রশাসন মন্ত্রক। নির্বাচনের জন্য স্পর্শকাতর অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক থাকবে নির্দলীয় মন্ত্রীদের হাতে এবং নির্বাচনকে প্রভাবিত করার ব্যাপারে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকগুলো থাকবে দলীয় মন্ত্রীদের হাতে। দলীয় মন্ত্রীদের এখানে অপমানের কিছু নেই। নির্বাচন ছাড়া এ সরকার কোনো নীতিগত সিদ্ধান্ত নেবে না। মন্ত্রকগুলোর দৈনন্দিন রুটিন কাজ চালিয়ে নেওয়া এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে যাবতীয় আঞ্জাম দেওয়াই হবে তাদের একমাত্র কাজ। যারা এই সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রী হবেন তারা কেউই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

এবার আমি আমার প্রস্তাবের পেছনে যুক্তির ব্যাখ্যা তুলে ধরতে চাই। মধ্যবর্তী সরকারের মেয়াদ আমি ৯০ দিনের পরিবর্তে ১৮০ দিন কেন বলছি তার পেছনে আমার যুক্তি আছে। বিচারের একটি মূল নীতি বা প্রিন্সিপল হল সাক্ষী যদি উভয় পক্ষে সমানভাবে জোরদার হয়, এবং বাদি-বিবাদি দুজনের দাবিই অকাট্য হয়, তাহলে বিচারকের রায় সবলের বিপরীতে দূর্বলের পক্ষেই যায়। অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে ৫ বছর দেশ শাসন করার সময় প্রতিটি সরকার পরবর্তী নির্বাচনকে প্রভাবিত করার মানসে প্রশাসনের স্পর্শকাতর জায়গায় স্তরে স্তরে দলীয় লোক বসিয়ে যায়। তাই নির্বাচনে ইনকাম্বেন্ট পার্টির অবস্থান থাকে সবল এবং বিরোধী দলের অবস্থা থাকে নাজুক। এখানে ভারসাম্যের খাতিরে দলীয় নিয়োগগুলোকে ডিসমেন্টাল করে নির্বাচনের আগে উভয় দলের বা জোটের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে ৯০ দিন সময় আমার মতে যথেষ্ট নয়, বরং ১৮০ দিনই প্রয়োজন।

দলীয় সরকার সব সময়ই নিজের পছন্দমত নির্বাচন কমিশন গঠন করে বা করতে চায়। কারণ এর মাধ্যমে নির্বাচনে তাদের বাড়তি সুবিধা আদায়ের সম্ভাবনা থাকে। ষোড়শ সংশোধনীতে বলে দেওয়া থাকবে প্রতি ৫ বছর অন্তর যখন মধ্যবর্তী সরকার আসবে তখনই জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। নির্বাচনের দিন দলীয় মাস্তানি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি, আনসার, ইত্যাদির সঙ্গে প্রয়োজনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। এ জন্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রক থাকবে মধ্যবর্তী প্রধানমন্ত্রীর হাতে কারণ রাষ্ট্রপতি দলীয় বিধায় ওই সময়ের জন্য এটা তাঁর হাতে রাখা ঠিক নয়। এ থেকে অতীতে সমস্যা দেখা দিয়েছে, তারও নজির আছে।

সরকার দলীয় মন্ত্রীদের নাম আসবে বিরোধী জোট থেকে এবং বিরোধী জোটের মন্ত্রীদের নাম আসবে প্রতিপক্ষের কাছ থেকে। এটা ড. খানের প্রস্তাব। তিনি এর পেছনে কী যুক্তি দিয়েছেন তা আমি জানি না, কিন্তু আমার কাছে মনে হয় এটা একটি ভাল প্রস্তাব, কারণ উভয় জোট যদি নিজ নিজ মন্ত্রীদের মনোনয়ন দেয় তবে তাদের পক্ষে অতিরিক্ত দলকানা এবং নেত্রীর প্রতি বেশি অনুগত হওয়ারই কথা এবং তাদের মধ্যে দেওয়া-নেওয়ার মানসিকতা কম থাকতে পারে, এ অবস্থা নির্দলীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সামাল দেওয়া একটু কঠিন কাজ হবে বৈকি। অন্যদিকে প্রতিপক্ষের মনোনীত দলীয় মন্ত্রীরা হবেন প্রতিপক্ষের প্রতি অপেক্ষকৃত নমনীয় যেটা অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনি পারবেশ সৃষ্টিতে সহায়ক হবে বলে আমি মনে করি।

বর্তমানে বিএনপি অপেক্ষাকৃত দূর্বল অবস্থানে আছে, তাই আমার প্রস্তাবনা কারো কারো চোখে বিএনপি ঘেঁষা মনে হতে পারে। তবে, আমার প্রস্তাবে বিএনপি যদি কোনো সুবিধা পেয়েই থাকে সেটা অযৌক্তিক নয় বরং যৌক্তিক এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের জন্য আবশ্যক। আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী সমর্থক পাঠকরা ভেবে দেখুন, আমার প্রস্তাব থেকে এখন বিএনপি যদি কোনো সুবিধা পায় সেই একই সুবিধা আগামীতে আপনার পছন্দের দল বা জোটও পাবে যখন তারা বিরোধী দলীয় বেকায়দা অবস্থা থেকে নির্বাচনের মাঠে লড়বে। এখানে একটি কথা সবার মনে রাখা প্রয়োজন, ‘নো গভর্ণমেন্ট ইজ দি লাস্ট গভর্ণমেন্ট’। যেহেতু একেক জোট একেকবার একেক অবস্থান থেকে নির্বাচন খেলবে, তাই দীর্ঘমেয়াদে এ ব্যবস্থা সবার জন্য সুবিচার বয়ে আনবে বলেই আমার বিশ্বাস। আমি প্রস্তাবটি যতদূর সম্ভব নির্মোহভাবেই দেওয়ার চেষ্টা করেছি। তারপরও আমার প্রস্তাবে কোনো দূর্বলতা থাকলে যে কেউ এটাকে শুধরিয়ে আরো সুন্দর ও সুষ্ঠু করতে পারেন।

এখন শেষ প্রশ্ন, মধ্যবর্তী সরকার সম্বলিত ষোড়শ সংশোধনী সংবিধানে কতদিন থাকবে? আমার মতে যতদিন পর্যন্ত প্রধান দুই রাজনৈতিক জোটের মধ্যে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক ও নীতিনির্ধারণী প্রশ্নে স্থায়ী সমঝোতা না হবে, যতদিন পর্যন্ত যে কোনো দল ক্ষমতায় এসেই জাতীয় স্থাপনাসমূহের নাম পরিবর্তন এবং বিরোধী দলকে ঠ্যাঙানো বন্ধ না করবে, যতদিন পর্যন্ত উভয় দলের প্রয়াত নেতাদের বিরুদ্ধে সংসদে বিষোদগার বন্ধ না হবে, যতদিন পর্যন্ত উভয় জোট নিু এবং উচ্চ আদালতের প্রতি নির্মোহ এবং সমানভাবে শ্রদ্ধাশীল না হবে, ততদিন পর্যন্তই বাংলাদেশে মধ্যবর্তী সরকার জারি থাকা জরুরি।
লেখক: আবু এন. এম. ওয়াহিদ; অধ্যাপক – টেনেসী স্টেইট ইউনিভার্সিটি;
এডিটর – জার্নাল অফ ডেভোলাপিং এরিয়াজ;

Loading


মন্তব্য দেখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *