ছিটমহল, বন্যা ও মুন্সি

অনেক বিষয়ে কথা বলা যেত। তবে বিবিধ সীমাবদ্ধতার কারণে দীর্ঘ কলাম লেখা পরিহার করছি। তিনটি বিষয়ে সংক্ষিপ্তভাবে মন্তব্য করব। প্রথম বিষয়, ছিটমহল বিনিময়। দ্বিতীয় বিষয়, শিক্ষিত যুবকদের মুন্সিয়ানা। তৃতীয় বিষয় চট্টগ্রাম মহানগর ও আশপাশের এলাকায় বন্যা।

ছিটমহল

৬৮ বছর পর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার ছিটমহল সমস্যার সমাধান হয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের একাধিক সরকার এবং সরকারের বাইরের ব্যক্তিত্বরাও ভূমিকা রেখেছেন এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করতে, যেন শান্তিপূর্ণভাবে এর সমাধান হয়। সমস্যাটি ভারত ও বাংলাদেশ ইতিহাস থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছে। ১৯৪৭ সালের আগস্ট মাসে ভারত ও পাকিস্তান যখন ব্রিটিশের ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীন হয়, সেই সময় উভয় দেশের সীমানা নির্ধারণের জন্য বাউন্ডারি কমিশন গঠন করা হয়েছিল। কমিশনের প্রধান ছিলেন ব্রিটিশ নাগরিক স্যার সিরিল রেডক্লিফ। তিনি চেষ্টা করেছিলেন, সব কিছুতে সফল হননি। দু-একটা কাঁটা থেকে গিয়েছিল। ওই কাঁটাগুলো তুলতে ১৯৪৭ থেকে ২০১৫ মোট ৬৮ বছর লাগল। তবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার যদি অধিকতর আগ্রহী ও তৎপর হতো, তাহলে হয়তো অনেক আগেই সমস্যার সমাধান হতো। ১৯৭৪ সালে যে আগ্রহ নিয়ে ওই সময়ের দুই দেশের নেতা (যথা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী) চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন, সেই আগ্রহের জোয়ার ভারত সরকার ধরে রাখতে পারেননি অথবা ধরে রাখেননি। অপরপক্ষে, বাংলাদেশ সরকার আগ্রহ ও তৎপরতা ধরে রেখেছিলন। যা হোক, বাংলায় প্রবাদ আছে : সব ভালো তার, শেষ ভালো যার! ছিটমহল বিনিময় আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে। বাংলাদেশের অংশে বাংলাদেশের পতাকা উড়েছে ১ আগস্ট। তাই ছিটমহলের মানুষ বিভিন্ন শব্দমালায় বিভিন্ন অভিব্যক্তিতে আনন্দ প্রকাশ করেছেন। ঢাকা থেকে প্রকাশিত আজকের কাগজ, পৃষ্ঠা-১, ২ আগস্ট ২০১৫ দ্রষ্টব্য; হাতিবান্ধার গোতামারী ছিটমহলের দুইজন মহিলা, মোমেনা বেগম ও সকিনা বেওয়া, সাংবাদিককে বললেন, ‘আইজ ঈদ ঈদ নাগেছে। মুই আইজ খুব খুশি, ঈদের দিন হামা এত খুশি হই না।’ একই এলাকার রেজাজুল বললেন, ‘হামাক আর ছিটমহলের বাসিন্দা কেউ কইবে না। হামরা এখন বাংলাদেশী।’ ছিটমহলের বাসিন্দারা রাষ্ট্রবিহীন নাগরিক ছিলেন। তাদের কোনো প্রকার সুযোগ-সুবিধা কোনো রাষ্ট্রই প্রদান করত না। বাস্তবসম্মত হাজার অসুবিধা ছাড়াও পরিচয়হীনতার কারণে তারা হীনম্মন্যতায় ভুগতেন এবং অবমূল্যায়িত হতেন। তাদের কষ্টের প্রকার ও ধরন বাংলাদেশের অন্যান্য এলাকার মানুষের সহজে না বোঝার সম্ভাবনা বেশি। আমিও হয়তো বা বুঝতাম না। ব্যক্তিগতভাবে একাধিক ছিটমহল পরিদর্শন করেছিলাম সরকারি দায়িত্ব পালনকালে, কিন্তু অনানুষ্ঠানিকভাবে ১৯৯১ সালের শীতের শুরুতে। এরপর আর যাওয়া হয়নি। কিন্তু সেনাবাহিনীর সদর দফতরে, সামরিক অপারেশনস পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনের কারণে অনেক গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তাসমস্যার মতো ছিটমহল সমস্যাটিও আমাদের বা আমার পর্যবেক্ষণাধীন ছিল। সেটি অনেক বছর আগের কথা। অবসর জীবনে, এখন থেকে ১৫-১৬ বছর আগে ভারতের মহেন্দ্রগঞ্জ ও বাংলাদেশের রৌমারী এলাকায় সংঘটিত দুর্ঘটনার সময় আমি অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসেবে একটি প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক ছিলাম। সেই সময় আমরা আন্তঃরাষ্ট্রীয় সীমান্ত সমস্যা (ছিটমহল সমস্যাসহ) আলোচনা করেছিলাম। সব ছিটমহলবাসীকে মুক্তিযোদ্ধা ইবরাহিমের পক্ষ থেকে, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির পক্ষ থেকে স্বাগতম। ছিটমহলগুলোর অনেক মানুষ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালেও মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য সহযোগিতা করেছিলেন এবং বেশ কয়েকজন মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। ছিটমহলের বাসিন্দাদের মতো মুক্তিযোদ্ধারাও অবমূল্যায়িত ছিলেন। আশা করি, সেই ইতিহাসের ইতি টানা হলো। বাংলাদেশের প্রশাসনকে প্রো-অ্যাক্টিভভাবে অথবা আউট অব দি ওয়ে (অর্থাৎ স্বপ্রণোদিত হয়ে ব্যতিক্রমী পন্থায়) চিন্তা ও চেষ্টা করতে হবে; ছিটমহলবাসীকে মনস্তাত্ত্বিকভাবে এবং ভৌতকাঠামোভাবে স্বাধীন দেশের আমেজ প্রদান করতে হবে। লাল ফিতার দৌরাত্ম্য যেন ছিটমহলবাসীকে ভীতসন্ত্রস্ত না করে, সেদিকে খেয়াল রাখার জন্য আমরা আহ্বান জানাই।

শিক্ষিত তরুণদের মুন্সি পেশা

আমার বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলায় ১৫ নম্বর বুড়িশ্চর ইউনিয়নের উত্তর বুড়িশ্চর গ্রাম। ৩১ জুলাই রাতে আমাদের গ্রামের সন্নিকটে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই মহাসড়কের পাশে অবস্থিত বিখ্যাত নজু মিয়া হাটে রয়েল প্যালেস কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত মেজবানে উপস্থিত ছিলাম। আমাদেরই গ্রামের মরহুম এস এম লিয়াকত আলী মুন্সির দ্বিতীয় ছেলে এস এম আনিসুর রহমানের বিয়ে উপলক্ষে তার পরিবার এলাকাবাসী ও আত্মীয়স্বজনকে ‘মেজবান’-এ দাওয়াত দিয়েছিল। বাংলায় যদিও বানানে মেজবান লেখা হলো, চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় এর উচ্চারণ ‘মেজ্জান’। মরহুম লিয়াকত আলী জনপ্রিয় ও সম্মানিত ব্যক্তি ছিলেন। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় যাকে মুন্সি বলা হচ্ছে, সরকারি পরিভাষায় সেই পদবি বা পেশাকে বলা হয় দলিল লেখক। মরহুম লিয়াকত আলীর বড় ছেলে এস এম মিজানুর রহমান চট্টগ্রামের বিখ্যাত খাদ্য সম্পর্কিত শিল্পগোষ্ঠী ‘ওয়েল গ্রুপ’-এর আঞ্চলিক অফিসে কাজ করেন। মিজান ও আনিসরা আমাদের পারিবারিক আত্মীয়। আনিস প্রথমে বিএ এবং পরে এমবিএ পাস করেছেন। এখন পিতার পেশা, সাধারণ মানুষের ভাষায় ‘মুন্সি’ বেছে নিয়েছেন। নিজগ্রাম তো বটেই, চতুর্দিকে বৃহত্তর এলাকায় তরুণ শিক্ষিত আনিস মুন্সির প্রশংসা শুনলাম। এ কথাগুলো তুলে ধরার অন্তত দু’টি কারণ আছে। প্রথম কারণ হচ্ছে, ভূমি ব্যবস্থাপনা ও দলিল লেখা সম্বন্ধে। ভূমি ব্যবস্থাপনা একটি জটিল বিষয়। জমি বেচাকেনার সময় যে দলিল লেখা হয় সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অতীতকালে, এমনকি ১৫-২০ বছর আগেও বেশ পেঁচানো বাংলায়, কঠিন কঠিন শব্দে, অনেক সংস্কৃত শব্দের প্রভাবান্বিত হয়ে গৎবাঁধা কতকগুলো বাক্য দিয়ে বড় বড় অনুচ্ছেদে দলিল লেখা হতো এবং জমির দলিল লেখা হতো হাতে। ওই হাতের লেখা পড়া একটি কষ্টকর ও কঠিন কাজ ছিল। যুগ পাল্টে গেছে। একাধিক সরকার, বিশেষ করে আশির দশকে এরশাদ সরকার, ১০-১২ বছর আগের বিএনপি সরকার এবং চার-পাঁচ বছর আগে আওয়ামী সরকার ভূমি ব্যবস্থাপনায় অনেক ভালো কাজ ধারাবাহিকভাবে করেছে। এখন মোটামুটি আধুনিক বাংলায় দলিল লেখা হয়, লেখাপড়া সব কম্পিউটার-ভিত্তিক, এবং শিক্ষিত ব্যক্তিরা এতে জড়িত। কিন্তু উন্নতির আরো অনেক অবকাশ আছে। যেকোনো জেলার কোর্ট বিল্ডিং বা জেলা রেজিস্ট্রারের অফিস এলাকায় দলিল লেখকদের প্রাচুর্য থাকে। কিন্তু তাদের দাফতরিক কাজকর্মের জন্য এখনো পরিকল্পিত ব্যবস্থা সব জায়গায় বা সব জেলায় হয়ে ওঠেনি। দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে, তরুণদের সম্পৃক্তি ও আগ্রহ তুলে ধরার। অতীতে মুন্সি উচ্চ ডিগ্রিধারী হতেন না। এখন শিক্ষিত যুবকেরা এই পেশায় জড়াচ্ছেন। এটা অত্যন্ত শুভলক্ষণ। কোনো পেশাই অবহেলাযোগ্য নয়, এটাই একটি শিক্ষা। শনিবার পয়লা আগস্ট সন্ধ্যাবেলা চট্টগ্রাম মহানগরের অক্সিজেনের কাছে বিখ্যাত ওয়াজেদিয়া দরবার শরিফ ও কামিল মাদরাসার সন্নিকটে নবনির্মিত বাদশাহ কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। বিখ্যাত আউলিয়া হজরত মাওলানা ওয়াজেদ আলী খান রহ:-এর নামানুসারে পুরো এলাকা এবং এখন একটি ওয়ার্ডের নাম ওয়াজেদিয়া। বিখ্যাত ওয়াজেদিয়া কামিল মাদরাসার দীর্ঘ দিনের প্রিন্সিপাল ছিলেন ওয়াজেদ আলী খান রহ:-এর ছেলে হজরত মাওলানা আতিকুল্লাহ খান রহ:। এখন প্রিন্সিপাল মাওলানা জাহেদ খান। যা হোক, বিয়ের কথায় ফিরে আসি। কন্যাপক্ষের দাওয়াত। বর হচ্ছেন আমাদের গ্রামের এস এম আনিসুর রহমান, যার কথা ওপরের অনুচ্ছেদে লিখেছি। কন্যা হচ্ছেন কুলসুমা আক্তার ঝিমু। বাবা ওমানে ব্যবসারত। মেয়ের বিয়ে দেয়ার জন্য দেশে এসেছেন। চট্টগ্রামের মফস্বল এলাকায় ‘কমিউনিটি সেন্টার’ শব্দটি বহুলপ্রচলিত নয়। প্রচলিত শব্দ হচ্ছে ‘ক্লাব’। অর্থাৎ কন্যাপক্ষ থেকে আয়োজিত বিয়ের অনুষ্ঠানস্থল হচ্ছে বাদশাহ ক্লাব।

জলাবদ্ধতা ও বন্যা

ঈদুল ফিতরের দিন ছিল ১৮ জুলাই। এই তারিখের পর প্রথমবারের মতো সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত বৃষ্টি হয়নি, এমন একটা দিন চট্টগ্রাম মহানগরের বাসিন্দারা পেয়েছেন শনিবার ১ আগস্ট। ওই দিন চট্টগ্রামে ছিলাম। আগের দিন রাতে নিজগ্রামের বাড়িতে ছিলাম। দুপুরে ও বিকেলে গ্রামের রাস্তাগুলো ডুবন্ত ছিল। নিজেদের বসতবাড়িতে ও পাড়ার জুমা মসজিদে পানি ঢুকে যায় যায় অবস্থা। ওখানে গিয়ে শুনলাম, আমাদের গ্রাম উত্তর বুড়িশ্চর ও পার্শ্ববর্তী মধ্যম বুড়িশ্চর গ্রামে প্রচুর পানি। দিনভর বৃষ্টি হয়নি, তারপরও পানি কেন? উত্তর পেলাম, কাপ্তাইয়ের পানি ছেড়ে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ কাপ্তাইয়ে অবস্থিত জলবিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র পরিচালনার জন্যই যে কাপ্তাই লেক বা হ্রদ তৈরি করা হয়েছিল, সেটার পানি এত বেশি হয়েছে যে, বাঁধের সব দরজা খুলে পানি চলে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। ১৯৫২-৫৯ সালের কথা। তৎকালীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গামাটি মহকুমার আওতাধীন কর্ণফুলী নদীর তীরে নিভৃত গ্রাম, কাপ্তাই নামক স্থানে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল। বিরাট বাঁধ নির্মাণ করে কর্ণফুলী নদীর পানি আটকানো হয়েছিল। সেই পানি পরিকল্পিতভাবে ও কারিগরিভাবে ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা শুরু হয়েছিল। ফলে কাপ্তাই হয়ে ওঠে গুরুত্বপূর্ণ একটি ক্ষুদ্র শহর। চট্টগ্রাম মহানগর থেকে কাপ্তাই যাওয়ার জন্য সুন্দর মহাসড়ক নির্মাণ করা হয়। ওই মহাসড়কের পাশেই মদুনাঘাট নামে বিখ্যাত এলাকায় হালদা নদীর তীরে উত্তর বুড়িশ্চর গ্রামে আমার জন্ম ১৯৪৯ সালের ৪ অক্টোবর। প্রথমবারের মতো কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প দেখার জন্য বেড়াতে গিয়েছিলাম নবম শ্রেণীর ছাত্র থাকা অবস্থায়। একমাত্র ফুফা আকবর শাহ প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং আকবর শাহ জামে মসজিদের খতিব, বর্তমানে মরহুম মাওলানা ফয়েজ আহমদের হাত ধরে। ওই কাপ্তাইয়ের অদূরে দুই কিস্তিতে চাকরি করেছি বিদ্রোহী শান্তিবাহিনী-বিরোধী অভিযানে। কাপ্তাই বাঁধ একটি দর্শনীয় স্থানও বটে। স্বাভাবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের সময় যে পানি কাপ্তাই লেক থেকে বের হয়, সেটা কর্ণফুলী নদীকে গ্রোতস্বিনী রাখে। যখন লেকে পানি বেড়ে যায় বৃষ্টির কারণে, তখন বাঁধের গেট খুলে দেয়া হয়। গত শনিবার বাঁধের ১৬টি গেটই খুলে দেয়া হয়েছিল। ফলে উজান থেকে ভাটির দিকে ধাবমান কর্ণফুলী নদীর পানি পরিমাণে হঠাৎ করেই প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়ে গেল। কাপ্তাই লেক থেকে বাঁধের গেটগুলোর মধ্য দিয়ে বের হওয়ার পর আনুমানিক ২৫ কিলোমিটার ভাটিতে হালদা নদী ও কর্ণফুলী নদীর মিলনস্থানে আসতে সময় লাগে কয়েক ঘণ্টা। অতঃপর হালদা নদী দিয়ে প্রবেশ করে নদীতীরবর্তী এলাকাগুলো প্লাবিত করতে সময় লাগে আরো দু-চার ঘণ্টা। অর্থাৎ ভারতের মিজোরাম প্রদেশে অথবা বাংলাদেশের রাঙ্গামাটি বা খাগড়াছড়ি জেলায় যদি অধিক বৃষ্টিপাত হয়, তাহলে আমাদের এলাকায় তথা কর্ণফুলী ও হালদা নদীর তীরবর্তী জনপদগুলো বন্যায় প্লাবিত হয়ে যায়। চট্টগ্রাম মহানগর তো এমনিতেই জলাবদ্ধতায় আক্রান্ত। গত শুক্র-শনিবার মহানগরের পানি নেমে যাওয়ার কোনো জায়গা পাচ্ছিল না। কারণ, পূর্ণিমার প্রভাবে ও কোমেন নামে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বঙ্গোপসাগরে ও কর্ণফুলী নদীতে জোয়ারের পানির উচ্চতা অস্বাভাবিক। এর সাথে যুক্ত হয়েছে উজান থেকে নেমে আসা কাপ্তাইয়ের পানি। এ ক্ষেত্রে একাধিক বিষয় শিক্ষণীয়। প্রকৃতির সাথে সঙ্গতি রেখে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করতে হয়। নগরায়ন এমনভাবে হয়েছে এবং গ্রামাঞ্চলেও এমনভাবে পাকা বাড়িঘর বানানো হয়েছে যে, পানি চলাচলের পথগুলো অবরুদ্ধ। অতএব, আমাদের ভুলের মাশুল আমাদেরকেই দিতে হবে। এর জন্য পাকিস্তান, ভারত বা রেডক্লিফ মিশনকে দোষ দেয়ার কোনো অবকাশ নেই।
লেখক : মেজর জেনারেল (অব:)চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি index

Loading


মন্তব্য দেখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *