গণ-অভ্যুত্থানের সাফল্যের হার কী?

৩০০ বছরে পপুলার আপরাইজ অনেক হলেও সাফল্যের হার কী? বেশির ভাগ দেশেই গণ-অভ্যুত্থানের চালিকাশক্তি- নেতা, জনগণ ও পরাশক্তি। তিনটি শক্তির মধ্যে কিছু শূন্যস্থান থাকলেও বেশির ভাগ বিষয়েই সমন্বয় থাকে। গণ-অভ্যুত্থান হয় নিষ্পেষিত সাধারণ মানুষের চাওয়া-পাওয়ার ঘাটতি মেটাতে। স্বৈরশাসকদের নিষেধাজ্ঞার কারণে বেশির ভাগ দেশেই সরব বিপ্লব সম্ভব হয় না। নেতারা নেতৃত্ব দেন গণমানুষের আবেগ ও পরাশক্তির চাহিদা দুটোই মাথায় রেখে। পরাশক্তি ও নেতারা সব কথা খুলে বলেন না। নিষ্পেষিত সাধারণ মানুষ মূলত আবেগতাড়িত। ফলে নেতাকেই বিশ্বাস করে আরো জনপ্রিয় করে তোলে, পরাশক্তির বিষয়টি তাদের জন্য অপ্রয়োজনীয়; কিন্তু বেশির ভাগ নেতাই সফল গণ-অভ্যুত্থান শেষে সাধারণ মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বৈরাচারের পথ বেছে নেন। এই কারণেই গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী দেশগুলোয় ব্যর্থতা দেখা যায় বেশি; কিন্তু এর ব্যতিক্রমও আছে। দু-একটি দেশের উদাহরণ দিচ্ছি। কিউবা, ইরান, আরব বসন্ত, বাংলাদেশ… উল্লেখযোগ্য।
ভারত স্বাধীন হয়েছে ডাইরেক্ট অ্যাকশনের ফলে, হিন্দু-মুসলমানের রক্তক্ষয়ী দাঙ্গাকে কেন্দ্র করে। গান্ধীর লবণকরের বিরুদ্ধে সফল গণ-আন্দোলন, ঐতিহাসিক; কিন্তু ভারতের পপুলার আপরাইজ ব্যর্থ, ইংরেজরা ভারত ছেড়েছে অন্য কারণে।

আর দীর্ঘ পারটাইড সত্ত্বেও মেন্ডেলাকে কেন্দ্র করে কৃষ্ণাঙ্গদের গণ-অভ্যুত্থান, দক্ষিণ আফ্রিকার সাফল্য।

যদি মার্কিন সিভিল রাইটস আন্দোলনের কথা বলি, ড. মার্টিন লুথার কিংয়ের নেতৃত্বে ঐতিহাসিক পপুলার আপরাইজ, হাজার বছরে মানবমুক্তির শ্রেষ্ঠ উদাহরণ। ড. কিং শুধু কালোদেরই মুক্ত করেননি, করেছিলেন সারা বিশ্বের ইমিগ্রান্টদেরও। অনেকের মতে, কিউবা, ইরান, আরব বসন্তের পপুলার আপরাইজ ১০০ ভাগ ব্যর্থ। ড. কিং ও মেন্ডেলা- দুই নেতাই ১০০ ভাগ সফল। জীবনের শেষ পর্যন্ত নিপীড়িত মানুষের সাথে থেকেছেন এক সুরে। সাফল্যের রঙধনু ছোঁয়ার পরেও, বিপথগামী হননি মেন্ডেলা এবং কিং- যে দৃষ্টান্ত কিউবা, ইরান, আরব বসন্ত ও বাংলাদেশে নেই।
মার্কিনসমর্থিত স্বৈরাচারী বাতিস্তা উৎখাতে- ক্যাস্ট্রো, রাউল ও চে গুয়েভারার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা। নির্বাসনে থেকেও গড়ে তুলেছিলেন ভয়ঙ্কর গেরিলা বাহিনী, যা ’৭১-এরও প্রেরণা। বাতিস্তা ও শাহের আমলে সভা-সমাবেশ ছিল ১০০ ভাগ নিষিদ্ধ। সুতরাং প্রায় ১০ মিলিয়ন কিউবান অত্যাচারী বাতিস্তার দমন-পীড়ন, বেকারত্ব, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, নৈরাজ্য থেকে মুক্তি পেতে সরাসরি গেরিলা বাহিনীতে যোগ না দিলেও ঘরে ঘরে ক্যাস্ট্রোর প্রতি সমর্থন ছিল বিপ্লবের মূল চালিকাশক্তি। ফলে স্বল্পসংখ্যক গেরিলা সৈন্য আর বিপুল জনসমর্থন সঙ্গে করে বাতিস্তাকে উপড়ে ফেলেছিলেন। দুঃখজনক, ব্যর্থ হয়েছে কিউবানেরা। ১৯৫৯ থেকে আজ অবধি স্বৈরশাসনমুক্ত হয়নি কিউবা; বরং দমন-পীড়ন অব্যাহত…। সম্পদের সমান বণ্টনের অজুহাতে কিউবানদের জীবন সমাজতন্ত্র দিয়ে দুঃসহ করে দিয়েছে পরিবারতান্ত্রিক শাসন। ১০০ ভাগ রাষ্ট্রশাসিত মিডিয়া এবং ডাক্তার-মোক্তারের একই বেতন, কফিনে বন্দী মানবাধিকার। অবশেষে যেন, দেবতার ভূমিকায় আবির্ভূত হয়ে ওবামাকে নিষ্পেষিত কিউবানদের কথা জানালেন পোপ ফ্রান্সিস। তাতে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে আমেরিকা।
ঠিক তেমনই ইরান। মার্কিনসমর্থিত লম্বা রাজতন্ত্রের স্বৈরাচার ও দুর্নীতি ছিল ঐতিহাসিক। নিজেকে শাহেনশাহ ঘোষণা করে পরিবারের হাতে দিয়েছিল দানবীয় ক্ষমতা। শাহ পরিবার ছিল শ্রেষ্ঠ দুর্নীতিবাজ। একদলীয় শাসন, উন্মুক্ত ফায়ারিং স্কোয়াড, কারাগারে নির্যাতন, বারো গজ দূরে দূরে শাহের মূর্তি অথবা ছবি এবং পশ্চিমাদের লুটপাট। নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৯৭৭ সালে রাস্তায় নামল বিক্ষুব্ধ ইরানিরা। ফলে সপরিবারে ইরান ছাড়তে বাধ্য হলেন শাহ। ১৬ জানুয়ারি ১৯৭৯-তে রাজপথে উল্লসিত ইরানিদের স্রোত সারা বিশ্ব দেখেছে। ঘটনার দুই সপ্তাহ পর, ১৪ বছর নির্বাসিত আয়াতুল্লাহ ফ্রান্স থেকে ইরানে ফিরলেন। ধর্মীয় নেতাকে বিপুল আশা ও আবেগের সাথে লুফে নিলেন ইরানিরা। কিন্তু তাদের আশা কি তারা পূরণ করতে পেরেছিলেন? দমন-পীড়ন, মানবাধিকার হরণ, একপক্ষীয় শাসনের অভিযোগ।
ব্যর্থতার আরেক উদাহরণ আরব বসন্ত, কলকাঠি নেড়েছে পশ্চিমারা। একদা সাদ্দাম হোসেন, মোবারকের মতো বিশ্বস্ত স্বৈরাচারীদের হটানোর জন্য আরব বসন্ত তৈরি করা হলো। এখানে সরাসরি নেতা না থাকায় বিভিন্ন স্কোয়ারে মূলত জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনই প্রধান। আরব বসন্তের দাবি ছিল কিউবা ও ইরানিদের মতোই, যা এখন কোটি কোটি মানুষের জীবনে অভিশাপ। বসন্তের প্রথম শিকার তিউনিশিয়া। পরবর্তী সময়ে লিবিয়া, মিসর, ইয়েমেন প্রভৃতি। সৌদি আরব, বাহরাইন, কুয়েত, মরক্কোয়ও চেষ্টা হয়েছিল, কিন্তু সফল হয়নি। লিবিয়া, মিসর, ইয়েমেন, সিরিয়া… লণ্ডভণ্ড। আরব বসন্ত অভিশাপ ছাড়া কিছু দিয়েছে কি?


মার্কিনসমর্থিত পাকিস্তান সরকারের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে ’৬৯ সালের ‘বাংলা বসন্ত’- স্বর্ণোজ্জ্বল ইতিহাস। ’৫২, ’৫৮, ’৬৪ শেষে বিশ্বাসযোগ্য নেতার অভাব না থাকলেও বারবার গ্রেফতার হওয়া মুজিব, তত দিনে সর্বাধিক জনপ্রিয় নেতা। পরবর্তী সময়ে আগরতলা মামলাই আসলে তাকে নেতা বানাল। গোলটেবিল, ছয় দফা, ১১ দফা, গণ-অভ্যুত্থান, আগরতলা ইত্যাদি… প্রায় মেন্ডেলার সমকক্ষ জনপ্রিয়। বিপ্লবের জনপ্রিয়তার কাছে দুর্বল রাওয়ালপিন্ডি, যা কিউবা ও ইরানের উল্টা। গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে, স্বৈরশাসকদের হাতে ’৭০-এর ১০০ ভাগ গণতান্ত্রিক নির্বাচন শেষে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়- ৪৫ বছরের অন্যতম সফল ঘটনা। ’৭১-এর ২৫ মার্চ পর্যন্ত স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আলোচনা চলছিল। মুক্তিযুদ্ধের আসল তথ্যবঞ্চিত বাংলাদেশীরা। সীমান্তে দিল্লির অগ্রিম যুদ্ধপ্রস্তুতির খবর জানতে পেরেছিল রাওয়ালপিন্ডি। তারাও বসে থাকেনি, ফলাফল ২৬ মার্চ রাত। এক দিকে অপারেশন সার্চলাইট, অন্য দিকে নেতার দেশত্যাগ যেন মাথার ওপর দু’টি বজ্রপাত একসাথে (অপারেশন সার্চলাইটের রহস্য অনুসন্ধানের বদলে আজ পর্যন্ত অব্যাহত চেতনার গেইম থিওরি)। মধ্যখানে মুক্তিকামী সাড়ে সাত কোটি মানুষ, দুই প্রতিপক্ষের ক্রসফায়ারে ক্ষতবিক্ষত। আমার শহরের ১০ হাজার শরণার্থীর মধ্যে আমি নিজে একজন। এক কানে ভারতীয়দের, অন্য কানে পাকিস্তানিদের গোলাগুলির শব্দ শুনতে শুনতে মাত্র চার ঘণ্টায় দেশ ছাড়লাম। পপুলার আপরাইজ সফল; কিন্তু প্রাপ্তি কতটুকু?


বাতিস্তা ও শাহের মতোই রাওয়ালপিন্ডিকে সমর্থন করত আমেরিকা। ’৭১-কে কেন্দ্র করে বহু বছর পর আমেরিকার জন্য চীনের বন্ধ দরজা খুলল, নিক্সনের ঐতিহাসিক চীন সফর। নিউ ইয়র্ক শহরে চীনা দূতাবাসের মাধ্যমে অস্ত্র সরবরাহের চুক্তি হয়েছিল, গিয়েছিল বোস্টন-হার্বার হয়ে পাকিস্তানে। মুক্তিযুদ্ধে চীনের ভূমিকা আওয়ামী লীগ জানে। বরং সব কিছু আমলে নিলে চীনের সাথে আওয়ামী লীগের হঠাৎ অতিমাত্রায় পীরিতি, মুক্তিযুদ্ধের পরিপন্থী।
পপুলার আপরাইজ কাকে বলে! শরণার্থী ক্রাইসিস ১০০ ভাগ সামাল দিলেন দশভুজা গান্ধী। মুক্তিযুদ্ধ সফল করতে, মায়ের চেয়ে যেন মাসির দরদ বেশি। তবে পশ্চিমা মিডিয়া ’৭১-কে গান্ধী প্ররোচিত গৃহযুদ্ধ বলায় ক্ষেপে উঠেছিলেন প্রধানমন্ত্রী (একাধিক ইন্টারভিউ ইউটিউবে)। সাম্প্রতিকালে ভারতের সাবেক প্রধান বিচারপতির অভিযোগ, ’৭১-এর এপ্রিলেই যুদ্ধ চেয়েছিলেন গান্ধী। ঢাকা দখলের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেই বলে সেনাপ্রধান অপারগতা প্রকাশ করলে ক্ষুব্ধ ইন্দিরা বন্ধকক্ষে জ্বলে উঠেছিলেন। এপ্রিলেই বিএসএফকে ঢাকা দখলের নির্দেশ দেন। এক কথায়, রাওয়ালপিন্ডির বিরুদ্ধে দিল্লির ৩ নম্বর ইন্দো-পাক যুদ্ধের প্রস্তুতি ২৬ মার্চের আগেই। উদাহরণ দেয়া হয়েছে, ‘সারেন্ডার অ্যাট ঢাকা : বার্থ অব এ ন্যাশন’ বইয়ের। নেতার অনুপস্থিতিতে প্রবাসী সরকারের নামে যুদ্ধ শেষ হলো ১৬ ডিসেম্বর; কিন্তু সারেন্ডার কেন ভারতীয়দের হাতে? ৯ মাস পর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে যে অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতারণা রাজধানীতে- ইতিহাস সাক্ষী, পপুলার আপরাইজ সফল হলে সেই চেহারা কেমন হয়। ১০ জানুয়ারিতে রাজধানীর অভূতপূর্ব দৃশ্য ফলাও করে প্রচার করল পশ্চিমা মিডিয়া; কিন্তু ১২ জানুয়ারির পর থেকে কী শুরু হলো? এভাবেই পপুলার আপরাইজের শরীরে ঘুণ পোকার উপদ্রব।
সদ্য স্বাধীন, গণতন্ত্রকামী সাড়ে সাত কোটি মানুষ, কিউবান ও ইরানিদের মতোই নেতার পায়ে নিজেদের সঁপে দিয়েছিল। সঠিক ইতিহাস জানতে হবে। ইতিহাসমূর্খ ও স্মৃতিবিচ্যুত জাতি একমাত্র আমরাই। বর্বর আফ্রিকানরাও দমন-পীড়ন বোঝে, মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে প্রতিবাদও করে। সাদাকেও যারা কালো বলে চাপিয়ে দেয়, তারা কি ক্ষমার যোগ্য? যারা চেতনার নামে ব্লাকমেইল করছে, তারা গেইম থিওরি খেলে প্রজন্মের সর্বনাশ করছে। আসুন, আমরা ইতিহাস নিয়ে কথা বলি। কেন পপুলার আপরাইজে ব্যর্থ দেশগুলোর শীর্ষে বাংলাদেশ!
১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য সাংবিধানিক অস্বচ্ছতা ছিল; কিন্তু আবেগতাড়িত মানুষ সেটা ইচ্ছা করে এড়িয়ে, নেতার প্রতি ১০০ ভাগ আস্থার প্রমাণ রেখেছিল। ’৭৩ সালের নির্বাচনে ৩০০-এর মধ্যে ২৯৩টি সিট আওয়ামী লীগের। এটাও নেতার প্রতি আস্থার প্রমাণ; কিন্তু কী পেলো?
বন্যা, দুর্ভিক্ষ, নৈরাজ্য, দুর্নীতি, নানান বাহিনীর তাণ্ডবে অস্থির গণতন্ত্র। সংখ্যালঘুদের দেশত্যাগের হিড়িক। রক্ষীবাহিনীর পৈশাচিক অত্যচারে নাভিশ্বাস। আকাশছোঁয়া দ্রব্যমূল্যের উদাহরণ, তিন টাকার চিনি ৩৩ টাকা। রাস্তায় লাশের ছবি। ভেজাল, মজুতদার, কালোবাজারি। ‘টাইম’ ম্যাগাজিনে বাসন্তির জাল পরা ছবি একাই ইতিহাস। যত্রতত্র খুন এবং দুর্ভিক্ষের লাশ। ক্রসফায়ারে সিরাজ শিকদার। ’৭৪ সালটা আজ অবধি সবচেয়ে অভিশপ্ত বছর। আমি তখন কিশোরী। সদ্য স্বাধীন দেশের কিছু বিশেষ শ্রেণীর মানুষ এবং দুই বাহিনীর অত্যাচারের কথা মনে করে এখনো মুষড়ে পড়ি। র‌্যাবের চেয়ে ১০ গুণ বেশি ছিল রক্ষীবাহিনীর অত্যাচার। মুক্তিপণের দাবিতে আমার শহরে ব্যাপক ধরপাকড়- অন্যতম ভিকটিম আমার বাবা। তার মতো নিরীহ মানুষের গায়ের চামড়া সিগারেটের আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছিল মুক্তিপণের দাবিতে। ক্ষমার অযোগ্য রক্ষীবাহিনীর ব্লাকমেইলের ইতিহাস। দুর্ভিক্ষের মধ্যেই স্বর্ণের মুকুট পরিয়ে বিয়ের ঘটনায় পশ্চিমের মিডিয়ায় ছিঃ ছিঃ, দেশজুড়ে চাপা উত্তেজনা। সব কিছু নাগালের বাইরে চলে গেলে, ’৭৪-এর ডিসেম্বরে জরুরি অবস্থা জারি। সংবিধান, বিক্ষোভ মিছিল, চারটি বাদে সব সংবাদপত্র, মৌলিক অধিকার – সব কিছুই স্থগিত। গ্রেফতার ও হত্যা করা হলে প্রতিবাদ নিষিদ্ধ (কয়েক মাস পরে ইন্দিরাও জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন, ভাগ্যের কী পরিহাস!)
’৭৫-এর ২৫ জানুয়ারিতে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে সব দল বিলুপ্ত, সংসদীয় পদ্ধতির বদলে রাষ্ট্রপতির শাসন, বাকশালের সদস্য না হলে জাতীয় সংসদ সদস্য পদ বাতিল ঘোষণা। এক নেতা, এক দল। চতুর্থ সংশোধনী পরবর্তী সময়ে ১৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত বাকশাল জনপ্রিয় করতে বহু বক্তৃতা-বিবৃতির মধ্যে অনেক নিবন্ধ ও ভিডিও গুগল সার্চে। দু-একটি উদহারণ দিচ্ছি। তত দিনে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করা নেতার মধ্যে সোভিয়েত সমাজতন্ত্রের প্রভাব স্পষ্ট। বিখ্যাত সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্টের সাথে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, চেয়ারম্যান মাও আর লেনিনের আদর্শ তার পছন্দ। চমকে উঠেছিলেন ডেভিড ফ্রস্ট।
বাকশাল ঘোষণার বক্তৃতার সারাংশ এরূপ। প্রতিটি থানা ও জেলায় চেয়ারম্যান থাকবে, বহুমুখী সমবায় পদ্ধতি, পাঁচ বছরের প্লানে প্রায় পাঁচ হাজার গ্রামে চেয়ারম্যানের সাথে থাকবে স্থানীয় ও বাকশাল প্রতিনিধি। প্রায় ৫০০ থেকে এক হাজার সদস্যের কো-অপারেটিভ সোসাইটি বাধ্যতামূলক। জাতীয়করণ হবে প্রতিষ্ঠান। জমির মালিকানা কৃষকের থাকবে; কিন্তু সেখানে অন্যরাও চাষ করবে। অর্থ ভাগাভাগি হয়ে সমাজতান্ত্রিক দেশে যা হয়, অর্থাৎ সমবণ্টনের মাধ্যমে সুফল যাবে কৃষক, ভূমিহীন আর সরকারের ঘরে। শিক্ষকদের বললেন, বেশি ফেল না করিয়ে বেশি পাস করাতে। যুবকদের বললেন, ফুলপ্যান্টের বদলে হাফপ্যান্ট পরে কৃষকের সাথে কাজ করতে। অন্যদের বললেন, পাজামা খুলে লুঙ্গি পরে গ্রামের উন্নয়নে ঝাঁপিয়ে পড়তে। সমাজতন্ত্রে নেতা যা বলবেন, সেটাই ফাইনাল। পপুলার আপরাইজের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা নেতার জন্য সমাজতান্ত্রিক চিন্তাভাবনা গণতন্ত্রের জন্য অভিশাপ, সেটাই হয়েছে এবং হচ্ছে।
’৭৪-এর দুর্নীতি ও নৈরাজ্য সামাল দিতে, সংবিধান স্থগিত করে জরুরি অবস্থা ঘোষণা হয়তো এড়ানো যেত না; কিন্তু ‘এক দল, এক নেতা’ও হয়তো মুক্তিযুদ্ধ করা মানুষের জন্য একসাথে দু’টি বজ্রাঘাতের মতো। মূল সঙ্কটটা এখানেই- জনগণ নেতার মধ্যে বিচ্ছিন্নতার শুরু। আর আপাদমস্তক গণতান্ত্রিক নেতার মধ্যে সমাজতন্ত্রের চিন্তার ব্যাখ্যা কঠিন। যে দেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করল, তারা তখনকার পরিস্থিতিতে বাকরুদ্ধ।


৭ জুন ১৯৭৫, বাকশাল ঘোষণা। কার্যকর হওয়ার সময় ১ সেপ্টেম্বর ১৯৭৫। এক দল, এক নেতার আদর্শ- সমাজতন্ত্র ও বাঙালি জাতীয়তাবাদ (বাংলাদেশী নয়)। ১৫ আগস্টে দুঃখজনক মৃত্যুর সময় নেতার দালিলিক পরিচয়, ‘বঙ্গবন্ধু’র বদলে বাকশালের চেয়ারম্যান (উইকিপিডিয়া, বাকশাল)। ইউটিউবে ১৫ আগস্টের পর পশ্চিমের প্রায় সব মিডিয়ার কভারেজ শোনা উচিত। এক সাংবাদিক বলেছেন, এত ছোট দেশ আর এত মানুষ, বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ, কোনো মানুষের পক্ষেই সামাল দেয়া সম্ভব নয়। তারা বিপুল জনপ্রিয় মুজিবের অজনপ্রিয় হয়ে যাওয়ার কথা আলোচনা করেছেন।
সম্প্রতি উইকিলিক্সে তথ্য ফাঁসে যা পাওয়া গেল : মার্কিন রাষ্ট্রদূত ওয়াশিংটনকে জানিয়েছিলেন, কারো সাথে আলোচনা ছাড়াই সংবিধান সংশোধন করে বাকশাল, নিজেকে চেয়ারম্যান ঘোষণা। লিখেছেন, দ্য নিউ মোগল, এক নেতা এক দল। দ্বিতীয় বিপ্লবের ১০০ দিনের সমালোচনা এবং বাকশালের জন্য নতুন সংবিধানের কথা উল্লেখ। মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ, মানবাধিকার হরণ… ইত্যাদি। (প্রকাশিত এপ্রিল ১২, ২০১৩। গুগল সার্চ, ফ্রম বাকশাল টু আগস্ট ১৫ রেভ্যুলেশন অ্যান্ড ডেথ অব শেখ মুজিব।)


ক্যাস্ট্রো, খোমেনি, আরব বসন্ত… কোনোটাই মুজিবের মতো এত দীর্ঘ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ফসল নয়। তাই জনগণের সাথে ওই সব নেতাদের সরাসরি সম্পর্ক না থাকার সঙ্গত কারণ ছিল। স্বৈরাচারশাসিত দেশের জনগণের সাথে বিপ্লবী নেতাদের দেখা যায়নি। মেন্ডেলা আর ড. কিংয়ের গণ-অভ্যুত্থানের তুলনায় ’৬৯ কম নয়। আরব বসন্তে পাওয়া গেছে আরো বড় স্বৈরাচার; কিন্তু পপুলার আপরাইজ করে সফল হওয়া বাংলাদেশের মানুষ কেন ক্যাস্ট্রো-শাহ ডায়নেস্টি ভোগ করবে?

১৯৭৫, ৭ জুন বাংলাদেশ পেলো- এক দল, এক নেতা, এক ব্যক্তির শাসন।

ইতিহাস বলে, মোশতাকের মতো জঘন্য সরকারকে সমর্থন দিয়েছিল আমেরিকা। পরে যারাই অগণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন, সব ক’টাকে সমর্থন দিয়েছিল ওয়াশিংটন। ৪০ বছর পর পশ্চিমা মিডিয়া হঠাৎ কর্তৃত্বপরায়ণ হাসিনা সম্পর্কে সরব হওয়ায় আমরা সন্দিহান। কারণ, চতুর্থ সংশোধনীর প্রবাহে বাকশালী শাসন গ্রহণ করেনি ৯৯ ভাগ মানুষ। আর ১৫তম সংশোধনীর প্রবাহে ৫ জানুয়ারি গ্রহণ করেনি ৯৫ ভাগ মানুষ। কর্তৃত্বপরায়ণ সরকার বর্তমানে পশ্চিমাদের তোপের মুখে। এর অন্যতম প্রমাণ, জিএসপি প্রত্যাহার এবং ধ্বংসের মুখে অর্থনীতি- যাকে গেইম থিওরির মাধ্যমে লুকিয়ে রেখেছে। ১৫তম সংশোধনীর মাধ্যমে পঞ্চম সংশোধনীকে তুলোধুনো করে পুনর্বাসিত করা হলো ’৭২-এর সংবিধান, অর্থাৎ সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র (বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ অনুপস্থিত)। বাকশালে শুধুই বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও সমাজতন্ত্র (গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ)। চতুর্থ সংশোধনীর মতোই ১৫তম সংশোধনীও জনবিচ্ছিন্নতার চূড়ান্ত প্রমাণ। বারবার বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ওপর আঘাত, বিদেশী ষড়যন্ত্রেরই প্রমাণ। একই সংবিধানে সমাজতন্ত্র থাকলে গণতন্ত্র থাকে কী করে? ডেভিড ফ্রস্টকে মুজিব বলেছিলেন, চেয়ারম্যান মাওয়ের আদর্শ তার পছন্দ। গণতান্ত্রিক নেতার মুখে এই কথা মানায় না। হঠাৎ ১৫তম সংশোধনীর প্রয়োজন কেন? এই সংশোধনী চতুর্থ সংশোধনী প্রভাবিত সমাজতান্ত্রিক চিন্তাধারায় কলুষিত। চীন-সোভিয়েত-কিউবান আদর্শে উজ্জীবিত। অবৈধ উপায়ে ক্ষমতা দখলের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড এবং পূর্ববর্তী সব সামরিক শাসকদের নিন্দা করে শাস্তির বিধান রাখা হলেও ’৭৪-এর ডিসেম্বর থেকে ’৭৫-এর ৭ জুন পর্যন্ত এড়িয়ে যাওয়া হলো। যেকোনো শাসনে মৌলিক অধিকার স্থগিত করাটা অবশ্যই শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কারো আমলে শাসনতন্ত্রের সমালোচনা কোনো ক্রমেই ব্যক্তির সমালোচনা নয়।


দায়মুক্তির অভিশাপের কবলে জাতি? গ্রেফতার ও হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে সমালোচনা নিষিদ্ধ এবং দায়মুক্তি ছিল বাকশালে। প্রায় ৪০ হাজার মানুষ হারিয়ে যাওয়ার অভিযোগটি আজ পর্যন্ত অমীমাংসিত। অপারেশন ক্লিনহার্ট, ১৫ আগস্টের ইনডেমনিটির দায়মুক্তি অবশ্যই নিন্দনীয়; কিন্তু জনমতের অধিকার বিলুপ্ত করে র‌্যাবের জন্য দায়মুক্তি? কুইক রেন্টালেও দায়মুক্তি! পারমাণবিক চুলাও দায়মুক্তি। সুন্দরবনের ছয় মাইল দূরত্বে ভারতের অংশীদারিত্বে বিদ্যুৎ প্লান্টের জন্যও দায়মুক্তি। বেড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে! প্লান্টের কারণে সুন্দরবনের যে অপূরণীয় ক্ষতি, প্রফেসর আনু মুহম্মদরা কি আন্দোলন কম করেছেন? যত্রতত্র পরিবেশ ছারখার করে উন্নয়নের নামে বিদেশীদের সাথে গেইম থিওরির হিড়িক বনাম আমজনতাকে ব্লাকমেইল। স্বতন্ত্র জোন অনুমোদনের হিড়িক পড়েছে। শঙ্কা জাগে, যেচে সব দিয়ে দেয়ার তাড়াহুড়ো। বাংলাদেশ কি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের ঘাঁটি হতে চলেছে?
সর্বনাশা দায়মুক্তির সাড়া জাগানো নমুনা। যে দেশের অর্বাচীনেরা ৫ জানুয়ারিকে নির্বাচন বলে, সেই দেশের মানুষ পারমাণবিক চুলার কিছুই বোঝে না। চেরনোবিল, ফুকুশিমা, ভূপাল, টেংরাটিলা… কিছুই জানে না। ওই বিস্ফোরণ আলোচনায়ই নেই। প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার গ্যাস পুড়ে ছারখার; পরিবেশ ও মানুষের অপূরণীয় ক্ষতি। নাইকো হয়ে গেল ইউনিকল, ইউনিকল এখন শেভরন। এক পয়সাও ক্ষতিপূরণ নেই। ১৫ বছর পর ভূপাল দুর্ঘটনার জন্য মার্কিনিদের মামলায়, মার্কিন আদালতে সাত বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ আদায় করল ভারতীয়রা। আমাদের পারমাণবিক চুলায় দুর্ঘটনা ঘটলে, তেমন কিছু করার সক্ষমতা কি আছে? দায়মুক্তির কারণে পুতিনের টিকিটিও ধরতে পারবেন না দীপু মনিরা।
গ্রিন ওয়ার্ল্ড সংস্থার প্রতিবেদনে রাশিয়ার তৈরি অনিরাপদ পারমাণবিক প্লান্টের কথা উঠে এসেছে। সমালোচনা করা হয়েছে, জাতীয়করণ করা প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে সরকারের কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্টের। অর্থাৎ সরকারের তদবিরে বিভিন্ন দেশে নিউক্লিয়ার প্লান্ট স্থাপনের ব্যবস্থা করা হলে মূলত রাশিয়াই প্লান্টগুলোয় অর্থ বরাদ্দ দেয়। সাম্প্রতিককালে ইরান, ভারত ও বাংলাদেশে এসব অপতৎপরতা লক্ষণীয়। অতীতেও চেরনোবিল দুর্ঘটনার পর কোনো ক্ষতিপূরণ পাননি রাশিয়ানেরা। ফুকুশিমার বেলায়ও এক পয়সাও ক্ষতিপূরণ দেয়নি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানটি। ‘দুঃখজনক, এখন পর্যন্ত চেরনোবিল এলাকার মানুষগুলো তেজস্ক্রিয় ভূমির ওপরেই বাস করছে। কারণ, রোসাটোম কোম্পানি পুনর্বাসনের কোনো দায়িত্বই নেয়নি; কিন্তু মানুষেরাও এত গরিব যে, তারাও অন্য কোথাও যেতে রাজি নয়। এটাই রাশিয়ার নিউক্লিয়ার ইন্ডাস্ট্রির নিরাপত্তা এবং দায়িত্ব বোঝার জন্য অন্যতম উদাহরণ। তেজস্ক্রিয় বর্জ্য রাখার জন্য যেসব পরিকল্পনা রাশিয়ার হাতে, প্রয়োজনের তুলনায় তা নগণ্য। যখন আইনপ্রণেতারাই নির্মাণকারীদের বন্ধু, তখনই ফুকুশিমার মতো ঘটনা সৃষ্টি হয়। এরপরও যারা পুতিনকে দায়মুক্তি দিলো, তারা গণমানুষের শত্র“। লাখ লাখ মানুষ মরলেও এদের কিছুই যায়-আসে না।
মূল কথা, সংসদে এবং বাইরে সর্বত্রই দায়মুক্তি, তথ্যগুমের পাহাড়। ইউরেনিয়ামের ভয়ঙ্কর তেজস্ক্রিয়া এবং বর্জ্য নিষ্কাশন সম্পর্কে কাউকে কিছু জানানো হলো না। যেকোনো সময় পারমাণবিক দুর্ঘটনা ঘটলে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হবে। দেশে দেশে বন্ধ করা হচ্ছে বিতর্কিত পারমাণবিক চুলা। রাশিয়ার নিম্নমানের চুলার বিরুদ্ধে ভারতে প্রায়ই বিক্ষোভ হচ্ছে। বিষয়টি এ রকম, জনগণকে বাঘের মুখে ঠেলে দিয়ে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষমতায় থাকার ষড়যন্ত্র।
প্রথম বিপ্লব জুন ৬, ১৯৬৬। জুন ৭, ১৯৭৫ দ্বিতীয় বিপ্লব। দেশ কি তৃতীয় বিপ্লবের পথে? দাঙ্গা ও যুদ্ধে ক্লান্ত এ দেশের মানুষ। গণতন্ত্র থেকে বহু দূরে সরে গেছে আওয়ামী লীগ। দিবস পালনে তারা অদ্বিতীয়। কিন্তু ঘটা করে ছয় দফা পালন করলেও ৭ জুন বাকশাল প্রতিষ্ঠা দিবসও, সেটা পালনে অনীহা কেন? আওয়ামী লীগ কি বাকশালের ক্যান্সারে লজ্জিত?


এসব কিসের লক্ষণ? ‘জননেত্রী পরিষদে’র এ বি সিদ্দিকীরাই অসুস্থ রাষ্ট্রের পরিচয় এবং ১৫ আগস্টের সুড়সুড়ি। গান্ধী, মুজিব, ইন্দিরা, ভুট্টোর ঘাতকেরা বহিরাগত ছিল না। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫-এর দৈনিকে প্রকাশ, ‘বঙ্গবন্ধু পরিবারের বিরুদ্ধে কথা বললেই মামলা’। জননেত্রী পরিষদের সভাপতির একটি চাকরির খুব প্রয়োজন। এই মানুষটি সকাল-বিকেল পত্রিকার কাটিং সংগ্রহ করেন, দলীয় উকিলের কাছে যান, মানুষকে হয়রানি করেন। পত্রিকায় প্রকাশ, গণভবনের কেউ তাকে ‘ব্যবস্থা করে দেয়া’র কথা জানিয়েছেন। তার বক্তব্য, মুজিবের বিরুদ্ধে বললেই মামলা। সব মামলাই খারিজ হলেও একজনের সাত বছরের কারাদণ্ড হয়েছে। বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। তার বিস্ময়কর ইতিহাস আগে প্রথম আলোতেও প্রকাশ হয়েছিল। এক দিকে দায়মুক্তির রোলার-কোস্টার, অন্য দিকে এ বি সিদ্দিকীদের তাণ্ডব।
আব্রাহাম লিংকনের সমালোচনা করা গেলে অন্য বড় নেতাদের সমালোচনাও করা যাবে। গান্ধীর মতো মুজিবও মানুষ। গান্ধীর সমালোচনায় মুখর ভারত। এখানেও দায়মুক্তি, সমালোচনা করলে শাস্তি। এভাবে কোনো দেশ চলতে পারে না। টকশোকে ‘বিকল্প সংসদ’ বানিয়ে তৃতীয় বিপ্লবের পদধ্বনি, এখনই প্রতিহত না করলে সর্বনাশের হয়তো দেরি নেই।

তথ্যসূত্র :
সারেন্ডার অব বাংলাদেশ
উইকিপিডিয়া, ইউটিউব
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, লেখক- সিরাজ উদ্দিন আহমেদ
পাক-ভারতের ইতিহাস, পূর্ব-পশ্চিম
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা
ই-মেইল : [email protected]
ওয়েবসাইট : www.minafarah.com

পূর্ব প্রকাশিত: নয়া দিগন্ত (৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫)

Loading


মন্তব্য দেখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *