ওরে নিষ্ঠুর আমার বাঁশবনে ফিরিয়ে দে

এমন এক সময় ও স্থান ছিল যখন আমরা ঘুম থেকে উঠে সূর্যোদয় দেখতে পেতাম, পাখির গান শুনতে পেতাম, বৃষ্টি হলে কখনও ভিজতাম, তার শীতলতা অনুভব করতাম, আবার কখনো ঘরের বারান্দায় দাঁড়িয়ে বৃষ্টি-ঝরা ‘গানের’ শব্দ শুনতাম, পরিবেশের পরিবর্তিত গন্ধ পেতাম, গগনে পবনে, ধরা-তরুলতায় তার ছাপ দেখতাম; প্রকৃতির নানান রূপের সাথে হৃদয়-প্রকৃতির মিলন ঘটত, মন মিলনের সূত্র ধরে অনেক দূরে হাঁটত, আকাশের গর্জনে প্রকম্পিত হয়ে দুরুদুরু প্রাণ আবার নিজ ঘরে ফিরত। গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগী, সকলের আনাগোনা ও মিতালী দেখতে পেতাম। বিগত রাতে বিড়ালে মারা মাথা-খাওয়া ইঁদুরের মৃতদেহ চৌকাঠের নিচে পড়ে থাকতে দেখতাম। জীবন ও মৃত্যুর আলিঙ্গন এখানে সেখানে দেখতাম।

ও বাড়ির দাদার মৃত্যু হয়েছে; তার কলিমা শুনানোর মুহুর্ত্তটি দেখেছি; তারপর সকলের ভেঙ্গে পড়া কান্নার উতরোল দেখেছি। একটি সর্প-মুখে জীবন্ত ব্যাঙ দেখেছি, তখন তার গোংরানো শব্দ আস্তে আস্তে নিস্তেজ হতে দেখছি, দূর থেকে কতকিছু অনুভব করেছি। কিন্তু সেগুলি আজ আর দেখি না। তার প্রকৃতিগত যুক্তিও অনুভব করিনা। বড়রা বলতেন, আল্লাহ ‘আদিল’ অর্থাৎ প্রকৃতি জগতে ভারসাম্য ও সামঞ্জস্য (balance) দানকারী। জীবন মৃত্যু ও সৃষ্টির সকল ক্ষেত্রেই তিনি আদিল। অস্তিত্ব, অনস্তিত্ব, আলো-আঁধার ও দেয়া-নেয়ার সবকিছুতেই তিনি আদিল। অনেক বড় হয়ে এটাকে ইসলামের ফিতরতের যুক্তি হিসেবে ব্যবহৃত হতে দেখেছি।

কিন্তু আজ সে ফিতরতের জগতের ধারে কাছে নেই। কবে যে সূর্য উঠে আর কবে যে অস্তমিত হয় তা শুধু ঘড়ির কাটাতেই ধরি। শেষবার কবে চাঁদিনী রাত দেখেছি তা যেন ঠিক ঠাহর করতে পারছিনা। সম্ভবত কয়েক মাস আগে একরাতে ঘুম আসছিলনা। তাই একটু পানি খেতে উঠলে জানালার কাপড়ের নিচে সামান্য জ্যোৎস্না দেখে একটু এগিয়ে গিয়ে তা ফাঁক করে বাইরের দিকে তাকাই। সে কী সুন্দর চাঁদ! এত অপূর্ব, এত সুন্দর সে, এত সুন্দর তার আলো! আহারে, এগুলো কেন আর দেখতে পাইনা! কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে গোটা অস্তিত্বকে বুভুক্ষু প্রাণীর মত যেন এরই আলোকে খেয়ে ফেলতে চেয়েছি, কিন্তু পারিনি। আমি নিজে যখন সেখান থেকে সরে আসতে পারছিলাম না, তখন একখণ্ড মেঘ এসে তাকে আড়াল করে আমাকে বিদায় দিল।

আমরা আজ প্রকৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন। চার দেয়ালের ঘরে বাস করি। সকালে ঘুম থেকে উঠে গাড়ীর ভিতরে ঢুকে অফিসে যাই।  তারপর চার দেয়ালের ভিতরে কাজ করে আবার চার দেয়ালের ভিতরে ফিরি। অনেকের বিচ্ছিন্ন আত্মা ভিতর থেকে জালালুদ্দিন রুমীর বাঁশরীর কান্নার মত চিৎকার করে বলে উঠছে, ‘ওরে নিষ্ঠুর আমার বাঁশবনে ফিরিয়ে দে।’ আত্মার ক্রন্দন আর তার সমস্যা অনেক সময় আধ্যাত্মিক স্তরে গিয়ে পৌঁছে। কেউ খেয়াল করি, কেউ খেয়াল করিনা। কেউবা নানান যুক্তি দিয়ে পুষিয়ে নেই।

আমরা সমাজের সন্তান। স্থান ও কালের ঢেউ আমাদের মন মানসিকতা স্পর্শ করে, ছাপ ফেলে। আমরা যা জানি বলে মনে করি, অনেক দার্শনিকের মতে এগুলি আমাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থান (condition) থেকে উদ্ভূত, আমাদের মাথায় এগুলি এভাবেই আসার কথা ছিল, তাই এসেছে। এই জানাটা হচ্ছে expression of that condition. এতটুকই। আমরা চার্ল ডিকিন্সের ‘ফেক্টসের’ জগতে বসবাস করি। মূল্যবোধ আর্বান-মূল্যবোধ: যেখানে চাঁদ নেই, যেখানে সূর্য নেই, যেখানে তারকা নেই, যেখানে সর্প নেই, ব্যাঙ নেই, ইঁদুর নেই, বাদুর নেই, যেখানে আত্মায় প্রকৃতি প্রতিফলিত হয় না -আমরা সেখানেই বাস করি। আত্মার চিৎকার যখন অসহনীয় হয়ে উঠে তখন কেউ ইউগার বই কিনে শ্বাস গুণতে শুরু করি, কেউ সে চিৎকার সামাল দিতে শার্ম-আশশাইখে (মিশরের এক হলিডে কেন্দ্র) গিয়ে অনেক টাকা খরচ করে, ফিরে এসে বলি, ‘একটা ব্রেক হয়েছে।’ কিন্তু পরদিন সোমবার সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠতে আবার সেই দেরী –আবার সেই অসহায় আত্মার অস্ফুট আর্তনাদ, তার কান্না, ‘ওরে নিষ্ঠুর আমার বাঁশবনে ফিরিয়ে দে।’

About এম_আহমদ

প্রাবন্ধিক, গবেষক (সমাজ বিজ্ঞান), ভাষাতত্ত্ব, ধর্ম, দর্শন ও ইতিহাসের পাঠক।

Comments

ওরে নিষ্ঠুর আমার বাঁশবনে ফিরিয়ে দে — 5 Comments

  1. … পূর্বের মন্তব্য থেকে

    ভাই, আপনার ব্যাপারে অনেক কিছু জানা হল। দারিদ্র বুঝা ও দারিদ্রের সেবার অনুভূতির সাথে সাথে ইসলামের প্রতি অনুরাগের কারণটিও বুঝা হল। ঐতিহ্য গড়তে যেমন সময় লাগে, সেই ঐতিহ্য আবার হঠাৎ করে চলে যাওয়া সম্ভব নয়। আজ দেখি, যাদের পরিবারে ইসলাম গভীরে গিয়েছিল, তারা হাজার কঠিন সমস্যার মধ্যেও সেই ঐতিহ্যবাহী দীনকে ভুলে যেতে পারেননি। আজকে যারা দীনের জন্য সাহস করে কাজ করছেন –এটা অনেকের জন্য হঠাৎ করে আসা কিছু নয়, এর গভীরে অনেক কিছু থাকে। আমার বাচ্চাদেরে প্রায়ই বলে থাকি যে দীনের যে বৈশিষ্ট্যগুলো আমাদেরকে অন্যদের থেকে আলাদা করে –তা চলে গেলে আমাদের অস্তিত্বের কোন মূল্য নেই। এটা তারাও বুঝে এবং এভাবে আশা করি আমাদের তাওহীদী দীনের ঐতিহ্য চলবেই।

    আমার আগের মন্তব্যের এই বাক্যের, ‘ভাই আপনার বাগান বাড়ী, তার ফটো দেখেছি –এটা তো এক ঈর্ষার বস্তু’ ওখানের ঈর্ষা কিন্তু মুল ঈর্ষা অর্থের নয়, এটা কথার কথা।

    আপনার পরিবারের জন্য যা করেছেন, এটাই আমাদের কালচারের ঐতিহ্য। আমার এক বন্ধু এবং আমার দুই আত্মীয় ঠিক এভাবে করেছেন, তাদের নিজেদের জীবন পরিবারের জন্য উৎসর্গ করেছেন। এদের একজনের অবস্থা এই যে ছোট ভাইদের জীবন গড়ে দিয়ে তিনি নিজেই নিঃস্ব, কিন্তু ভাইয়েরা অনেক ধনি। এটাকে আমি ইংরেজি শব্দ sublime দিয়ে ব্যক্ত করি।

    আপনার পিতার ব্যাপারে জানতে পেরে অনেক খুশী হলাম। দোয়া করি আল্লাহ যেন আপনার পিতাকে জান্নাতুল ফিরদাউস দান করেন।

  2. এত গভীরের কথা এমন সুক্ষ্ণ অনুভূতিকে কলমের টানে জীবন্ত করার যার শক্তি তাকে অভিবাদন করা ছাড়া আর কি বলার আছে!

    আপনি আপনার যে চিত্র এই প্রবন্ধের প্রথমে এঁকেছেন। তার বর্তমান হুবহু রূপ আমি দেখতে পাই আমার বাগান বাড়িতে গেলে। সেখানে অবস্থান আমাকে দুনিয়ায় অন্য কোন যায়গায়।

    কিন্তু হালে সেখানে ইচ্ছা করলেও যাইতে পারিনা। কারণ গ্রামের দরিদ্র মানুষ এসে কান্না কাটি করে, তাদের সূখ দূঃখ বলে সামান্য সাহায্য সহানুভুতি আশা করে। আমার বর্তমান তাদের সেই আশা পূর্ণ করার জন্য প্রতিকূল।

    আল্লাহ যেন আমার গ্রামের সব মানুষকে আকল দেন যাতে তারা তাদের সমস্যা সমাধান করে নিতে পারে। আমিন।

    • ভাই আপনার বাগান বাড়ী, তার ফটো দেখেছি –এটা তো এক ঈর্ষার বস্তু! এর ফটোদৃশ্যই পরাণ জুড়ায়।
      আপনি ঢাকা থেকে বাড়ি গেলে গরীব লোকজন সাহায্যের জন্য আসবে –এটা খুবই স্বাভাবিক। আমরা যখন ১২/১৩ বৎসর পরে যাই, আমাদেরকে তো অনেকে চিনেই না, তবুও এমন হয়। অনেক সময় মনে হয়েছে যে এদের বিবেচনায় এই বুঝ নেই যে বিলেতের সবাই টাকাওয়ালা নয়। আমরা অনেকে চাকুরী/বাকুরী করে যে টাকা পাই, তা দিয়ে বাড়ি ঘরের মরগেজ, বিল/বাদাল, খায়/খরচের পর সঞ্চিত কিছু থাকে না। এই সত্য তাদের অনেকেরই জানা নেই। তবে ইদানীং বুঝতে শুরু করেছে।
      তবে এভাবেই জীবন। আমরা কালের স্রোতে ভাসমান। আর এই অবস্থায় কখনো এটা ধরি, কখনো সেটা, কিন্তু কোনটিও আমাদের নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট অনুভূত হয় না। এটা মনের ব্যাপার।
      আরেকটি কথা। যতবারই বাংলাদেশে যাচ্ছি, ততবারই দেশের প্রতি টান কমছে। কারণ প্রত্যেক বারই গিয়ে দেখেছি যে এটা সেই দেশ নয়, সেই স্থান নয় যে স্থানে আমি বড় হয়েছি –সবকিছু দ্রুত পালটে যাচ্ছে। যে আমের গাছ, কাঁঠালের গাছ এবং অন্যান্য গাছপালা দেখে বড় হয়েছি, সেগুলো কেটে ফেলা হয়েছে! কতবার বলেছি, তোমরা এগুলো কেটো না, এগুলো আমাদের সত্তার অংশ, আমাদের স্মৃতির অংশ, এগুলো নিঃশেষ হলে আমাদের আর কিছু থাকেনা। কিন্তু কার কথা কে শুনে। এসব আবেগ তাদের মন ধরে না। দেশের মানুষের অনুভূতি ও মূল্যবোধের সাথের আমাদের অনেক তফাৎ ঘটে গেছে। কখনো কখনো মনে হয় যে দেশের লোকজন ‘টাকা’ ছাড়া আর কিছুই বুঝে না। এটাও মনে হয়েছে যে মায়া-মহব্বত বলতে তেমন কিছু আর বাকী থাকেনি। বস্তু আর বস্তুর উপভোগই তাদের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য।
      আমরা যারা বিদেশী –তারা অনেকটা মুসা নবীর (আঃ) উম্মতের মত সিনাইয়ের প্রান্তরে ঘুরে বেড়াচ্ছি, ছিন্নমূল।

      • ভাই আমি গ্রামের লোক যারা সত্যিকার খেতে পরতে পারছেনা তাদেরকে কোন দোষ দেইনা। দারিদ্র্যতার জ্বালা আমি নিজে ভুগেছি, আমার উপলব্ধিতে আজো জ্বল জ্বল করে ভাসে। আমার মরহুম পিতা উনি ব্যক্তি জীবনে আমাদের এরিয়া কেন সারা বাংলাদেশের মধ্যে একজন মশহুর আলেম ছিলেন। উনি লেখাপড়ার জন্য কুলাউড়া, ধর্মনগর, সিলেট আলিয়া মাদ্রাসা, মুর্শিদাবাদ, মুরাদাবাদ, দিল্লীর ফতেপুর গমন করে দীর্ঘ ৪২ বছর ইসলামী জ্ঞান সাফল্যের সাথে অর্জন করেছিলেন। শুধু তাই নয় সেই সময়ে সিলেট জিলায় দেওবন্দী আলেমের খুব সম্মান ছিল। তাই তিনি তদান্তিন সময়ের সর্ব শেষ শ্রেণীর ফাইনাল দেওবন্দ এবং ফতেপুর থেকে এক সাথে দিয়েছিলেন এবং প্রথম স্থান নিয়ে পাশ করে এসেছিলেন। বিদ্যা শিক্ষার কারণে উনি ঘর সংসার বসাতে দেরী করে ফেলেন। আশ্রফ আলী থানবী রঃ এর প্রিয় ছাত্র ছিলেন। আশ্রাফ আলী কাউকে খেলাফত দিতে হলে উনাকে সংসার ধর্মে মানে বিয়ে করতে হত। আর সেই কারণ আমার মরহুম পিতাকে উনি বিয়ে করতে দেশে পাঠান। কিন্তু দুঃখের বিষয় যখন আমার পিতা দেশে আসেন এবং বিয়ে করেন সেই সময়ে আশরাফ আলী থানভী রঃ জান্নাতবাসী হয়ে যান। আর সেই কারণে আমার পিতা আর কারো কাছে বাইয়েত গ্রহণ করেন নাই।
        যাক এত কথা বলার উদ্দেশ্য যে পড়তে গিয়ে ৪০ বছর বয়সে বিয়ে করেন। আমরা ৪ ভাই ৪ বোনকে রেখে মাত্র ৬৩ বছর বয়সে তিনি মারা যান। তখন আমার সব বড় বোনের বয়স ১৫ মেট্রিক পরীক্ষার্থী আর সব ছোট ভায়ের বয়স মাত্র দেড় বছর।
        কাজেই আমাদের সংসার দেখা শুনা বা চালানোর জন্য আল্লাহ ছাড়া কেউ ছিলেন না। আব্বা আল্লাহর উপর ১০০ ভাগ ভরসা রাখতেন তাই কোন সঞ্চয় করে যান নাই। যা রেখে গিয়েছিল শহরে একটি বাসা আর বাড়ি আর ১০ বিঘা ধানের জমি। সেই সময়ে এখনকার মত চাষ বাস হত না। ভাগি ওয়ালা যা মর্জি দিত। কাজেই এত গুলো ভাই বোনদের পড়ার খরচ, কাপড় চোপড় বোনদের বিয়ে সাদি আম্মাকেই করতে হয়েছিল।
        দারিদ্র্যতার জ্বালা আমার অভিজ্ঞতায় আছে। যখন শুনি কেউ বলছে তার ঘরে খাবার নেই তখন আমার সেই দিন গুলোর কথা মনে পড়ে যায়, যখন আমরা ভাই বোন উপোষ করেছিলাম। তখন আমার মাকে দেখেছি শুধু নামাজের সেজদায় পড়ে থাকতে! মায়ের দিকের কেউ হয়তো ঐ সময় আমাদের বাসায় এসেছেন, এসে বুঝেছেন অবস্থা তখন কিছু সাহায্য করে গেছেন। আবার আমি হয়তো উপোষ সে কথা আমার বন্ধু ইমরান টের পেয়েছে সে তার আব্বাকে বলেছে, তিনি শুনে যারা আব্বাকে সম্মান করতেন তাদের কাছে গিয়ে জানিয়েছেন। তারা তখন সাহায্য নিয়ে দৌড়ে এসেছেন।
        এই ভাবে যখন দেখি কার ঘরে ছানি নাই পানি পড়ছে! তখন আমার বাসার ঘরের কথা ছনের ফাকে অঝোরে বৃষ্টি নেমে ঘর ভিজে যাওয়া কাকের মত বসে থাকার কথা মনে পড়ে যায়। তাই তো গরীবদের দুঃখ আমাকে বিচলিত করে দেয়। তাই স্ত্রী পুত্রদের কথা ভুলে গিয়ে যতটুকু পারি তাদের জন্য করার চেষ্টা করি। আর এর জন্য মাঝে মাঝে পরিচিত জনদেরকেও বিরক্ত করে বসি। জানি অনেকে আমার উদ্দেশ্যকে আড় চোখে দেখেন, তারপরও এই সব গায়ে মাখি না। মনে তাৎক্ষনিক ভাবে দুঃখ ঠিক পাই কিন্তু ভুলে যাই।
        আমার ইচ্ছা অন্তত: বাংলাদেশের একটি গ্রামের মানুষকে সম্পূর্ণ ব্যক্তি উদ্যোগে স্বাবলম্বী করা যায়, সে গ্রামের কেউ কুড়ে ঘরে থাকবেনা, কারো ঘরে পানি পড়বেনা, খাবার পানির অভাব করবেনা। রোগে অসময়ে মারা যাবেনা। বেকারত্বের জ্বালায় চুরি চামারী করবেনা। তাদের ছেলেরা মেয়েরা লেখা পড়া করতে কোন অসুবিধা ভোগ করবেনা।
        আমি জানি আমি ধনিয়াপাতার চাষ করছিনা, যে এই বীজ বুনলাম আর এই ফল পেয়ে যাব! আমি তাল গাছ লাগাতে চেষ্টা করছি, আজ নয় এই সব অভাবি মানুষের বাচ্চা কাচ্চারা বড় হলে এর ফল পাওয়া যাবে। পথ দুর্গম! জেনেই আমি পাড়ি দিতে চলেছি। কিন্তু আমি তো মানুষ আমারও মাঝে মধ্যে রাগ গোস্বা আসে তাই কিছু বলে ফেলি। কিন্তু তারপরও তাদেরকে ফেলে দিতে পারিনা।
        দোয়া করবেন মরার আগে যেন আমার স্বপন পূর্ণ হয়।

মন্তব্য দেখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *