এ যুদ্ধ কবে থামবে?

দেশ এখন স্পষ্টত দু ভাগে বিভক্ত এক পক্ষে দেশ প্রেমিক জাতীয়তাবাদী আর অন্য পক্ষে আছে আধিপত্যবাদে বিশ্বাসী, ইসলাম বিদ্ধেষী নাস্তিক ও মুনাফিক গুষ্টি। নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় দেশে চলছে মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফির ও মুনাফিকের যুদ্ধ। আর যার ভিতরে ইমান আছে এবং বাস্তবতা পর্যবেক্ষন করার ক্ষমতা রাখে তার পক্ষে এ কথাকে কারো প্রপাগান্ডা বলে উড়িয়ে দেয়া সম্ভব না। কোরআনে করীম ও রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর পবিত্র হাদিসের অসংখ্য জায়গায় মুনাফিকদের আলোচনা এসেছে। তাতে তাদের চরিত্র ও কর্মতৎপরতা আলোচনা করা হয়েছে। আর মুমিনদেরকে তাদের থেকে সতর্ক করা হয়েছে যাতে তাদের চরিত্র মুমিনরা অবলম্বন না করে। এমনকি আল্লাহ তা‘আলা তাদের নামে একটি সুরাও নাযিল করেন।
মুনাফিকদের কয়েকটি বৈশিষ্টঃ ১. মুনাফিকদের অন্তর রুগ্ন ও ব্যাধিগ্রস্ত, ২. মুনাফিকদের অন্তরে অধিক লোভ-লালসা।

আল্লাহ তা‘আলা কুরআনে করীমে মুনাফিক সম্পর্কে এরশাদ করেন, “তাদের অন্তরসমূহে রয়েছে ব্যাধি। অতঃপর আল্লাহ তাদের ব্যাধি বাড়িয়ে দিয়েছেন। আর তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব। কারণ তারা মিথ্যা বলত”। [সুরা আল-বাকারাহ:আয়াত-১০] মুনাফিকরা অধিক লোভী হয়ে থাকে। যার কারণে তারা পার্থিব জগতকে বেশি ভালোবাসে। তারা নিজেদেরকে মুসলিম পরিচয় দিলেও তাদের অন্তরের ঈমান খুবই দূর্বল সে কারণে তারা লোভী হয়ে থাকে। আর সে তার ঈমানের দুর্বলতার কারণে ইসলাম বিষয়ে সন্দেহ পোষণকারী একজন মুনাফেক। যার ফলে সে আল্লাহ তা‘আলার দেয়া বিধানকে গুরুত্বহীন মনে করে এবং হালকা করে দেখে। আর অন্যায় অশ্লীল কাজ ও অন্যায় অবিচার বা বাড়াবড়ি করাকে কোন অন্যায় মনে করে না।

৩. মুনাফিকরা অহংকারী ও দাম্ভিক হয়

মুনাফিকরা কখনই তাদের নিজেদের দোষত্রুটি নিজেরা দেখতে পায় না। তাই তারা নিজেদের অনেক বড় মনে করে। কারো কোন উপদেশ তারা গ্রহণ করে না, তারা মনে করে তাদের চাইতে বড় আর কে হতে পারে? (আল্লাহ তা‘আলা তাদের অহংকারী স্বভাবের বর্ণনা দিয়েছেন সুরা আল-মুনাফিকুন এর ৫ নং আয়াতে অর্থাৎ, তাদেরকে যা পালন করতে বলা হল, অহংকার ও অহমিকা বশত বা নিকৃষ্ট মনে করে তারা তা পালন করা হতে বিরত থাকে।) অবশ্যই মুনানিফিকের শেষ পরিণতি জাহান্নাম। মুনাফিকদের সর্ম্পকে বিস্তারিত জানতে এখানে দেখুন

মুমিনকে সতর্ক থাকতে হবে।
তবে যে কোন মুসলিমকে মুনাফিকের চত্রান্ত থেকে সাবধান থাকতে হব। তা না হলে মুনাফিকদের কথাবর্তায় প্রভাবিত হয়ে নিজের মাঝেও মুনাফেকি চরিত্র এসে যেতে পারে নিজের অজান্তে! একজন মুমিনের জিবনে এটাই হচ্ছে চরম বিপদ। আজ বাংলাদেশে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে সেখানে আমরা যেন সে ভাবেই এক অগ্নি পরীক্ষায় নিপতিত হয়েছি। আল্লাহ আমাদেরকে এ বিপদ থেকে রক্ষা করুন সবার জন্য এ কামনা করেই আরো কিছু কথা লিখব ইনশাল্লাহ।

বাংলাদেশী জনতার মাঝে আজ যে বিভক্তি ও বিভাজন পরিলক্ষত হচ্ছে এবং দেশে বিরাজমান সামিজিক অস্থিরতা, হিংসা বিদ্ধেষ ও বিশেষ করে যুব সমাজকে বিভ্রান্ত করার যে প্রেক্ষাপট সৃষ্টি হয়েছে তার হোমওয়ার্ক শুরু হয়েছিল সেই ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর থেকেই। তারই ধারাবিহিকতায় বিগত ১০/১২ বৎসর ধরেই চলে আসছিল বামপন্তী এবং এদেশকে যারা শোষন করতে চায় তাদের তল্পিবাহক ও প্রচন্ড স্বার্থবাদী একটি সেকুলার গুষ্টির প্রপাগান্ডায় যা অনেকেই বুঝতে চান নাই! আবার এখন অনেকে বুঝেও না বুঝার ভান করে যাচ্ছেন নানা কারণে। তবে আমাদের কিছু সংখ্যক যুব সমাজকে বিভ্রান্ত করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার শত্রুরা যে যুদ্ধ ইতিমধ্যে শুরু করে দিয়েছে তা প্রতিহত করতে দেশ প্রেমিক প্রতিটি নাগরিককে এগিয়ে আসতে হবে। তা না করলে ন্যায় ও সত্যের ভিত্তিতে সকল ধর্ম ও মতের মানুষকে নিয়ে একটি উন্নয়নমুখী শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠা করা এবং এদেশের সংখ্যাগরিষ্ট জনসাধারনের ধর্মীয় বিশ্বাস তথা ইসলামের বিশ্বজনীন আদর্শ ভিত্তিক শোষণমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা গড়া যে এ দেশে আর সম্ভব হবে না তা এখনও বুঝতে সচেষ্ট না হওয়া, স্পষ্টতই একেবারে মুঢ়তার চুড়ান্ত হবে।

ইন্টারনেটে বিভিন্ন ব্লগে দেখবেন ইসলাম বিদ্ধেষী নাস্তিকেরা ও মুনাফিকেরা সুযোগ পেলেই ব্যস্ত হয়ে যায় পাঠককে কীভাবে সঠিক ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে রাখা যায় সে চেষ্টায়! সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করে মানুষকে বিশেষ করে নতুন প্রজন্মকে সুস্থ চিন্তা থেকে দূরে রাখাই হচ্ছে তাদের প্রধান লক্ষ্য। যে নৈতিক মূল্যবোধ তরুন্যের মনে জাগিয়ে তোলা হচ্ছে একটা জাতিকে সভ্য ও সহনশীন করার সবচেয়ে বড় সুপান সেই ভিত্তিটাকে ধ্বংশ করাই হচ্ছে এদের গন্তব্যস্থান। যে তারুণ্যর মাঝে থাকার কথা গভীর চেতনা বোধ যা থেকে উৎসারিত হবে মৌলিক পরিবর্তনমুখী তথা কায়েমী স্বার্থবাদ বিরোধী আন্দোলনের আওয়াজ। কিন্তু তা না করে একদিকে মদ ও ফ্যনসাডিল সহ বিভিন্ন মাদক সেবনের নেশায় পড়ে ধ্বংশ হচ্ছে চরিত্র । অন্যদিকে লাগামহীন মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে করা হচ্ছে বিবেক শূণ্য । যার ফলে সে তারুণ্য হয়ে পড়ছে সত্য ও ন্যায় বিমুখী এবং ইসলাম বিদ্ধেষী আর ভোগ্যবাদী জিবন নেশায় আসক্ত অস্থির গোলামে। তাই তাদের কাছে অনিয়ম ই যেন নিয়ম, প্রতিশোধ ও হিংশ্রতাই হচ্ছে মানবতা, মিথ্যাই হচ্ছে সততা, বাড়াবাড়ি ও বিশৃঙ্খলাই হচ্ছে সভ্যতা। এখন এদের সবচেয়ে বড় পুঁজি একাত্তরে ভারতীয় সৈন্যের কাছে আত্মসর্ম্পনের আগে পাকিস্তানি সৈন্যদের বাঙ্গলি হত্যার সাথে কথিত সহযোগীদের তথা রাজাকারদের কৃত অপরাধের বিচার। তবে রাজাকারদের বিচার যে হয়নি তা নয় বঙ্গবন্ধুর সময়েও হয়েছে এবং ওনি সাধারন ক্ষমাও ঘোষণা করেছিলেন কিন্তু যে হেতু অনেকে মনে করেন সব রাজাকারকে শাস্তি দেয়া সম্ভব হয় নাই তাই দাবী হচ্ছে দেরীতে হলেও বাকিদের বিচার হউক। কিন্তু এ বিচারকে স্বচ্ছভাবে না করে বিচার ব্যবস্থাকে দলীয়করন করে একটি শুভ কাজকে নষ্ট করার ভুলে দেশে বিদেশে প্রতিবাদ ও আপত্তির যে ঝড় উঠেছে তা অস্বীকার করা যায় না।

একটি ভুল আরও দশটি ভুলকে শুদ্ধ করে দেয়া না এবং দশটি ভুল একাদশ ভুলের কোন যুক্তিও নয়। ভুলের মাশুল দিতেই হয়। অনেক সময় যে ভুল করল সে যদি পার পেয়েও যায়, জরিমানা দেবার দায়িত্ব তখন চেপে বসে অন্যের ঘাড়ে।আজ বাংলাদেশের অবস্থা দেখে তাই সত্য মনে হচ্ছে।যুদ্ধাপরাধের ইসু একটা জাতীয় ইসু তাই এটাকে জাতীয়ভাবেই মোকাবেলা করা উচিত ছিল তা না করে কোন বিশেষ দলের রাজনৈতিক ফায়দা লুটার হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে চরম অন্যায়। বস্তুত: বর্তমান ক্ষমতাসীনরা সঠিক বিচারিক প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে বিচারের নামে সে অন্যায় করে ও বিচারকে প্রভাবিত করার অশুভ পদক্ষেপ নেয়ার ফলে উদ্ভূত দুর্বলতার সুযোগে স্বার্থবাদী পক্ষ তাদের ঘাড়ে চেপে বসার সুযোগ পেয়েছে এবং এদেশকে যারা শোষণ করতে চায় তাদের অশুভ শক্তি দৃষ্টিগোচর হয়ে পড়েছে। দু:খের ব্যপার হল এ অন্যায় বুঝতে পারেন না বলেই রাজীবের মত ইসলাম বিদ্ধেষী নাস্তিককে এরা শহীদের মর্যাদা দিতে চান।

রাজনীতিতে ইসলাম চলবে না।
বাংলাদেশের প্রচলিত দূর্বৃত্তায়ন ও দুর্নীতিপরায়ন রাজনীতির পরিবর্তে, ইসলামের বিশ্বজনীন ন্যায় নীতি সমাজের সকল ক্ষেত্রে প্রয়োগের সম্ভাবনাকে বন্ধ করতে কিংবা আইনের শাসন ও দুর্নীতিমুক্ত সৎ নেতৃত্বের প্রতিষ্ঠা করে একটি সুসম ও শান্তিপূর্ন সমাজ গঠন করতে যারা চায়না তারাই রাজনীতিতে ইসলামকে সহ্য করতে পারে না। ইসলামী জীবন ব্যবস্থা হচ্ছে একটি সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থা। ইসলাম হচ্ছে কম্পলিট কোড অফ লাইফ (complete code of life)অতএব ইসলাম থেকে রাজনীতি বাদ দিতে পারেনা কেউ সত্যিকার মুসলিম হলে। বাংলাদেশে আজ যে অসুভ শক্তি জেঁকে বসেছে রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানে তারা চায় এদেশের তরুন সমাজেকে বিশেষ করে মুসলিম যুব সামাজকে বৃহত্তর মুসলিম উম্মাহ থেকে উদাসীন করা। তাদের চিন্তা চেতনাকে সংকীর্ণ গন্ডিতে সীমাবদ্ধ করে পৌত্তলিকতা, ব্যক্তি পুজা, অশ্লিলতা, হিংসা ও ভোগবাদী জীবন ব্যবস্থার গোলামে পরিণত করা।

তাই দেখা যাবে সৌদী আরবের মত একটি মুসলিম দেশ যখন মুসলিম ভ্রাতৃতের সহমর্মীতায় বাংলাদেশের ২ মিলিয়ন অধিক তথা বিশ পচিশ লক্ষের লোকের কর্মসংস্থান দিলেও সেই সব দেশের বিরুদ্ধে বাঙ্গালি মুসলিমদেরকে ক্ষেপিয়ে তুলতে এই সব জ্ঞানপাপীদেরকে এগিয়ে আসতে । তখন বুঝতে বাকী থাকেনা এরা বাংলাদেশকে একঘরে করে রাখতে চায় কার স্বার্থে। কি সুচতুর কৌশলে আমাদের আবেগকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চায় তার এমনি একটা নমুনা দেখুন:
null

আগেই বলেছি যুদ্ধাপরাধের ইসুটাকে বর্তমান সরকার কুলশিত করেছেন একান্ত নিজেদের মতলবে। এ ব্যপারে আর তেমন ব্যখার দরকার আছে বলে মনে হয় না।
“আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতা-বিরোধীদের বিচার কার্যক্রমের কঠোর সমালোচনা করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সাময়িকী দি ইকোনমিস্ট ‘বাংলাদেশে বিচার, আরেক ধরনের অপরাধ’ শিরোনামের নিবন্ধটি এটি প্রকাশ করেছে।

সাময়িকীটি লিখেছে, এখন বাংলাদেশের ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যে বিচার চলছে, তার কথা বিবেচনা করা যাক। এখানেও বিচার করা হচ্ছে বহু বছর আগের অপরাধের, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময়কার। ………. আদালতের কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপ করছে সরকার। বিচার-প্রক্রিয়া নিয়ে প্রকাশ্যে মত প্রকাশের ওপরও বিধিনিষেধ আছে। বিবাদীপক্ষের সব সাক্ষীকে সাক্ষ্য দিতে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি আসামিপক্ষের এক সাক্ষীকে আদালত চত্বর থেকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। একটি ঘটনায় ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান পদত্যাগ করেন এবং ওই মামলায় আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন এমন তিনজন বিচারপতি, যাঁরা পুরো সাক্ষ্য শোনেননি। অপর একটি মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী মামলার প্রস্তুতির পর্যাপ্ত সময় পাননি। ওই মামলায়ও আসামির মৃত্যুদণ্ড হয়েছে। বিচার-প্রক্রিয়ায় ব্যাপক ত্রুটি রয়েছে। …… বাংলাদেশি আইন অনুযায়ীও এখানে ত্রুটি আছে। সরকারের পক্ষ থেকে বারবার এ বিচার দেশের বিচারিক কার্যক্রমের জন্য একটি আদর্শ মডেল হবে বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে। তবে সরকারের এ দাবির সঙ্গে বিচার-প্রক্রিয়ার বৈপরীত্য আছে।

ইকোনমিস্ট লিখেছে, লোক দেখানো এবং প্রশংসা কুড়ানোর এ বিচারের লক্ষ্য হচ্ছে দেশের জন্মের বিরোধিতা করে যারা অপরাধ করেছিল, তাদের বিচারের আওতায় আনা। এদিক দিয়েও এ বিচার-প্রক্রিয়ার ব্যর্থতা চরম। কেননা, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বেশির ভাগ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। ইসলামপন্তী এ দলটি দেশের প্রধান বিরোধী জোটের শরিক। দেশের অন্তর্ঘাতমূলক রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে গেছে ………পুলিশকে লড়াই করতে হচ্ছে উত্তেজিত জনতার সঙ্গে। মারা গেছে অনেক মানুষ। অসহিষ্ণুতার ঘূর্ণাবর্তে তলিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সরকার জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার কথা বলছে। আর প্রধান বিরোধী দল হয়ে পড়ছে আরও বেশি ইসলামপন্তী। গুজব ছড়িয়ে পড়ছে, চলতি বছরের সাধারণ নির্বাচন ভেস্তে যেতে পারে। ………গণহত্যার শিকার মানুষের ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য সঠিক বিচারিক প্রক্রিয়া অপরিহার্য। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশিরাও সেটা বুঝবে এবং সঠিক জবাবদিহির দাবি জানাবে। কিন্তু ততক্ষণে হয়তো খুব বেশি দেরি হয়ে যাবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সেই কুয়াতেই বিষ ঢালছে, যার পানি এক দিন বাংলাদেশ পান করতে চাইবে।” সুত্র: প্রথম আলোর রিপোর্টে এ নিবন্ধটির বিস্তারিত এখানে পাবেন)
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন,“হাটাহাজারী মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল আল্লামা শফী জামায়াতের ক্রীড়নক হয়ে কাজ করছেন।“ নাস্তিক ব্লগার খুঁজে বের করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পর্যবেক্ষণ কমিটি সম্পর্কে শাহরিয়ার কবির বলেন, “জানি না হয়েছে কি না যদি এ রকম কিছু হয়ে থাকে তা হলে সরকারকে আবার হুঁশিয়ার করতে হবে। কে আস্তিক কে নাস্তিক তা নির্ধারণ করার ক্ষামতা আল্লাহ কাউকে দেননি। এই সরকারের প্রশ্নই ওঠে না। মোল্লাদেরও নেই।” তিনি আরো বলেন, “শাহবাগের তরুণরা যে নতুন মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছে তাতে জয়ী হওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।” এবার দেখা যাক শাহবাগে তরুণরা সত্যিই কি মুক্তি যুদ্ধ শুরু করেছে না তাদেরকে দিযে কেউ অন্য কিছু হাছিল করতে চায়?

“শাহবাগে প্রকৃত প্রস্তাবে কী ঘটেছিল? লিখতে গিয়ে লন্ডন প্রবাসী প্রখ্যাত কলামিষ্ট বিবিসি বাংলা বিভাগের প্রক্তন সাংবাদিক সিরাজুর রহমান তার এক সাম্প্রতিক কলামের কিছু কথা তুলে ধরছি: “গোড়ায় তারা যুদ্ধাপরাধের বিচারের নামে ধ্বনি তুলে কিছু আবেগপ্রবণ তরুণকে আকর্ষণ করেছিল। সমবেত হাজার হাজার লোককে প্যাকড ফুড ও মিনারেল ওয়াটারের বোতল সরবরাহ করা হচ্ছিল। তার বিরাট ব্যয় থেকেই ইঙ্গিত পাওয়া যায় শাহবাগ সার্কাসের প্রকৃত পৃষ্ঠপোষক কে ছিল। সুত্র:

শাহবাগ আন্দোলন শেষ পর্যন্ত একটি ব্যর্থ জাগরণ আখ্যা দিয়ে প্রতিনিয়ত লিখে যাচ্ছেন বিভিন্ন বুদ্ধিজীবি অবশ্য তাদেরকে মতলববাদীরা জামাতের এজেন্ট বলে আক্রশ মিটাতে দেখা যায় আর তারাই সাজতে চান যায় স্বাধীনতার পক্ষের ও মুক্তিযুদ্ধের মাবাপ একমাত্র “তারাই খাটি বাকি সব নকল!”

দুর্ভাগ্য হচ্ছে দেশরে সাধারন মানুষকে দেশের পরিস্থিতি নিয়ে সন্দেহ সংশয়ে ডুবিয়ে রাখছে বাংলাদেশের ভিতরে মেইন স্ট্রিম মিডিয়া যা প্রচন্ডভাবে প্রভাবিত বিশেষ একটি মহল দ্বারা তাই তাদের কাছ থেকে নিরপেক্ষ তথ্য পাওয়া কঠিন। জামাতকে ভিলেন বানিয়ে তারা তাদের আসল এজেন্ডা হাছিল করতে চায়। তাদের কথা হল “ হয় আমাদের দলে না হয় ওদের দলে” অর্থাৎ তখন “তুমি স্বাধীনতার বিপক্ষে ও যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিপক্ষে!”

কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে যুদ্ধাপরাধের বিচারের কোনো মান না থাকায় উদ্বিগ্ন সবাই। ( ১)

লন্ডনে মাত্র কয়েকদিন আগে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যুদ্ধাপরাধ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিফেন র‌্যাপ অবিলম্বে এই বিচার কার্যক্রমে ন্যায্যতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি মনে করেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ ধরনের অপরাধের বিচারের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশ চলমান বিচারপ্রক্রিয়াকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে পারে। যুক্তরাজ্যের আইনজীবীদের সংগঠন বার হিউম্যান রাইটস কমিটি অব ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলসের আয়োজনে হাউজ অব কমন্সের একটি কমিটির কে অনুষ্ঠিত এই সভায় রাষ্ট্রদূত র‌্যাপ বাংলাদেশের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কার্যক্রম সম্পর্কে তার মূল্যায়ন তুলে ধরেন। একই অনুষ্ঠানে বক্তারা সবাই বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময়কার সংঘটিত নিষ্ঠুরতা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের প্রতি তাদের সমর্থনের কথা জানালেও বিচারপ্রক্রিয়ায় ন্যায়বিচারের মানদন্ড অনুসৃত হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন। বার হিউম্যান রাইটস কমিটি অব ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলসের প থেকে অবিলম্বে ওই বিচার কার্যক্রম স্থগিত করার আহ্বান জানানো হয়। বলা হয়, এই প্রক্রিয়াকে ন্যায়বিচারের মানদন্ডে উন্নীত করতে চাইলে বাংলাদেশের উচিত আন্তর্জাতিক সহায়তা চাওয়া। তারা স্কাইপ কেলেঙ্কারির উল্লেখ করে বলেন, এতে বিচারক, রাষ্ট্রপরে কৌঁসুলি ও রাজনীতিকদের যোগসাজশ ফাঁস হওয়ার পরও পুনর্বিচারের ব্যবস্থা না করা ন্যায়বিচারের পরিপন্থী হয়েছে। লর্ড অ্যাভবেরিও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, এই বিচারের বিষয়টিকে নির্বাচনী প্রচারণার অংশ করা হলে তা হবে একটি ঘৃণ্য কাজ। যুদ্ধাপরাধ মামলার বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরও এই আদালতের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষ মান নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছিল। কিন্তু এ সবের প্রতি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে সামান্যই। সেদিন ইন্টারনেটে অন্য একটি নিবন্ধে আরো কিছু গুরুত্বপূণৃ তথ্য বেরিয়ে এসেছে দেখলাম।লেখকের মতে: “যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযুক্ত সবাইকে ফাঁসি দেয়ার ব্যাপারে আকস্মিকভাবে ঢাকার শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের বিভিন্ন দাবিদাওয়া ও ঘোষণাও বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানসহ কিছু গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বকে গ্রেফতার করার দাবিও জানানো হয়েছে এখানে। বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, কলামিস্ট ড. পিয়াস করিম, ড. আসিফ নজরুলকে রাজাকার ঘোষণা করে তাদের বর্জনের আহ্বান জানানো হয়েছে শাহবাগ মঞ্চ থেকে। দাবি আদায়ের কর্মসূচি হিসেবে মঞ্চ থেকে মোমবাতি, মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্বলন ইত্যাদি ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে যা সাধারণত পূজা-পার্বণে বেশি দেখা যায়। একই সাথে এই কর্মসূচিকে সফল করার জন্য প্রতিবেশী ভারতের প্রভাবাধীন হিসেবে পরিচিত গণমাধ্যম, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিদের বিশেষ উদ্যোগ দেখা যায়। আলেম-ওলামাদের প্রতিকৃতি বানিয়ে তাদের জাতীয় খলনায়ক ও ঘৃণ্য হিসেবে তুলে ধরা হয় শাহবাগ মঞ্চে। এতে সাধারণ মানুষের সামনে স্পষ্ট হয় যে, শাহবাগ মঞ্চ আসলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কোনো বিষয় নয়- এটি ভারতীয় আধিপত্য বজায় রাখা এবং সরকারকে আরেক দফা ক্ষমতায় নেয়ার হাতিয়ার। আর সেই সাথে বাংলাদেশের ইসলামি পরিচয় মুছে ফেলার প্রচেষ্টাও চলছে প্রকাশ্যে।” বি এনপি প্রধান খালেদা জিয়াও এ সত্য ভালভাবে অনুধাবন করতে পেরেছেন বলেই প্রকাশ্যে শাহবাগীদের জাগরণ মঞ্চে প্রথম যেসব দাবি তোলা হয়েছে তার মধ্যে ছিল জামায়াত-শিবির ও ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, ইসলামী ব্যাংক, বীমা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করা। সরকারের সাথে ভিন্নমত পোষণকারী সংবাদপত্র, টেলিভিশন ও অনলাইন পত্রিকা বন্ধ করে দেয়া। আমারবিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছেন।

শেষ কথা হচ্ছে সাধারণ মানুষের সামনে এখন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, শাহবাগ মঞ্চ আসলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কোনো বিষয় নয়- এটি ভারতীয় আধিপত্য বজায় রাখা এবং সরকারকে আরেক দফা ক্ষমতায় নেয়ার হাতিয়ার। আর সেই সাথে বাংলাদেশের ইসলামি পরিচয় মুছে ফেলার যে প্রচেষ্টা এতদিন ইন্টারনেটের ব্লগে ব্লগে চলছিল তা এখন বাস্তবে রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রকাশ্যে চালু করা। শুরু হয়েছে মুসলিমদের বিরুদ্ধে মুনাফিক ও নাস্তিকদের যুদ্ধ। তবে এ যুদ্ধে মুসলিমদের জয় তখনই সম্ভব যদি তারা আল্লাহর উপর আস্তা রেখে নিজেদের সংকীর্ন স্বার্থ ত্যাগ করে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে আসেন।
***********************************************************************************************************
কৃতজ্ঞতা: এ নিবন্ধটি প্রণয়নে ফেইসবুক ও অর্ন্তজালের আমার যে সকল বন্ধুদের ইমেইল ও ব্লগ-তথ্যের কিছু সহায়তা গ্রহণ করেছি তাদেরকে সবাইকে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

 

Loading


মন্তব্য দেখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *