আল-কোরআন অনুসারে ধর্ষকের শাস্তি

আলোচনার সুবিধার্থে ব্যভিচার এবং ধর্ষণ সম্পর্কে কিছুটা আলোকপাত করতে চাই। স্বেচ্ছায় অবৈধ যৌন সম্পর্ক করাকে ব্যভিচার বলা হয়। এটি একটি সম্পর্ক হলেও ধর্মীয় দৃষ্টিতে যা অবৈধ, আর তাই এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ বটে। ব্যভিচারের সামাজিক, আত্মিক এবং স্বাস্থ্যগত বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে নুতন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। ব্যভিচারের’ মত ‘ধর্ষণ’ কিন্তু বৈধ বা অবৈধ কোন প্রকার সম্পর্কের মধ্যেই পড়ে না বরং এটি একটি পাশবিকতার নামান্তর। তাই ধর্ষণকে ব্যাভিচারের সাথে সম্পর্কিত না করে সন্ত্রাস বা বিপর্যয় সৃষ্টিকারী কারন গুলোর সাথে বিবেচনা করার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে:-

    / আমি কেন ধর্ষণকে সন্ত্রাস বা বিপর্যয়কর অবস্থা সৃষ্টির সাথে তুলনা করলাম?

    / ধর্ষণের কারনে পৃথিবীর কোন ভূখন্ড বা দেশে কি আসলেই বিপর্যয়কর অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে?

এর উত্তর পেতে হলে সম্প্রতি গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গোতে ধর্ষণের তাণ্ডবে যে বিপর্যয়কর অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে-

*কঙ্গোতে প্রতিদিন এগারো শতাধিক নারি ধর্ষিত হচ্ছে অর্থাৎ মিনিটে এই সংখ্যা প্রায় ১ জন।
*(Forty-eight women raped every hour in Congo, study finds)theguardian

[The DRC has been racked by war, with rapes widely documented in the conflict-hit east of the country. However, the study suggests the problem is bigger and more pervasive than previously thought, and goes further in documenting domestic sexual abuse.

It found 1,152 women are raped every day – a rate equal to 48 per hour. That rate is 26 times more than the previous estimate of 16,000 rapes reported in one year by the United Nations.

“Not only is sexual violence more generalised, but our findings suggest that future policies and programmes should focus on abuse within families,” the study’s researchers said.

The study, carried out by three public health researchers from the International Food Policy Research Institute at Stony Brook University in New York, and the World Bank, was partly financed by the US government and based on figures from a nationwide household survey of 3,436 Congolese women aged 15 to 49 in 2007.

Gambino said 40 years of “steady economic and political decline” may explain the high incidence of rape in the DRC.

While the authors have extrapolated their figures to show that as many as 1.8 million women out of the country’s population of 70 million people have been raped, with up to 433,785 raped in a one-year period, some have urged more caution in the interpretation of the figures and their date.]

ধর্ষণ একটি সামাজিক ব্যাধি। বিকৃত মানসিকতা সম্পন্ন মানুষের লাগামহীন পাশবিক বহিঃপ্রকাশই এই ব্যাধি সৃষ্টির মূল কারন। এপৃথিবীতে এমন কোন ভূখন্ড নেই যেখানে কম-বেশি ধর্ষণের ঘটনা ঘটছেনা। ধর্ষণের কারনেও যে কোন দেশে বিপর্যয়কর অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে, আফ্রিকার যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গো তার জ্বলন্ত উদাহরন। এক জরিপে যে বাস্তব চিত্র বেরিয়ে এসেছে তার আলোকে সেখানকার এই অবস্থাকে ভয়ংকর গুপ্তসন্ত্রাস হিসেবে আখ্যায়িত করা যেতে পারে। গত ২০০৬ থেকে ২০০৭ সালে চালানো এক গবেষণায় দেখা গেছে সেখানকার ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সের প্রায় চার লাখেরও বেশি নারী ধর্ষিত হয়েছে। এই গবেষণা ও জরিপের প্রধান অ্যামবার পিটারম্যান জানান, সামাজিক বাধা, লজ্জা ও ভয়ে অনেকেই যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণের কথা প্রকাশ করেন না। তাছাড়া ১৫ বছরের নিচেও ৪৯ বছরের বেশি বয়সের নারীদের তথ্য এ জরিপে ধরা হয়নি। শুধু নারী নয়, সেখানকার পুরুষরাও (৪% – ১০ %) যৌন হয়রানির হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা হার্ভার্ড হিউম্যানেটরিয়ান ইনিশিয়েটিবের পরিচালক মিখায়েল ভ্যানরোয়েন কঙ্গোতে ধর্ষণের এই ব্যাপকতাকে বর্তমানে বিশ্বব্যাপী চলা মানবিক সংকটের এক বিভীষিকাময় রূপ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

(ধর্ষিত বিশ্বাস—৭১ টিভি—০৪/১১/২০১৬ ইং থেকে) বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় চার কোটি শিশু যৌন নীপিড়নের স্বীকার হচ্ছে। সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হলো আমাদের এই বাংলাদেশও শিশু ও নারীদের উপর যৌন নির্যাতনের ব্যাপারে পিছিয়ে নেই। তনু, আফসানা, খাদিজা, পূজা সহ আরও কত শত নাম সেই সাক্ষ্যই বহন করছে। গত নয় মাসে এ দেশের মাটিতে ৩২৫ জন শিশুর উপর যৌন নিপীড়ন করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১৫ জন শিশুকে নির্যাতনের পর হত্যাও করা হয়েছে। আর গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রায় ৭৪% বেশি ধর্ষনের ঘটনা ঘটেছে। আইনের খাতায় ধর্ষনের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ধর্ষনের পর হত্যা করা হলে তার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড লেখা আছে। মামলা দেয়ার ১৮০ দিনের মধ্যে এই সাজা কার্যকর করার বিধানও আছে। কিন্তু অবাক হতে হয় এই ভেবে যে, বেধে দেয়া এই সময়ের মধ্যে তো নয়ই বরং অনেক দীর্ঘ সময় পর কদাচিৎ নগন্য সংখ্যকই শাস্তি পায়। পরিসখ্যানে দেখা গেছে মাত্র ০.০০৪% অর্থাৎ এক হাজার ধর্ষকের মধ্যে মাত্র চার জন শাস্তি পাচ্ছে । বাকিরা প্রভাব খাটিয়ে কিংবা অর্থের জোরে আইনের ফাঁক ফোঁকর গলে বেড়িয়ে যায়। তারাই আবার নুতন উদ্দামে এই কুকাজে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তাদেরকে দেখে আরও অনেকেই মদদ পাচ্ছে। এভাবে পুরাতন ও নব্য ধর্ষকদের সংখ্যা ও দৌরাত্ব যেন দিনকে দিন বেড়েই চলেছে।

ধর্ষকদের কোন জাত ও মান নেই। বিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসা শিক্ষা থেকে শুরু করে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী মহলের মাঝেও তারা বিচরণ করছে। আর সমাজের আনাচে কানাচে ও পরিবারের ঘর ও উঠানও তাদের কুৎসিত দৃষ্টি থেকে নিস্তার পাচ্ছে না। সুযোগ পেলেই ছোবল মারার জন্য যেন তারা ফনা তুলে আছে। হানাদারদের দোষর এই সব পাষণ্ড প্রেতাত্মাদের বিষ দাঁত ভেঙ্গে দেয়ার জন্য সরকারকে অচিরেই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। স্বল্প সময়ের মধ্যে এইসব নরখাদকদের বিচার ও শাস্তি কার্যকর করতে হবে এবং তা প্রচারের ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি সচেতন ও বিবেকবান জনগণের প্রতিও এ ধরনের অমানবিক কাজের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি। ধর্ষক কখনই কোন মানুষের স্বজন হতে পারেনা। সভ্য সমাজে তাদের মত গুটি কয়েক নরপশু না থাকলেই মঙ্গল। হয় তাদেরকে সভ্য হয়ে চলার শপথ নিতে হবে। নতুবা ধরা খেলে কিন্তু নিস্তার নেই, অন্ধকার কুঠুরির মাঝে ধুঁকে ধুঁকে মরন কিংবা রশিতে ঝুলিয়ে ফাঁসির দণ্ডই তাদের জন্য অপক্ষো করছে।

ধর্ষণকে যে সন্ত্রাস বা বিপর্যয়কর অবস্থা সৃষ্টির সাথে তুলনা করা মোটেই অযৌক্তিক নয় তা নিশ্চয় এতক্ষণে পরিষ্কার হয়েছে। ডাকাতি বা ছিন্তাই করার সময় যেমন নিরীহ মানুষের সম্পদ লুন্ঠন করা হয়। তেমনি জোরপূর্বক সতীত্ব হরণ বা লুণ্ঠন করা হলো ধর্ষণ। সতীত্ব” হরণ বা লুণ্ঠন করা বলতে মূলত অবৈধ উপায়ে এবং জোর করে যৌন পবিত্রতা বা যৌন বিশুদ্ধতা এবং ইজ্জত বা সম্ভ্রম নষ্ট করাকে বা যৌন হয়রানি  করাকে বোঝায়। তাই আল-কোরআনে ধর্ষণের কথা ব্যভিচারের পাশাপাশি তো বলাই হয়নি, এমনকি আলাদা ভাবেও উল্লেখ করা হয়নি। আর এ কারনেই এটিকে ডাকাতি, ছিন্তাই, রাহাজানি, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, জুলুম,ইভ-টিজিং, রাষ্ট্রদ্রোহিতা ইত্যাদি ভূপৃষ্ঠে জনগনের ক্ষতি করা, অস্থিতিশীলতা বা বিপর্যয়কর অবস্থা সৃষ্টির মত অমানবিক কুকর্মের সমপর্যায়ভুক্ত জ্ঞান করাটাই যুক্তিসংগত।

এখন প্রশ্ন হলো- কোন স্থানে ধর্ষণের কারনে কঙ্গোর মত বিপর্যয়কর অবস্থার সৃষ্টি হলে তার হাত থেকে পরিত্রাণের উপায় কি

বিভিন্ন জনে তাদের মত করে মতামত রাখতেই পারেন। একজন মুসলিম হিসেবে সঙ্গত কারনেই আমি আমার ধর্মীয় বিশ্বাস ও বিধান, বর্তমান প্রেক্ষাপট ও নিজস্ব চেতনার আলোকে কিছু বক্তব্য রাখার অধিকার রাখি।

অনেকের মনেই হয়ত এ প্রশ্ন দানা বেধেছে:- আলকোরআনে ধর্ষকদের শাস্তি সম্পর্কে কোন নির্দেশনা আছে কি?

    ধর্ষণ সহ বিপর্যয়কর অবস্থা সৃষ্টিকারী এসব অপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত থাকবে, আলকোরআন অনুসারে তাদের শাস্তি হলো:-

আল-কোরআন- ৫নং সূরা মায়েদা- আয়াত, ৩৩

(০৫:৩৩) যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং ভূপৃষ্ঠে সন্ত্রাস বা বিপর্যয় (ধ্বংস করে দেওয়া, নষ্ট করা, বলপূর্বক কারো সম্পদ কেড়ে নেওয়া) সৃষ্টির অপচেষ্টা করে, তাদের শাস্তি হচ্ছে এই যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা শূলীতে চড়ানো হবে অথবা তাদের হাত-পা বিপরীত দিক থেকে কেটে দেয়া হবে অথবা তাদেরকে দেশ থেকে নির্বাসিত করা হবে। এটি হল তাদের জন্য পার্থিব লাঞ্ছনা আর পরকালে তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি।

(فَسَادً) = ধ্বংস, ক্ষতি -“কোরআনের অবিধান” – “মুনির উদ্দীন আহমদ”

(فَسَادً) = ধ্বংস করে দেওয়া, নষ্ট করা, বলপূর্বক কারো সম্পদ কেড়ে নেওয়া – “আল-কাওসার” – “আধুনিক আরবী-বাংলা অভিধান”- “মদীনা পাবলিকেশান্স”

নিচের হাদিছ থেকে এ সম্পর্কে আমরা আরও পরিষ্কার ধারনা পাই:-

Sunan Abu-Dawud #Book- 38, #Hadith- 4366

Narrated Wa’il ibn Hujr: When a woman went out in the time of the Prophet (peace_be_upon_him) for prayer, a man attacked her and overpowered (raped) her. She shouted and he went off, and when a man came by, she said: That (man) did such and such to me. And when a company of the Emigrants came by, she said: That man did such and such to me. They went and seized the man whom they thought had had intercourse with her and brought him to her. She said: Yes, this is he. Then they brought him to the Apostle of Allah (peace be upon him). When he (the Prophet) was about to pass sentence, the man who (actually) had assaulted her stood up and said: Apostle of Allah, I am the man who did it to her. He (the Prophet) said to her: Go away, for Allah has forgiven you. But he told the man some good words (AbuDawud said: meaning the man who was seized), and of the man who had had intercourse with her, he said: Stone him to death. He also said: He has repented to such an extent that if the people of Medina had repented similarly, it would have been accepted from them.

[সূত্র- http://www.searchtruth.com/book_display.php?book=38&translator=3&start=0&number=4366#4366]

এই হাদিছের বর্ণনা অনুসারে একজন নারী সালাত আদায়ের জন্য বাহির হলে তাকে ধর্ষণ করা হয়। এক্ষেত্রে নারীটি আসল ধর্ষককে ঠিকমত চিনতে না পারায় অন্যজনকে শনাক্ত করেছিলেন। কিন্তু রাসূলের (সাঃ) সম্মুখে উপস্থিত হয়ে অগত্যা ধর্ষক নিজে তার অপরাধ স্বীকার কোরে নেয়ায় তাকে পাথর নিক্ষেপ করে হত্যার হুকুম (রজম) দেয়া হয়েছিল। আর ভাগ্যক্রমে ধর্ষকের স্বীকারোক্তির কারণে ভুল মানুষকে শনাক্ত করার পরও নারীটিকে আল্লাহতায়ালা তার ভুলের জন্য ক্ষমা করেছেন বলে চলে যেতে দেয়া হয়েছিল। প্রকৃত ইসলামি সমাজ ব্যবস্থায় ধর্ষণের মত ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। যদি কদাচিত ঘটেই যায়, তাহলে অবশ্যই ধর্ষককে শাস্তি ভোগ করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে হাদিছে বর্ণিত প্রেক্ষাপট অনুসারে ধর্ষক ও ধর্ষিতা সম্পর্কে সার্বিকভাবে যে ধরনের ইংগিত পাওয়া যায় সেদিকেও লক্ষ রাখা উচিত। ঘটনার সার্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় যদি মোটামুটি একই রকমের সামঞ্জস্যতা পরিলক্ষিত হয়, তাহলে বর্তমানে কিংবা ভবিষ্যতেও আল-কোরআনের নির্দেশ এবং রাসূলে (সাঃ) সুন্নাত মেনে এই শাস্তি দিতে হবে।

    আলকোরআনের নং সূরা মায়েদার৩৩ নং আয়াতে এই ধরনের অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদন্ডের কথা বলা হয়েছে। উপরে বর্ণিত হাদিছটিতে সেই নির্দেশেরই প্রতিফলন ঘটেছে। আর এই শাস্তি হলোরজমঅর্থাৎ জনসম্মুখে বুক পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে পাথর মেরেই ধর্ষকের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করতে হবে।

ধর্ষককে অবশ্যই শাস্তি দিতে হবে। যেহেতু আল-কোরআনের বিধানে এই ধরনের অপরাধের শাস্তির ক্ষেত্রে মৃত্যুদন্ড ছাড়াও আরও কয়েকটি অপশন (দেশ থেকে নির্বাসন, বিপরীত দিক থেকে হাতপা কর্তন শূলীতে চড়ানো) দেয়া হয়েছে। তাই সবার ক্ষেত্রে একই শাস্তি নয়, বরং ক্ষেত্র ও পাত্র ভেদে শাস্তিরও তারতম্য হতে পারে। ধর্ষকের নিজস্ব স্বীকারোক্তি সাপেক্ষে তার শাস্তি যে মৃত্যুদণ্ড, তাতে কোন সন্দেহ নাই। তবে ক্ষেত্র বিশেষে যিনি ধর্ষিত হবেন তার পূর্ব এবং বর্তমান স্বভাব চারিত্র খতিয়ে দেখার মাধ্যমে ধর্ষকের শাস্তির পরিমান নির্ধারণের বিষয়টি বিবেচনা করার অবকাশ রয়েছে। অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, এই শাস্তি প্রদানের এখতিয়ার কোন আনপড় অবিবেচক মোল্লা বা স্থানীয় কোন ধর্মগুরুর নেই। কেবল মাত্র ইসলামি আদালতের বিজ্ঞ বিচারকই এই শাস্তির রায় দেবার অধিকার রাখে।

আমি আইন বিষয়ে অভিজ্ঞ নই। তাই বিস্তারিত বিবরণে যাব না। তবে নিজের চিন্তা-চেতনা ও যৎসামান্য অর্জিত জ্ঞান অনুসারে দুটি উদাহরন দিলে বোধ হয় বিষয়টি কিছুটা পরিষ্কার হবে। যেমন, আজকাল প্রায়ই বাচ্চা মেয়েদের ধর্ষণের খবর পত্রিকার পাতা খুললেই চোখে পড়ে। বিষয়টি যে খুবই বেদনাদায়ক ও অমানবিক তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আবার তেমনি আপন গৃহে বা কর্মক্ষেত্রে একা পেয়ে যদি কোন পর্দানশিন নারীকে কেউ ধর্ষণ করে- তাহলে উভয় ঘটনার ক্ষেত্রে ধর্ষককে রজমের শাস্তিই দিতে হবে। কিন্তু যখন এটি শুধুমাত্র ধর্ষণের মধ্যে সীমাবদ্ধ থেকে না, বরং নিরপরাধ নারী বা নিষ্পাপ কচি শিশুটির কোমল দেহখানা খন্ড খন্ড করে কেটে বা গলা টিপে মেরে ফেলে, তখন পার্থিব কোন শাস্তি দিয়ে কি এর যোগ্য বিচার ও শান্তনা পাওয়া সম্ভব? শূলীতে চড়িয়ে পাথর মেরে মেরে মৃত্যুদন্ড দিলেও নিশ্চয় কম হয়ে যাবে। কিন্তু তারপরও যাদের অন্তরে এ ধরনের ব্যাধি রয়েছে তারা যেন ভয় পায় এবং নিজেদের শুধরে নিতে পারে, সেজন্য জনসম্মুখে শাস্তি তো কার্যকর করতেই হবে।

যিনি ধর্ষিত হন তার কোন শাস্তি নেই। কিন্তু এমন কোন মহিলা ধর্ষিত হলেন যিনি পর্দা সম্পর্কে তো সচেতন ননই, বরং খোলা-মেলা পোষাকে রাত-বেরাত একা নির্জনে পথ চলতে অভ্যস্ত, এই ধরনের পরিস্থিতিতে পর্দা সম্পর্কে সচেতন না থাকার কারনে এবং রাত-বেরাত একা একা নির্জনে অযথা ঘোরাফেরা করার জন্য তাকে তিরস্কার ও ভবিষ্যতের জন্য সাবধান করা মোটেই অযৌক্তিক নয়। একইভাবে ধর্ষকও যদি ইসলামি সমাজ-ব্যবস্থা ও তার কৃতকর্মের শাস্তি সম্পর্কে অজ্ঞ হন, এক্ষেত্রে ধর্ষককে কি সর্বোচ্য শাস্তি দেয়া ঠিক হবে? যে কোন পরিস্থিতিতে ধর্ষককে যে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। বিজ্ঞ বিচারকই অবস্থা ভেদে উপযুক্ত শাস্তি নির্ধারন করবেন। ক্ষেত্র ও পাত্রের অবস্থা ভেদে শাস্তিরও তারতম্য হতে পারে বলেই তো সর্বজ্ঞ মহান আল্লাহতায়ালা ভিন্ন অপশনগুলো আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। ‘ধর্ষণ’ ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ বলেই তো পিশাচ রূপী ধর্ষকদের জন্য পার্থিব শাস্তিই সব নয়। পরকালেও তাদের জন্যে রয়েছে কঠিন আযাব।

ইসলামে সর্ব প্রথমে মহান স্রষ্টা আল্লাহতায়ালার উপর ইমান আনার সাথে সাথে সকল প্রকার অসৎ, অশ্লীল ও মন্দ কর্ম পরিহার ও সৎ পথে চলার শিক্ষা ও দীক্ষা দেয়া হয়। তাই ইসলামী রাষ্ট্রে বসবাসরত ও ইসলামি বিধান সম্পর্কে জানার পরও কোন ব্যক্তি যদি এ ধরনের পাশবিক কর্মে জড়িয়ে পরে, তাহলে তাকে চরম শাস্তি স্বরূপ ‘রজম’ করা ছাড়া অন্য কোন অপশন নেই।

অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে, (০৫:৩৩) নং আয়াতে হত্যার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আবার আলাদাভাবে শূলীতে চড়ানোর শাস্তির কথাও বলা হয়েছে। শূলীতে চড়ালেও তো মানুষের মৃত্যু হয়। সুতরাং আবারও এখানে শূলীতে চড়ানোর শাস্তির কথা বলার কি দরকার ছিল?

শূলীতে চড়ানো মানে হয়ত অনেকেই বোঝেন। তারপরও আমি বিষয়টি তুলে ধরছে-

শূলদন্ড/ শূলীতে চড়ানো (অর্থ) – Death sentence on a stake or spear.

সুতরাং এই শাস্তিতেও মৃত্যু অনিবার্য।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে (০৫:৩৩) নং আয়াতে আলাদাভাবে তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা শূলীতে চড়ানো হবে বলা হলো কেন?

এ থেকে বোঝা যায় যে, সর্বজ্ঞ মহান আল্লাহতায়ালা মৃত্যুদন্ড দানের ক্ষেত্রেও অপশন রেখেছেন। অর্থাৎ কোন পাষণ্ড সন্ত্রাসী/ ধর্ষকের পাশবিকতা অনুসারে তাকে হত্যার পদ্ধতির ক্ষেত্রেও বিচারকের রায়ের তারতম্য হতে পারে। সেক্ষেত্রে কোন কোন ধর্ষককে যেমন জনসম্মুখে বুক/ গলা পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে পাথর মেরে বা শিরোচ্ছেদ করে বা গুলি করে (ইত্যাদি) হত্যা করা যেতে পারে। তেমনি আবার কোন কোন ধর্ষককে চোখা বল্লমের উপর বসিয়েও হত্যা করার অপশন রাখা হয়েছে। পাষণ্ড সান্ত্রাসী/ ধর্ষকের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার ব্যাপারে ভিন্ন ভিন্ন অপশনগুলো কেন রাখা হয়েছে তা সর্বজ্ঞ স্রষ্টা যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন তিনিই ভাল জানেন।

অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে- ধর্ষিতা কিভাবে তার ধর্ষন প্রমাণ করবে?

আমাদের মনে রাখতে হবে যে, আল-কোরআন ইমানদার মানুষের জন্য চিরন্তন ও সার্বজনীন জীবন বিধান। এটি কোন বিশেষ সময়ের জন্য সীমাবদ্ধ নয় বরং ইসলাম গতিশীল ধর্ম। তবে এই গতিশীলতা লাগামহীন নয়। সব যুগেই জ্ঞানী ও চিন্তাশীল ইমানদার মানুষেরা পবিত্র কোরআনের ঐশী দিকনির্দেশনার আলোয় এই গতিকে নিয়ন্ত্রণ কোরে সঠিক পথের দিশা দেখান।

এটি নিছক কোন বিজ্ঞানের বা আইনের পুস্তক নয়। তাই এতে এ সকল বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরন না দিয়ে বরং জীবনঘনিষ্ঠ বিষয়াদি সম্পর্কিত স্রষ্টা প্রদত্ত সঠিক মৌল দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে মাত্র। এই শাশ্বত মৌল দিকনির্দেশনার আলোকে জ্ঞান-বিজ্ঞনা চর্চা করা কিংবা আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা করাই মুসিলম জ্ঞনী ও চিন্তাশীল ব্যক্তিবর্গের প্রধান কাজ।

ধর্ষন প্রমাণ করা ধর্ষিতার কাজ নয়। ইসলামের দৃষ্টিতে তিনি জুলুমের শিকার অর্থাৎ মজলুম। আর মজলুমকে সহায়তা করার জন্য বিশ্বাসীদের প্রতি আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (সাঃ) নির্দেশ দিয়েছেন। তাই এই ধরনের অপকর্ম সমাজ থেকে নির্মূল করার জন্য যারা বিশেষ ভাবে নিয়োজিত আছেন তাদের প্রধান দায়িত্ব হলো সেই ধর্ষিতা মজলুম নারীকে সর্ব প্রকার সহায়তা করা। শুধু তাই নয় মজলুম যেন ন্যায্য বিচার পায় সেই ব্যাপারে সকল মুসলিসমকেই সজাগ থাকতে হবে এবং সাধ্যমত সহায়তা করতে হবে। দাঙ্গা-হাঙ্গামা, জুলুম, রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে অভিযুক্তদের দোষ প্রমাণের জন্য যেমন সকল প্রকার আধুনিক ব্যবস্থা গ্রহণযোগ্য, তেমনি যদি কোন ইমানদার নারী ধর্ষিত হয়েছেন বলে দাবি করেন তাহলে প্রথমত তা সত্য বলেই ধরে নিতে হবে। তিনি যদি ধর্ষক/ ধর্ষকদের চিনতে পারেন তাহলে তার সাক্ষীকেই সবচেয়ে বেশী গুরুত্ব দেয়া হবে। তারপর সেই ধর্ষক/ ধর্ষকরা যদি দোষ স্বীকার না করে তাহলে তাদের দোষ প্রমাণের জন্য ধর্ষিতা ও ধর্ষকের দৈহিক ও পারিপার্শ্বিক সকল প্রকার আলামত সংগ্রহ এবং আধুনিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করায় কোনই বাধা নেই। এমনকি ‘ডিএনএ’ পরীক্ষা করার দরকার হলে তাও করতে হবে।

অনেকে প্রশ্ন করেন-

*শুধু ঈমানদার নারীই কি ধর্ষনের বিচার পাবে?

*নাস্তিক বিধর্মীদের উদ্ভাবিত আধুনিক পরীক্ষা নিরীক্ষা কিভাবে ইসলাম সম্মত হবে?

আল-কোরআনের বিধান তো মূলত ইমানদারদের জন্যই। অন্য ধর্মের অনুসারীরা তাদের ধর্মমত অনুসারে বিচার করবেন। তবে ইসলামের অনুসারী না হওয়া সত্বেও যদি কেউ আল-কোরআনের বিধান অনুসারে বিচার চান, তাহলে অবশ্যই যিনি ধর্ষিত হয়েছেন তার লাইফ স্টাইল কেমন ছিল তা খতিয়ে দেখেই ফায়সালা করতে হবে। সার্বিক বিবেচনায় ধর্ষিতা অবশ্যই ন্যায্য বিচার ও ধর্ষক শাস্তি পাবেন।

প্রকৃত মুসলিম মাত্রই সব সময় সকল ভাল ও মানবিক কর্ম পদ্ধতি ও পথকে স্বাগত জানায়। যা কিছু কল্যাণকর ও শান্তিময়, তার সাথে প্রকৃত ইসলামের অনুসারীদের কোন বিরোধ থাকতে পারেনা। সত্য, ন্যায় ও ন্যায্য বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য যে কোন ফলপ্রদ পদক্ষেপ গ্রহণ করার ক্ষেত্রে কোন বাধা নেই, বরং তা উপেক্ষা করাই ইসলাম বিরুদ্ধ। তাই নাস্তিক বিধর্মীদের দ্বারা উদ্ভাবিত হলেও ন্যায্য বিচারের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট যে কোন পদ্ধতি ও পদক্ষেপ গ্রহণ করাতে কোন বাধা নেই।

অনেকে প্রশ্ন করেন-

*কোন ঈমানদার কি কখনো ধর্ষক হতে পারে?

*পতিতাদের লাইফ স্টাইল খারাপ, তাই তাদেরকে ধর্ষণ করলেও কি অপরাধ হবে?

এ কথাটি সত্য যে, যে ব্যক্তি ধর্ষন করে সে মানুষ নামের পশু। আর পশুর কোন ধর্ম থাকেনা। সে মানুষের বেশে এবং যে কোন ধর্মের ছত্রছায়ায় ও ছদ্মবেশ ধারন করে সমাজে ঘুরে বেড়ায়। আর সুযোগ পেলেই আপন ক্ষুদ্র স্বার্থ ও লালসা চরিতার্থ করার জন্য শুধু ধর্ষণই নয়, বরং যে কোন অমানবিক কর্ম করতে দ্বিধা করেনা। তাই কোন মুসলিম নামধারী হোক বা হিন্দু কিংবা ইহুদী অথবা খৃষ্টান নামধারী হোক, ধর্ষক মাত্রই সে আর ইমানদার থাকতে পারেনা। সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে এরূপ জুলুম কর্মে জড়িত হওয়ার জন্য তাকে শাস্তি দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে। [এখানে দেখুন- ধর্ষকের শাস্তির ঐতিহাসিক প্রমাণ]

লাইফ স্টাইল এখানে বিবেচ্য এই জন্য যে, যে সমাজে উলঙ্গপনা, বেহায়াপনা , ফ্রি-মিক্সিং, ব্যভিচার করা দোষের কিছু নয়, সেই সমাজের সাথে ইসলামী সমাজে বসবাসরত নারীদের লাইফ স্টাইলের পার্থক্যটা নিশ্চয় বুঝিয়ে বলার প্রয়োজন নেই। সুতরাং এই দুই সমাজের নারীরা ধর্ষিতা হলে সার্বিক বিবেচনায় উভয়েই অবশ্যই ন্যায্য বিচার পাবেন। তবে একটু কমনসেন্স থাকলেই যে কেউ বুঝবেন যে, প্রেক্ষাপট বিবেচনায় দুই সমাজের ধর্ষিতা নারীর বিচার ফয়সালার ক্ষেত্রে কিছুটা তারতম্য হতেই পারে। প্রায় প্রতিটি ধর্মগ্রন্থেই পর্দা রক্ষার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাই যদি অন্য ধর্মের নারীরা সমাজে পর্দা রক্ষা করে সুশৃঙ্খলভাবে চলাফেরা করেন এবং উলঙ্গপনা, বেহায়াপনা , ফ্রি-মিক্সিং, ব্যভিচার বা অশ্লীল কর্ম থেকে দূরে থাকেন। তারাও সার্বিক বিবেচনায় একজন ধর্ষিতা মুসলিম নারীর মতই ন্যায্য বিচার পাবেন। ঠিক তেমনি কোন মুসলিম নারীর ক্ষেত্রেও যদি পর্দা না মেনে চলা এবং অশ্লীল কর্মে লিপ্ত থাকার প্রমাণ মেলে, তাহলে সেটাও বিবেচনায় এনেই ধর্ষকের শাস্তি নির্ধারণ করা হবে। তবে ধর্ষক কিন্তু শাস্তি পাবেই।

পতিতাদের বিষয়টি আর একটু ভিন্ন প্রকৃতির। আমাদের দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে কোন ধর্মেই যৌনকর্মকে পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। নিষিদ্ধ পল্লীর সেই সব হতভাগা নারীদের (তথাকথিত যৌনকর্মী বা পতিতা) জীবনকে আমি অসুস্থ জীবন তুল্য মনে করি। এরূপ অবমাননাকর ও কষ্টকর কর্মের মাধ্যমে কেউ সুস্থভাবে জীবনযাপন করতে পারেনা তা আমি কল্পণাও করতে পারি না। কিন্তু অনেকেই যে এরূপ অন্ধকার জগতে অসুস্থ জীবন যাপন করছেন তা তো অস্বীকার করার উপায় নেই।

আমি মনে করি যৌনকর্ম করে জীবিকা নির্বাহ করা কোন মানুষের জন্য সম্মানের হতে পারে না। সুতরাং স্বেচ্ছায় যদি কোন নারী এ ধরনের অবমাননাকর কর্মকে পেশা হিসেবে বেছে নেয় তবে তাকে মানসিকভাবে সম্পূর্ণরূপে সুস্থ নয় বলেই আমি মনে করি। মাদক সেবিদের মত তাদের জন্যও কাউন্সিলিং ও সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন বলে আমি দৃঢ় অভিমত প্রকাশ করছি। এদের মধ্যে যারা বাধ্য হয়ে এরূপ অবমাননাকর ও অসুস্থ কর্মে লিপ্ত হয়েছেন এবং যাদেরকে আটকে রেখে অনিচ্ছা সত্বেও জোর কোরে এ কাজ করানো হচ্ছে, তারা অবশ্যই ধর্ষনের শিকার হচ্ছেন। আর তাদের উপর যারা জুলুম করছে তারাও ধর্ষক হিসেবেই চিহ্নিত হবেন।

সত্যিকার ইসলামী শাসন ব্যবস্থায় ও সমাজে নারীদের স্থান অনেক উচ্চে এবং তাদেরকে পতিতা হিসেবে ব্যবহার করার কোন অবকাশ থাকবে না। কোন নারীকে বন্দী কোরে রেখে জোর কোরে যারা এই কাজে বাধ্য করবে, সেই জালিমদেরকে চরম শাস্তি পেতে হবে। আর ইসলামী সরকারের পক্ষ থেকে পতিতালয় নির্মূল করার পাশাপাশি পতিতাদেরকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য সকল উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। এর পরেও যদি কোন নারী স্বেচ্ছায় এই ধরনের অশ্লীল কর্মে লিপ্ত হয়, তাহলে ধরা পড়লে এবং প্রমাণিত হলে তাকে এবং তার সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে শাস্তি পেতে হবে।

অনেক কাল থেকেই ভোগ-লালসা চরিতার্থ করার ও ব্যবসায়ীক ফায়দা হাসিলের জন্য শুধু পুরুষই নয়, পাশাপাশি নারীরাও এই হতভাগা নারীদের ব্যবহার করে আসছে। বর্তমানে নারীদের জন্য অনেক পেশার দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে। সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি সর্বধর্ম নির্বিশেষে এই মুহূর্ত থেকে পতিতা বৃত্তিকে- ‘না’ বলতে হবে। সরকারের পাশাপাশি সচেতন জনগণকেও এই হতভাগা নারীদেরকে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য অতিসত্ত্বর যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া উচিত।

Comments are closed.