১২ই রবিউল আউয়াল নয়, ৮ই রবিউল আউয়াল ইন্তেকাল করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্ম-মৃত্যুর তারিখের ব্যাপারে ওলামায়ে কেরাম বহু লেখালেখি করলেও বিষয়টি এখনও নিস্পত্তি লাভ করেনি। এ বিষয়ে প্রত্যেকে তাদের গবেষণার ফলাফল ও পছন্দনীয় মত উল্লেখ করেই ক্ষান্ত হয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে উম্মাহর মুহাক্কিক ওলামায়ে কেরাম চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেননি। ফলে কোনো মতকেই অবিসংবাদিত মত বলা যায় না।
মূলত রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে বিশেষ কোনো ঘটনার সন-তারিখ লিখে রাখার প্রচলন ছিল না। তাছাড়া সাহাবা আজমাইনের যুগে রাসুেল কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মৃত্যুকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়া হলেও মৃত্যু-দিবসটিকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়নি, যাতে এই তারিখকে ঘিরে পরবর্তী কালে কোনো বিদআতের আয়োজন না হয়। ফলে রাসুলের জন্ম-মৃত্যু তারিখ নিয়ে পরবর্তীতে ওলামায়ে কেরামের মাঝে মতানৈক্য সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিস্পত্তির জন্য ওলামায়ে কেরামের একটি দল এ বিষয়ের ওপর ব্যাপক গবেষণা চালান এবং লেখালেখি করেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিষয়টি অমীমাংসিতই থেকে যায়।
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাতের ব্যাপারে বহু মতভেদ আছে। কেউ মনে করেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রবিউল আওয়াল মাসের ১২ তারিখে ইন্তেকাল করেছেন। এটি সর্বাধিক প্রসিদ্ধ মত। অন্যদের মধ্যে কেউ ৮ তারিখ, কেউ ২ তারিখ, কেউ ১ তারিখ বলে মত পোষণ করেছেন। মিশরের বিখ্যাত জ্যোতিষী মাহমুদ পাশা ১২ বা ১৩ তারিখ বলে উল্লেখ করেছেন। (নাতায়িজুল আফকার পৃষ্ঠা ৪৭) সুতরাং স্বভাবতই এই মতগুলোর একটি বিশুদ্ধ প্রমাণিত হলে বাকিগুলো অপরিহার্যভাবে ভুল প্রমাণিত হবে। এই প্রবন্ধে আমরা দেখে নেয়ার চেষ্টা করব, কোন মতটি বিশুদ্ধ বা বিশুদ্ধতার কাছাকাছি।
নিষ্পত্তিমূলক আলোচনায় যাওয়ার আগে একটি গাণিতিক সূত্র মনে রাখি, যাতে আমাদের সামনের আলোচনা বুঝাতে সহজ হয়। সূত্রটি হলো, আজ থেকে সামনে বা পেছনের যে কোনো দিনের বারটি কোন বার ছিল এবং সেটি কোন তারিখ ছিল তা বের করার সহজ গাণিতিক পদ্ধতি হলো, যেহেতু আজ থেকে প্রতি ৭দিন পূর্বে এবং পরে আজকের বারই ফিরে আসে। যেমন আজকে শুক্রবার হলে ছয়দিন পূর্বে ও পরে ৭ম দিনে শুক্রবার, ১৪তম দিনেও শুক্রবার, ২১তম দিনেও শুক্রবার ফিরে আসে, সেহেতু আজ থেকে যতদিন পূর্বের দিন বের করতে চাই (আজকের দিন বাদ দিয়ে) ততদিনের সর্বমোট সংখ্যা বের করে তাকে ৭ দিয়ে ভাগ দিতে হবে। ভাগ দিলে যদি ভাজ্যটি নিঃশেষে বিভাজ্য হয়, ভাগশেষ অবশিষ্ট না থাকে তাহলে বুঝতে হবে এতদিন পূর্বে আজকের বারই ছিল। যেমন, আজ ১জানুয়ারী রোজ বুধবার ২০১৩ইং। আজ থেকে ৪৯ দিন পূর্বের বারটি কোন বার ছিল তা বের করতে হলে ৪৯কে ৭ দিয়ে ভাগ করতে হবে। ভাগ করে দেখা গেল নিঃশেষে বিভাজ্য হয়ে যায়। ভাগশেষ কিছুই অবশিষ্ট থাকে না। সুতরাং বুঝা গেল, আজ থেকে ৪৯ দিন পূর্বে আজকের বারটি অর্থাৎ বুধবারই ছিল। আর যদি নিঃশেষে বিভাজ্য না হয়, কোনো ভাগশেষ অবশিষ্ট থাকে তাহলে ভাগশেষের শুরুতে .১৪২…থাকলে একদিন পূর্বের বার, অর্থাৎ মঙ্গলবার, ভাগশেষের শুরুতে .২৮৫…থাকলে দুই দিন পূর্বের বার অর্থাৎ সোমবার, ভাগশেষের শুরুতে .৪২৮…থাকলে তিন দিন পূর্বের বার অর্থাৎ রবিবার, ভাগশেষর শুরুতে .৫৭১…থাকলে চার দিন পূর্বের বার অর্থাৎ শনিবার, ভাগশেষের শুরুতে .৭১৪…থাকলে পাঁচ দিন পূর্বের বার অর্থাৎ শুক্রবার, আর ভাগশেষের শুরুতে .৮৫৭… থাকলে ছয়দিন পূর্বের বার অর্থাৎ বৃহস্পতিবার মনে করতে হবে। যেমন, আজ ১জানুয়ারী রোজ বুধবার ২০১৩ইং। আজ থেকে ৫০ দিন পূর্বের বারটি কোন বার ছিল তা বের করতে হলে ৫০কে ৭ দিয়ে ভাগ করতে হবে। ভাগ করে দেখা গেল ফলাফল দাঁড়ায় ৭.১৪২…। সুতরাং ভাগশেষের শুরুতে .১ থাকায় বুঝা গেল ৫০দিন পূর্বের বারটি ছিল একদিন পূর্বের বার তথা মঙ্গলবার। এটি একটি সহজবোধ্য পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে আগের ও পরের যে কোনো তারিখের বার কী ছিল তা সহজে জানা যায়। এই সূত্র ধরে বিভিন্ন মনীষীদের তারিখ বের করে সর্বমোট দিন হিসেব করে সেই কাংখিত তারিখটি কী বার ছিল তা বের করা যায়।
আমরা একটি ঐতিহাসিক সত্যের ওপর ভিত্তি করে আমরা এব্যাপারে সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ। সেটি হলো, ১০ হিজরির ৯জিলহজ্জ আরাফার দিনটি ছিল শুক্রবার। এটি বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। হাদিস শরিফে এসেছে, এক ইহুদি হজরত উমর (রাঃ) কাছে এসে বলল, ‘হে আমীরুল মুমিনীন ! আমাদের প্রতি যদি এই আয়াত নাজিল হত “আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার নেয়ামত পূর্ণ করে দিলাম এবং তোমাদের জন্য ইসলামকে দ্বীন হিসেবে মনোনীত করলাম।” (সুরা মায়েদা, আয়াত : ৩) তাহলে এ দিনটি আমরা ঈদের মতো করে উদযাপন করতাম, তখন হজরত উমর (রাঃ) বলেন, আমি অবশ্যই জানি, কোন দিন এই আয়াত অবর্তীণ হয়েছিল। এই আয়াত নাজিল হয়েছিল আরাফার দিন জুমাবার।’ (বুখারি শরিফ, তিরমিজি শরিফ, নাসায়ী শরিফ) এই হাদিস দ্বারা বুঝা গেল, বিদায় হজ্জের আরাফার দিনটি ছিল ৯ জিলহজ্জ শুক্রবার। ঐতিহাসিকভাবে একথা সত্য যে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হজ্জের ভাষণের পরের রবিউল আওয়াল মাসের সোমবার ইন্তিকাল করেন। এটি বুখারি শরিফসহ আরো অনেকগুলো হাদিসের কিতাব দ্বারা স্বীকৃত। সুতরাং রাসুলের ওফাতের সঠিক তারিখ বের করতে হলে প্রথমে বের করতে হবে বিদায় হজ্জর ভাষণের পর থেকে রবিউল মাস পর্যন্ত কতদিন হয় ? সাভাবিকভাবে চাঁদের মাসের হিসেবে পরপর ২ মাস ২৯ শে হয়, তৃতীয় মাস হয় ৩০শে। অথবা পরপর দুই মাস ৩০শে হয়, তৃতীয় মাস হয় ২৯শে। সে হিসেবে যে কোনো দুই মাসকে ২৯শে ও তৃতীয় মাসকে ৩০শে ধরলে ৯জিলহজ্জ থেকে সফরের শেষ পর্যন্ত সর্বমোট দিন হয় ২০+২৯+৩০=৭৯ দিন। আর তিন মাসের যে কোনো দুই মাসকে ৩০শে ধরলে তৃতীয় মাসটিকে ২৯শে ধরলে ৯জিলহজ্জ থেকে সফরের শেষ পর্যন্ত সর্বমোট দিন হয় ২১+৩০+২৯=৮০ দিন। এবার আমরা ওলামায়ে কেরামের মতামতের বিশ্লেষণে যাব।
১২ রবিউল আউয়ালের বিশ্লেষণ :
প্রসিদ্ধ মতানুসারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখে ইন্তেকাল করেছেন। সুতরাং আমাদেরকে বের করতে হবে যে, রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ কী বার ছিল। আমরা যদি (যদি দুইমাস ২৯শে ও এক মাস ৩০শে ধরা হয়) মোট দিনসংখ্যা ৭৯+১২=৯১কে ৭ দ্বারা ভাগ করি তাহলে ভাজ্য পূর্ণ বিভাজ্য হয়ে যায়, ভাগশেষ অবশিষ্ট থাকেনা। সুতরাং পূর্বের সূত্র অনুযায়ী রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ শুক্রবার হয়। অথচ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইন্তেকাল হয়েছিল সোমবার, এটি বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। হাদিস শরিফে আছে, আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) হজরত আয়েশা (রাঃ)কে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘কোনদিন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাত হয় ? তিনি বলেন, সোমবার।’ (বুখারি শরিফ) সোমবার রাসুলের ইন্তেকালের ব্যাপারে মুয়াত্তা মালেকে একটি স্পষ্ট বর্ণনা আছে। হজরত উমর ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাত হয় সোমবার আর দাফন হয় মঙ্গলবার।’ (মুয়াত্তা মালেক)
আর যদি (যদি দুইমাস ৩০শে ও একমাস ২৯শে ধরা হয়) মোটদিন ৮০+১২=৯২কে ৭ দ্বারা ভাগ করা হয় তাহলে ভাজ্যটি নিঃশেষে বিভাজ্য হয় না; বরং ভাগশেষ অবশিষ্ট থাকে ১৪২…। সুতরাং আমাদের পূর্বের সূত্র অনুযায়ী ভাগশেষের শুরুতে .১ থাকায় ১২রবিউল আউয়াল হবে ৯জিলহজ্জের একদিন পরের বার তথা শনিবার। দেখা গেল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাত ১২ রবিউল আউয়াল মেনে নিলে ওফাতের বার সোমবার হয় না। এমনকি সবকটি মাস ২৯শে বা সবকটি মাস ৩০শে মেনে নিলেও ওফাতের দিন সোমবার হয় না। কারণ আমাদের সূত্র মোতাবেক যদি সবকটি মাসকে ৩০শে ধরা হয় তাহলে সর্বমোট দিন ২১+৩০+৩০+১২=৯৩। ৯৩কে ৭ দ্বারা ভাগ করলে ভাগফল দাঁড়ায় ১৩.২৮৫। সুতরাং ভাগশেষের শুরুতে .২ থাকায় ১২ রবিউল আউয়াল হয় শুক্রবারের দুইদিন পরের বার তথা রবিবার। আর যদি ২৯ ধরা হয় তাহলে সর্বমোট দিন হয় ২০+২৯+২৯+১২=৯০ দিন। ৯০কে ৭ দ্বারা ভাগ করলে ভাগফল দাঁড়ায় ১২.৮৫৭…। সুতরাং ভাগশেষের শুরুতে .৮ থাকায় রবিউল আউয়াল বারটি হয় শুক্রবারের ছয় দিন পরের বার তথা বৃহস্পতিবার। মোটকথা কোনোভাবেই প্রমাণিত হয় না যে, ১২রবিউল আউয়াল সোমবার ছিল। অথচ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাত হয়েছিল সোমবার। সুতরাং বুঝাগেল ১২ রবিউল আউয়াল রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাত হয়েছে-এই কথাটি কোনোভাবেই বিশ্বাসযোগ্য নয়।
২ রবিউল আউয়ালের বিশ্লেষণ :
এক হিসাবে (যদি দুইমাস ২৯শে ও এক মাস ৩০শে ধরা হয়) সর্বমোট দিনসংখ্যা হয় ৭৯+২=৮১। ৮১কে ৭ দ্বারা ভাগ করলে ভাগফল দ্বারায় ১১.৫৭১…। অতএব ভাগশেষের শুরুতে .৫ থাকায় ২ রবিউল আউয়াল বারটি হয় শুক্রবারের চার দিন পরের বার তথা মঙ্গলবার। অন্য হিসাব অনুযায়ী (যদি দুইমাস ৩০শে ও একমাস ২৯শে ধরা হয়) সর্বমোট দিনসংখ্যা হয় ৮০+২=৮২। ৮২কে ৭ দ্বারা ভাগ করলে ফলাফল দাঁড়ায় ১১.৭১৪…। সুতরাং ভাগশেষের শুরুতে .৭ থাকায় ২রবিউল আউয়াল হয় শুক্রবারের পাঁচ দিন পরের বার তথা বুধবার। দেখা যাচ্ছে, কোনো হিসাবেই ২রবিউল আউয়াল সোমবার হয় না।
১রবিউল আউয়ালের বিশ্লেষণ :
এক হিসাবে (যদি দুইমাস ৩০শে ও একমাস ২৯শে ধরা হয়) সর্বমোট দিনসংখ্যা হয় ৮০+১=৮১। ৮১কে ৭ দ্বারা ভাগ করলে ভাগফল দাঁড়ায় ১১.৫৭১…। অতএব ভাগশেষের শুরুতে .৫ থাকায় ১ রবিউল আউয়াল বারটি হয় শুক্রবারের চার দিন পরের বার তথা মঙ্গলবার।
অন্য হাদিসে (যদি দুইমাস ২৯শে ও এক মাস ৩০শে ধরা হয়) সর্বমোট দিনসংখ্যা হয় ৭৯+১=৮০। ৮০কে ৭ দ্বারা ভাগ করলে ভাগফল দাঁড়ায় ১১.৪২৮…। অতএব ভাগশেষের শুরুতে .৪ থাকায় রবিউল আউয়াল মাসের ১ তারিখটি হয় শুক্রবারের তিন দিন পরের বার তথা সোমবার। এই বিশ্লেষণে যদিও ১ রবিউল আউয়াল সোমবার হয় তবুও এ মতটি গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ বিশুদ্ধ মতানুযায়ী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সফর মাসের শেষ সপ্তাহে অসুস্থ হন এবং ১৩/১৪ দিন অসুস্থ থাকার পর তিনি ইন্তিকাল করেন। এটিকেই আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী রহ. অধিকাংশের মত বলে উল্লেখ করেছেন। (ফাতহুল বারী, ৮ম খন্ড, জুরকানী কৃত শরহে মুয়াত্তা, ২য় খন্ড, কাসতালানী ও আসাহুস্ সিয়ার) অতএব রবিউল আউয়ালের ১ তারিখকে ওফাতের দিন মেনে নিলে তার ১৩/১৪ দিন পূর্বে সফরের শেষ সপ্তাহ হয় না; বরং মাঝের সপ্তাহ হয়। মোটকথা হলো, ১ রবিউল আউয়াল ওফাতের তারিখ ধরলে বিশুদ্ধ ঐতিহাসিক মতের সাথে সাংঘর্ষিক হয়। অতএব এ মতটি সর্বতোভাবে বিশুদ্ধ নয়।
৮ রবিউল আউয়ালের বিশ্লেষণ :
১০ই জিলহজ্জ থেকে ৮ রবিউল আউয়াল পর্যন্ত এক হিসেবে (যদি দুইমাস ২৯শে ও একমাস ৩০শে ধরা হয়) মোটদিন সংখ্যা হয়, ৭৯+৮+=৮৭। ৮৭কে ৭ দ্বারা ভাগ করলে ভাগফল দাঁড়ায় ১২.৪২৮…। সুতরাং ভাগশেষের শুরুতে .৪ থাকায় ৮ রবিউল আউয়াল হয় শুক্রবারের তিন দিন পরের বার তথা সোমবার।
অন্য হিসেবে (যদি দুইমাস ৩০শে ও একমাস ২৯শে ধরা হয়) মোট দিন সংখ্যা দাঁড়ায়, ৮০+৮=৮৮। সুতরাং ৮৮কে ৭ দ্বারা ভাগ করলে ১২.৫৭১…। অতএব ভাগশেষের শুরুতে .৫ থাকায় ৮ রবিউল আউয়াল হবে শুক্রবারের চার দিন পরের বার তথা মঙ্গলবার। দেখা গেল, ৮ রবিউল আউয়াল এক হিসাবে সোমবার হয়। সুতরাং ৮রবিউল আউয়ালকে যদি আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাতের তারিখ ধরি তাহলে শুধু সোমবার পাওয়া যায়, অন্য কোনো মতানুসারে সোমবার পাওয়া যায় না। সুতরাং ৮রবিউল আউয়ালকে রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাতের তারিখ ধরাটাই যুক্তিযুক্ত বলে মনে হয়।

সম্পাদক, মাসিক আরবি ম্যাগাজিন ‘আলহেরা’

Loading


মন্তব্য দেখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *