স্রষ্টার অস্তিত্বে ঐশ্বরিক যুক্তি – (১ম পর্ব)

ভুমিকা:
যারা নাস্তিক বা ধর্মে অবিশ্বাসী তারা বলেন বিশ্ব জাহান বা এই “কায়ানাত” এমনিতেই সৃষ্টি হয়েছে এখানে কোন স্রষ্টা নাই! এখানে সবকিছু এমনিতেই প্রাকৃতিকভাবে বা ন্যাচারেলি সৃষ্টি হয়েছে বা বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সবকিছুই যুগ যুগ ধরে কালক্রমে বিবর্তনের আবর্তনে সৃষ্টি হচ্ছে! এখানে কোন স্রষ্টার কারসাজি নাই! কিন্তু একথা তারা ভাবলেও প্রকারান্তরে তারা কিন্তু নিজের অজান্তে স্রষ্টা বলে যে একটি ক্ষমতা আছে তা স্বীকার করছে সেটি তাদের কাছে প্রকৃতি হতে পারে।

আর আমরা যারা ধর্মপ্রাণ তারা বিশ্বাস করি এই প্রকৃতিরও একজন স্রষ্টা আছেন যাকে আমরা আল্লাহ বা গড কিংবা ঈশ্বর বলি। তাহলে দেখা গেল স্রষ্টার অস্তিত্ব অস্বীকার করার উপায় নাই। কেউ প্রকৃতিকে সৃষ্টির উৎস ভাবছে আর আমরা এই প্রকৃতির ঊর্ধ্বের শক্তিতে বিশ্বাস করি যিনি এ প্রকৃতিকেও পরিচালনা করছেন এবং এই প্রকৃতিসহ বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সব কিছু সৃষ্টি করেছেন।

তাহলে সমস্যাটা কোথায়? সে বিষয়ে আলোচনা দরকার ।

গত বছরের আর আই এস সম্মেলনে আমার শ্রদ্ধেয় এক আলেম, ইমাম শেখ যায়েদ শাখের, তার এক ভাষণে বলেছিলেন যে, “মুকাইয়ামা আল জাওজিয়া” বলেছিলেন,মানুষের ঈমান হারানো সঙ্কট শুরু হয় দুই কারণে :

১) মনে সন্দেহের ক্লেশ “ফিতনা তুস্ শুবা” সৃষ্টি এবং

২) কামের বাসনা বা লালসা, “ফিতনা তুস্ শা-হওয়া”

তিনি বলেন “ফিতনা তুস্ শুবাতে” মানুষ তার আকল বা বিচারবুদ্ধির পরিবর্তে খেয়াল খুশিকে প্রাধান্য দেয় “তাকদিম আল হা’ওয়া আলাল আকল” তথা priority of whims over intellect. তখন সে চিন্তা করতে শুরু করে এবং এমন এক পর্যায়ে উপনীত হয় যার ফলে সন্দেহের কবলে ভিত্তিহীন বিষয়ে তার মতামত গড়ে উঠে। যা কিনা হয় “তাকদিম আর রা’য়ী আলাল আকল” অর্থাৎ বুদ্ধি ভিত্তিক সঠিক তথ্য জ্ঞানের যুক্তি ছেড়ে নিজের মতের প্রাধান্য দেয়া। Empty basis of opinion over things does not exists. তখন এ জাতীয় লোকেরা বলতে চায় what is beyond physicality somehow conforms or should conforms the law of physicality! অর্থাৎ কোন কিছু সশরীরে অস্তিত্বে থাকাই হচ্ছে তার অস্তিত্বে থাকার নিয়ম!

কেন এটি বিশ্বাস করতে হবে? কেন সেটি বিশ্বাস করতে হবে? কেন উহা এমনটি হল? ইত্যাদি নানা নেতিবাচক প্রশ্ন মনে বাসা বাঁধে। শেখ যায়েদ শাখের বলেন, ” তখন বলতে হবে আমি শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাই।
এর কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নাই যে কোন কিছুর অস্তিত্ব দেখাটাই তার অস্তিত্বে থাকার প্রমাণ হতে হবে। প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যেমন ব্লু-টুথ কিংবা ওয়াই-ফাই  ইত্যাদি কেমন তা দেখা যায় না কিন্তু সেটির অস্তিত্ব যে আছে তা আমরা বুঝতে পারি। তেমনি আল্লাহর বৈশিষ্ট্য এমন যে তিনি এ সৃষ্টি জগতের কোন কিছুর মত নয় তাই তাকে এ সৃষ্টি জগতে দেখাও সম্ভব নয়।

তাই স্রষ্টাকে দেখতে হবে বলে অবিশ্বাসীদের সে দাবী আমরা প্রত্যাখ্যান করি। আমাদের যুক্তি হচ্ছে যখন পদচিহ্ন দেখব তখন বুঝব ওখানে কেউ হেঁটেছে। আকাশে ধূয়া দেখলে অনুমান করা সম্ভব যে কোথাও আগুন জ্বলছে।”

নাস্তিকদের সমস্যা হচ্ছে তাদের অধিকাংশরাই হচ্ছে প্রচণ্ড অহংকারী এবং একচোখো। নাস্তিকরা সব যুগেই ছিল। তবে আধুনিক নাস্তিকতার আরেকটি কথা হচ্ছে এ বিজ্ঞানের আবিষ্কারে আজ পৃথিবীর এত উন্নয়ন করছে,মানুষ আজ বড় বড় স্থাপনা, গবেষণা কেন্দ্র ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান,বিনোদন কেন্দ্র, রাস্তা সেতু, যানবাহন ও মনোরম সুবিশাল অট্টালিকা দালান কোঠা, ইত্যাদি তৈরি করতে ব্যস্ত সেখানে স্রষ্টা বলে কিছু থাকলে যাকে দেখা যায়না তা নিয়ে চিন্তা করার সময় কোথায় এবং সে চিন্তাই বা করতে হবে কেন?

কিন্তু অনেক মানুষ আছেন যারা ভাবতে চায় অধ্যাত্মিকতা এবং জীবন দর্শন নিয়ে। আজকের এ লিখাটি মূলত তাদের উদ্দেশ্যে। এখানে চেষ্টা করব স্রষ্টার অস্তিত্বের বিষয়ে কুরআন থেকে কি শিক্ষা পাওয়া যায় সে বিষয়ে কিছুটা আলোচনা করতে।

আমাদের চোখ, কান, জিহ্বা, মস্তিষ্ক, বুদ্ধি, অঙ্গ, হৃৎস্পন্দন, শ্বাস প্রশ্বাসের যথাযথ অনুপাত সম্পন্ন সৃষ্টি এবং এ জাতীয় সমস্ত কিছু এত যত্ন সহকারে সৃষ্টির পিছনে অবশ্যই এক মহাশক্তিশালী মহাজ্ঞানী স্রষ্টার ছাপ বহন করে। যেহেতু মানুষ স্রষ্টাকে নিজের মাঝে খুঁজে পায়না তাই বাধ্য হয় বাহ্যিক দিকে স্রষ্টার সন্ধান করতে এবং সেটি বলতে গেলে এতই স্বজ্ঞাত স্বতঃস্ফূর্ত অনুভূতি যে এর জন্য আমাদের সচেতনভাবে কোনও যৌক্তিক যুক্তি বিকাশের দরকার নেই। আবার বাহ্যিক জগতে আমরা যখন দেখতে পেলাম যে প্রকৃতির সৃষ্টি এত নিখুঁতভাবে করা হয়েছে তখন সে দৃশ্য দেখে সেখানেও তীব্র ধারণা জন্মে স্রষ্টার অস্তিত্বের। এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে যে আমাদের স্রষ্টা কে?

আল কুরআন এবিষয়ে (সুরা বাকারা ২:২১৩ এবং সুরা ১৬:৩৬) আমদেরকে অবহিত করে যে স্রষ্টার ধারণাটি মানুষের ঐতিহ্যগত ধারণা নিয়ে চলে আসছে আমাদের আদি পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে। কারণ ঈশ্বর বা স্রষ্টার বিশ্বাস ছিল আমাদের আদি পূর্বপুরুষদের জন্য অনুপ্রেরণামূলক বাস্তবত অভিজ্ঞতা। তাই ঈশ্বর বা স্রষ্টার বিশ্বাস মানব সমাজে সম্মিলিতভাবে মৌখিক ঐতিহ্য হিসাবে প্রজন্মের পর প্রজন্মের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

সুতরাং মানবজাতির সূচনা হয়েছিল শুরুতে এক স্রষ্টা এবং এক ধর্ম নিয়ে কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সেই স্রষ্টার গুণাবলী এবং ইচ্ছা সম্পর্কে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল। তখন থেকেই আল্লাহ বিভিন্ন সময়ে নবী রসুল ও নবুওয়াত প্রতিষ্ঠার সূচনা করেছিলেন। প্রত্যেকটি জাতির মধ্যে থেকে তিনি নবী হিসাবে সেরা ব্যক্তিদের বেছে নিয়েছিলেন। সুতরাং, এই নবী রসুলেরা অলৌকিক সত্তা আল্লাহর অস্তিত্বের সাক্ষ্য দিয়েছিলেন যুগে যুগে। তাঁর সত্য গুণাবলী এবং শেষ বিচারের দিনের  কথা মানব জাতীকে জানিয়েছেন। যার ফলে এমন কোন সময় অতিবাহিত হয় নাই যে স্রষ্টা ধারণা ও জ্ঞানের ব্যাপারে মানবজাতি কখনও বঞ্চিত ছিল।  এটিই হচ্ছে মানব ধর্মের ইতিহাসের উপর কোরআনের দর্শন।

তবে যে কেউ খোলা  মনে আল্লাহ রাব্বুল আ’লামিনের পবিত্র কালাম কোরআন মনোযোগ সহকারে পড়ে এবং তাঁরই নির্দেশিত “তাতাব্বুর” বা চিন্তা করার যে কথা বলা হয়েছে তা করে, তখন  সেই কোরআন পাঠকের  কাছে নিম্নের কিছু প্রশ্নের জবাব থাকা উচিত।

১) প্রথম প্রশ্ন এই কুরআন কি কোন গতানুগতিক বইয়ের মত একটি বই?

যেমন যে কোনো বিষয়ের কোন গ্রন্থে আমরা দেখতে পাই একটি ভূমিকা থাকে,ভিতরে তার মূল বক্তব্য থাকে এবং পরে একটি উপসংহার থাকে অথবা সেটি কোন গবেষণালব্ধ বিষয়ের পুস্তক হলে তাতে বক্তব্য শেষে বেশ কিছু রেফারেন্স থাকে বা তথ্যসূত্র থাকে।

২) কিন্তু কুরআন কি এরকম?

এ গ্রন্থের শুরুতেই বলা হয়েছে “এই সেই কিতাব (গ্রন্থ) যাহাতে কোন সন্দেহ নাই!” আবার সেথায় পুনরাবৃত্তিও আছে অর্থাৎ একি বিষয়ের কথা বার বার বলা হয়েছে। তাছাড়া এ পৃথিবীর কোন গ্রন্থের শুরুতেই “সন্দেহ নাই” এরকম দ্ব্যর্থহীন বলিষ্ঠ বাক্য দিয়ে শুরু হওয়ার উদাহরণও দেখা যায় না। তাহলে বুঝা গেল এই গ্রন্থ আমাদের প্রচলিত গ্রন্থের মত নয় এবং সেটা ভাবাও ভুল হবে।

অতএব এখন প্রশ্ন এই কুরআন আসলে কি বলতে চায় এবং এর বাণীগুলো যে সত্যিই মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে তারই বা কি যুক্তি হতে পারে? না সেটি অন্ধ বিশ্বাস করতে হবে? এ প্রশ্ন আসতেই পারে!

সে উত্তর কুরআন নিজেই দিয়েছে। কুরআনের দাবী হচ্ছে মানুষের ধর্ম সেই “ইসলাম বা আল্লাহর প্রতি আত্মসমর্পণ” যা সকল নবী রাসুলরা যুগে যুগে বলে আসছিলেন। সে ধারাবাহিকতায় সেটিকে পরিপূর্ণতা দিতে ইসলামের শেষ নবী মোহাম্মদ (স:) কে নবী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে এ বানীগুলো এসেছে। এই গ্রন্থের বানীগুলো মহাবিশ্বের স্রষ্টা থেকে এসেছে ঐশ্বরিক গ্রন্থ হিসাবে শেষ নবী মোহাম্মদ (স:) উপর ওহি নাজিল হয়ে প্রথমে বনি ইসমাইল জাতীর সামনে।

কুরআন বলে, “এভাবে আমি তোমাদের মধ্যে একজন রাসূল প্রেরণ করেছি তোমাদের মধ্য থেকে, যে তোমাদের কাছে আমার আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করে, তোমাদেরকে পবিত্র করে এবং কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেয়। আর তোমাদেরকে শিক্ষা দেয় এমন কিছু যা তোমরা জানতে না। সুরা ২: ১৫১

এখানে কেউ হয়তবা বলতে পারেন উপরোক্ত প্রশ্নগুলো তেমন কোন অর্থ বহন করে না,এটা আহামরি কোনো বিষয় নয় আমরা সবাই জানি এটি একটি ধর্মীয় গ্রন্থ এ নিয়ে আলোচনার দরকার নাই।” তবে আপনার উপলব্ধি যদি সত্যি এই সহজ সমীকরণে উপনীত হয় তাহলে আপনার জন্য লিখাটি নয় এখানেই কেটে পড়তে পারেন ।

আগেই বলে রাখি যে, বিস্তারিত ব্যাখার প্রয়োজনে  লিখাটি কিছুটা দীর্ঘায়িত করতে হচ্ছে, হয়ত দুই পর্বে শেষ করতে পারব।

কোরআন “আল্লাহর কালাম” কি না সে আলোচনার যাওয়ার আগে কোরআন সম্পর্কে আরো একটু ধারণা নেয়া দরকার। তখন বুঝতে পারব কোরআনকে আল্লাহর কালাম হিসাবে বিবেচনা করার দরকার আছে কি না।

আগেই উল্লেখ করেছি, কোরআন দাবী করে যে তার প্রতিটি বাক্য আল্লাহর বানী যা সপ্তম শতাব্ধীতে আরবের প্রাচিন শহর মক্কার বাসিন্ধা আব্দুল্লাহর পুত্র মোহাম্মদ (স:) এর মারফৎ এসেছে যিনি আল্লাহর মনোনীত বার্তাবাহকের বা রাসুলের দায়িত্বে নিয়োজিত হয়েছেন।

কোরআন একথাও বলে যে কালের পরিক্রমায় অতীতে যুগে যুগে আল্লাহতায়ালা মানবজাতির কাছে হেদায়েতের বাণী পৌঁছে দিতে কিছু মানুষকে বেছে নিয়েছেন। তাঁরা রাসুল ও নবী উপাধি দ্বারা বর্ণিত হয়েছেন। সেই মহান ব্যক্তিদের তালিকার মধ্যে সর্বশেষ হলেন মুহাম্মদ (সাঃ) যিনি প্রায় ১৪০০ বছর আগে এসেছিলেন।  আর সে ধারাবাহিকতায় ফাইনেল মেসেইজ হচ্ছে কোরআন।

কুরআনের সব কথার নির্যাস হচ্ছে এ পৃথিবীর মানুষের জন্য তার স্রষ্টা তাকে আমরণ অসীম এক জীবন দান করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন যেখানে মানুষ চিরদিন শান্তিতে থাকতে পারবে তবে সেজন্য তাকে কিছু সময়ের জন্য দুনিয়ার জীবন পার করতে হবে এবং এখানে তার এই সফরে পরীক্ষা নেওয়া হবে কর্মে ও আচরণে কে উত্তম  তা নির্ধারণ করতে এবং সে অনুযায়ী মানুষকে ফিল্টার করা হবে। সে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে সেই প্রতিশ্রুতির  জীবন লাভের সুযোগ পাবে আর যদি এ পৃথিবীতে সে পরীক্ষায় ব্যর্থ হয় তাহলে তার পরিণতি ভয়াবহ হবে এবং এই ভয় ভীতি দেখিয়ে বারবার তাকে সঠিক পথে চলে সে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার সতর্কবাণী দেয়া হয়েছে। আর এ উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য যে নিয়ন নীতি দেয়া হয়েছিল পূর্বে তারই ধাবাহিকতায় কুরআন হচ্ছে সে সব নিয়ন নীতির চূড়ান্ত সংস্করণ সেটিই হচ্ছে ইসলামের নীতি এবং এই ইসলামই একমাত্র আল্লাহর ধর্ম ।

এ পৃথিবীর মানুষের জন্য এই নবীদের প্রত্যেকের দাবি এতটাই গুরুতর যে,কোন চিন্তাশীল ব্যক্তি এ সম্পর্কে উদাসীন থাকতে পারেন না। কেননা আমাদের পথ প্রদর্শনের জন্য আমাদের নিজস্ব সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে একটি বার্তা এসেছে বলে যারা দাবী করলেন সে বিষয়টি এড়ানো যায় না। অতএব,আমাদের জন্য এই দাবিগুলি খতিয়ে দেখার দরকার যে এগুলো কোন অর্থবহ কি না (makes sense or not)। এ ক্ষেত্রে সঠিক ধারণার জন্য আমাদের কাছে একমাত্র খাঁটি ও নির্ভরযোগ্য তথ্য হল সর্বশেষ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে। সুতরাং,চূড়ান্ত মতামত গঠনের জন্য তাঁর সম্পর্কে তথ্য যাচাই করা উচিত। সেটি কেবল মাত্র তাঁর নবুয়তের সম্পর্কিত দাবীই নয়,অন্যান্য সমস্ত নবীদেরও সত্যতা নিশ্চিত করতেও,এটাই স্বাভাবিক প্রয়োজন। আর যদি তাঁর দাবী দৃঢ়ভাবে প্রমাণিত হয় তাহলে বাকী সমস্ত নবীর দাবিও এর দ্বারা নিশ্চিত হয়ে যাবে,কারণ শেষ নবী তাদের অনেকের দাবির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

সর্বশেষ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দাবির সত্যতা খুঁজে বের করতে তিনটি প্রধান যুক্তি হচ্ছে:

১) তাঁর চরিত্র,

২) বার্তা, এবং

৩) ভবিষ্যদ্বাণী

১) চরিত্রের কথা বলতে গেলে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৪০ বছর মক্কায় অবস্থান করেছিলেন সেটি ছিল মাত্র কয়েক হাজার লোকের বাসিন্দার শহর। এভাবে মক্কার লোকেরা তাঁকে খুব কাছে থেকে চিনত। তারা সকলেই একমত হয়েছিলেন যে তিনি ছিলেন এক অনবদ্য বা নিষ্কলঙ্ক চরিত্রের মানুষ,এবং তিনি আশেপাশের সবচেয়ে সত্যবাদী এবং নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি ছিলেন। এই বাস্তবতার কারণেই কুরআন তাকে নিয়ে মক্কার লোকদেরকে এভাবে সম্বোধন করার দরকার হয়েছে:

“আর বলো, যদি এটিই হতো আল্লাহর ইচ্ছা তাহলে আমি এ কুরআন তোমাদের কখনো শুনাতাম না এবং আল্লাহ তোমাদেরকে এর খবরও দিতেন না৷ আমি তো এর আগে তোমাদের মধ্যে জীবনের দীর্ঘকাল  অতিবাহিত করেছি, তবুও কি তোমরা বুঝতে পার না?” (অনুবাদ সুরা ১০.১৬)

তাঁর মিশনের একেবারে শুরুতে,একদিন তিনি সাফা পর্বত থেকে মানুষকে সম্বোধন করেছিলেন এবং বলেছিলেন: ‘যদি আমি বলি যে পাহাড়ের পিছনে শত্রুদের একটি বাহিনী রয়েছে যে আপনাকে আক্রমণ করার জন্য প্রস্তুত,আপনি কি বিশ্বাস করবেন?’উত্তরটি ছিল সর্বসম্মত ‘হ্যাঁ। তখন তিনি বলতে লাগলেন আমি সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রেরিত নবী আমার কাছে ওহি এসেছে  তোদেরকে জানাতে যে আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই এবং আপনারা যে মূর্তিগুলি উপাসনা করেন সেগুলি নিছক প্রাণহীন প্রতিমা এবং এজন্য সকলেই কেয়ামতের দিন তাঁর কাছে জবাব দিতে হবে। তখন,বেশিরভাগ লোক তাঁর শত্রুতে পরিণত হয়েছিল এজন্য নয় যে তারা ভেবেছিল তিনি তাদের সাথে মিথ্যা কথা বলছেন বরং তার কারণ ছিল তারা তাদের পূর্বপুরুষদের পৌত্তলিকতার ধর্মের বিরুদ্ধে কিছু শুনতে চায়নি।

মক্কার লোকদের মাঝে তিনি পরিচিত ছিলেন আল আস সাদিক (‘সত্যবাদী’) এবং ‘আল-আমিন’ (বিশ্বাসযোগ্য)নামে। তবে ইসলামের কারণে মক্কার লোকরা তাঁর প্রতি শত্রুতা এবং তাঁর অনুসারীদের উপর  অত্যাচার করলেও তাদের মূল্যবান জিনিসপত্র আমানত রাখতে কিন্তু তারা নবীকেই বেশী বিশ্বাস করত। তাই ইতিহাসে দেখা যায় এত কিছুর পরে যখন তাকে ইয়াতরিবের জন্য মক্কা ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছিল,তখনও মক্কার কাফেরদের মূল্যবান জিনিসপত্র তাঁর কাছে আমানত ছিল। সে সময় তিনি সেই মূল্যবান জিনিসপত্রগুলির মালিকদের কাছে সঠিকভাবে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য আপন চাচাত ভাই আলী (রা:) কে একা রেখে সে দায়িত্ব দিয়ে আসেন।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চরিত্রের এ বিষয়টি ততটা যুক্তিসম্মত ও বিশ্বাসযোগ্য না হতেও পারে তাদের কাছে যারা তার সাথে থাকার সৌভাগ্য হয়নি। আবার এ কথাও বলা যেতে পারে,ধর্মীয় লোকদের মাঝে তাদের ভক্তিভাজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্যগুলিকে অতিরঞ্জিত করার প্রবণতা দেখা যায়। এই যুক্তিতে কিছুটা শক্তি থাকা সত্ত্বেও,এটি বলা যেতে পারে যে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে এটি সঠিক নয়, কারণ তাঁর ক্ষেত্রে তাঁর  চরিত্রের মাহাত্ম্য নিশ্চিত করার সূত্রগুলি খুবই খাঁটি যা ইতিহাস প্রমাণ করেছে। তবে যাই হোক না কেন,মক্কার লোকদের পক্ষে তাঁর দাবী বিশ্বাস না করার কোন যুক্তি ছিল না,যেহেতু তিনি তাদেরই অন্যতম একজন ছিলেন।

২) কুরআনের বানীর সত্যতা প্রমাণের ২য় যুক্তিটি পাওয়া যায় রাসূলুল্লাহ (স:) এর উপস্থাপিত সেই বাণীতেই যা সেই বানী নিজেই বহণ করে। আমরা যদি নিরপেক্ষভাবে সে বার্তাকে অধ্যয়ন করতে চাই তাহলে প্রথমে আমাদের আস্তা থাকতে হবে যে সেই বার্তাটি ঐশী বানী যা নবী উপস্থাপন করছেন। তবে এর কোন মানে নাই এমন একটি বার্তাকে ঐশী বানী হিসাবে গ্রহণ করার তা যদি ইতিমধ্যে সময়ের পরিবর্তনে পরিবর্তিত হয়ে গিয়েছে বলে প্রমাণ মিলে। তবে এ ব্যাপারে আমাদেরকে আত্মবিশ্বাসী হতে সাহায্য করতে কুরআন সূরা হিজরে এভাবে আশ্বাস দেয়:

“নিশ্চয় আমি স্বয়ং এ কুরআন গ্রন্থ প্রেরণ করেছি এবং (এটি বিকৃতি হওয়া থেকে সুরক্ষিত রাখতে) আমি নিজেই এর সংরক্ষক – সুরা ১৫:৯ ।

এখানে প্রশ্ন আসতে পারে যে  এই দাবীটি সেই ব্যক্তি কেন গ্রহণ করবে যিনি কোরআনের সত্যতা সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত নন? এ প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে এ গ্রন্থটি আমাদের কাছে কীভাবে এসেছে তাও দেখতে হবে।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষকে কুরআন মুখস্থ করতে উৎসাহিত করেছিলেন। যারা এটিকে মুখস্থ করবে তাদেরকে আখেরাতে পুরস্কৃত করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। পাঁচটি ফরজ নামাজে কোরআন থেকে বিভিন্ন সুরা পাঁচ ওয়াক্ত পাঠ করতে হয়, যার মধ্যে তিনটিতে উচ্চস্বরে তেলাওয়াত করতে হয়,এভাবে মুখস্থ করার প্রক্রিয়াটি সহজতর হয়েছিল।

প্রতিটি সুরার আয়াতগুলো কবিতার মত ছন্দময়। যে ভাষা জানেনা তার পক্ষেও একটু চেষ্টা করে মুখস্থ করা সহজ হওয়ায় কোরআনের হাফেজ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে পাওয়া যায়। অতএব মুসলিমদের কাছে এটি অবাক হওয়ার মতো বিষয় ছিলনা যখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যান,তখন লিখিত পাঠ্য ছাড়াও এমন অনেক লোক ছিলেন যারা তাদের স্মৃতিতে সম্পূর্ণ কুরআনকে সংরক্ষিত করে রেখেছিলেন। আর এ প্রক্রিয়াটি পরবর্তী প্রজন্মের পর প্রজন্ম অবধি অব্যাহত থাকায় এযুগেও বিশ্বজুড়ে অসংখ্য লোক আছেন যারা এটি সম্পূর্ণ মুখস্থ করে রেখেছেন।

সমগ্র বিশ্বের সকল মুসলিমদের কাছে সর্বসম্মতিক্রমে কুরআনের সংস্করণ একমাত্র একটিই যার কোন পরিবর্তন হয় নাই এবং যা মুসলমানরা আল্লাহর গ্রন্থ হিসাবে দাবি করে। কুরআন বলে দাবি করা অন্য কোন পাঠ্যের কোনও চিহ্ন নেই পৃথিবীতে। এটি নিজেই একটি বস্তুনিষ্ঠ প্রমাণ যে এটি চৌদ্দ শত বছর আগে আল্লাহর কিতাব হিসাবে যে বাক্যে উপস্থাপিত হয়েছিল তা এখনও সেভাবে বিদ্যমান।

এখানে উল্লেখযোগ্য ও তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সম্পূর্ণরূপে সংরক্ষিত কোরআনের পাঠ্যগুলো (টেক্ট) যে সরাসরি সর্বশক্তিমান অল্লাহরই বাক্য এতে সন্দেহের অবকাশ নাই কেননা বাইবেলের মত নয় যে বাইবেলে ঐশরিক প্রদত্ত মূল অনুপ্রেরণা ভিত্তিক ভাবার্থগুলা প্রকাশের শব্ধ চয়ন হচ্ছে বাইবেল লেখকদের নিজেদের। তাই বাইবেল পাঠ্যের কোনও সমস্যা সম্পর্কে যদি কোনও ইহুদী বা খ্রিস্টানকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তবে তিনি আপনাকে খোলামেলাভাবে বলতে পারেন যে লেখক হয়তবা কোনও ভুল করেছেন,কারণ তিনিও একজন মানুষ। আর সে কথা বলায় তাদের বই সম্পর্কে যে ঐশ্বরিক দাবি করা হচ্ছে তাও কোনোভাবেই তেমন হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে না তাদের জন্য। কিন্তু মুসলিমদের জন্য সে সুযোগ নাই।  কুরআনের প্রতিটি বাক্য যে একমাত্র আল্লাহর কালাম তা দাবী করে  ১৪০০ বছর পার হয়ে গেলেও এর কোন টেক্ট এর ব্যাপারে প্রশ্ন উঠলে বাইবেল বা তাওরাতের মত সে ধরনের কোন ব্যাখা দেয়া সম্ভব নয়। এছাড়াও কোরআনের আরো বেশ কয়েকটি দিক রয়েছে যা যাচাই-বাছাই করা সম্ভব এর সত্যতা বুঝতে।

প্রথমত: কুরআনের ভাষা ক্লাসিক্যাল আরবি এবং  কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার সময়ের ভাষাও ছিল সেই আরবি। বইটি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপস্থাপন করেছিলেন,যিনি ছিলেন নিরক্ষর অর্থাৎ পড়তে বা লিখতে জানতেন না। কুরআনেও এই বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে:

“আপনি তো এর পূর্বে কোন কিতাব পাঠ করেননি এবং স্বীয় দক্ষিণ হস্ত দ্বারা কোন কিতাব লিখেননি। এরূপ হলে মিথ্যাবাদীরা অবশ্যই সন্দেহ পোষণ করত।” সুরা ২৯: ৪৮

হুদাইবিয়ার ঘটনায় একই ঘটনা ঘটে, বলা হয় যখন মক্কার কুরাইশ ও মুসলমানদের মধ্যে যে চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার কথা ছিল সে চুক্তির শিরোনাম নিয়ে কুরাইশরা আপত্তি তুলেছিল।

এতে লিখা ছিল: “এটি মক্কার কুরাইশ এবং আল্লাহর রাসুল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মধ্যে একটি চুক্তি”। তখন কুরাইশের নেতারা আপত্তি করেছিলেন এই বলে যে শিরোনামে যা দাবি করা হয়েছে সেটাই তো হল আমাদের দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধের আসল বিষয় তাই “আল্লাহর রাসুল” এ কথা লিখা যাবেনা। চুক্তির লেখক, আলী (রাঃ), নবীর অন্যান্য সাহাবীদের মতো,পরিবর্তিত প্রস্তাবটি অন্তর্ভুক্ত করতে নারাজ কারণ তিনি মনে করেছিলেন যে এটি তাঁর বিশ্বাসের বা ঈমানের দাবীর পরিপন্থী। কিন্তু নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনুভব করেছিলেন যে কুরাইশদের এ প্রস্তাবটি যুক্তিসঙ্গত তখন আলীর (রা:) চুক্তির সে প্রাসঙ্গিক বিবৃতি মুছে ফেলতে অনীহা দেখে তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন যে বিতর্কের বাক্যটি কোথায় লেখা ছিল যাতে তিনি নিজেই মুছে ফেলতে পারেন। সেই ঘটনাটিতে এটি প্রকাশ পায় যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে পড়তে জানেন না।

নবীর সময় আরব সমাজে কবিতা রচনা করা ও কবিতা বলা একটি মহান পেশা হিসাবে বিবেচিত হত। প্রতিবছর মক্কায় কবিতার প্রতিযোগিতা থাকত এবং বিজয়ী কবির কবিতার সম্মান প্রদর্শনে তাঁর কবিতাকে এক বছরের  জন্য কা’বার দেওয়ালে ঝুলিয়ে দেওয়া হত। এ জাতীয় কাব্যগ্রন্থের সংকলন ‘মুআল্লাকাত’ (ঝুলন্ত) নামে পরিচিতি ছিল। সেই প্রশংসিত কবিদের কয়েকজন ছিলেন ইমরূ আল-কাইস, তারাফা (Tarafa), জুহায়ার (Zuhayr),লাবদ(Labīd),’অন্তরা ইবনে শাদ্দাদ( ‘Antara Ibn Shaddad),আমর ইবনে কুলথুম (‘Amr ibn Kulthum) এবং হারিথ ইবনে হিলিজা যাদের কাব্য রচনা কা’বার দেওয়ালে ঝুলানো হত। তাদের ভাষার সৌন্দর্য ও সাহিত্যিক ঐশ্বর্য নিয়ে আরবদের অহংকার এতটাই ছিল যে তারা আরবের বাহিরের লোকদেরকে  আজমি অর্থাৎ “বোকা” বলে আখ্যাত করত। এদের মধ্যে প্রখ্যাত একজন ছিলেন লাবদ,তিনি পরে মুসলিম হয়ে কবিতা ছেড়ে দেন। লাবদ যখন দ্বিতীয় খলিফা উমর (রঃ) জিজ্ঞাসা করলেন যে তিনি কেন কবিতা নিয়ে যেভাবে আগে জড়িত থাকতেন তা ত্যাগ করেছেন? তখন তিনি জবাব দিলেন: ‘কুরআনের পরেও কি আমার পক্ষে তা সম্ভব হতে পারে?’

তৎকালীন আরব সমাজের সাহিত্যে কাব্যের এ পটভূমির বিবেচনায় দেখা যায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কবিতা বলার কিংবা  লেখা ও পড়ার কোন প্রশিক্ষণ ছিলনা। তাছাড়া কবিতার প্রতি তাঁর তেমন কোন ঝোঁক ছিল না। এই পটভূমিতেই চল্লিশ বছর বয়স পার হয়ে তিনি আরব কুরাইশদের  সামনে এই প্রথম যখন আরবি ভাষার এক অসাধারণ বর্ণসামঞ্জস্য ও ছন্দের ঐকতান দিয়ে কোরআনের বার্তা পেশ করেছিলেন যা তাদের কাছে যেন ছিল এক দুঃস্বপ্ন কারণ তাদের পুরাণো ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত্তিকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল। শুধু তাই নয় ধর্ম ব্যবসা, মূর্তি বিক্রির সাথে বিভিন্ন অর্থনৈতিক স্বার্থে আঘাত দেখছিল। তাই কুরআনের বার্তাকে কুরাইশ নেতারা তাদের সমাজের ঐতিহ্য ও পূর্বপুরুষদের বিশ্বাসের উপর চরম হুমকির বার্তা দেখে তা ধ্বংস সাধনের চেষ্টা করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। সে প্রেক্ষিতে বইটির সত্যতা চ্যালেঞ্জ করে তাদের ভাগ্য পরীক্ষা করতে কুরআন তাদেরকে সম্বোধন করে এইভাবে :

“এতদসম্পর্কে যদি তোমাদের কোন সন্দেহ থাকে যা আমি আমার বান্দার প্রতি অবতীর্ণ করেছি, তাহলে এর মত একটি সূরা রচনা করে নিয়ে এস। তোমাদের সেসব সাহায্যকারীদেরকে সঙ্গে নাও-এক আল্লাহকে ছাড়া, যদি তোমরা সত্যবাদী হয়ে থাকো। [সুরা বাকারা ২:২৩]”

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বিরোধী পক্ষরা ছিলেন কাব্য সাহিত্যে সমৃদ্ধ ও পারদর্শী  সেই শত্রুদের কাছ থেকে আশা করা যাচ্ছিল যে কুরআনের দেয়া এ চ্যালেঞ্জের সুযোগটি তারা নিতে সক্ষম হবে। কিন্তু তখন বা পরে আজ পর্যন্ত এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণে কেউ এগিয়ে আসতে পারেনি।

এবার আসুন বইটির বক্তব্য ও ভাষাকে অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে দেখি।

চলবে ……....

 

Note:
It is true that the message of Quran is an argument or persuasion towards the way of God.

 

Comments are closed.