যে চিন্তা সময় থাকতে না করলেই নয়!

বিশ্বাস করা ছাড়া দুনিয়ার একটি মানুষও চলতে পারে না। স্ত্রী স্বামীকে, স্বামী স্ত্রীকে বিশ্বাস না করলে সে সংসার টিকে না, বিশ্বাসহানি ঘটলে বন্ধুত্বও থাকেনা, ব্যবসাও ঠিকতে পারেনা, রাজনৈতিক দলগুলোও হয় ভেঙ্গে খণ্ড বিখণ্ড। এ’ তো গেল দুনিয়ার জীবনে অবিশ্বাসের করুণ পরিণতির কথা! কিন্তু মৃত্যুর পর আরেক জীবনে প্রবেশ করতে হবে! সে কথা অবিশ্বাস করলে তার পরিণাম কি হতে পারে সেই চিন্তা ক’জন মানুষ করে? মাটি থেকে যে মানুষের সৃষ্টি এটা মানুষ বিশ্বাস করে। কিন্তু মৃত্যুর পর সেই মাটি থেকেই যখন মানুষকে পুনরায় পরকালে জীবিত করে তুলা হবে তখন তাদের জন্য কি পরিণতি অপেক্ষা করছে? সে ক কথা ক’জন মানুষ চিন্তা করে! আর কয় জন মানুষ প্রকৃত অর্থেই তা বিশ্বাস করে?

আমরা দেখি জীবন থেকে জীবনের সৃষ্টি। মায়ের পেটের জীবনের কথা স্মরণ করুন। মায়ের পেটে বসে পৃথিবীকে অস্বীকার করা যায় ঠিকই কিন্তু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর সে পৃথিবী কি বাস্তবে রূপ নেয় না? পৃথিবীর অবিশ্বাসী মানুষেরা পরকালকে সন্দেহের চোখে দেখছে কিংবা অবিশ্বাস করছে কিন্তু মৃত্যুর পর সেই পরকালই যখন বাস্তব হয়ে দেখা দিবে তখন অবিশ্বাসীদের পৃথিবীতে ফিরে আসার উপায় থাকবে কি? যেমন থাকেনা পৃথিবী থেকে মায়ের পেটে ফিরে যাওয়া!

দুনিয়ার কোন জিনিসও দুর্ঘটনায় সৃষ্টি হয় না। দুর্ঘটনায় সৃষ্ট করা জিনিস ধ্বংস হয়, তৈরি হয়না। অবিশ্বাসীরা বলে এ পৃথিবী নাকি সৌরজগতের কোন এক রেন্ডম দুর্ঘটনার পরিণতি। যদি তাই হয় তা’হলে পৃথিবীর অবিশ্বাসীরা অন্তত একটি হলেও উদাহরণ দিক যে অমুক জিনিসটা দুর্ঘটনায় তৈরি হয়েছে। তারা কি এর উদাহরণ দিতে পারবে? পারবেনা- পারবে শুধু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের হিরোশিমা নাগাসাকি, মধ্যপ্রাচ্যের লেবানন-ফিলিস্তিনে, আফগানিস্তান আর বিংশ শতাব্দীর ইরাক লিবিয়ার মত ধ্বংসযজ্ঞ উপহার দিতে।

দুটি চুম্বক পরস্পর পরস্পরকে আকর্ষণ করে আবার বিকর্ষণও করে এটা মানুষ বিশ্বাস করে বাস্তবতার নিরিখে কারণ আকর্ষণ বিকর্ষণ তো চোখে দেখা যায় না।যে জিনিস চোখে দেখা যায়না তাকে কেন মানুষ বিশ্বাস করে? তারা বলবে এ আকর্ষণ বিকর্ষণ চোখে দেখা না গেলেও যেহেতু তা ইন্দ্রিয় অনুভবের মাধ্যমে বোঝা যায় তাই মানুষ থাকে বিশ্বাস করে। তাহলে প্রশ্ন মানুষ স্রষ্টার আবিষ্কারে তার পঞ্চ ইন্দ্রিয়কে কতটুকু ব্যবহার করেছে? স্রষ্টার অস্তিত্ব কি পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের বাহিরে? মানুষ তার বুদ্ধি এ চিন্তাশক্তিকে কতটুকু ব্যবহার করেছে স্রষ্টার অস্তিত্ব আবিষ্কারে যতটুকু না ব্যবহার করেছে পারমানবিক অস্ত্র এ মানবতা বিধ্বংসী মারণাস্ত্র আবিষ্কারের পেছনে।

মানুষেরা অসংখ্য প্রজাতির ফুলে ভরা একটি বাগান পরিদর্শন করলো। বাগানের মালিকের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলো কিন্তু মানুষেরা না সে মালিককে চিনে না তাকে সে বাগানে কাজ করতে দেখেছে। সেই মানুষেরা আবার দিগন্ত রেখায় পৃথিবীর নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করল, পাহাড় পর্বত দেখলো, পাহাড়ি গাছ পালা ও পাহাড়ি ঝর্ণা দেখলো, সূর্যাস্ত দেখলো, পাখির সুমধুর কলতান উপভোগ করলো, নদী-সাগর অপলোক নয়নে চেয়ে দেখলো কিন্তু কে এ সবের স্রষ্ট ? এ প্রশ্ন মনে উঁকি
না! সে মানুষেরা কোন দিন কি স্রষ্টার দেখা পাবে কি? মানুষ বাগানের নেপথ্যে “মালীর” অস্তিত্বকে স্বীকার করে কিন্তু বিশ্ব ও প্রাকৃতিক স্রষ্টাকে সামনে পেয়েও দেখতে পায় না! এ কথাই কোরআনে বর্ণিত হয়েছে এভাবে “আসমান ও জমিনে বহু নিদর্শন রয়েছে যেগুলো তারা অতিক্রম করে যায় কিন্তু সে সম্পর্কে তারা কোন চিন্তা ভাবনা করে না।” সুরা ইউসুফ: ১০৫)

আসলে মানুষের চোখ অন্ধ হয় না – অন্ধ হয় তার বিবেক, অন্ধ হয় চিন্তা শক্তি, অন্ধ হয় মানুষের মন! (চলবে..)
[youtube]http://www.youtube.com/watch?v=0lJEYWOdjUo&feature=player_detailpage[/youtube]

 

Loading


Comments

যে চিন্তা সময় থাকতে না করলেই নয়! — 5 Comments

  1. {doctor} ডাঃআইজ উদ্দিনের মিল কেন?
    কি যে বলেন ভাই!
    ওনার সাথে কি আমার চিন্তার মিল আছে নাকি?

  2. চলবে ইনশাল্লাহ, সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। গানের ভিডিওটা শুনেছেন তো? It is a wonderful world! কিন্তু আমরা এর স্রষ্টাকে খোজতে চাইনা!

    • জি শুনেছি!

      তয় ডাক্তার সাব আমার একখান প্রশ্ন আছিল! আপনার নামের সাথে আমুর ডাঃআইজ উদ্দিনের মিল কেন? আপনি কি আইজু!

মন্তব্য দেখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *