মাদ্রাসা ও ওয়াজ মাহফিলে রাজনীতি ও রাষ্ট্রচিন্তা এবং প্রবাসীদের উদ্বেগ !

সাম্প্রতিক দেশে ওয়াজ মাহফিলে রাজনীতি নিয়ে দেশ ও প্রবাসের সংবাদ মাধ্যম ও অতি প্রগতিশীলতার “লালে লাল গোষ্টি” র হুঙ্কার দেখে দেখে মনে হয়েছে দেশ গেছে-এবার আর রক্ষা নাই; ওয়াজী মৌল্ভীরা বুঝি ক্ষ্মতা দখল করে নিয়ে ব্যার্থ রাষ্ট্র বানিয়ে ফেললো। উনাদের দোষ হচ্ছে ‘ওয়াজ মাহফিলে সরকার বিরুধী প্রচারনা হয়, অন্য ধর্মের প্রতি বিষোদ্গার, নারীর প্রতি চরম বিদ্বেষ ছড়ানো, মাদ্রাসা মক্তবে বলাৎকার ইত্যাদি ইত্যাদি হচ্ছে; কোন কোন ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে সরকারও ওদের কাছে নতজানু নীতি গ্রহন করেছে; সুতরাং এ সমস্থ রুখতে হবে।“ । প্রিয় পাঠক চলুন খুবই সংক্ষিপ্ত ভাবে ব্যাপারটাকে একটু তলিয়ে দেখি ।

একঃ ওয়াজ মাহফিল কি ? মাহফিলে রাজনীতি হারাম কি না ? অথবা ওয়াজে রাষ্ট্চিন্তা করা সাংবিধানিক বা রাষ্ট্রীয় আইনের পরিপন্থী কি না ? অতি প্রগতিশীল ও কিছু প্রগতিশীলদের মতে ওয়াজ মাহফিলে দুনিয়াদারির কথা বলা যাবে না –ওটা একান্তই ধর্মের ব্যাপার। কেঊ কেঊ বলেন পৃথিবীর কোন দেশে ওয়াজ মাহফিল হয় না বা হলেও ওখানে রাজনীতি হয় না।
ঊত্তরে বলা যায়ঃ সাধারন্যের ধারনা মতে অথবা Expectation হল ওয়াজ হচ্ছে যেখানে ইমান, আখলাক ইহকাল পরকাল নিয়ে আলোচনা হবে, কি করলে বেহেশত পাবেন আর কি না করলে দোজখ এড়াতে পারবেন। ঞ্জানীদের কাছে এর মুল্য অপরিশীম এজন্য যে এই একটাই মাহফিল যেখানে ব্যাক্তির চরিত্র গঠন থেকে শুরু করে রাস্ট্রের চরিত্র গঠনে আলোচনা হয় , ধর্মীয় আলোকে দিক নির্দেশনা হয়, রাষ্ট্ উন্নয়নে নাগরিকের অংশ গ্রহনে মটিভেশন হয় এবং রাস্ট্রীয় দুর্যোগে বিশ্বাসীরা সর্বশক্তিমানের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন। ওয়াজ মাহফিলে রাজনীতি বা রাষ্ট্রচিন্তা করা যাবে না সেটা সংবিধান বা কোন আইনে বলা হয় নাই। অতিপ্রগতিশীল ও কিছু প্রগতিশীলদের ধারনা রাষ্ট্রচিন্তা বা রাজনীতি তাদের পৈতৃক সম্পত্তি- অন্য কোন নাগরিকের রাষ্ট্রচিন্তা বা রাজনীতি করার অধিকার নাই। সুতরাং মৌল্ভীরা ও মাদ্রাসার ছাত্ররা শুধু ধর্ম কর্মতে সীমাবদ্ধ থাকবে। ওয়াজ মাহফিলে রাষ্ট্রচিন্তা করা কি হারাম? না একটুও হারাম না, ইসলাম শুধুই একটি ধর্ম না, ইসলাম হচ্ছে একটি পুর্নাংগ জীবন বিধান ; যারা ইসলাম বুঝেন না বা ইসলাম নিয়ে একটুও ঞ্জান নাই তারাই শুধু এটাকে একটি ধর্ম বলে সীমা রেখা টেনে দেওয়ার চেস্টা করেন ।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপর ভিত্তি করে মুসল্মানরা অর্ধেক দুনিয়া শাসন করেছে-সুতরাং ইসলাম শুধু মসজিদের ধর্ম এটা কোন আহাম্মক ও মানতে রাজী না।
কথা হচ্ছিল ওয়াজ নিয়ে তাই চলুন একটি চমকপ্রদ ওয়াজের উদাহরন টানি। এই কানাডার টরন্টোর মেট্রো কনভেনশন সেন্টারে পৃথিবীর বড় বড় কনফারেন্স হয়, এক্সিভিশন হয়। এক একটি অনুস্টানে মিলিয়ন ডলার খরছ হয়। প্রতি বছর ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে মেট্রো কনভেনশন সেন্টারে এক নাগাড়ে ৩ দিন ওয়াজ হয়। আতকে ঊঠলেন ? হে এখানে ওয়াজ মাহফিল হয়। লক্ষ লক্ষ ডলার খরছ করে বিশ্বের সেরা স্ক্লারদেরকে এখানে নিয়ে আসা হয়। স্রোতা কারা ? বিশ্বের বাঘা বাঘা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে হাজারো বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুন যুবক ছাত্র ছাত্রীরা মাইনাস ২৫/৩০ ডিগ্রী শীত উপেক্ষা করে এখানে ওয়াজ শুনতে আসে। বড়দিনের আর নিউইয়ার’স প্রাক্ষালে যখন পুরো নর্থ আমেরিকা পানাহার নিয়ে ব্যস্থ তখন এই যুবক যুবতীদের দেখে শুধু একটি প্রশ্ন মনে আসে কি এমন নেশা এই ওয়াজে। Reviving the Islamic spirit নামের এই ওয়াজে আমি কানাডার বিরুধী দলের তুখোড় নেতা প্রয়াত জ্যাকলেটন কে বক্তব্য দিতে দেখেছি, টরণ্টোর অনেক কাউন্সিলর ও এম পি কে দেখেছি , ব্রিটিশ সাংবাদিক রবার্ট ফিস্ক কে দেখেছি , নও মুস্লিম স্ক্লারদেরকে দেখেছি , স্ক্লার তারেক রামাদান কে দেখেছি , হামজা ইউসুফকে দেখেছি , কেট স্টিভেন ও এসেছেন। হে ওখানে আন্তর্জাতিক পলিটিক্স নিয়ে বিশদ আলোচনা হয় ,পশ্চিমা নীতি আলোচনা হয় , টেরোরিস্ট মৌলবাদ নিয়ে কথা হয়, ইসলামোফবিয়া নিয়ে কথা হয় এবং মুসলমানদের দোষ ত্রুটি নিয়ে কথা হয় , কিভাবে অসাম্প্রদায়ীক সমাজ সৃষ্টিতে মুসলমানরা অবদান রাখবে তা নিয়ে দিক নির্দেশনা হয়। একটি সুন্দর সহনশীল পৃথিবী গঠনে বিশ্ব মুসলিমদের দায়ীত্ব ও কর্তব্য নিয়ে আলোচনা হয়। হে এই সব করার মাধ্যমে কিভাবে দুনিয়া ও পরকালের মুক্তির সাথে কো-রিলেশন হয় তা বিশদ ভাবে আলোচনা হয়। সুতরাং এখানে রাষ্ট্রচিন্তা-রাজনীতি-ধর্মনীতি-সমাজনীতির কোনটারই অনুপস্থিতি দেখি না। কোন রাস্ট্র বা রাজনৈতিক দল তা বন্ধ করার কথাও বলে না।
বুঝতে পারলাম এই ওয়াজ তো হল উন্নত বিশ্বের উন্নত বক্তা আর শ্রোতা দিয়ে সাজানো কিন্তু বাংলাদেশের সাথে এর তুলনা হয় কি করে, তাই না? আমি একমত-কোন ভাবেই এর তুলনা করা যায় না । তবে ওয়াজের Concept কিন্তু একই। শত শত বছর ধরে আমাদের সমাজ দেহে যে কু সন্সকার- আর নৈতিক অবক্ষয় দেখি তা কিন্তু এক দিনের ঘৃনা আর অবজ্ঞা থেকে সৃস্টি হয় নাই। মক্তব শিক্ষা, মাদ্রাসা শিক্ষাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে দূরে রাখা হয়েছে; আধুনিকরনতো দুরের কথা ক্রমাগত দূরে ঠেলে দিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে “ মোল্লা শ্রেনী বা গোষ্টি” (প্রগতিশীলদের ভাষায়), সেই বৃটিশের স্টাইল আর প্রগতিশীলদের নাক সিটকানো মোল্লা গোষ্টি শুধু জন্ম মৃত্যু আর দোয়া কালামে থাকবে সীমাবদ্ধ; ওরা অস্পৃশ্য, সমাজের আর কোন স্তরে ওদেরকে বসানো যায় না। ওরা সরকারী চাকুরী, অফিস আদালতে বড়ই অযোগ্য ও বেমানান-এই তকমা লাগিয়ে দিয়ে এক “শ্রেনী সৃষ্টি” করা হয়েছে। তাই জীবন জীবিকার প্রয়োজনে, বাচার প্রয়োজনে মাদ্রাসা মক্তব থেকে বের হওয়া যুবকরা উপায়ান্তর না দেখে ওয়াজ মাহফিল আর দোয়া কালামে নিজের রুটি রোজগার ভাগ্যকে বরন করে নেয়। ওয়াজ মাহফিলে দুনিয়া আখেরাতের পাশাপাশি রাষ্ট্রচিন্তা আর রাজনৈতিক সচেতনতায় উদবুদ্ধ যুবকরা এই রাস্ট্রীয় বিমাতা সুলভ আচরনে ক্ষুব্ধ, আর এই ক্ষুব্ধতার বহিঃপ্রকাশ ঘটে তাদের ওয়াজ মাহফিলে। অন্য ভাষায় বলতে গেলে এটার নামই “শ্রেনী সংগ্রাম”। এই যুবকদের কিছু অংশকে খুব সহজেই বিভিন্ন স্বার্থান্নেষী মহল ব্যাবহার করে ইসলামের অপব্যাখ্যা দিয়ে; কিছু অংশ সামজিক ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের শিকার হয়ে অন্য ধর্মের বিরুদ্ধে কুতসা, নারীর প্রতি অবমাননাকর ওয়াজ-মাহফিলে হয় লিপ্ত। এই সুযোগকে কাজে লাগায় অতিপ্রগতিশীল গোষ্ঠী । এই কিছু অংশের কর্ম কান্ডকে ফলাও করে মিডিয়ায় প্রকাশ করে পুরো মসজিদ মাদ্রাসাকে এক ঘরে করে দীর্ঘ দিনের কু পরিকল্পনা চালানো হয়ে থাকে। বার বার সন্ত্রাসী হিসাবে মাদ্রাসা ছাত্রদেরকে চিন্হিত করনের প্রচেস্টা করে ব্যর্থ হতে হয়েছে ।উদাহরন স্বরুপ বলা যায় – সাম্প্রতিক কালে দেশে যে সন্ত্রাসী হামলা হয়(গুলশান-হলি আর্টিসান) তাতে কোন মাদ্রাসা ছাত্রের সংশ্লীষ্টতা পাওয়া যায় না। তারপরও দেশ স্বাধীন হওয়ার ৫০ বছর হয়ে গেলেও দেশের এই গুরুতর সমস্যায় কেঊ এগিয়ে আসে নাই ।
২০০৬ সালের জরিপ মতে বাংলাদেশে কওমি মাদ্রাসা ছিল ৬৪০০০ হাজার আর শিক্ষক ছিলেন ২ লক্ষ , ছাত্রদের সংখ্যা হচ্ছে ৪০ লক্ষ। বর্তমান হিসাব আমার জানা নাই। সর্ব সাকুল্যে ১ কোটি তো হবেই। এই ১ কোটি নাগরিকের ( শিক্ষিত ছাত্র ছাত্রী) মেধা আর কর্মক্ষমতাকে ছোট করে দেখার ফুরসত রাষ্ট্রের থাকা উচিত নয়। বাংলাদেশের যুব শক্তি হচ্ছে ৩৫% । এই ৩৫% এর এক বিরাট অংশ মাদ্রাসা শিক্ষায় জড়িত। একটি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের মধ্যে দেশকে দেওয়ার মত যে কর্ম স্পৃহার জাগরন ঘটে ফাজিল টাইটেল পাশ একজন ছাত্রের মধ্যে একই চিন্তা চেতনার কোন কমতি থাকে না। একজন জীব বিজ্ঞানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রী নিয়ে কাজ করবে জন প্রশাসনে তাতে কোন সমস্যা হবে না কিন্তু একজন মাদ্রাসায় উচ্চতর ডিগ্রী নিয়েও মাদ্রাসায় শিক্ষকতা আর ওয়াজ মাহফিল এর বেশী কিছু করতে দেওয়া হবে না –এটা অন্যায়-এটা রাস্ট্রীয় বৈষম্য- এই বৈষম্য’র পরিবর্তন না আনলে আমাদের সমস্যার Root Cause বিনাশ হবে না। এরা এই দেশের নাগরিক। ওদেরকে জাতীয় সম্মুখ সংগ্রামে –উন্নয়নে সম অধিকার দিলে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে তাতে সন্দেহ নাই। হে আজ যে সমস্যার কথা সবাই বলছেন তার উত্তর হচ্ছে মাদ্রাসা শিক্ষাকে আধুনিকরন করে ছাত্রদেরকে ব্যাপক ভাবে Engage করে নেওয়া।

আজ দেশে অনেক অন্তর্জাতিক মানের নামী-মাওলানা রয়েছেন। উনাদের দেশ প্রেম , আধুনিক চিন্তা ভাবনা জাতির উন্ননে এক বিরাট অবদান রাখতে সর্বদা সচেষ্ট বলে বিজ্ঞজনরা মনে করেন। নাগরিকের নৈতিক অবক্ষয় ঠেকাতে উনাদের বিকল্প খুবই কম । একটি উদাহরন দেই – দেশে যাত্রা গানের নামে যা হচ্ছে তা একটি যুব সমাজ ধ্বংস করতে যথেস্ট। শুধু আইন করে এই সমস্যার সমাধান হবার নয়- প্রয়োজন ধর্মীয় মুল্যবোধ জাগ্রত করা আর ধর্মীয় মুল্যবোধ জাগ্রত করনে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত আলেম উলামাদের সাহায্য নিয়ে গঠন মুলক ওয়াজ মাহফিল এবং তা মিডিয়ার প্রচারনা করা হচ্ছে প্রাথমিক ও মুখ্য পদক্ষেপ । প্রতিটি ধর্ম তার নিজস্ব স্বকীয়তায় উজ্জ্বল , প্রতিটি ধর্ম সৎ কর্ম , সৎ কাজে উৎসাহিত করে। আমরা যারা আজ ৪০/৫০ এর কোটায় পৌছে গেছি তাদের কোমল মানষ পটে চরিত্র গঠনের , ইমান আখলাক, মা বাবার প্রতি শ্রদ্ধা , শিক্ষকের প্রতি শ্রদ্ধা, প্রতিবেশীর প্রতি দায়ীত্ব, অসাম্প্রদায়ীক মনোচেতনা- একত্ববাদে বিশ্বাস ইত্যাদীর প্রথম অমোচনীয় সীলটা মারা হয়েছে মক্তব,প্রাইমারী শিক্ষা,মাদ্রাসা শিক্ষা, মন্দির,গীর্জার সেই প্রথম দিনের ছবক গুলোতে। আধূনিক সমাজ ব্যাবস্থায় মক্তব মন্দিরে আর গীর্জার পরিবর্তে কাক ডাকা ভোরে বাচ্চাকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে প্রি স্কুলে বা কিন্ডারগার্টেনে। ধর্মীয় শিক্ষা ও ধর্মীয় মুল্যবোধ যা ব্যাক্তির জীবনকে একটি ফাইন্ডেশনের উপর দাড় করিয়ে মানুষ হতে সাহায্য করে তা আজ বিলীন হতে চলেছে কিন্তু কারো কোন ভ্রুক্ষেপ নাই।

বিগত ৫০ বছরে কোন সরকার এই শক্তিকে কাজে লাগানোর কোন পজিটিভ চিন্তা করে নাই । এই প্রথম বারের মত বর্তমান সরকারের প্রধান মন্ত্রী দেশের গুরুতর সমস্যা কিছুটা আঁচ করতে পেরেছেন বলে মনে হয়। তার উদ্যোগে দেশের বিশিষ্ট আলেমদের মতামতের মুল্য দেওয়া হচ্ছে, মাদ্রাসা শিক্ষাকে আধূনিকরনে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এক কথায় তিনি দেশের এক বিরাট শিক্ষিত জন শক্তিকে কাজে লাগানোর যে প্রচেস্টা শুরু করেছেন , দেশের আলেম উলামাদেরকে মেইন স্ট্রিমে Engage করার যে উদ্যোগ নিয়েছেন সেইটাই হবে সমস্যা সমাধানের আসল হাতিয়ার। একটি প্ত্রিকায় পড়েছিলাম “Prime Minister Sheikh Hasina has been honoured with the title “Mother of Qawmi.” এটা পজিটিভ সাইন। কিন্তু ভয় হয় যখন দেখি সরকারের এই উদ্যোগকে অতি প্রগতিবাদীরা “ মৌ্লভীদের কাছে সরকারের নতজানু নীতি” বলে ব্যাপক প্রচার শুরু করেছে।

দুইঃ প্রবাসী হিসাবে আমরা আর কিছু না পারলেও দেশের ইস্যু নিয়ে সর্দাই সরব । এক ব্রাম্মন পন্ডিত বলেছিলেন “ বাংগাল মনুষ্য নয় ভিন্ন এক জন্তু / লাফ দিয়ে গাছে ঊঠে লেজ নাই কিন্তু”, এ কথা আমরা প্রবাসীর ক্ষেত্রে ব্যাপক ভাবে প্রযোজ্য বলে মনে হয়। মোল্লারা দেশ নিয়ে গেল বলে যে জিকির আপনি আমি মিডিয়াতে দেখে লাফাই সেই সমস্যার সমাধানে আমাদের চিন্তা করাটা উচিত। মনে রাখবেন আপনি যখন সমস্যা সমাধানে কথা বলবেন তখন আপনার পোষ্টে লাইক আসবে গুটি কয়েক আর আপনি যখন মক্তব মাদ্রাসার বিরুদ্ধে লিখবেন তখন লাইক পরবে ১ হাজার , বাহবা আসবে ২ হাজার- এটার নামই পেছনে বসে আপনাকে দিয়ে ইসলাম বিদ্ধেষ চরিতার্থ করা আর সমস্যাকে জিয়িয়ে রাখা । আপনি প্রবাসে বা উন্নত দেশে বসবাস করবেন আর অনুন্নত দেশের নাগরিকের মত এখানে বসে ওখানের ভুত তাড়াবেন তা বেশ অশোভন। আপনার কলম দিয়ে আসুক উন্নত বিশ্বের উদাহরন যা দিয়ে সরকার ও দেশের জনগন উপকৃত হবে। আমাদের মনে রাখা উচিত ওয়াজ নসিহতকারী আর মক্তব মাদ্রাসার ছাত্র শিক্ষকরা এ দেশের শিক্ষিত নাগরিক ঊনারা ভেসে আসা রোহিঙ্গা নয়। সুযোগ সৃষ্টি করে দিলে ওরাও নিজ দেশের উন্নয়নে এক্টুও পিছিয়ে থাকবে না বরং রাষ্ট্রের উন্নয়নের সাথে সাথে রাস্ট্রের চরিত্র গঠনে রাখতে পারবে অগ্রনী ভূমিকা। আমি আশা করছি দেশ ও প্রবাসের সকল নাগরিকের টনক নড়বে।

Loading

ফয়জুল হক

About ফয়জুল হক

লেখক কানাডা প্রবাসী এবং ক্যানাডাবিডিনিউজ ডটকম’র সম্পাদক।

মন্তব্য দেখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *