ভবিষ্যতের রূপরেখা আছে, নেই

স্বপ্ন
বঙ্গবন্ধুর শাহাদতবার্ষিকী পালিত হলো ১৫ আগস্ট। এ দিন সকল দৈনিক পত্রিকায় বঙ্গবন্ধুর ওপরে এবং ১৫ আগস্টের দুর্ঘটনার ওপরে কলাম বা প্রবন্ধ ছিল। থাকাই স্বাভাবিক। ১৪ আগস্ট ও ১৫ আগস্ট প্রায় সব টেলিভিশন চ্যানেলে নিবিড় ও ব্যাপক আলোচনা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর শাসনামল, তার রাজনৈতিক সংগ্রাম ও ত্যাগ স্বীকার ইত্যাদি প্রসঙ্গে। সব লিখিত ও মৌখিক বক্তব্যে একটি শব্দযুগল বহুবার উচ্চারিত হয়েছে। তা হলো ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন’। যারা জাতি সৃষ্টি করেন, তারা একটি স্বপ্নের ওপর ভিত্তি করেই তা করেন। যারা জাতিকে নেতৃত্ব দেন, তারাও কোনো-না-কোনো স্বপ্ন ধারণ করেন। এই যুক্তিতেই বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বাংলাদেশ ও দেশের মানুষকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেন। প্রধানমন্ত্রী ১৬ আগস্ট বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে আমি প্রস্তুত। যতই ষড়যন্ত্র হোক, পরোয়া করি না, করব না। এ প্রসঙ্গে রোববার ১৬ আগস্ট মধ্যরাত ১২টায় টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাভিশনে অংশগ্রহণ করেছিলাম। সাথে ছিলেন আমার এককালীন পরোক্ষ শিক্ষক, কিন্তু আমার নিকট সম্মানিত ব্যক্তি, বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সুপার নিউমারি অধ্যাপক ডক্টর সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। আলোচনায় চারটি প্রশ্ন বা আঙ্গিক আলোচিত হয়েছে। প্রথমটিই ছিল, স্বপ্ন এবং ত্যাগ স্বীকার নিয়ে। আজকের কলামটি এ প্রসঙ্গে।

আজকের কলামটি ব্যতিক্রমধর্মী
এ কলামে আমার নিজের বক্তব্য খুব কম। অন্য লোকের বক্তব্য এখানে উপস্থাপন করব। ফেসবুকে অনেক গ্রুপ আছে। এ রকমই একটি গ্রুপে একজন ভদ্রলোক হাজার শব্দের কম দৈর্ঘ্যরে একটি পোস্ট লিখেছেন বাংলায়। তার বক্তব্য পুরোটাই রাজনৈতিক, কিছুটা নেতিবাচক সমালোচনামূলক, কিছুটা গঠনমূলক সমালোচনামূলক, কিছুটা আশাব্যঞ্জক, কিছুটা হতাশাপূর্ণ। পোস্টের বক্তব্যের সাথে আমি পুরোপুরি একমত নই, আবার পুরোপুরি দ্বিমতও নই। তবে আমি ২০ দলীয় জোটের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে অথবা বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে না দেখে, নিরপেক্ষ বা নির্মোহ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখার চেষ্টা করেছি। নিজের পক্ষীয় দৃষ্টিভঙ্গির বদলে, নির্মোহ দৃষ্টিভঙ্গিতে বা নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা খুবই কঠিন কাজ; এতদসত্ত্বেও চেষ্টা করেছি। কিছু মন্তব্য নাম পরিবর্তন করে এখানে দেবো একটি কারণে; তা হলো ভদ্রলোক যেন রাজনৈতিক আক্রমণের শিকার না হন। ভদ্রলোকের অনুমতি নিয়েছি যে, আমি তার পোস্টটি ‘ওয়াইডলি শেয়ার করতে চাই’; তিনি অনুমতি দিয়েছেন। দু-একটি ইংরেজি শব্দ ছিল, সেগুলোর বাংলা অনুবাদ ব্র্যাকেটে দিয়েছি। ভবিষ্যতে প্রয়োজনে ভদ্রলোকের অনুমতি সাপেক্ষে তার নাম প্রকাশ করতে আমার কোনো আপত্তি নেই। তার বক্তব্যকে অত্যন্ত সম্মান করছি। আমার রাজনৈতিক কট্টর সমালোচকগণ যেন কোনোমতেই না বলেন যে, আমি আমার কথাগুলোকে অন্যের নাম দিয়ে চালাচ্ছি, সেজন্য পুরো পোস্ট এবং তার কমেন্টগুলোর একটি প্রিন্ট আউট নিলাম সোমবার ১৭ আগস্ট বিকেল ৫টা ২৫ মিনিটে। এই কলামের জন্য ভদ্রলোকের নাম ‘পলাশদৌলা’। পোস্টটি উদ্ধৃত করা হলো।
(প্রারম্ভিক)
আমাদের সকল বিরোধী দল, যার মধ্যে বিএনপি, ইসলামিস্ট, বাম, সুশীল এস্টাবলিশমেন্ট হতে শুরু করিয়া সকল প্রাতিষ্ঠানিক পক্ষ আছে তাহাদের সবচাইতে বড় ব্যর্থতা হইতেছে, তাহারা বর্তমান স্ট্যাটাস কো এর- বিপরীতে বাংলাদেশের অর্থনীতি, রাজনীতি এবং সমাজের একটা বিশ্বাসযোগ্য, বাস্তবায়নযোগ্য বিকল্পের ধারণাকে পরিষ্কার করতে পারেন নাই। প্ল্যান অনেক দূরের কথা, জাস্ট ধারণাটাও তাহারা দেখাইতে পারেন নাই। খুবসম্ভব, এইটা তাহাদের নিজেদের কাছেও ক্লিয়ার না। জনগণের কাছে কী ক্লিয়ার করিবেন, সেইটা হনুজ দূর অস্ত।

(বিএনপি) পক্ষ ধরে যদি বলি, এই ক্ষেত্রে বিএনপির পক্ষ হইতে স্বচ্ছতা রিলেটিভলি বেশি এবং সেইটা আরো ডেঞ্জারাস। কারণ, বিএনপির বর্তমান কার্যকলাপে এইটা পরিষ্কার, তাহারা বলিতে চায়, আমাদের আগে যে শাসন ছিল, সেইটা আওয়ামী লীগ হইতে ভালো এবং আমরা তোমাদেরকে সেইটাই ফিরাইয়া দিব। তাহাদের পরিকল্পনা হইল, যেইভাবে আছে ঠিক সেইভাবেই চলিবে; কিছু জিনিসে অল্প ইম্প্রুভ করার চেষ্টা করিবে। তাহাও গ্যারান্টি দিবে না। ফলে মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থা পরিবর্তনের জন্য, বর্তমানে ৮০% মানে, ১২ কোটি মাসিক পাঁচ হাজার টাকা আয়ের জনগণের ক্ষেত্রে তাদের প্ল্যান হইল প্রবেবলি মোর গার্মেন্টস, একটু বেশি লেবার ফোর্স বাহিরে পাঠানো, বর্তমান সময়ের চাইতে একটু বেশি স্বচ্ছতা যা বলিতে তাহারা বোঝায় কিছু আইনের এদিক ওদিক এবং আওয়ামী লীগের সকল স্তরে, সকল লেয়ার সর্বগ্রাসী খাই খাইয়ের জায়গায়, অল্প কিছু মানুষের বড় খাই খাই। তাহারা বলিতে চায়, আমরাও খাইব; কিন্তু আমাদের খাওয়ার মুখ যেহেতু আওয়ামী লীগের তুলনায় কম, আমরা একটু কম খাইব। এইটা পরিষ্কার বলা যায়, বাংলাদেশ রাষ্ট্র এখন যে চ্যালেঞ্জের মুখে আছে সেই অবস্থায় বিএনপির এই প্ল্যান, সম্পূর্ণ পরিত্যাজ্য। এইটা হওয়া না হওয়া একই কথা।

(ইসলামিস্ট) ইসলামিস্টরা ক্ষমতা দখলের ধারে-কাছে নাই, কিন্তু তবুও তারা একটা ইসলামিস্ট রাষ্ট্রের ধারণা দেন। কিন্তু সেই রাষ্ট্রের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি কী হইবে, সেইটা নিয়া তাহাদের কোনো আইডিয়া নাই। তাহাদের মূল জায়গা হইল কড়া সামাজিক অনুশাসনের। ওয়েল, তাহা মূলত ক্ষমতার ঠেকা আর পুলটিস দেয়, এবং রাষ্ট্রক্ষমতার দখলের মতো উচ্চাকাক্সক্ষা নিয়মিতভাবে কোনো গ্রুপ হইতে আসে নাই, ফলে তাহাদের রাষ্ট্রভাবনা গুরুত্বপূর্ণ নহে।

(বাম বা কমিউনিস্ট) বামদের বিষয়টা হইল সবচাইতে কনফিউজিং। কারণ, বামেরা রাষ্ট্রক্ষমতা প্রশ্নে সব সময়েই উচ্চাকাক্সক্ষা দেখায়। তাহারা প্রায়ই সভা সমিতিতে বলে, আমরা ক্ষমতায় গেলে, বাংলাদেশ হেন হইত তেন হইত। সরি নট কনভিন্সড (দুঃখিত যে, আমি আশ্বস্ত নই)। আপনি কোন্ অর্থনৈতিক পলিসির কথা বলিতেছেন; লাল বই হইতে মার্ক্সিজম! সবাইকে তাহাদের সম্পদ গিভআপ বা সমর্পণ করিতে বলিবেন? তারপরে যৌথ খামার হইবে, গার্মেন্টসগুলির মালিকদেরকে গিলোটিনে চড়াইয়া, শ্রমিকদেরকে মালিকানা দিবেন? শহরের লোক গ্রামে পাঠাইয়া চাষবাস করাইবেন? রাজনৈতিকভাবে সব দলকে ব্যান (নিষিদ্ধ) করিয়া একটা একক ক্ষমতাসীন দল করিবেন? সমাজে সবাইকে কালো কাপড় পরিতে বলিবেন? বলিবেন যে, কোনো ধর্ম নাই! সব মসজিদ, মন্দির বন্ধ করিয়া দিবেন? হোয়াটস দা প্ল্যান (আপনাদের পরিকল্পনা কী)?
(যেই রকম অনুমান করলাম), এইটা যদি প্ল্যান হয়, তাহা হইলে বলিব, আপনাদের ইউটোপিয়া নিয়া ঘুমান এবং স্টপ বুলসিট (অর্থাৎ, একই সাথে সমাজকে ধমকানো বন্ধ করুন)। পৃথিবীর বড় একটা অংশ, এই অর্থনৈতিক ব্যবস্থার নিগড়ে ৫০ বছর নিষ্পেষিত হইয়া, গণ-আন্দোলন করিয়া বাহির হইয়া, মুক্ত সমাজ গঠন করিয়াছে। আর আপনারা আবার, আরো একটা গণহত্যাসহকারে কম্বোডিয়া বানাইতে চাহিতেছেন? আপনি বলিতে পারেন, নারে ভাই, আমি আধুনিক কমিউনিজম করিব! কিন্তু সেইটা কী? তো আমরা প্রথম প্রশ্নে ফিরিয়া গেলাম। এবং আপনি কী চান সেইটা নিয়া আপনি আমার চাইতেও বেশি কনফিউজড। আপনি কোন রাষ্ট্র চান, সেইটা নিয়া একটা বাস্তবায়নযোগ্য বিশ্বাসযোগ্য ভিশন নাই। বাস্তবতা হইল, আপনার অ্যাম্বিশন থাকিতে পারে, কিন্তু আপনি নিজেই নিজেকে বিশ্বাস করেন না।

(সুশীল) আমি বরং সবচেয়ে প্রব্লেমেটিক দেখি আমাদের লিবারেল মিডিয়া-কেন্দ্রিক সুশীলসমাজের অবস্থানে। (অন্ধ পা-চাটাদের কথা বলিতেছি না। ইন্ডিপেন্ডেন্ট একটা সত্তা যাহাদের আছে তাহাদের কথা বলিতেছি) বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বদহজমের পরে, তাহাদের এখন হয়তো ক্ষমতার অ্যাম্বিশন নাই। কিন্তু তাহারা বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতার গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডার।
যেই সরকারই ক্ষমতায় থাকুক, রাষ্ট্রক্ষমতার কার্যক্রমের বৈধতার সীমানা নির্ধারণে তাহাদের ভাবনার গুরুত্বপূর্ণ ক্ষমতা আছে। জাস্ট একটা এগজাম্পল দিই। বিএনপির অ্যাক্টিভিস্টদেরকে ট্রাক দিয়া পিষিয়া মারিয়া ফেলিলেও তাহারা যেইখানে নীরব থাকে, সেইখানে বামদের কোনো গ্রুপ রাস্তায় সিরিয়াস মাইর খাইলে তারা বড় করে নিউজ করে বা আলোচনার ক্ষেত্র তৈরি করে, যেইটায় সরকার একটু হইলেও প্রতিক্রিয়া দেখায়। এইখানে, বিএনপির অ্যাক্টিভিস্টদেরকে ট্রাকে পিষিয়া মারিয়া ফেলার বৈধতা দেয়া আর লেফট অ্যাক্টিভিস্টের গায়ে হাত দেয়ার বৈধতা না দেয়ার সীমানাটা এই গ্রুপটা নির্ধারণ করে। যদিও এখন আওয়ামী আমলে এই গ্রুপটাকে সরকার মোটেও আমলে নিতেছে না, কিন্তু এইটা একটা টেকনিক্যাল এগজাম্পল, জাস্ট টু শো, কিভাবে রাষ্ট্রক্ষমতার নৈতিকতার ধারণা লিবারেল (উদার) মিডিয়া এবং সুশীলসমাজের এই সিলেক্ট গ্রুপটি নির্ধারণ করিয়া দেয়।
এই গ্রুপটির রাষ্ট্রের যে ধারণা সেইটা হইল, আবার বর্তমান ক্ষমতা স্ট্রাকচারকে বজায় রাখিয়া অধিকতর ন্যায়পরায়ণ, কম দুর্নীতিপরায়ণ, অধিকতর দক্ষ একটা শাসনব্যবস্থা; একটা লিবারেল সমাজ এবং ফাংশনিং ডেমোক্র্যাসি। এইটা আবার একটা চরম প্রব্লেমেটিক অবস্থান, যেইখানে দুর্নীতিকে একটু কমাইয়া সহনশীল পর্যায়ে আনিয়া বর্তমান আমলাতান্ত্রিক সিস্টেমের মধ্যেই একটু বেটার সুশাসন প্রদানের ভাবনা বাদে মৌলিক এবং রেভলিউশনারি (বিপ্লবী) কোনো প্রত্যাশা নাই।
বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বর্তমান ৬% উন্নতির গল্পে এই গ্রুপ সন্তুষ্ট। ফলে সিস্টেমে কোনো ধরনের মেজর পরিবর্তন তাহারা চায় না। এর কারণ, এই গ্রুপটার পেছনে আছে কর্পোরেট পুঁজি। কর্পোরেট পুঁজি সিস্টেমে কোনো ধারাপতন চায় না। কর্পোরেট পুঁজি দুর্নীতি চায় না, কিন্তু নিয়ন্ত্রণ চায়Ñ রাষ্ট্রক্ষমতাধারীর ওপরে, জনগণের চিন্তার ওপরে, জনগণের ইচ্ছার ওপরে। এই নিয়ন্ত্রণ দিয়া সে তাহার পুঁজিকে সংহত করিতে পারে। এই আর্ট (কৌশল) তাহার জানা আছে।
বাংলাদেশে যে ব্যাপক একটা অর্থনৈতিক বৈষম্য আছে, গ্রামের ৭০% জনগণের মাসিক আয় যে এখনো দিনে আনি দিনে খাই, তাহাদের যে কোনো অর্থনৈতিক সিকিউরিটি নাই, বাংলাদেশের লেবার ফোর্সের যে কোনো সোশ্যাল সিকিউরিটি নাই, ভারতের অর্থনৈতিক এবং কালচারাল আগ্রাসনে যে আমাদের ক্ষুদ্র পুঁজি দাঁড়াইতে পারছে না এবং কালচারাল সক্ষমতা বিলীয়মান- এইসব অবস্থান পরিবর্তনে তাহাদের কোনো আগ্রহ নাই। তাহাদের স্বপ্নে রাষ্ট্রব্যবস্থা, আমার হিসাবে একটা ভাঙা পুলটিস দেয়া, পালিশ দেয়া, খোসপাঁচড়া লুকাইয়া রাখা রাষ্ট্র।
আজকে আমাদের নিজেদেরকেই, আগে সেই স্বপ্নের রাষ্ট্রকে ডিফাইন করিতে হবে এবং যেকোনো রাজনৈতিক দলকে বা এই উল্লেখিত গ্রুপগুলির যেকোনোটাকে যদি আওয়ামী লীগের অল্টারনেটিভ হইতে হয়, তবে তাহাকে টেবিলে বসিয়া একটা হোমওয়ার্ক করিয়া একটা বিশ্বাসযোগ্য ও বাস্তবায়নযোগ্য স্বপ্ন মানুষের সামনে স্থাপন করিতে হইবে। নইলে আমি প্রায় নিশ্চিত, আওয়ামী লীগ ২০৪১ সাল পর্যন্ত এই অনৈতিক শাসনকে মিথ্যা আর রান্না করা জিডিপি ডাটা আর ভিশন (কারেন্ট ইয়ার + ২০) দেখাইয়া পার করিয়া দিতে পারিবে।” পলাশদৌলার পোস্ট উদ্ধৃত করা শেষ। পোস্টের মন্তব্যগুলো থেকে কয়েকটি উদ্ধৃত করলাম।
প্রথম মন্তব্য। এই কলামের জন্য মন্তব্যকারীর নাম মীরমদন। দুর্বৃত্তায়নের সিন্ডিকেট ভাঙা সবচেয়ে কঠিন এ দেশে। দেশের ভিতরকার সিন্ডিকেট সব জায়গায়- শিক্ষা, স্বাস্থ্য থেকে প্রধানমন্ত্রীর দফতর। তারেক ছিল সিন্ডিকেট প্রধান বিএনপি আমলে; তা সবাই জানে। কিন্তু তাকে মেনে নেবে না তার দল, আ’লীগ, প্রশাসন, সেনাবাহিনী। বিএনপির কোনো আশা দেখি না।
দ্বিতীয় মন্তব্য। এই কলামের জন্য মন্তব্যকারীর নাম মোহনলাল। এটা আমরাসহ আওয়ামী লীগও জানে। তাই তারা তাদের থ্রেট দেখে এক্সট্রিমিস্ট বা চরমপন্থীগণের মাঝে। তবে মজার ব্যাপার হলো, পরিবর্তন যখন হবে, তার পর যদি ফেয়ার ইলেকশন হয়, তাহলে আওয়ামী লীগকে ‘না’ করে দিবে। কারণ বাংলার জনগণের কাছে ভোটের অধিকার, সুশাসন খুব বড়।
তৃতীয় মন্তব্য। এই কলামের জন্য মন্তব্যকারীর নাম টিপু সুলতান। ধারাবাহিকতা আর হিংসার কারণে এগোতে পারছে না আমার দেশ। জিয়া এবং এরশাদ কিছুটা ধারাবাহিক ছিলেন। ’৯১-এর পর পালাবদল শুরু। দেশ নিজদের মতো সাজাতে গিয়ে পাঁচ বছর মেয়াদি ফর্মুলা। নতুন সরকার নতুন ফর্মুলা। ফর্মুলা বাস্তবায়নে দূরদর্শী কোনো চিন্তা কারো মাথায় ছিল না, যেটা বর্তমান সময়ে আমরা দেখছি সব জায়গায় হ-য-ব-র-ল অবস্থা। কারণ একটাই ফর্মুলা বাস্তবায়নে সামাজিক ইমপেক্ট কী হবে, তা তাদের মাথায় ছিল না। যেটা ছিল, তা হলো বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে যে টাকা খরচ হয় সেদিকে শকুনের চোখ; আর কে কত খাবে তার প্রতিযোগিতা। রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে তারা কেউ উপযুক্ত ছিল না। তাদের দৃষ্টি সর্বদাই রাষ্ট্রীয় সম্পদের ওপর, ‘কখন এটা আমার হবে।’ আমরাই তাদেরকে ক্ষমতা দিচ্ছি। আবার আমরাই ভুক্তভোগী। একটা কথা আছে- ‘আইজ বুজবা না বুজবা কাইল, পাছা থাবড়াইবা পারবা গাইল।’
চতুর্থ মন্তব্য। এই কলামের জন্য মন্তব্যকারীর নাম ফরায়েজি। তার মন্তব্য আগামী সপ্তাহের কলামে থাকবে। ইনশাআল্লাহ আগামী সপ্তাহের কলামে আমার নিজস্ব মন্তব্য দেবো। আজকের কলামটির উদ্দেশ্য চিন্তার জন্য সূত্র উপস্থাপন করা

– পূর্বপ্রকাশিত : নয়াদিগন্ত

Loading


মন্তব্য দেখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *