বাংলাদেশে ভিক্ষাবৃত্তিঃ কারণ ও প্রতিকার

ভিক্ষা শব্দের আভিধানিক অর্থ-যাচিত বস্তু, প্রার্থনা, সাহায্য চাওয়া। ভিক্ষাবৃত্তি মানে ভিক্ষার মাধ্যমে জীবনধারণ। আর যারা নিজের অক্ষমতা ও অসামর্থ্যের কথা অন্যের কাছে অকপটে ব্যক্ত করার মাধ্যমে সাহায্য নিয়ে জীবিকানির্বাহ করে-তারাই ভিক্ষুক। ঠিক কবে থেকে ভিক্ষাবৃত্তির প্রচলন হয়েছে, তা বলা সম্ভব না হলেও একথা নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, এ এক প্রাচীন পেশা। পৃথিবীর সবদেশেই ভিক্ষুক আছে এবং হয়তো থাকবেও। কিন্তু এদেশের মতো এতো সর্বব্যাপী জীবিকার মাধ্যম হিসেবে পরিচিত এ পেশা সম্ভবত বিশ্বের কোথাও নেই। এ কারণেই উন্নত বিশ্বে ভিক্ষাবৃত্তি একটা বিচ্ছিন্ন ও অজটিল ব্যাপার হলেও বাংলাদেশের মতো দারিদ্র্যপীড়িত উন্নয়নশীল দেশে তা এক জটিল এবং জাতীয় সমস্যা। এদেশে ভিক্ষুকসমস্যা দিনদিন যে হারে আশঙ্কাজনক পরিণতির দিকে মোড় নিচ্ছে-জাতি হিসেবে আমাদের কাছে তা সত্যিই লজ্জাকর।

ভিক্ষার কৌশল ও ভিখারীর রকমফেরঃ

এদেশে ভিক্ষুকের সাথে পরিচিত নয়, এমন লোক সম্ভবত খুঁজে পাওয়া ভার! ঘরে-বাইরে তথা বাড়িতে-মেসে, বাস-ট্রেনে, লঞ্চ-স্টিমারে, অফিস-আদালতে, কল-কাখানায়, খানকা-মাজারে, মসজিদ-মন্দিরে কোথায় ভিক্ষুক নেই? সারাদেশজুড়ে পঙ্গপালের মতোই ছুটে চলেছে ভিক্ষুকের অপ্রতিরোধ্য মিছিল। বাসস্ট্যান্ডে বা রেলস্টেশনে দাঁড়ালেই মুখোমুখি হবেন হরেক রকম ভিখারীর। সিটে বসে আরামেরও সুযোগ নেই, হয়তো জানলা দিয়ে কাপড় টানছে কেউ। কেউ হয়তো কানের কাছেই বিলাপ করছে করুণসুরে! আরেক ধরণের ভিক্ষুক আছে, যারা মহা কর্কশকন্ঠে চেঁচিয়ে কান ঝালাপালা করে ছাড়বে অথবা কোরাসকন্ঠে জারী গেয়ে জীবন অতীষ্ঠ করে তুলবে।

হোটেলে বা পার্কে বসে আরামসে কিছু খাবারও কি জো আছে? শকুনের দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকবে আপনার দিকে কিংবা হাত পাতবে নাছোড়বান্দা ঐ ভিক্ষুক। মারাত্মক টেনশন-ঝামেলায় ছোটাছুটি করছেন বা নিরিবিলিতে কারও সাথে জরুরি আলাপ করছেন, সেখানেও হাজির ভিখারী সাহেব? আপনার কী বিপদ বা কে মরলো না মরলো–তাতে যায় আসেনা তার। অথচ রাগ করাও চলবেনা। কখনো কিছু বলেছেন তো রক্ষে নেই; বেফাঁস কিছু শোনার জন্যও প্রস্তুত থাকতে হবে। বাসা-বাড়িতে ঘুমাবেন বা আরাম করবেন তারও উপায় নেই, যখন-তখন চেঁচিয়ে এমনকি কলিং বেল বাজিয়েও আরামকে হারাম করে ছাড়বে।

ভিক্ষুকের প্রকারভেরঃ

এদেশে ভিক্ষুকের সংখ্যা কতো, এর সঠিক পরিসংখ্যান আছে বলে জানা যায়নি। তবে দেশে শিক্ষিত ও কর্মক্ষম বেকারের সংখ্যাই যেখানে দু’কোটির ওপর। সেক্ষেত্রে ভিক্ষুকের সংখ্যা আরো বেশী হবে, তা বলাই বাহুল্য। এদেশে বিচিত্র কৌশলধারী বহুধরনের ভিক্ষুক দেখা গেলেও কারনভেদে এদের ছয়ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। যেমন—

(১) প্রকৃত ভিক্ষুকঃ

প্রতিবন্ধী ও বয়সে ভারাক্রামত্ম একপ্রকার অত্যন্ত অসহায় ভিক্ষুক রয়েছে যাদের দায়িত্ব নেয়ার কেউ নেই আথবা থাকলেও নেয় না। এদেও ঘাড়ে আবার নাবালক পোষ্যেও দায়িত্বভারও থাকে ফলে পেটের দায়ে একামত্ম বাধ্য হয়েই এরা জীবিকার সহজমাধ্যম হিসেবে ভিক্ষার আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করে থাকে। এদেও জন্য সবাই সাধারনতঃ সহানুভূতিশীল থাকে বলে এরা ভিক্ষা পায়। সমাজ বা রাষ্ট্র এদেও দায়-দায়িত্ব না নেয়ায় এদেরও কোন দোষ দেয়াও যায়না। ইসলামি রাষ্ট্র ব্যবস্থায় ভিক্ষুকের পুনর্বাসন ও ভরণ-পোষনের দায়িত্ব পালন করে মূলতঃ সরকার। খেলাফতে রাশেদার যুগে এর প্রচুর নজির রয়েছে। সেসময় ভিক্ষুকতো দূরের কথা, যাকাত নেয়ার মতো অভাবী লোকও খুঁজে পাওয়া যেতোনা। আধুনিকযুগে প্রকৃত কল্যানরাষ্ট্র সমূহেও এধরনের ছিঁটেফোঁটা নজির দেখা যায়। প্রকৃত ভিক্ষুকদের কারো আশ্রয়স্থল না থাকলে তাদের পুর্নবাসন ও ভরন-পোষনের দায়িত্ব নেয়ার সাথে সাথে এসব কল্যানরাষ্ট্র ভিটে-মাটিওয়ালা ভিক্ষুকদেরও নিয়মিত ভাতা প্রদান করে থাকে। এদের সংখ্যা অবশ্য সকল দেশেই তুলনামুলকভাবে কম। এদেশেও এদের সংখ্যা মোট ভিক্ষুকের ১০ শতাংশও হবেনা।

(২) কৃত্রিমভাবে সৃষ্ট ভিক্ষুকঃ

দারিদ্র্যপীড়িত বাংলাদেশে চরম বেকারত্ব ও অর্থনৈতিক কারণেও বিপুল সংখ্যক মানুষ নিরুপায় হয়ে ভিক্ষার পথ বেছে নেয়। এরা মূলতঃ কৃত্রিমভাবে সৃষ্ট ভিক্ষুক। কারণ একধরণের স্বার্থান্বেষী ও অপরিণামদর্শী শাসকের অযোগ্যতা এবং দুর্নীতির দরুন সাধারণ জনগণ দিনদিন দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর হতে বাধ্য হয়েছে। শোষক পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীকে চিরতরে তাড়ানোর পরও আমাদের শাসকগণ বিপুল জনগোষ্ঠীর জন্য পারেনি যথাযথ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে। উর্বর ভূমি, কৃষি উপযোগী আবহাওয়া ও দক্ষ-কর্মক্ষম বিপুল মানবসম্পদ থাকাসত্বেও কৃষিউৎপাদন বাড়াতে কিংবা নতুন নতুন কলকারখানা স্থাপনেও তারা চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। বরং স্বাধীনতার ৪২ বছরে পাকিস্তান আমলে প্রতিষ্ঠিত বহু শিল্পকারখানাও দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও অযোগ্যতার আমাদের কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেকারত্বের সংখ্যাও ক্রমশ বেড়েছে। লুটপাট ও চরম দুর্নীতির করালগ্রাস ছাড়াও উতপাদনশীল খাতে অর্থব্যয়ের বদলে অনুতপাদনশীল খাতেই অর্থ অপব্যয় করে দেশকে পেছনের দিকে ঠেলে দিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে নিজেদের ব্যর্থতার দায়ভার অন্যের ঘাড়ে চাপানোর প্রবনতা থেকেও আমরা বেরিয়ে আসতে পারিনি এখনো। ফলে জনগণ যে তিমিরে ছিলো সেই তিমিরেই আছে এবং জ্যামিতিক হারেই বেড়েছে দারিদ্র্য ও বেকারত্ব।

আমাদের সমসাময়িককালে স্বাধীনতাপ্রাপ্ত কিংবা এদেশের চেয়েও অনুন্নত-দারিদ্রপীড়িত পার্শ্ববর্তী অনেক দেশ একই সময়ে অভাবনীয় পদ্ধতিতে উন্নতির শিখরে উঠে গেলেও আমরা ধাবিত হয়েছি এর উল্টোদিকেই! বিভিন্ন দেশের তুলনায় এদেশের জনগণের মাথাপিছু আয় এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার এতই নগণ্য যে, আমাদের সাধারণ জনগণের মানবেতর জীবনযাপন করা ছাড়া আর কোন উপায়ও আছে কি?

৮০ভাগ মানুষ আজ চরম দারিদ্রসীমার নিচে বাস করে, ৫কোটি মানুষ পুষ্টিহীনতায় জীবন্মৃত এবং কয়েক কোটি শিক্ষিত বেকারে ভারাক্রান্ত আমাদের দেশ। ফলে নির্জীব ও নির্লিপ্ত লোকগুলোর অনেকেই আজ ভিক্ষাবৃত্তির মতো জঘন্য পেশার দিকেই পা বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে। অপরদিকে, নিত্যনতুন প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিবছরই এদেশের অসংখ্য পরিবারকে করে ভিটেমাটিহীন ও নিঃস্ব। অসহায় পরিজনদের জীবনরক্ষার্থে স্ববভাবতই এদের এক বিরাট অংশ ভিক্ষাবৃত্তিতে না নেমেও পারেনা! দিনদিন বাড়ছে তাই কৃত্রিম ভিক্ষুকের সংখ্যা। অবশ্য এদের সংখ্যাও ২০ শতাংশের বেশী হবে বলেও মনে হয়না। তবে এদের অনেকেই একে পেশা হিসেবে গ্রহণ না করে সাময়িকভাবে বেছে নিতে বাধ্য হয়।

(৩) এককালীন/মৌসুমি ভিক্ষুকঃ

এক ধরণের মানুষ আছে, যারা প্রকৃত অর্থে পেশাজীবী ভিক্ষুক না হলেও অভাবী হলেও জীবীকার তাগিদে যেকোনো ধরণের কাজ করার চেষ্টা করে থাকে। এরা অতিকষ্টে সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খেলেও সহজে ভিক্ষায় নামেনা। কিন্তু কঠিন বিপদে পড়ে বা বড় অঙ্কের টাকার প্রয়োজনে এরাও এককালীন বা সেজোনাল ভিক্ষুক সেজে ঈদ, যাকাত মৌসুম, বড় বড় পর্ব উপলক্ষে ভিক্ষায় নামে এবং লজ্জা এরাতে পারতপক্ষে এলাকার বাইরে গিয়েই ভিক্ষা করে থাকে।

(৪) উত্তরাধিকারী ভিক্ষুকঃ

একশ্রেণীর ভিক্ষুক আছে যারা উত্তরাধিকারীসূত্রে ভিক্ষাবৃত্তিকে বেছে নেয় নির্লজ্জভাবে। ভিক্ষুক পিতামাতা বা আত্নীয়-স্বজনদের সংস্পর্শে কিংবা দেখাদেখিতে ভিক্ষাকে পেশা বানায় এরা। ভিক্ষাবৃত্তির পরিবেশে ছোট থেকে বড় হয়ে সুস্থ ও কর্মক্ষম থাকলেও এরা আর অন্য পথে পা বাড়ায় না।

(৫) অভাবী কর্মবিমুখ ভিক্ষুকঃ

চরম অলসতা ও কর্মবিমুখতার কারণে অভাবী এ সমস্ত হতভাগ্যও বিনাপুঁজির মাধ্যম হিসেবে ভিক্ষার পেশাকেই বেছে নেয়। উপার্জনের ঝুঁকিকে ভয় পায় বলেই কর্মক্ষম হয়েও এরা চায় বসে বসে খেতে ও পরতে আর শেষে পেয়েও যায় চেষ্টা-তদবিরবিহীন এই পেশার অমৃতস্বাদ! কোনো কাজ করতে বললে বা দিতে চাইলেও এরা কাঁচুমাচু করে এড়িয়ে যায়। জোর করে এদের কাজে নিয়োগ করতে চাইলেও এরা তা আদৌ করতে চায়না কিংবা পালিয়ে গিয়ে আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে ভিক্ষা করেই বেড়ায়। এমনকি বুঝিয়ে-সুঝিয়ে ধরে নিয়ে গিয়ে কাজে লাগানোর পর এদের পালিয়ে যাবার তিক্ত অভিজ্ঞতাও রয়েছে নিবন্ধকারের। এদের সংখ্যাও কিন্তু নেহায়েত কম নয় বরং বিপুল।

(৬) ব্যবসায়ী ভিক্ষুকঃ

আরেক ধরণের ভিক্ষুক আছে যারা মূলত প্রতারকরূপী ব্যবসায়ী। বিকলাঙ্গ শিশু, প্রতিবন্ধী বা অসুস্থ, মৃত কাউকে মাধ্যম বানিয়ে ভিক্ষা করে এরা। আবার অনেকে নিজে অন্ধ, বোবা, কালা, মৃগীরোগী, পাগল ইত্যাদি সেজে ধোকা দিয়ে দিব্যি উপার্জন করে যাচ্ছে। শিশুপাচারকারী, শিশু অপহরণকারী বা ছেলেধরারা গোপন আস্তানায় রেখে কৃত্রিমভাবে বিকলাঙ্গ, কুঁজো বা প্রতিবন্ধী ইত্যাদি বানিয়েও অর্থের বিনিময়ে হতভাগ্য শিশুদের ভিক্ষার কাজে ভাড়া খাঁটিয়ে থাকে। কারো প্রতিবন্ধিতার অজুহাত, শরীরের দগদগে ঘা জিইয়ে রেখে, কাউকে রোগী সাজিয়ে বা মৃত আত্মীয়স্বজনের লাশের সৎকার, শ্রাদ্ধ, কারো বিয়ে, পবিত্র কুরআন ক্রয় বা খতম দেয়া, ক্লাশের নতুন বই কেনা, মাদ্রাসা-মসজিদ, খানকা, পীরের শিরনীর নামেও অনেকে চাঁদার নামে ভিক্ষা করে বেড়ায়।

এরকম অসংখ্য ভিক্ষুক দেখা যায়, যারা আসলেই ঠক ও প্রতারক এবং ক্ষেত্রবিশেষে ছিনতাইকারী। এদের খপ্পরে পড়ে অনেকের সর্বনাশ হবার ঘটনাতো বলাইবাহুল্য। এদের অনেকেই আবার রাতের আঁধারে নারী ভিক্ষুকদের দিয়ে পতিতাবৃত্তিও চালিয়ে থাকে। এদের অনেকের নামী-দামী বাড়ি-গাড়ি আছে, ভাড়াও খাটিয়ে থাকে এবং এদের স্বচ্ছল জীবন-যাপন দৃশ্য অনেকেরই জানা আছে। মাঝে মাঝে পত্রিকায়ও সংবাদ আকারে প্রকাশিত হতে দেখা যায়।

সুতরাং বলা যায়, প্রথমোক্ত তিনপ্রকার ভিক্ষুক ছাড়া বাকী সবাই আসলে পেশাজীবী বা ব্যবসায়ী ভিক্ষুক। এরা আমাদের সমাজে বা সারাদেশে যে হারে পঙ্গপালের ন্যায় ছড়িয়ে পড়ছে—তাতে সভ্যতাগর্বী সৃষ্টিসেরা মানুষ হিসেবে আমাদের আত্মসম্মান শুধু নয় আগত বিদেশীদের কাছেও দেশের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। মাঝে মাঝে প্রবাসেও বাংলাদেশীদের ভিক্ষাবৃত্তি বিশেষত; ভিআইপি ভিক্ষুকবেশে ভিক্ষা করার কথা শুনেও আমাদের মাথা হেট হয়ে যায়।

প্রতিকারঃ

প্রথমতঃ শুধু ভিক্ষাবৃত্তিই নয়, যেকোনো ধরনের অসামাজিকবৃত্তি বা সামাজিক সমস্যার স্থায়ী সমাধানে প্রথমতঃ দরকার সরকারী ও বিরোধীদল ও সরকারের দৃঢ় রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা।

দ্বিতীয়তঃ এব্যাপারে দল-মতনির্বিশেষে সর্বদলীয় সমঝোতা এবং সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবীসংগঠন, এনজিওদের কার্যকর পজেটিভ ভূমিকাও জরুরি। তৃতীয়তঃ দেশের হাজার হাজার একর পতিত জমি এমনকি বিভিন্নভাবে দখলকৃত সরকারের খাসজমি উদ্ধার করে সেখানে ভিক্ষুকের শ্রেণীভেদে তাদের পুনর্বাসনের লক্ষে বাসস্থান তৈরি, ঋণদানসহ নানারকম কর্মসংস্থান সৃষ্টির প্রকল্প গ্রহণ করা যেতে পারে।

এক্ষেত্রে সমাজের চিহ্নিত সৎ মানুষদের মূলভূমিকা পালনের সুযোগ দিলে দুর্নীতি, অর্থ তসরূপ ইত্যাদির সুযোগ তেমন থাকবেনা এবং টারগেটকৃত জনগোষ্ঠীও উপকৃত হবে। সমাজে ধনী-গরীবের অস্তিত্ব এবং ব্যবধান যখন থাকবেই–আর মানবতাবোধ বলে আমাদের যে গুণটা আছে; তাকেও কিন্তু আমরা গায়ের জোরে মুছে ফেলতে পারিনে গরীবকে সাহায্য করবো না প্রতিজ্ঞার অজুহাতে। তাই ইসলাম কারো কারো ভিক্ষার বাস্তবতাজনিত কিছুকিছু উদ্দেশ্য এবং কার্যকরণকে উৎসাহিত না করলেও নিষিদ্ধও করেনি। তাই সরকারের ওপর এদের পুনর্বাসনের দায় চাপিয়ে দিয়ে প্রকৃত অভাবী ভিক্ষুকদেরও সাহায্য থেকে আমাদের বঞ্চিত করা বিবেকসম্মত বলে আমি মবে করিনে।

 

 
 

Loading

About শাহ আলম বাদশা

কবি, ছড়াকার, গীতিকার বিশেষত; শিশুসাহিত্যিক। এ পর্যন্ত ৫টি প্রবন্ধ সংকলন, ১টি গল্প সংকলন, ১টি কিশোর উপন্যাস ''ফুলের চোখে পানি', শিশুতোষ ছড়াগ্রন্থ-- দুরছাই ধুত্তোরী ছাই, ইষ্টিপাখি মিষ্টিপাখি, ষড়ঋতুর দেশে, লিন্তামণির চিন্তা, কিশোর কবিতার বই—ফুলবনে হই-চই, ফুল-পাখি নদী, শিশুতোষ গল্পগ্রন্থ—কালো মুরগি, বেওয়ারিশ লাশ এবং ৪টি অডিও ক্যাসেট (ভোরের পাখিরা/১৯৮৯, শিহরণ-১ও২ এবং ‘‘প্যারোডি’’) প্রকাশিত হয়েছে। ছাত্রজীবন অর্থাৎ ১৯৭৭ সাল থেকেই বাংলাদেশ ও ভারতের পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি। ১৯৭৮ সালে তৎকালীন রেডিও বাংলাদেশ রংপুর কর্তৃক ‘‘উত্তরবঙ্গের শ্রেষ্ঠ ছড়াকার’’ হিসেবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত। ১৯৮৬ সালে সিলেট ছড়া পরিষদ কর্তৃক ছড়ায় অবদান রাখার জন্য পুরস্কৃত। ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত জাতীয় বিভিন্ন দৈনিকে সাংবাদিকতাছাড়াও বিভিন্ন সাহিত্য পত্রিকা যেমন; লালমনিরহাট থেকে ত্রৈমাসিক চলমান, ত্রৈমাসিক ব্যতিক্রম, ত্রৈমাসিক দারুচিনি, ত্রৈমাসিক কিশোরকন্ঠ, ত্রৈমাসিক প্রজাপতিসহ (অধুনালুপ্ত) বিভিন্ন পত্রিকার সম্পাদক এবং লালমনিরহাটের প্রথম প্রকাশিত ‘সাপ্তাহিক জানাজানি’র প্রতিষ্ঠাতা সাহিত্য সম্পাদক ছিলাম। বিসিএস তথ্য ক্যাডারের সদস্য; প্রধান তথ্য কমিশনারের (প্রতিমন্ত্রী) পিআরও হিসেবে তথ্য কমিশনে কর্মরত।

মন্তব্য দেখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *