পৃথিবীর কোন এলাকায় চাঁদ দেখার ঘোষণা দেবার পর একই দিনে অর্থাৎ ২৪ ঘন্টার মধ্যেই সারা বিশ্বে রোজা পালন (শুরু ও শেষ) এবং ঈদ উদযাপন করা সম্ভব কি?
আসুন, এবার নিচের তথ্যগুলোর দিকে একটু নজর দেই–
Time difference between New York, New York USA and Mecca, Saudi Arabia : +7:0 hrs
Mecca is 7:0 hours ahead of New York
That means when it is 8:00 am in New York, it is 3:00 pm in Mecca
…………………………………………………………..
Time difference between USA and Bangladesh is: +10:0 hrs
Bangladesh is 10:0 hours ahead of USA
That means when it is 6:00 am (morning) in Washington DC USA, it is 4:00 pm in Dhaka Bangladesh
……………………………………………………………………
Time difference between Mecca, Saudi Arabia and Chandpur, Bangladesh is: +3:0 hrs
Chandpur is 3:0 hours ahead of Mecca
That means when it is 9:00 am in Mecca, it is 12:00 pm in Chandpur
……………………………………………………………………
Time difference between Tokyo, Japan and Jeddah, Saudi Arabia is: -6:0 hrs
Tokyo is 6:0 hours ahead of Jeddah
That means when it is 9:00 am in Jeddah, it is 3:00 pm in Tokyo
……………………………………………………………………………
Time difference between USA and Japan is: +13:0 hours
Japan is 13:0 hours ahead of USA
That means when it is 1:00 am (midnight) in Washington DC USA, it is 2:00 pm in Tokyo Japan (same calendar day)
…………………………………………………
যেমন ধরুন সিদ্ধান্ত নেয়া হলো মক্কার/ আমেরিকার আকাশে চাঁদ ওঠা দেখে সারা বিশ্বে রোজা পালন (শুরু ও শেষ) ও রমজান শেষে ঈদ উদযাপন করা হবে। মক্কায়/ আমেরিকায় চাঁদ দেখার উপর ভিত্তি করে সৌদি/ মার্কিন সরকার ১ম রোজা শুরুর এবং ঈদের নামাজ আদায়ের ঘোষণা দিলেন। এক্ষেত্রে আমেরিকা/ সৌদিআরব ও বাংলাদেশে/ জাপানে ১ম রোজা ও ঈদের ঘোষণা ও আদায়ের সময়সূচি কিরূপ হবে? ২৯ রমজান মক্কার/ আমেরিকার আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় চাঁদ দেখা সম্ভব না হলে তখন কিভাবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে? আমি স্বীকার করছি যে, এই বিষয়টি আমি কম বুঝি। আমাকে ঘন্টা (মিনিট না হলেও চলবে) যোগ বা বিয়োগ করে একটু বুঝিয়ে দেবেন কি?
………………………………………………………..
Rising and setting times for the Sun (UnitedStates)
Date—————–Sunrise – Sunset
Aug 27, 2011—– 6:04 AM – 7:27 PM
Aug 28, 2011—– 6:05 AM – 7:25 PM
Aug 29, 2011—– 6:06 AM – 7:24 PM
Aug 30, 2011—– 6:07 AM – 7:22 PM
Aug 31, 2011—– 6:08 AM – 7:20 PM
Sep 01, 2011——6:09 AM – 7:19 PM
……………………………………………………………….
Rising and setting times for the Sun (Saudi Arabia)
Date—————–Sunrise – Sunset
Aug 27, 2011—– 6:03 AM – 6:42 PM
Aug 28, 2011—– 6:03 AM – 6:41 PM
Aug 29, 2011—– 6:03 AM – 6:40 PM
Aug 30, 2011—– 6:03 AM – 6:39 PM
Aug 31, 2011—– 6:04 AM – 6:38 PM
………………………………………………………..
আবার যদি আমেরিকায় ১ম রমজানের চাঁদ দেখা যায়, তাহলে চাঁদ দেখা যাওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যে জাপানে কিভাবে ১ম রমজানের সেহরী করবেন ও রোজা রাখবেন। একই ভাবে ঈদ উদযাপনের সিদ্ধান্তই বা নেবেন কেমনে?
আমেরিকায় সন্ধা ৬ টায় চাঁদ দেখা গেলে তখন জাপানের সময়সূচি অনুসারে (৬ + ১৩) সকাল ৭ টা বাজবে। সুতরাং জাপানে ১ম রমজান শুরু হবে আমেরিকায় চাঁদ দেখা যাবার আরও অন্তত ১১ ঘন্টা পরে। আবার আমেরিকায় যখন লায়লাতুল কদরের রাত ঘনিয়ে আসবে তখন জাপানে বিরাজ করবে সূর্যের আলো ঝলমল দিন। আর আমেরিকায় ২৯ রমজান শেষে সন্ধায় ঈদের চাঁদ দেখা গেলে আমেরিকার মুসলিমরা পরের দিন ঈদ উদযাপন করবেন। কিন্তু জাপানে তখন রাত থাকায় জাপানের মুসলিমদের ঈদ উদযাপন করতে হবে আমেরিকায় ঈদের চাঁদ দেখা যাবার আরও অন্তত ২৪ থেকে ২৫ ঘন্টা পর অর্থাৎ অন্তত ১ দিন পরে।
আবার যদি মক্কায় চাঁদ দেখা বা না দেখা যাওয়ার উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন দেশে বসবাসরত মুসলিমগণকে সৌদি সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে রোজা পালন ও ঈদ উদযাপন করার ঘোষণা দিতে হয়, তাহলে তখন আমেরিকার সময়সূচী অনুসারে দুপুর ১২ টা বাজায় সেখানকার মুসলিমগণকে অন্ততপক্ষে আরও ৬ ঘন্টা পর ও বাংলাদেশের মুসলিমগণকে অন্ততপক্ষে উক্ত তারিখ (৬+৩) রাত ৯ টা পর্যন্ত এবং জাপানের সরকার ও জনগণকে অন্ততপক্ষে (৬+৭) রাত ১ টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে রোজা শুরু ও শেষ এবং ঈদ উদযাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে ও ঘোষণা দিতে হবে। যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে বাংলাদেশের জনগণকে মক্কায় চাঁদ দেখা যাওয়ার আরও অন্ততপক্ষে ৩৪ থেকে ৩৫ ঘন্টা পরে এবং জাপানের জনগণকে মক্কায় চাঁদ দেখা যাওয়ার আরও অন্ততপক্ষে ৩০ থেকে ৩১ ঘন্টা পরে ঈদের নামাজ আদায় করতে হবে।
সুতারাং এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, এক একটি অঞ্চল ভেদে চাঁদ ও সূর্যের নিজস্ব গতিবিধি অনুসারে হিসেব নিকেশ করেই ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি পালন করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করতে হবে এবং এটাই সবার জন্য সহজ ও সবার কাছেই গ্রহণ যোগ্য হবে। এরপর অনিচ্ছাকৃত ভুলত্রুটি ক্ষমা করার ও ফল দেয়ার মালিক তো সর্বজ্ঞ পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা।
তাই আমি মনে করি যে, একই 'দিন অর্থাৎ দিবস' হিসেবে না বলে বা ভেবে, বরং সারাবিশ্বে ঈদ/ রোজা পালনের ক্ষেত্রে একই আরবী তারিখ ধরে নেয়াটা বেশি যুক্তিযুক্ত। এভাবে বোঝানোর চেষ্টা নিলে মনে হয় সবারই বুঝতে সুবিধা হবে।
আমাদের সবারই মনে রাখা উচিত যে, শাশ্বত ধর্ম ইসলাম জীবনকে জটিল নয়, বরং সহজ ও সরল ভাবে পালনের জন্যই প্রেরিত হয়েছে-
ধরুন সৌর-ঝড়ের কারনে ২৯ রমজানে পৃথিবীর সব তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমগুলো হঠাৎ করে ২/৩ দিনের জন্য বিকল হয়ে যাওয়ায় তথ্য আদান প্রদান অসম্ভব হয়ে পড়ল। তখন কি করবেন? এক্ষেত্রে নিশ্চয় হাদিছ মোতাবেক এলাকা ভিত্তিক চাঁদ দেখেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
আল-কোরআনের বিধান একটা দেশের পরিসরে যেমন মানা যায়, তেমনি গোটা পৃথিবীর পরিসরেও মানা সম্ভব। তবে এর জন্য বিশেষ উদ্যোগ, ধৈর্য সহ পরস্পরের সাথে আলোচনা, অন্যের বক্তব্য শোনা ও সেই অনুযায়ি গ্রহণযোগ্য সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে।
Abu Huraira reported Allah's Messenger (sw) as saying: Whenever you sight the new moon (of the month of Ramadan) observe fast. and when you sight it (the new moon of Shawwal) break it, and if the sky is cloudy for you, then observe fast for thirty days.
Chapter: Each land has its own sighting of the moon, and if they see the crescent in one land, that does not necessarily apply to regions that are far away from it.
Kuraib reported that Umm Fadl, daughter of Harith, sent him (Fadl, i. e. her son) to Mu'awiya in Syria. I (Fadl) arrived in Syria, and did the needful for her. It was there in Syria that the month of Ramadan commenced. I saw the new moon (of Ramadan) on Friday. I then came back to Medina at the end of the month. Abdullah b. 'Abbas (Allah be pleased with him) asked me (about the new moon of Ramadan) and said: When did you see it? I said.: We saw it on the night of Friday. He said: (Did) you see it yourself? -I said: Yes, and the people also saw it and they observed fast and Mu'awiya also observed fast, whereupon he said: But we saw it on Saturday night. So we would continue to observe fast till we complete thirty (lasts) or we see it (the new moon of Shawwal). I said: Is the sightidg of the moon by Mu'awiya not valid for you? He said: No; this is how the Messenger of Allah () has commanded us. Yahya b. Yahya was in doubt (whether the word used in the narration by Kuraib) was Naktafi or Taktafi.
Chapter: Going out for the two 'Eids the (morning of the) following day-
It was narrated from 'Umair bin Anas from his paternal uncles, that : Some people saw the crescent moon and came to the Prophet (), and he told them to break their fast after the sun has risen and to go out for 'Eid the (morning of the) following day. (Sahih)
………………………………………….
উপরে বর্ণিত হাদিছ অনুসারে চাঁদ দেখে রোজা পালন ও ঈদ উদযাপন করা সম্পর্কে মোটামুটি সবাই একমত। তথাপি আমি দুটি প্রস্তাব রাখতে চাই–
১/ মূলত সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি স্পেসিফিক (হিজরি) ক্যালেন্ডার বানালে এ বিষয়টির যুক্তিসংগত সমাধান করা সম্ভব হতে পারে। পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে রমজানের ও ঈদের চাঁদ দেখা যাওয়া বা না যাওয়া সাপেক্ষে সেই স্পেসিফিক ক্যালেণ্ডার আনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিয়ে সারা বিশ্বে একই আরবী তারিখে রোজা শুরু ও শেষ এবং ঈদ উদযাপন করার বিষয়ে ঐক্যমতে পৌঁছানো যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে হাদিছ মোতাবেক অঞ্চলভিত্তিক চাঁদ দেখে ঈদ উদযাপন করার ক্ষেত্রে শৈথিল্য প্রদর্শন করাকে অনেকে গ্রহন নাও করতে পারেন।
২/ পৃথিবীর মানচিত্রকে যদি এমন কয়েকটি এলাকায় ভাগ করে নেয়া হয় যে, সেই ভৌগলিক সীমারেখার কেন্দ্র-বর্তী যে অঞ্চলে নুতন চাঁদ দেখা যাবে, সেই অঞ্চলের মাঝে অবস্থিত দেশ/ দেশগুলোকে কেন্দ্র ধরে তার চারপাশে যতদূর পর্যন্ত অঞ্চলে চাঁদ দেখা যাওয়ার ক্ষণ থেকে শুরু করে তৎপরবর্তী সান্ধ্যকালীন সময়ের (অথবা ইফতারির অর্থাৎ রোজা ভাঙ্গার সময়ের) ব্যবধান (আগে/ পারে) সর্বোচ্চ দুই ঘন্টার মধ্যে থাকবে, সেই সীমানার মাঝে অবস্থিত দেশ বা দেশগুলোতে চাঁদ দেখার সংবাদ পৌছানো সাপেক্ষে অত্র অঞ্চলের মুসলিমগণ একসাথে রোজা আরম্ভ ও শেষ এবং ঈদ উদযাপন করবেন।