খালেদা হাসিনার সংলাপ

কান। সুন্দর। সবার আছে। যার প্রাণ আছে। কানের রকমও অনেক। বড় কান। ছোট কান। কুলার মত কান। হাতির কান সবচেয়ে বড়। কানের সৌন্দর্য তো বিধাতাই দিয়েছে। সুন্দরকে আরো সুন্দর করার প্রচেষ্টার কোন ঘাটতি নেই। মানুষের। নারীরা আরো বেশী সক্রিয়। দেখবেন সব নারীরাই কান ছিদ্র করে। পৃথিবীতে কোন নারীর কান ছিদ্র করা হয়নি এমন নারী আছে কিনা জানিনা। আবার অনেকে একের অধিক ছিদ্র করে। পুরুষরাও আজকাল থেমে নেই। কান ফোঁড়াতে। পশ্চিমে শুধু নয়। বাংলাদেশেও। শুধু তরুনদের মধ্যে নয়। পুরানো যারা তাদেরও অনেকে কান ফোঁড়ায়। এমনকি টরন্টোতেও কয়েকজন বাংগালী আছে। যাদের কান ফোড়ানো। আমার অত্যন্ত একজন ঘনিষ্ঠ আছে যার কান ফোড়ানো। তার কানে দুল নেই। তবে নারীর কানে দুল আমার খুব প্রিয়। জলি যখন দুল পড়ে সুন্দর দেখি। অবশ্য আজকাল দুলের সাইজ বেকায়দার। বড় বড়। কুলার মত। আল্লাহ কান সৃষ্টি করেছে শুধুমাত্র সৌন্দর্য্যের জন্য নয়। ভাল শোনার জন্য। অদ্ভুত সৃষ্টি। বিধাতার মহান দান। সব প্রাণীর কান নিয়ে আলোচনা নেই। তবে হাতির কান নিয়ে আলোচনা বিশদ। খরগোশ ছোট হলেও তার কান সুন্দর। কান দিয়ে শুধু শোনা হয় তা নয়। সতর্কতাও আছে। যেমন এদিকে কান দিও। আবার ঠাকুর বলছে ‘‘আমি কান পেতে রই।’’ স.স কানের বিবরণ দিচ্ছিলো। জগতে আর কোন বিষয় নেই যা নিয়ে তুমি আলোচনা করতে পারো? জননেত্রী প্রশ্ন করলো। আপা কান দিয়ে জীবনের কথা শোনা যায়। আবার মৃত্যুর কথাও। মরার সময় কলেমা পড়ে কানে কানে। বেশ আগে পড়েছি মনে নেই। শেক্সপিয়ারের হ্যামলেটে কানে বিষ দেয়া হয়েছিল। তাই মৃত্যু। সংবাদ না দুঃসংবাদ কানেই বয়ে বেড়ায়। আর আমি কেন কান নিয়ে বলছি তার কারণ ব্যাখ্যা করছি। আপনিতো আমার কথা কানে দেন না। এক কানে ঢুকান অন্য কান দিয়ে বের করে দেন। তবু বলি। আমি আপনার প্রতি খুবই ঈশ্বান্বিত। আপনি প্রধানমন্ত্রী সেজন্য নয়। আপনি জীবনে একজন ভাল বান্ধবী পেয়েছিলেন সে জন্যে। জীবনে একজন ভাল বন্ধু পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। সবার কপালে জুটে না। আর জুটলেও থাকে না। কিন্তু আপনার ক্ষমতা যেমন অপরিসীম আপনার বান্ধবীর আপনার প্রতি দরদও সীমাহীন। বিষয়টা বুঝলেন না? আরে বুঝবো কিভাবে। শুনলে তো? আপনি স্বীকার করবেন কিনা জানিনা। তবে আপনি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন আপনার বান্ধবী দেশনেত্রীর কারণে। দেশনেত্রী দেশ থেকে পালালে আপনার জীবনে আর প্রধানমন্ত্রী হতে হতো না। তার চেয়েও আপনার বান্ধবী আপনাকে উপকার করেছে। আপনার কানটা নষ্ট করে। আপনার জনসভায় কে বোমা মেরেছিল। জানিনা। তবে বোমা মারার ফল পেয়েছেন আপনি। ২১ শে আগষ্টের বোমা হামলায় আপনার কান ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বোমা মারার পেছনে দেশনেত্রী ছিল কিনা জানিনা। তবে বিচারের নামে যে তামাশা করেছে দেশনেত্রী। যা জাতি ভুলে যেতে বসেছে। তবে কান নিয়ে আমার খুব বড় ধারণা আছে। কানে মধু আছে। আছে যাদু। কান দিয়েই প্রেমের কথা শোনে। শোনে বিরহের। শোনে ভালবাসার। প্রেম অপ্রেম দুটোই কান দিয়ে যাওয়া আসা করে। কিন্তু আপনার ক্ষেত্র ভিন্ন। কান ভাল থাকলে আপনি ক্ষমতায় যেতে বা থাকতে পারতেন না। সরাসরি বলছি। যেমন এবার ক্ষমতায় আসার পর বিরোধী দল যা বলছে তা আপনি কানে শুনতে পারেননি। কানে খাট। প্রথমেই পিলখানা হত্যাকান্ডে জে. শাকিল বাঁচার জন্যে প্রচন্ড চিৎকার করেছিল আপনার কানে পৌঁছে নি। তার পরপরই ড. ইউনুস চিৎকার করে বলেছিল যেন তাকে গ্রামীন ব্যাংক থেকে না সরানো হয়। আপনি শোনেননি। কানের সমস্যার জন্য। আমাদের বরিশালে বলে কানে তালি লাগছে। মানে কানে কিছু শোনায় না। আমার মনে হয় আপনার কানের পর্দা ফেঁটে গেছে। উপকার আপনারই। কানের সমস্যার জন্য ঢাকা ভাগ হয়েছে। সবাই চিৎকার করে বলেছে ঢাকা ভাগ করবেন না। এই চিৎকার আপনার কানে পৌঁছে নি। তাই ভাগ। ঢাকা শহর ভাগ। আপনার ক্ষমতায় আসার পর সারা দেশে লুট হয়েছে। হচ্ছে আজও। আপনি শোনেননি। শুধু মাত্র কান নষ্ট হবার জন্যে। কত ডাক্তার কবিরাজ দেখালেন। কিন্তু কান ভাল হলো না। ক্ষমতায় এসে প্রথমে বান্ধবীকে ঘর ছাড়া করলেন। অবশ্য আপনার বান্ধবীও ভাগ্যবান যে আপনার মত বান্ধবী পেয়েছে। ঘর ছাড়ার পর আপনার বান্ধবী এত চিৎকার করলো “আমাকে ঘর ছাড়া করো না’’। আপনি শুনলেন না। তারপর চৌধুরী আলম ণ্ডম হলো। আপনি চৌধুরী আলমের স্ত্রীর চিৎকার শুনলেন না। তারপর তো কত ণ্ডম হলো। তাদের কান্নার শব্দ আপনি শোনেন না। তিন সপ্তাহ আগে ইলিয়াস ণ্ডম হলো। দেশব্যাপী গর্জে উঠলো। না আপনি কানে শুনতে পেলেন না। ইলিয়াসের বউ লুনা জানে আপনার কান একটু নষ্ট। তাই আপনার কাছে এসে আপনার কানে কানে বললো ‘আমার স্বামীকে একটু খুঁজে দেন।’ সবাই ভাবছিল এইবার বোধহয় আপনি কানে শুনবেন। না, তাও আপনার কানে গেল না। ইলিয়াসের ছোট বাচ্চার চিৎকার আপনার কানে যায় না। ইলিয়াসের ণ্ডমের খবরের চেয়ে আরও বড় খবর গার্মেন্টস আমিনুল ইসলামকে ণ্ডম। নিউইর্য়ক টাইমসেও খবরটা আসছে। বিশ্বের সবার ধারণা কাজণ্ডলো আপনারই কেউ করছে। তাই শুনছেন না। কেননা মানুষের খুন, ণ্ডম, শেয়ারবাজার, দলবাজি, টেন্ডারবাজি এণ্ডলোর চিৎকার আপনি শোনেন না। কিন্তু কালো বিড়াল ‘‘ম্যাও’’ করলে আপনি ঠিকই শোনেন। কালো বিড়াল কালোই রাখলেন। আলোতে আনলেন না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে গত আড়াই বছর ধরে সারা দেশ চিৎকার করছে। আপনার প্রিয় এরশাদও। আপনি শোনেন না। আপনার নষ্ট হওয়া কানে না শোনার এক অসীম ক্ষমতা। তবে এ সপ্তাহে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কানে কানে যা বলছে তার ভাষা বুঝছেন কিনা, কে জানে। আমার ব্যক্তিগত অনুরোধ কানে শোনার দরকার নেই। শুনলেই বিপদ। আগামী দেড় বছর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যারা করে তাদের কিছু দিবেন। যারা ব্যাংক পেয়েছে তারা খুশী। যারা টেন্ডার পেয়েছে তারাও খুশী। বিদেশে যারা আওয়ামী লীগ করে তাদের সরকারী প্লটণ্ডলো দিতে পারেন। প্রবাসীদের আওয়ামী লীগারদের কাছে প্লট খুব লোভনীয়। আপা পারলে শ্রমিকনেতা আমিনুলের বাচ্চা দুটোকে চার কেজি চাল পাঠিয়ে দিবেন। ওদের কেউ নেই। না খেয়ে আছে। ইলিয়াসের বাচ্চা না খেয়ে থাকবে না। বড় নেতা। বড় বাড়ী। বাড়ীর দামও ২০ কোটি টাকা। কিভাবে আয় করেছে তা আপনি আর আপনার বান্ধবী জানবেন। কিন্তু আমিনুলের কোন ব্যবসা ছিলনা। আধা খাওয়া গার্মেন্টস শ্রমিকদের নেতা ছিল। আপা যদি ওর ঠিকানাটা দিতে পারেন তাহলে আমি ক’টা টাকা দিতাম। আমার অত টাকা নেই। তবে মন আছে। দেবার। তবে আপনার শ্রমিক দরকার নেই। দরকার মালিক। যাদের বাহিনী আছে। আমিনুলের কথা শুনে শ্রমিক নেতা তাজুল ইসলামের কথা মনে পড়ে। আদমজীর শ্রমিক নেতা ছিল। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে এরশাদের পেটোয়া বাহিনীর হাতে প্রাণ দেয়। এসএম হল থেকে ব্যাগ ভরে ফুল দিয়ে তার কফিন সাজিয়ে ছিলাম। ইচ্ছে হয় আমিনুলের ক্ষত বিক্ষত দেহের সমাধীতে গিয়ে ফুল দেই। যাকগে আপা আপনি এরশাদের কথায় মাইন্ড করলেন নাকি? স.স প্রশ্ন করলো। শোনো তোমার কোন কথায় মাইন্ড করিনা। আর এরশাদ আমার ভাল বন্ধু। রবীন্দ্রনাথের শেষের কবিতার। লাবন্যর মত। কেউ ঘটের জল। আর কেউ সাগরের। ভারতকে আপনি সাগরের জলের মতই ব্যবহার করতে পারেন। এরশাদকে ঘটের জল। রবীন্দ্রনাথের ‘‘দান প্রতিদানের’’ মত। কেননা ৮৬’র নির্বাচনের পর আপনাকেও সে ঘটের জলের মত ব্যবহার করেছিল। মাঝখানে মধুর কেন্টিনের সামনে আসলামের লাশটা পরে থাকলো। আপা আর যাই করেন সেনাবাহিনী খুশী রাখবেন। সেনাবাহিনী অলমোস্ট সাইজ হয়ে গেছে। আরেকটা করতে পারেন। আপনিতো আমার কথা শোনেন না। বললাম একবার মিশর ঘুরে আসেন। ওখানে সেনাবাহিনীর বড় অফিসারদের বড় বড় ব্যবসা আছে। রাষ্ট্রীয় ব্যবসা বাণিজ্যের বিরাট অংশীদার। আপনিও তেমন করতে পারেন। বুদ্ধি খারাপ না। আপনার দরকার ক্ষমতা। আর ভারতকে সাথে রাখবেন। প্রণব একটু উল্টাপাল্টা বলছে। দীপুকে দিয়ে আপনার তেমন সার্ভ হবে বলে হয়না। মনে রাখবেন ভারতও আপনার বিপক্ষে যেতে পারে। যেমন ভারত শ্রীলংকায় তামিলদের অস্ত্র আর অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছে আবার শেষে সেই হাজার হাজার তামিলকে হত্যা করেছে। আর আপনার ছাত্রলীগকে একটা নিয়মিত পেটোয়া বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন। অস্ত্র তাদের আছে। গতকাল ঢাকা কলেজের হোস্টেলে ছাত্রলীগের রুম থেকে যে অস্ত্র বের করেছে তা যথেষ্ট। আপনাকে রক্ষা করার। আর রক্ষা যদি নাইই করতে পারে তাহলে দরজা খুলে বুকটা সামনে দিবেন। বঙ্গবন্ধু বা জিয়ার মত বুকটা ঝাঝড়া হয়ে যাবে। জিয়া হত্যাকারী এরশাদ বা বঙ্গবন্ধু হত্যাকারী মোস্তাকের বংশ কিন্তু অবশ্যই আছে। ভাগ্যিস বাংলায় পুরুষ কম। বেশীর ভাগই কাপুরুষ। ওরা মরে কিন্তু মেরে মরে না। আর জামায়াত নিয়ে ভাববেন না। ওদের সবটাই নেতিয়ে গেছে। দেখলাম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিবির নেতাকে বাস থেকে নামিয়ে ণ্ডম করেছেন। সবাই দেখছে। আপনার বাহিনী ধরে নিয়ে গেছে। তাই বললাম। রাগ করবেন না। আপনার ভালর জন্যে বলছি। কান নষ্ট রাখবেন। মেরুদন্ড সোজা রাখবেন। শুধু ভারতীয়দের কাছে মেরুদন্ড বাঁকা রাখবেন। কেননা বুক ঝাঝড়া থেকে ওরা বাঁচাতে পারে। যদি চায়। তবে আপা নিয়তির বিচার আছে। কমাস আগে ফ্রাসের সারকোজির আক্রমনে গাদ্দাফি মারা গেল। গাদ্দাফির টাকায়ই সারকোজি জিতেছিল। গত নির্বাচনে। আজ সেই সারকোজি আর নেই। তবে প্রাণ আছে। ফ্রান্সে প্রাণ দিতে হয় না। কিন্তু বাংলায় প্রাণ যায়। ঝাঝড়া হয়। বুক। আপা আপনার বুকের সেই পরিণতি কোনদিনই কামনা করিনা। তবে দেশটা যেভাবে ণ্ডমের রাজত্বের দিকে যাচ্ছে তা ভয়ংকর।  আপা আমার ভয় আপনাকেও যদি কেউ ণ্ডম করে! রেকর্ড হবে। কেননা আপনিই হবেন বাংলাদেশের প্রথম নারী ণ্ডম। হয়তো বা আপনি ণ্ডম হবেন না। কিন্তু ক্ষমতা যদি বদলায় তাহলে? অনেক বিএএল (বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ) এর লোক ণ্ডম হতে পারে। স.স গণকের ভাষায় কথা বললো। তোমার কথা ‘কুফা’ শুধু ভয় দিচ্ছো। আমি তেমন ভয় পাইনা। সমস্যা হলে তোমার টরন্টোয় চলে আসবো। আর জীবন একটাই। ণ্ডম করতে করতে ণ্ডম হয়ে যাবোঅ তবু আমার কান ঠিক করবো না। কানই প্রাণ। ইস্রাফিলের শিংগার ফুকও আমার কান ঠিক করতে পারবে না।

Loading


Comments

খালেদা হাসিনার সংলাপ — 1 Comment

  1. দারুন একটি লিখা! চালিয়ে যান । তবে গুম হলে কিছু করতে পারব না!

মন্তব্য দেখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *