কোরানের বিস্ময়কর রচনা পদ্ধতি পর্ব -২৫ সুরাহ-মুদ্দাস্সির

হাদিস থেকে প্রমাণিত যে সুরাহ আলাকের প্রথম পাঁচ আয়াতের পরে অনেক বিরতি-gap দিয়ে সুরাহ মুদ্দাস্সিরের ১ থেকে ৭ আয়াত আয়াত নাজিল হয় এরপর আলাদাভাবে ৭ থেকে ৫৬ আয়াত গুলো পরে নাজিল হয়।

খেয়াল করুন, আল্লাহ পাক রাসূলকে সা. সুরাহ মুদ্দাস্সিরে নির্দেশ করেছেন ২ নম্বর আয়াতে মানুষকে সতর্ক করতে ﴿قُمْ فَأَنذِرْ ﴾ ২) ওঠো এবং সতর্ক করে দাও, কিন্তু, কি দিয়ে সতর্ক করবে? guidance কি?

আল্লাহ পাক এই কথার জবাব দিলেন: ৩৫ নম্বর আয়াতে, যেই আয়াত গুলো নাজিল হয়েছিল ১ থেকে ৭ আয়াতের অনেক পরে এই বলে যে এই কুরআন ই হলো permanent and best সতর্ককারী نَذِيرًا সমগ্র মানবতার জন্য এবং কোরানের কারণে আল্লাহর রাসূলকে তাই নাজির/ সতর্ককারী বলা হয়:﴿ إِنَّهَا لَإِحْدَى الْكُبَرِ ﴾ ৩৫) এটি বড়ো জিনিসগুলোর একটি ৷ نَذِيرًا لِّلْبَشَرِ ﴾ ৩৬) মানুষের জন্য সতর্ককারী হিসেবে ৷

খেয়াল করুন কাফেরদের পক্ষ থেকে কোরানের ব্যাপারে শত্রুতা এবং তাদের পক্ষ থেকে কি অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছিল;﴿كَلَّا ۖ إِنَّهُ كَانَ لِآيَاتِنَا عَنِيدًا﴾ ১৬) তা কখনো নয়, সে আমার আয়াতসমূহের সাথে শত্রুতা পোষণ করে৷ فَقَالَ إِنْ هَٰذَا إِلَّا سِحْرٌ يُؤْثَرُ ( ২৪) অবশেষে বললোঃ এ তো এক চিরাচরিত যাদু ছাড়া আর কিছুই নয়৷ إِنْ هَٰذَا إِلَّا قَوْلُ الْبَشَرِ (২৫) এ তো মানুষের কথা মাত্র৷ এই সুরাহটি তে চারবার كَلَّا শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে কাফেরদের কথার প্রতিবাদ করতে এবং তাদের চিন্তাকে অগ্রহণযোগ্য ঘোষণা করতে: ১৬,৩২,৫৩,৫৪ এবং ৫৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহ স্পষ্ট করেছেন এই সুরাহাটির বিষয়বস্তু কি এবং কাফেরদের কোন কথার প্রতিবাদে আল্লাহ كَلَّا শব্দটি ব্যবহার করেছেন।
কাফেরদের সকল শত্রুতা, মিথ্যা অভিযোগ ও রিসালাতের শানে বেয়াদবি কথার প্রতিবাদে এই সুরাহর একেবারে শেষের দিকে যেয়ে ৫৪ নম্বর আয়াতেই আল্লাহ পাক এই সুরাহর কেন্দ্রীয় ও চূড়ান্ত বক্তব্য প্রদান করেছেন: كَلَّا إِنَّهُ تَذْكِرَةٌ (৫৪) কখ্খনো না, এতো একটি উপদেশ বাণী৷

এই সুরাহর একটি খুব আলোচিত এবং রহস্যময় আয়াত হলো ৩০ নম্বর আয়াতটি عَلَيْهَا تِسْعَةَ عَشَرَ তাহার উপরে উনিশ । মুহাম্মদ আসাদ এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন: Over it are nineteen [powers]. আয়াত-৩০ এই عَلَيْهَا শব্দটিতে هَا দিয়ে আমরা প্রস্তাব করছি যে তা ৩১ নম্বর আয়াতের কোরান কে নির্দেশ করে যা ইমাম রাজি, ইমাম শাওকানী এবং ইমাম কুরতুবী বলেছেন যা আমরা নিচে উল্লেখ করেছিআমরা এই কথা ও বলছি যে عَلَيْهَا শব্দটিতে هَا দিয়ে سَقَرُ / দোজখ – النَّارِ – দোজখের আগুনকে বুঝানোর সম্ভাবনাও ও রয়েছেআল্লাহ রাব্বুল আলামিনের এই মহা বিস্ময়কর কোরানের এটি একটি বড়ো মু’যেজা যে তিনি একিই শব্দ দিয়ে একসাথে অনেক স্তরের ইঙ্গিত করেছেনযেমন আয়াত শব্দটি দিয়ে আল্লাহ পাক একই আয়াতে নিদর্শন/ এবং কোরানের আয়াত ২ টাই বলেছেনমাওলানা মওদুদী র. বলেছেন ৩১ নম্বর আয়াতে একটি নতুন বিষয়ের আলোচনা শুরু হয়েছেএখান থেকে ( ৩১ নম্বর আয়াতের শুরু থেকে)”তোমরা রবের বাহিনী সম্পর্কে তিনি ছাড়া আর কেউ অবহিত নয়” পর্যন্ত বাক্যগুলোতে একটি ভিন্ন প্রসংগ আলোচিত হয়েছে৷”অর্থাৎ ৩০ নম্বর আয়াতের সংখ্যাটি ৩১ নম্বর আয়াতের উল্লেখিত ফেরেস্তাদের সংখ্যা নয় যেই কথার সমর্থন রয়েছে ইব্ন কাসীরের এই কথায়: { وَمَا يَعْلَمُ جُنُودَ رَبِّكَ إِلاَّ هُوَ } أي ما يعلم عددهم وكثرتهم إلا هو تعالىঅর্থাৎ ফেরেস্তাদের সংখ্যা এবং সংখ্যাধিক্যের কথাটি শুধু আল্লাহ ই জানেনআর ইব্ন কাসীর আরো কি বলেছেন খেয়াল করুন ফেরেস্তাদের সংখ্যা নিয়ে এই আয়াতের প্রসঙ্গে যে: { وَمَا يَعْلَمُ جُنُودَ رَبِّكَ إِلاَّ هُوَ } أي ما يعلم عددهم وكثرتهم إلا هو تعالى لئلا يتوهم متوهم أنهم تسعة عشر فقط، كما قد قاله طائفة من أهل الضلالة والجهالة، من الفلاسفة اليونانيين ومن شايعهم من الملتين الذين سمعوا هذه الآية، فأرادوا تنزيلها على العقول العشرة، والنفوس التسعة التي اخترعوا دعواها، وعجزوا عن إقامة الدلالة على مقتضاها، فأفهموا صدر هذه الآية، وقد كفروا بآخرها، وهو قوله { وَمَا يَعْلَمُ جُنُودَ رَبِّكَ إِلاَّ هُوَ } وقد ثبت في حديث الإسراء المروي في الصحيحين وغيرهما عن رسول الله صلى الله عليه وسلم أنه قال في صفة البيت المعمور الذي في السماء السابعة ” فإذا هو يدخله في كل يوم سبعون ألف ملك، لا يعودون إليه آخر ما عليهم “. অর্থাৎ ফেরেস্তাদের সংখ্যা এবং সংখ্যাধিক্যের কথাটি শুধু আল্লাহ ই জানেন এবং বায়তুল মামুরে প্রতিদিন ৭০ হাজার ফেরেস্তা প্রবেশ করে যারা আর ফিরে যায়না পৃথিবীর শুরু থেকে আজ পর্যন্ত ১৪ বিলিয়ন বছরে তাহলে কত ট্রিলিয়ন ফেরেস্তা বায়তুল মামুরে তাওয়াফ করছে আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা করছে?
সুবহানাল্লাহ! এই ব্যাপারটি ঈমানদারদের ঈমান বাড়িয়ে দেয় আর কাফেরদের কুফরী সন্দেহ বাড়িয়ে দেয়।

তাই আমরা প্রস্তাব রাখছি যে ৩০ নম্বর আয়তের ১৯ সংখ্যাটি একটি ভিন্ন উপমা যা আল্লাহ স্পষ্ট বলেছেন যে এটি একটি উপমা এবং তাই আমরা বলছি যে ১৯ ফেরেস্তাদের সংখ্যা নয়
তাহলে উনিশ মানে কি? ইমাম রাজি ১৯ দ্বারা দোজখের ফেরেস্তাদের সংখ্যা মানেন নি উনি ১৯ সংখ্যা দ্বারা মানুষের সত্তায় সক্রিয়মান ১৯ ধরনের শক্তির কথা বলেছেন যার সঠিক ব্যবহার করে সফল হওয়া যায় এবং ভুল ব্যবহার করে ব্যর্থ হতে হবে আখেরাতে Razi advances the view that we may have here a reference to the physical, intellectual and emotional powers within man himself: powers which raise man potentially far above any other creature, but which, if used wrongly, bring about a deterioration of his whole personality and, hence, intense suffering in the life to come.
আমরা তাই স্পষ্ট করে বলছি যে ১৯ দিয়ে আল্লাহ একটি উপমা দিয়েছেন যা আল্লাহ ৩১ নম্বর আয়াতে বলছেন এবং তাই ১৯ দিয়ে ফেরেস্তাদের সংখ্যা হবার চেয়ে ফেরেস্তাদের ১৯ টি গ্রুপ হবার সম্ভাবনা যেমনি প্রবল তেমনি, কোরান শরীফের স্ট্রাকচার টির মধ্যে ১৯ এর একটি স্বাক্ষর/প্যাটার্ন/ধারা থাকার সম্ভাবনাও প্রবল রয়েছে, যা ঈমানদারদের ঈমান বাড়িয়ে দিতে পারে এবং কাফেরদের পথভ্রষ্টতা বাড়িয়ে দিতে পারে।
আমরা কেন বলছি যে ১৯ সংখ্যাটি কোরানের এবং কোরানের বাহিরে আল্লাহর সৃষ্টির প্রাকৃতিক নিদর্শনের একটি ইউনিক মৌলিক স্ট্রাকচার কে নির্দেশ করতে পারে?
দেখুন কেন আমরা বলছি তা :
অনেক কোরান গবেষকের পর্যবেক্ষণ হলো: কোরানের সুরাহ গুলা শুরু হয়েছে (সুরাহ তাওবা ছাড়া ) বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম দ্বারা এবং এর মোট বর্ণের সংখ্যা ১৯ আবার এই আয়াতটি কোরানে ১১৪ বার এসেছে যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্যকোরান শরীফের প্রথম নাজিল কৃত সুরাহ আলাকের প্রথম আয়াত এর সর্বমোট শব্দের সংখ্যা “১৯”এবং এই পাঁচ আয়াতে টোটাল বর্ণের সংখ্যা ৭৬ যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্যএই সূরার সর্বমোট বর্ণের সংখ্যা ৩০৪ যা ১৯ দ্বারা বিভাজ্য ।
আর সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়ে হলো এই প্রথম সুরাহর সর্বমোট আয়াতের সংখ্যা ও হলো ১৯কোরান এ আল্লাহ পাককে নির্দেশ করতে وَاحِدٌ শব্দটো মোট ১৯ বার ব্যবহৃত হয়েছে আরো ১৯ সংখ্যার সাথে সংশ্লিষ্ট অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে যা ১৯ নামক একটি ইউনিক স্ট্রাকচার এর ইঙ্গিত দেয় যা কোনোভাবেই coincidence হবার সম্ভাবনা কম
কেউ চাইলে এইগুলাকে coincidence বলতে পারে কিন্তু আমরা বলছি যেহেতু কোরান বলেছে তাহার উপরে ১৯ এবং কোরান ফেরেস্তা শব্দ স্পষ্ট করে বলেনি বরং বলেছে উপমা এইখানে আরেকটি কথা উল্লেখযোগ্য যে উনিশটি বৃত্ত যখন ৬ কোণাকার হেক্সাহনাল shape হয় তা অত্যন্ত শক্তিশালী হয় “আমাদের শরীরের ৩০ % প্রোটিন হচ্ছে কোলাজেন প্রোটিন যা আমাদের শরীরের structural পসিশন গুলো যেমন লিগামেন্ট, জয়েন্ট, টেন্ডন, cornea তে পাওয়া যায়এবং এই হেক্সাগণ গুলো হলো ছয় কোনাকার ।যেমন মৌমাছির মৌচাকের প্রত্যেকটি কোষ ছয় কোনাকার originally, মৌচাকের কোষ গুলো ছিল বৃত্তাকার পরে স্ট্রাকচার টা স্ট্রং করার জন্য অন্যান্য কোষ গুলোর সাথে বলসে কৰাৰ জন্য এইগুলা ছয় কোনাকার হেক্সাগোনাল হয়ে যায় এই হেক্সাগোনাল honey comb এর ইভোল্যুশন নিয়ে কাজ করেছিলেন বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইন যখন উনিশটি বৃত্তাকার কোষ হেক্সাগোনাল হয়ে একটি স্ট্রাকচার গঠন করে আমাদের শরীরের বা প্রকৃতির সকল জায়গায় তখন টা একটি শক্তিশালী কাঠামোতে পরিণত হয় ”সুবহানাল্লাহ“ তাই আমরা কোরানে এবং প্রকৃতিতে ১৯ ডিসাইন এর একটি প্যাটার্ন লক্ষ্য করছি ।
ইমাম রাজি তাফসীরে কবিরে ২ টি মত এনেছেন وَمَا هِىَ إِلاَّ ذِكْرَىٰ لِلْبَشَرِ এই আয়াতের ذِكْرَىٰ মানে কি এবং هِىَ দিয়ে কি বুঝায়েছেন আল্লাহ্পাক?
قوله تعالى: { وَمَا هِىَ إِلاَّ ذِكْرَىٰ لِلْبَشَرِ } الضمير في قوله: { وَمَا هِىَ } إلى ماذا يعود؟ فيه قولان: الأول: أنه عائد إلى سقر، والمعنى وما سقر وصفتها إلا تذكرة للبشر والثاني: أنه عائد إلى هذه الآيات المشتملة على هذه المتشابهات، وهي ذكرى لجميع العالمية، وإن كان المنتفع بها ليس إلا أهل الإيمان.
আমরা দ্বিতীয় মতটির পক্ষে ই যুক্তি বেশি দেখতে পাচ্ছি এই সুরাহার বিষয়বস্তুর আলোকে এবং অন্যান্য প্রমানের আলোকে ।
দেখুন নিচের আয়াতে আল্লাহর পক্ষ থেকে নাজিলকৃত কোরানকে وَذِكْرَىٰ বলা হয়েছে: أُولَٰئِكَ الَّذِينَ هَدَى اللَّهُ ۖ فَبِهُدَاهُمُ اقْتَدِهْ ۗ قُل لَّا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ أَجْرًا ۖ إِنْ هُوَ إِلَّا ذِكْرَىٰ لِلْعَالَمِينَ ( ৯০) হে মুহাম্মাদ ! তারাই আল্লাহর পক্ষ থেকে হেদায়াত প্রাপ্ত ছিল, তাদেরই পথে তুমি চল এবং বলে দাও, এ
( তাবলীগ ও হেদায়াতের ) কাজে আমি তোমাদের কাছ থেকে কোন পারিশ্রমিক চাই না৷ এটি সারা দুনিয়াবাসীর জন্য একটি উপদেশ – ا ذِكْرَىٰ সুরাহ আনআম এর পর, আল্লাহ্পাক কাফেরদের ১৬,২৪,২৫ আয়াতে উল্লেখিত শত্রুতা ও অভিযোগকে খণ্ডন করেছেন কিছু জিনিসের শপথ করে জবাব দিচ্ছেন নিচের আয়াতে: كَلَّا وَالْقَمَرِ (৩২) কখ্খনো না, চাঁদের শপথ , ﴿وَاللَّيْلِ إِذْ أَدْبَرَ (৩৩) আর রাতের শপথ যখন তার অবসান ঘটে ৷ وَالصُّبْحِ إِذَا أَسْفَرَ ﴾ ৩৪) ভোরের শপথ যখন তা আলোকোজ্জল হয়ে উঠে।
আল্লাহপাক ৩২ থেকে ৩৪ আয়াতে, শেষ রাতের উদিত হওয়া চাঁদকে রাতের সরে যাওয়াকে এবং উজ্জ্বল ভোরকে, সাক্ষ্য রেখে ঘোষণা করলেন: إِنَّهَا لَإِحْدَى الْكُبَرِ (৩৫) নিশ্চয় এটি বড় জিনিসগুলোর একটি﴿نَذِيرًا لِّلْبَشَرِ (৩৬) তা মানুষের জন্য সতর্ককারী ৷
এই আয়াতের ব্যাখ্যায় نَّهَا যে কোরান তা আমরা বুঝতে পারি সুরাহ তাকবীরের শপথ এবং শপথের জবাব এর সাথে সুন্দর মিল প্রত্যক্ষ করে: فَلَا أُقْسِمُ بِالْخُنَّسِ (১৫) আমি কসম খাচ্ছি পেছনে ফিরে আসা الْجَوَارِ الْكُنَّسِ (১৬) ও অদৃশ্য হয়ে যাওয়া তারকারাজির এবং রাত্রির , ﴿وَاللَّيْلِ إِذَا عَسْعَسَ﴾ ১৭) যখন তা বিদায় নিয়েছে ﴿وَالصُّبْحِ إِذَا تَنَفَّسَ﴾ ১৮) এবং প্রভাতের , যখন তা শ্বাস ফেলেছে৷ ﴿إِنَّهُ لَقَوْلُ رَسُولٍ كَرِيمٍ﴾ ১৯) এটি প্রকৃতপক্ষে একজন সম্মানিত বাণীবাহকের বাণী ,ইমাম কুরতুবী আব্দুল্লাহ ইব্ন আব্বাসের সূত্রে বর্ণনা করেছেন যে إِنَّهَا এটি দিয়ে কাফেরদের মিথ্যা অভিযোগকে নির্দেশ করেছেন: وروي عن ٱبن عباس «إنَّهَا» أي إن تكذيبهم بمحمد صلى الله عليه وسلم { لإِحْدَى ٱلْكُبَرِ } أي لَكبيرة من الكبائر. وقيل: أي إن قيام الساعة لإحدى الكُبَر. والكُبَر: هي العظائم من العقوبات قال الراجز: অর্থাৎ, আল্লাহর রাসূলকে মানে আল্লাহর রাসূলের দেয়া কোরানকে/ রাসূলের রিসালাতকে তারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছিলইমাম শাওকানী هِىَ দিয়ে কোরানকে নির্দেশিত করেছেন এবং বলেছেন ذِكْرَىٰ হচ্ছে تذكرة ফর সমগ্র মানব জাতি{ وَمَا هِىَ إِلاَّ ذِكْرَىٰ لِلْبَشَرِ } { وَمَا هِىَ } أي الدلائل والحجج والقرآن إلاّ تذكرة للبشر. وقال الزجاج نار الدنيا تذكرة لنار الآخرة، وهو بعيد.এইবার আরো খেয়াল করুন কাফেরদের মিথ্যা অভিযোগ এবং জবাব সুরাহ তাকবীরেআর তার সাথে সুন্দর মিল রেখে সুরাহ মুদ্দাস্সিরে জবাব এসেছে সেই অভিযোগ গুলোর অথচ, সুরাহ দুটি মক্কী যুগের হলেও ভিন্ন সময়ে নাজিল হয়েছে﴿وَمَا صَاحِبُكُم بِمَجْنُونٍ﴾ ২২) আর ( হে মক্কাবাসীরা ! ) তোমাদের সাথী পাগল নয়৷ وَلَقَدْ رَآهُ بِالْأُفُقِ الْمُبِينِ (২৩) সেই বাণীবাহককে দেখেছে উজ্জ্বল দিগন্তে ৷ وَمَا هُوَ عَلَى الْغَيْبِ بِضَنِينٍ ﴾ ২৪) আর সে গায়েবের ( এই জ্ঞান লোকদের কাছে পৌঁছানেরা ) ব্যাপারে কৃপণ নয়৷ وَمَا هُوَ بِقَوْلِ شَيْطَانٍ رَّجِيمٍ (২৫) এটা কোন অভিশপ্ত শয়তানের বাক্য নয়৷ فَأَيْنَ تَذْهَبُونَ (২৬) কাজেই তোমরা কোথায় চলে যাচ্ছো ? إِنْ هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ لِّلْعَالَمِينَ (২৭) এটা তো সারা জাহানের অধিবাসীদের জন্য একটা উপদেশ ৷ ﴿لِمَن شَاءَ مِنكُمْ أَن يَسْتَقِيمَ (২৮) তোমাদের মধ্য থেকে এমন প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য , যে সত্য সরল পথে চলতে চায়৷ وَمَا تَشَاءُونَ إِلَّا أَن يَشَاءَ اللَّهُ رَبُّ الْعَالَمِينَ (২৯) আর তোমাদের চাইলেই কিছু হয় না , যতক্ষণ না আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তা চান৷আরো সুন্দর মিল দেখুন:সুরাহ তাকবীরে শপথ করে বলা হয়েছে: ﴿إِنْ هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ لِّلْعَالَمِينَ (২৭) এটা তো সারা জাহানের অধিবাসীদের জন্য একটা উপদেশ ৷আর সুরাহ মুদ্দাস্সিরে বলা হয়েছে: ৩১ আয়াতে বলা হয়েছে: وَمَا هِيَ إِلَّا ذِكْرَىٰ لِلْبَشَرِ ইহা (কোরান) তো আরো কিছু নয় সমগ্র মানবতার জন্য উপদেশ। আবার ৫৪ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে:كَلَّا إِنَّهُ تَذْكِرَةٌ (৫৪) কখ্খনো না এতো একটি উপদেশ বাণী৷কি সুন্দর মিল কি সুন্দর কোরানের ব্যাখ্যা পদ্ধতিএক সুরাহতে কিছু অস্পষ্ট মনে হলেও আল্লাহ অন্য সুরাহতে যেয়ে আল্লাহ আরো পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করে দিয়েছেন অথচ সুরাহ দুইটি ভিন্ন সময়ে নাজিল কৃত সুবহানাল্লাহ !
এই সুরাহর একটি খুব আলোচিত এবং রহস্যময় আয়াত হলো ৩০ নম্বর আয়াতটি কোরানের সুরাহ নাজিলের সময়ের ক্রমধারা অনুযায়ী এই সুরাহটি দ্বিতীয় এবং দ্বিতীয় সুরাহাতেই কোরান যে আল্লাহর পক্ষ থেকেই এসেছে, রিসালাত যে সত্য কাফেরদের অভিযোগ যে সম্পূর্ণ মিথ্যা তা আল্লাহ পাক প্রকৃতিতে তাঁর কিছু নিদর্শনের মাঝে সাক্ষ্যি রেখে ঘোষণা করলেন। আর কোরানের ভিতরে এন্ড প্রকৃতিতে ১৯ এর ডিসাইন / প্যাটার্নকে সাক্ষ্যি রাখলেন সুবহানাল্লাহ কোরানের তুলনা কোরান নিজেই কোরানের বর্ণনা বিন্যাস , ডিজাইন সবকিছুই ইউনিক এবং বিস্ময়ে পরিপূর্ণ!


মন্তব্য দেখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *