ঐতিহাসিক বিজয়ের মাস

যারা আল্লাহতে বিশ্বাসী ও তাঁর প্রেরিত জীবন ব্যবস্থায় আত্মসমর্পণকারী অর্থাৎ যারা সত্যিকার মুসলিম তাদের কাছে রমজান মাসটি হচ্ছে সংগ্রাম ও বিজয়ের মাস। সারা বিশ্বের মুসলিমদের কাছে এ মাসের গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা এ মাসেই নাজিল হয়েছে পবিত্র কোরআন যাকে মহান আল্লাহ গোটা মানব জাতির জন্য পথ প্রদর্শক হিসাবে ঘোষণা দিয়েছেন। (সুরা বাকারা)
আমরা অনেকেই জানি, বিখ্যাত হাদিস বিশারদ সাহাবী হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে ও সওয়াবের নিয়তে রমজান মাসের রোজা রাখবে তার পূর্বের গুনাহসমূহ মাফ করে দেওয়া হবে। যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে ও সওয়াবের নিয়তে রমজান মাসের রাত্রিতে এবাদত করবে তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে ও সওয়াবের নিয়তে কদরের রাত্রি এবাদতে কাটাবে তার পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। (বুখারী, মুসলিম)। অপর একটি হাদিসে হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) হতে বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, রোজা ও কোরআন (কেয়ামতের দিন) আল্লাহর কাছে বান্দার জন্য সুপারিশ করবে।”
অতএব, এ মাসে সঠিকভাবে আল্লাহর ইবাদত বন্দেগিতে কাটাতে পারলে মুসলমানেরা পরকালের জীবনে নিশ্চিত বিজয়ী হতে পারবে।
রমজান মাস ঐতিহাসিকভাবে একজন মুমিনের আধ্যাত্মিক ও জাগতিক দায়িত্ব পালনের একটি অত্যন্ত  কর্মতৎপরতার মাস।  কিন্তু আজকাল অনেক দেশে এ মাসকে মুসলিমদের জন্য hibernation এ যাওয়ার মাসে পরিণত হয়েছে। অথচ ইসলামের ইতিহাসে দেখা যায় এ মাসে মুসলিমদেরকে অনেক যুদ্ধে যেতে হয়েছে।  ইসলামের ইতিহাস প্রমাণ করে এ দুনিয়ার জীবনেও আল্লাহ রাব্বুল আ’লামিন মুসলিম উম্মাহকে রমজান মাসে কাফেরদের বিরুদ্ধে অনেক যুদ্ধে বিজয়ী করেছেন। ইসলামের প্রাথমিক যুগের ইতিহাস প্রমাণ করে রমজান মাসেই মুসলিমরা সবচেয়ে বেশী বিজয় অর্জন করেছেন। তুলনামূলক হারে সেই ৬২৪ সাল থেকে সঠিক নেতৃত্বে পরিচালিত রমজান মাসের প্রায় প্রতিটি যুদ্ধে মুসলমানেরাই বিজয়ের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখেছেন। তাই মুসলিম ‌ঐতিহাসিক ও ইসলামি স্কলাররা রমজান মাসকে মুসলিমদের জন্য আধ্যাত্মিক ও বৈষয়িক সংগ্রামের বিজয়ের মাস বলে আখ্যায়িত করেন।মুসলিম উম্মাহর ইতিহাসে রমজান মাসের যুদ্ধের তালিকা দীর্ঘ। সময়ের স্বল্পতায় এখানে সে সব  যুদ্ধের বিস্তারিত আলোচনায় না গিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি যুদ্ধের ইতিহাস অতি সংক্ষেপে  এখানে উল্লেখ করেছি (বিস্তারিত লিংক গেলে পড়তে পারেন)।

এ সব  পর্যালোচনায় দেখা যায় মুসলিমেরা আল্লাহর পথে জীবন বিসর্জন দিবার প্রত্যয় নিয়ে দুষমনের মুকাবিলায় যুদ্ধে গিয়ে মুসলিমরা সংখ্যায় অল্প হওয়া স্বত্বেও মহান আল্লাহ সে সব যুদ্ধে মুসলমানদেরকেই বিজয়ী করেছেন। আর সেই এক একটি যুদ্ধ ছিল ইসলামের ইতিহাসে মুসলিম উম্মাহর সমষ্টিগত ভাগ্য উন্নয়নে ও ইসলামী সভ্যতার বিকাশে এক একটি বিরাট মাইল ফলক।
পবিত্র রমজান মাসের এ শুভ লগ্নে সে ইতিহাস আলোচনা করে  কি শিক্ষা নিতে পারি  আমাদের ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত জীবনের ভাগ্য উন্নয়নে তা ভাবা দরকার।

বদর যুদ্ধ:

এটা ছিল অমুসলিম কাফিরদের সাথে মুসলিমদের প্রথম রমজান মাসের যুদ্ধ। প্রিয় নবী মুহাম্মদ (স: ) এবং তাঁর সাহাবীরা মক্কার কাফেরদের দীর্ঘ ১০ বছরের অত্যাচার থেকে পরিত্রাণ পেতে মদিনায় হিজরত করার পর প্রায় নয়টি রমজান পেয়েছিলেন। মদিনায় হিজরত করার দুই বছরের মাথায় কাফিরদের সাথে রমজান মাসে যে যুদ্ধে লিপ্ত হতে হয় তা হচ্ছে বদর যুদ্ধ। এ যুদ্ধ হয় ৬২৪ সনে। আমরা অনেকেই জানি এ যুদ্ধে মাত্র ৩০০শ জন মুসলিম যোদ্ধারা মক্কার ৩০০০ কাফির সেনাদের মুকাবিলায় বিজয়ী হন।আরো বিস্তারিত জানতে এ ভিডিওটি শুনতে পারেন

 

খন্দকের যুদ্ধ

৬২৭ সনের খন্দকের যুদ্ধ ( The Battle of the Trench.) ছিল আরেকটি চূড়ান্ত যুদ্ধ। অবশ্য এ যুদ্ধ শুরু হয় শাওয়াল মাসে কিন্তু মুসলিমদেরকে এ যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে হয়েছিল রমজান মাসে। এ যুদ্ধেও মুসলিমরা বিজয় হয়েছিলেন।

৬৩০ তাবুকের যুদ্ধ: (Battle of Tabuk).

ইসলামের সৈনিকেরা, নবী মোহাম্মদ (স:) এর নেতৃত্বে মদিনা থেকে রওয়ানা হয়ে তাবুকে পৌঁছে যুদ্ধের ছাউনি প্রতিষ্ঠা করে প্রশিক্ষণ শুরু করেন রোজার মাসে। বাইজানটাইন সৈন্যরা আক্রমণ পরিহার করে চলে যাওয়ায় মুসলিম সৈন্যরা যুদ্ধ ছাড়াই ফিরে আসতে সক্ষম হন।

৬৫৩ সানের রোডেস বিজয় ( 653 – Conquest of Rhodes)

৭১০ – সালে মুসলিম সেনাপতি তারিক বিন যিয়াদ এর নেতৃত্বে স্প্যানিশ দক্ষিণ সীমান্ত শহর Andalusian উপকূল পৌঁছে অভিযান চালিয়ে রাজা রদেরিককে পরাস্ত করে স্পেন বিজয় করেন এবং মুসলিম ও ইসলামী সভ্যতা স্পেনে আটশো বছর ছিল।

১০৯৯- আস্কালনের যুদ্ধ ( Battle of Ascalon) ২২শে রমজান (১২ আগস্ট) মিশরের ফাতেমীয় খিলাফতের উপর জেরুজালেমের নতুন ক্রিষ্টান ক্রুসেডর বা ধর্মযোদ্ধা রাজ্যের (crusader Kingdom of Jerusalem) আক্রমণ পরাজিত হয়

১১৮৭ সালে হাতিম যুদ্ধ – (Battle of Hattin.) শুরু হয় পবিত্র শবে-কদর (লাইলাতুল কদর -ভাগ্য রজনী) রাত্রের প্রভাতে (জুলাই ৪) । সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবীর নেতৃত্ব জেরুজালেমকে মুক্ত করা হয় ক্রুসেডারদের কবল থেকে সে যুদ্ধে ফ্র্যান্কিস সৈন্যদেরকে নিশ্চিহ্ন করা হয় জেরুজালেমের ভূমি থেকে।

১২৬০ সালে ঐন জালুতের যুদ্ধ – (Battle of Ain Jalut)সাইফ উদ্দিন কুটুজ মোঙ্গলদেরকে পরাজিত করেন ফিলিস্তিনে।

রমজান মাসের যুদ্ধের সেই সব গৌরব উজ্জ্বল বিজয়ের ইতিহাস আজ মুসলিমরা ভুলে গিয়েছে । আর ইসলামের যে স্পিরিট ছিল ন্যায়ের প্রতিষ্ঠায় ও অন্যায়ের নির্মূলে আত্মনিয়োগ -(সুরা আল ইমরান, আয়াত ১১০) ও মুসলিম ভূমিকে শত্রু মুক্ত রাখার ঈমানী চেতনা তা আজ আর নাই। ইসলাম বেঁচে আছে স্রেফ মুষ্টিমেয় কিছু লোকের টুপি-দাঁড়ি, দোয়া-দরুদ ও নামায-রোযার মাঝে। সবচেয়ে বড় নেক কর্ম রূপে গণ্য হয় কোরআন পাঠ, দরুদ পাঠ ও মসজিদ-মাদ্রাসা নির্মাণ। সে তালিকায় ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা ও অন্যায়ের নির্মূল ও ইসলামী শরিয়া প্রতিষ্ঠা নিয়ে এখন কারো কোন আগ্রহ নাই। তাদের কাছে গুরুত্ব হারিয়েছে কোরআন বুঝা ও সমাজে ইসলামী আদর্শের প্রতিষ্ঠা। মহান আল্লাহ-তায়ালাকে মুখে প্রভু রূপে স্বীকার করা হলেও রাষ্ট্রের উপর তাঁর কোন প্রভুত্ব বা সার্বভৌমত্ব নাই। আজ মুসলিম ভূমিতে শয়তানী শক্তির বিজয় ঝাণ্ডা উড়ছে। রাজনীতিতে পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে নাস্তিক, সোশালিস্ট, সেক্যুলারিস্ট, ন্যাশনালিস্ট –তথা ইসলামী আদর্শ বিরোধীদের। আর রাষ্ট্রীয় শত্রু রূপে চিহ্নিত করা হয় যারা ন্যায় বিচার ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গড়ার কথা বলতে চায়। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিয়ে সরকারের কোন ভাবনা নাই। জনগণের অর্থে প্রতিপালিত পুলিশ ও রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর গোয়ন্দা সংস্থাকে নিযুক্ত রাখা হয় গণতন্ত্র বিরোধী স্বৈরাচারী অপকর্মকে সুরক্ষিত রাখতে এবং ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে। এ অবস্থা আজ পৃথিবীর অধিকাংশ মুসলিম দেশে।

আর মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে আলোচনা করলে আরো সূচনীয় অবস্থা পরিলক্ষিত হয়। তাই অনেককে লিখতে দেখি যেমন জনৈক কলামিস্টের ভাষায়,  “বাংলার বুকে ইসলামের শত্রু-শক্তির যুদ্ধ শেষ হয়নি। বরং এ যুদ্ধের উত্তাপ ও নাশকতা দিন দিন তীব্রতর হচ্ছে। ইসলামের দেশী শত্রুদের সাথে যোগ দিয়েছে বিদেশী শত্রুগণও। ফলে দ্রুত অশান্ত হচ্ছে দেশ এবং বিলুপ্ত হচ্ছে ইসলামের মূল শিক্ষা, দর্শন ও মূল্যবোধ।” কে বলেছেন সেটা বড় নয় প্রশ্ন হচ্ছে যা বলা হচ্ছে তা সত্যি না মিথ্যা সেটি বিবেচ্য হচ্ছে আসল কথা। তবে সামাজিক মিডিয়াতে দেখা যায় এ ধরণের আশঙ্কা আজ অনেকেই প্রকাশ করছেন ।  তবে কথা হচ্ছে একটি সমাজে অন্য ধর্ম বিশ্বাসী মানুষও বাস করেন তাদের কথাও ভাবতে হবে। তাই সবাইকে নিয়ে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের লক্ষ্য সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে সমাজে যে কোন ধরনের উগ্রতা বিস্তার না করে শান্তি বিরাজ করে।

আধুনিক যুগের মুসলিমরা আল্লাহকে প্রভু হিসাবে জানলেও আল্লাহ-তায়ালাকে সঠিক রূপে চিনতে ব্যর্থ। আবার তারা তাদের নিজেকেও না চিনার কারণে মুসলিম হিসাবে তাদের দায়িত্ব কি তা বুঝতে ব্যর্থ।  ইহুদী খৃষ্টান ও পৌত্তলিকতার অনুসারীরা বলে মানুষকে সৃষ্ঠি করা হয়েছে আল্লাহর ইমেজ দিয়ে (Man has been created with God’s image) যা ইসলামের কোথাও নাই। সুরা ইখলাসে পরিষ্কার ভাবে আল্লাহকে চিনার ও বুঝার স্পষ্ট বর্ণনা আছে। ইসলামী শিক্ষার আসল কন্সেপ্ট হচ্ছে মানুষকে এ পৃথিবীতে আল্লাহ তাঁর খলিফার বা প্রতিনিধির দায়িত্ব পালনে প্রেরণ করেছেন (সুরা বাকারা আয়াত ৩০)। তাই প্রতিনিধির দায়িত্ব হচ্ছে আল্লাহ যাহা চান সেটাকেই এ দুনিয়াতে বিশেষ করে মুসলিম সমাজে প্রতিষ্ঠিত করা। সে দায়িত্বে মুসলিম সমাজ আজ বিমুখ এবং এ জন্য আমি আপনি আমরা সবাই দুষী! আল্লাহ যেন আমাদেরকে ক্ষমা করেন ও সে দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসতে সহায়তা করেন  সে দোয়া করছি ঐতিহাসিক বিজয়ের মাস পবিত্র রমজান মাসে।

আজ নতুন ক্রুসেডের এ যুগে মুসলিম হিসাবে আমাদেরকে কোরআনের বানীর উপরই আস্তা ও ভরসা রাখতে হবে এবং নিজেদেরকে আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞানে শিক্ষিত করতে হবে। সেই সাথে ইসলামী জ্ঞান অর্জনে আগ্রহী হতে হবে যাতে তাগুতি শক্তির মোকাবেলায় নিজেদেরকে শক্তিশালী করা যায়।

আল্লাহ সুবহানাল্লাহু তাআলা বলেন, তাদের পূর্বে নূহের সম্প্রদায় মিথ্যা আরোপ করেছিল এবং তাদের পরে অন্য অনেক (অবিশ্বাসীদের) দলও, আর প্রত্যেক জাতিই অভিসন্ধি এঁটেছিল তাদের রসূলকে পাকরাও করার জন্য এবং তারা সত্যকে অযথার্থ প্রমাণের প্রচেষ্টায় মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে বিতর্কে লিপ্ত হয়েছিল। সুতরাং আমি তাদেরকে পাকরাও করলাম এবং কতই না ভয়াবহ ছিল আমার শাস্তি। (গফির/ মু’মিন: ৫)

সুমহান আল্লাহ বলেন, {আর (স্মরণ কর), যখন তারা আপনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল আপনাকে বন্দী করার অথবা হত্যা করার কিংবা নির্বাসন দেয়ার (মক্কা থেকে)। কিন্তু তারা ষড়যন্ত্র করে আর আল্লাহও পরিকল্পনা করেন। আর আল্লাহ সকল পরিকল্পনাবিদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। (আল-আনফালঃ ৩০) এবং সুমহান তিনি বলেন, “যাদেরকে লোকেরা বলেছে যে, তোমাদের সাথে মোকাবেলা করার জন্য লোকেরা সমাবেশ করেছে বহু সাজসরঞ্জাম; তাদের ভয় কর। তখন তাদের বিশ্বাস আরও দৃঢ়তর হয়ে যায় এবং তারা বলে আমাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট; কতই না চমৎকার কর্ম বিধায়ক”। অতঃপর, তারা আল্লাহর নেয়ামত এবং অনুগ্রহ নিয়ে ফিরে এলো (এমনভাবে), কোন প্রকার অনিষ্টই তাদের স্পর্শ করতে পারলো না, এরা আল্লাহর সন্তুষ্টির পথই অনুসরণ করলো। বস্তুত আল্লাহ তাআলা মহা অনুগ্রহশীল। এই হচ্ছে (প্ররোচনা-দানকারী) শয়তান যে তোমাদের তার সমর্থকদের ব্যাপারে ভীতসন্ত্রস্ত করে তোলে। তাই তাদের ভয় করো না, বরঞ্চ আমাকে ভয় করো যদি প্রকৃতপক্ষে তোমরা বিশ্বাসী হয়ে থাক। (আল ইমরান ১৭৩-১৭৫)

প্রখ্যাত দার্শনিক জেমস গারভি তার প্রকাশিত সাম্প্রতিক বই The Persuaders: The hidden industry that wants to change your mind বইটি পড়লে বুঝতে পারবেন আধুনিক যুগে প্রোপাগান্ড ও প্রচার কিভাবে হয় এবং কিভাবে  মানুষের মনকে বিভ্রান্ত বা প্রভাবিত করা হয়।

জেইমস গারভির CBC Radio তে দেয়া ইন্টারভিউটি এখানে শুনতে পারেন খুবই ইন্টারেষ্টিং। কিভাবে মানূষকে Persuade করা হয় আধুনিক যুগে সে বিষয়ে অনেক কথা এসেছে। 

আসলে সত্যকে প্রত্যাখ্যান করা, উপহাস করা, সত্যের বাহকদের প্রতি মিথ্যারোপ করা, তর্ক, পরিকল্পনা, সৈন্যসমাবেশ, ভীতসন্ত্রস্ত-করণ, শত্রুতায় এবং যুদ্ধে মিথ্যাচার করা- এইসবই হচ্ছে সত্যের ব্যাপারে অবিশ্বাসীদের এবং রসূলের অনুসারীদের অবস্থা সেই প্রাচীনকাল থেকেই।  তারা সম্মোহন, বানোয়াট ঘটনা, পরিবর্তিত বাস্তবতা আর জনগণকে প্রতারিত করার মাধ্যমে বিতর্ক করে। তারা সত্যের পথিকদের বিরুদ্ধে ধোঁকা দেয়, উস্কানি দেয়, যুদ্ধার্থ প্রস্তুত করে এবং সেনা সমাবেশ করে। এই হচ্ছে প্রতিটি যুগ এবং কালের উদাহরণ।

ইতিহাস প্রমাণ করে রসূল (সঃ) এর অনুসারীরা তাদের বিপরীত শিবিরের তুলনায় অল্পসংখ্যক, জীর্ণ সরঞ্জামাদি এবং ক্ষীণ-স্বর বিশিষ্ট ছিলেন। কিন্তু তাদের শক্তিকে কখনোই অবদমিত করা যায়নি। তাদের অভিভাবককে কখনোই অসংহত করা যায়নি। প্রতিটি যুদ্ধেই ছিলেন তারা অটল। এবং প্রতিটি মোকাবেলাতেই তারা ছিলেন সম্মুখ-সারিতে, ভয় কিংবা শঙ্কাহীন। পরিশেষে, তাদের জন্যই থাকতো সাফল্য এবং বিজয়।
এই সকল কিছুই সম্ভব হয়েছিল মহাশক্তিধর, পরাক্রমশালী আল্লাহর উপর বিশ্বাসের জন্য। তাঁর থেকেই তাদের শক্তি এবং তাঁরই মাধ্যমে তাদের কর্তৃত্ব। তিনি তাদের জন্য যথেষ্ট এবং তাঁর উপরই তারা ভরসা করে। তাঁর সাহায্যের ব্যাপারে তারা সুনিশ্চিত। এবং তারা ফিরে আসে তাঁর আনুকূল্য এবং প্রতিদান নিয়ে। তারা কাউকেই ভয় করে না তাকে ব্যতীত।

ঐতিহাসিক বিজয়ের মাস রমদানের উপর শেখ ড: ইয়াসির ক্বাদির একটি সুন্দর খুতবা শুনতে পাবেন নিচের ভিডিওতে। মুসলিম যুবসমাজের সবাই এ ভিডিওটি শুনা দরকার।

 

Loading


মন্তব্য দেখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *