আমার দুটি ছোট প্রশ্ন?

মাহফুজ আনামের বিরুদ্ধে মামলার খই ফুটছে, কারণ সজীব কিছু কষ্ট পেয়েছে। আমার দুটি ছোট প্রশ্ন,

ক)
কষ্ট কি মাহমুদুর রহমানের পরিবারের বেলায় প্রযোজ্য নয়? সাগর-রুনির সন্তান মেঘের বেলায় প্রযোজ্য নয়? ত্বকির বাবা-মায়ের বেলায় প্রযোজ্য নয়? ইলিয়াস আলী আর চৌধুরি আলমদের বিছানায় এখনো একটা বালিশ শূন্য থাকে। হাজার হাজার রাজনৈতিক কর্মীর ব্যবসা-বাণিজ্য, পরিবার, তাদের প্রিয়জনের অনুপসি’তিতে ছাড়খার হয়ে যাচ্ছে। পরিবারগুলো ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হতে হতে নারকীয় রূপ নিচ্ছে। কোন আহেলি কিতাব, সজীবের কষ্টগুলোকে, সাধারণ মানুষের কষ্ট থেকে আলাদা করে বরাদ্দ করেছে, জানা নেই।

খ)
লতিফ সিদ্দিকির বক্তব্য মিথ্যা হলে সজীব নিজেই কি লতিফের বিরুদ্ধে মামলা করতো না? অর্থাৎ অভিযোগটি অত্যন্ত ভয়াবহ। তার বিরুদ্ধে মাসিক ২৫০ হাজার ডলার বেতন নেয়ার অভিযোগটি পাবলিককে লতিফ সিদ্দিকির করা। তাহলে মামলা করলো না কেন? সাধারণত এই ধরণের অভিযোগ মিথ্যা হলে, মামলা হওয়া উচিত। যদি টাকা না নিয়ে থাকে, মিথ্যা অভিযোগ বহন করছে কেন? কিন্তু যা দেখলাম, রাতারাতি প্রজ্ঞাপন জারির করে পুত্রকে অবৈতনিক উপদেষ্টা ঘোষণা। কোন সুষ্ঠ রাষ্ট্র এই কাজটি করে? এর অর্থ দাঁড়ায়, লতিফ সিদ্দিকির অভিযোগ সত্য কারণ তারা সেটাকে স্বীকার না করলে প্রজ্ঞাপন জারি করতো না।


গেলো রাতে নিউইয়র্কের এক অনুষ্ঠানে কথা হলো অনেক ফেসবুক বন্ধুদের সঙ্গে। আগে বুঝিনি, সোস্যাল মিডিয়ার প্রভাব! এক বন্ধু তো প্রায় মুখস্ত বলা শুরু করলেন। আমি কৃতজ্ঞ, অভিভূত।

লিংকন থেকে গান্ধি, কেউ যদি বলে থাকেন, রাষ্ট্রের চেয়ে ব্যক্তি বড়, দেশের চেয়ে দল বড়, দেশ ও দলের চেয়ে কোন পরিবার বড়, আমি শুনিনি। আপনারা শুনলে, জানাবেন।
রাষ্ট্র মানেই একটি প্রতিষ্ঠান, একটি অফিস। রাষ্ট্র কোন ব্যক্তি নয় কিংবা আমৃত্যু পদও নয়। রাষ্ট্রের কোন পারিবারিক অথবা দলিয় পরিচয় নেই। রাষ্ট্র জনগণের, মালিকও তারাই। আমার এই কথাগুলো প্রতিটি নাগরিককে মানতে হবে, আর মিথ্যা হলে প্রমাণ করতে হবে। আমি যদি ঝগড়া করে চুক্তি বাতিল করি, জনগণের ক্ষতি হবে না। কিন্তু জনপ্রতিনিধি দাবিদারেরা যখন ঝগড়া করে পদ্মাসেতু চুক্তি বাতিলের মতো কান্ড ঘটায়, রাষ্ট্রের ক্ষতি হয়।
যে পদ্মাসেতু ২০১৬ সনে এবং ২ বিলিয়ন ডলারে শেষ হওয়ার কথা, সেই পদ্মাসেতু এখন ব্যক্তিগত ঝগড়া-ঝাটি এবং প্রতিশোধের কারণে, ফেলানির মতো ঝুলছে। চীনকে পদ্মাসেতুর কাজ পাইয়ে দিতে, বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ঝগড়া-ঝাটি, একটি পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। আপনাদেরকেও এই কথাটি বিশ্বাস করতে হবে। কারণ এর পক্ষে বহু যুক্তি। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে অপব্যবহার করে, সংসদে এবং বাইরে তখন যে অনাহুত যুদ্ধ, স্মৃতিশক্তি এতো দুর্বল কেন? ১/১১, বিডিআর, সাগর-রুনি হত্যাকান্ডের মতোই পদ্মাসেতুও ক্ষমতা আকড়ে থাকার ষড়যন্ত্র। ব্যক্তি যখন নিজেকে রাষ্ট্রের চেয়ে বড় মনে করে, শুধু তখনই এই দৃষ্টান্তের সৃষ্টি হয়।

যা বলার দিল্লিকে বলুন। আমাদের দেশে কি হবে, কি হবে না… ফাঁসি কবে দিতে হবে, গণজাগরণ মঞ্চকে কখন শাহবাগ দখল করতে হবে… সেনা-র্যা ব-পুলিশের সঙ্গে ব্যক্তিকেন্দ্রিক সম্পর্ক আরো কতো গভীরে নিতে হবে… সিদ্ধান্ত দিল্লির। এই দেশে আর কোন পরিবর্তন আসবে না, টকশোতে চেয়ার-টেবিল ভেঙ্গে ফেললেও কিছু হবে না, কলাম লিখে বঙ্গোপসাগর ভরে ফেললেও না… যা বলার প্রণবকে বলুন।

জমিদার বাড়ির অন্দরমহলে পাবলিকের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ। প্রজাদের দৌড় দারোয়ান পর্যন্ত। কেউ যদি গলায় ভাত ঠেকে মরেও যায়, তারপরেও গেটের ভেতরে ঢুকে পুকুর থেকে পানি পান করার অধিকার নেই প্রজার।
শহীদ মিনারে যাওয়ার জন্য খালেদাকে নিয়ম-কানুন, ঘণ্টা-মিনিট বেঁধে দিচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের খয়ের খাঁ পুলিশ। শহীদের সংখ্যা বিতর্কে আক্রমণেরও ভয় দেখানো হচ্ছে। তাকে না যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে ইনুরা।
এর মানে হলো, শহীদ মিনার নয়, ওটি আওয়ামী জমিদারদের লিভিংরুম, সোফায় বসতে হলে অনুমতি লাগবে। আমি ভুল হলে প্রমাণ করুন।

এই মুহূর্তে একটি পরিবর্তন খুব জরুরি অন্যথায় ভারতীয় অকুপেশনকে ঠেকানো অসম্ভব। এই মুহূর্তে কোন পরিবর্তন অসম্ভব কারণ, আমাদের জনগণকে ৭১ এবং ৭১ কেন্দ্রিক উৎসবে ৪৪ বছর ধরে চেতনার কারাগারে হাতে পায়ে শেকল দিয়ে বন্দি করে ফেলেছে।

বইমেলা থেকে বই চলে গেছে, এখন সেখানে আড্ডাবাজ আর বখাটেদের ভিড়। প্রেমিক-প্রেমিকাদের জন্যও বইমেলাটা খুব কাজের। ভিড়ের মধ্যে ঢুকে, ভালোবাসার যন্ত্রণামুক্ত হওয়া যায়। পাঠকের চেয়ে লেখকের সংখ্যা বেশি। স্বাভাবিক অবস্থায় লেখকের চেয়ে পাঠকের সংখ্যা হাজারগুণে বেশি। জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনে বইমেলার কোন প্রয়োজন আছে বলে অন্তত আমার জানা নেই। আমি বইয়ের পোকা। যখন প্রয়োজন বইয়ের দোকানে যাই। আবার ইন্টারনেটেও ১দিনেই বই ডেলিভারি।
যখন সাবওয়েতে উঠি, কেউ রাজনীতির প্যাচাল পাড়ে না, বরং প্রায় সবার হাতেই পত্রিকা অথবা বই। যখন বাংলাদেশিদের ভিড়ে যাই, কারো হাতেই বই থাকে না, বরং খালেদা-হাসিনা। সমাজ গঠনে একুশে বইমেলার ভূমিকা শূন্য। বরং সারাবছরই বাংলাবাজার-নীলক্ষেতে বইমেলা। ট্রাফিক জ্যাম হলেই বই বিক্রেতাদের হাতে দেশি-বিদেশি নতুন বই। মাসব্যাপী বই প্রকাশের গিনিস রেকর্ড নয়, জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনে প্রয়োজন মার্কেস অথবা হারপার লি-এর মতো কালজয়ী লেখক, যাদের একটি বই ৫০/৬০ বছর পরেও বেস্টসেলার। উদাহরণস্বরূপ, ১০০ বছরের নিঃসঙ্গতা, টু কিল এ মকিং বার্ড…। আমার অভিমত, আড্ডাবাজদের সুবিধার জন্য বইবেলার কোনই প্রয়োজন নেই।

অসমাপ্ত জীবনির দৈর্ঘ্য যেভাবে বাড়ছে, আমার ভয়, এটাকে সিলেবাসে বাধ্যতামূলক করা হবে। মুজিবের বিরুদ্ধে কথা বললে ৭ বছরের জেল। মহানবীর বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেও লতিফ সিদ্দিকির ৭ বছর কেন ৭ দিনেরও জেল হয়নি বরং সে জামিনে রাজারহালে। শেখ পরিবারের ছবি বিকৃত করলে জেল। শাপলা চত্বরে যারা আসমানী কেতাব পোড়ালো, সেই ইনুরা…। বলতেই হয়, দেশের চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে ব্যক্তি বড়, ধর্মের চেয়ে আত্মজীবনি আর পরিবার বড়।

৫৩ সন থেকে একুশে ফেব্রুয়ারি পালন হচ্ছে। এখন প্রশ্ন, দুর্বৃত্তদের ভিড়ে ফেব্রুয়ারি মাসে কোনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ? সাগর-রুনি হত্যাকান্ড? বিডিআর হত্যাকান্ড? বনাম বইমেলা?
বিডিআর হত্যাকান্ডের দিন, হাসিনা চীফ গেস্ট, কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তার উপসি’তি বাতিল করা হলো। জেনারেল মঈনের বক্তব্য, অনেক বোঝানোর পরেও বিডিআর গেটের ভেতরে ঢুকে বিদ্রোহ দমনের অনুমতি পাইনি। মঈনের আক্ষেপ, যখন একজন রাষ্ট্রপ্রধানকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তখন দেখা গেলো তার অফিসে একদল বিদ্রোকারী চা-বিস্কুট খাচ্ছে।
৪৪ বছরের সবচে’ কঠিন প্রশ্ন, কারা ঘটিয়েছিলো বিডিআর বিদ্রোহ? একুশের স্রোতে গা ভাসিয়ে এভাবে সত্য ধামাচাপা দেয়ার পাগলামো এখন অচল। যারাই উন্নত দেশে থাকে, জানে, দেশপ্রেম দেখানোর জন্য মাসব্যাপী বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, শোক দিবস, ভাষা দিবস, প্রত্যাবর্তন দিবস… অপ্রয়োজনীয়।
সুস্থ জাতি উৎসবের দিন পরিবারের সঙ্গে সময় কাটায়। অসুস্থ জাতি উৎসবের নামে মাসব্যাপী আওয়ামী-বিএনপি করে। আর আওয়ামী-বিএনপি করে একে অন্যের মুন্ডু হাতে নাচে। আমেরিকাতে একদিন স্বাধীনতা দিবস হলে বাংলাদেশে কেন দুইদিন এবং দুই মাসব্যাপী স্বাধীনতা দিবস…?

আওয়ামী লীগের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালির পরিবার কেন বাংলাদেশে বিশ্বাস করে না? করলে তাদের হাতে বিদেশি পাসপোর্ট এবং বিদেশে অর্ধাঙ্গীণি কেন? শ্রেষ্ঠ বাঙালির নাতনি টিউলিপের বক্তব্য, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আমার দেশে ঢুকতে দেবো না। আমার অর্থাৎ ইংল্যান্ড। হায়রে শ্রেষ্ঠ বাঙালি!
এমনকি রেহানা পর্যন্ত গণভবনে থাকার সুযোগ না পেলে লন্ডনে থাকে। এমনকি সজীব, পুতুলও তাই। বিদেশে সকলেরই ব্যবসা-বাণিজ্য, বাড়ি-গাড়ি, চাকরি ইত্যাদি। এটাই যদি শ্রেষ্ঠ বাঙালির দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে, তাহলে ১ কোটির বেশি শ্রেষ্ঠ বাঙালির পদকের ব্যবস্থা হবে না কেন? কারণ প্রায় ১ কোটির বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি। মানুষকে এভাবেই ভেড়া বানিয়ে ফেলেছে শ্রেষ্ঠ বাঙালির বংশধরেরা। মানুষ এখন বাপ না তালৈই, আলাদা করতে পারছে না।
১০
৫০ হাজার কোটি টাকার পদ্মাসেতু থেকে ৫ টাকার কয়েন, বাংলাদেশ নামক জমিদার রাষ্ট্রে মুজিব ছাড়া ২য় ব্যক্তির নাম এবং ছবির জন্য এক ইঞ্চি জায়গাও নেই।
১১
একজন রাষ্ট্রপ্রধানের অনেক কাজ। রাষ্ট্রপ্রধান হওয়ার জন্য নির্বাচনের দেড় বছর আগেই মার্কিন প্রার্থীদের বিতর্ক এখন মিডিয়ার প্রাণকেন্দ্র। প্রার্থীদের মুখ থেকে যেসব বক্তব্য বেরিয়ে আসে, আমি শুধু অবাকই হই। মানুষ কিভাবে এতো চাতুর্যের সঙ্গে এতো বুদ্ধি খর্চ করে অকাট্য যুক্তি দিয়ে কথা বলতে পারে! তাদের বক্তব্য শুনলে প্রতিদিনই আরো বিকশিত হই। তখন তাদের মতো কথা বলতে ইচ্ছে করে। একেই বলে সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ। আশা করি বোঝাতে পেরেছি।
হাসিনাকে প্রতিদিনই টেলিভিশনে আসতে হবে কারণ এছাড়া তার আর কোন কাজ নেই। বিদেশে যাওয়াও প্রায় নিষিদ্ধ। ইতোমধ্যে অনেকগুলো বিদেশি নিমন্ত্রণ প্রত্যাহার করে নিয়েছে। প্রতিদিনই তার জন্য ইয়েস নো ভেরিগুডের অনুষ্ঠানের ভাড়ে ভেঙ্গেচুড়ে যাচ্ছে টেলিভিশনগুলো। প্রতিদিনই তার ছবিটি মিডিয়ায় উপস্থাপন করে, জাতিকে ব্যক্তিপুঁজায় ধ্যানমগ্ন রেখেছে গোয়েবলস মন্ত্রী। হাসিনা কেন প্রতিদিনই এক কথা বলে? এর মানে কি, ২য় কোন কথা সে জানে না? উদাহরণস্বরূপ, আর কতো বলতে হবে, বাংলাদেশে আইএস-এর অস্তিত্ব নেই! বরং এক কথা হাজার বার না বলে যদি বলতো, আজ রাতে আকাশে চাঁদ উঠবে, সেটাও বুদ্ধির পরিচয়।
১২
মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, প্রতিটি অর্নারারি ডক্টরেট ফিরিয়ে দিচ্ছেন মোদি। তার বক্তব্য, অর্নারারি ডক্টরেট আমি নিতে পারি না। মোদিকে আমার পরামর্শ, আপনি না নিলে বাংলাদেশকে দিতে বলুন কারণ আমাদের দেশে এখন আর এনভেলাপে নয়, ডক্টরেট আসে জাহাজ ভরে।
১৩
মাহমুদুর রহমানকে শোন এরেস্ট দেখিয়ে ফের গ্রেফতার করাই বাংলাদেশি ক্যাস্ট্রো পরিবারের জন্য স্বাভাবিক। কারণ মাহমুদুর রহমানের মতো বুদ্ধিমান ব্যক্তিত্ব বাইরে থাকলে, গর্দভ শ্রেণির জন্য বিপদ। বুদ্ধিজীবি মাহমুদুর রহমান বাইরে থাকলে গর্দভ শ্রেণিকে খামারে বাস করতে হবে।
১৪
কারগারগুলোতে ৪ গুণ বেশি বন্দি, যা চীনকেও হার মানিয়েছে। সজীবের উস্মা, মাহফুজ আনামের উচিত জেলের অভিজ্ঞতা অর্জন করা। সজীব হয়তো নিষ্ঠুর সত্য জানে না, কারণ সে দেশে থাকে না। হঠাৎ হঠাৎ ইরানের শাহবাগী পুত্রদের মতো তাকে গণভবনের আকাশে উদয় হতে দেখা যায়। আবার ফেসবুকেও কুরুক্ষেত্র বাধানোর জন্য যা খুশি বলতে দেখা যায়। যদি যদুমধুদের মতো দেশেই থাকতো, দেখতো তার মা কি হারে ১৭ কোটি মানুষের জীবন হারাম করে দিয়েছে! কিভাবে একই সঙ্গে কিম জং উন এবং ক্যাস্ট্রোর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে তার মা। কিভাবে বিনা বিচারে বছরের পর বছর জেলে পচিয়ে মারছে কয়েক লক্ষ রাজবন্দিকে। কিভাবে বিধবা তৈরির কারখানা খুলেছে তার মা। কি হারে কোল খালি করছে মায়েদের। মাহমুদুর রহমান নয়, বরং মা-বেটার উচিত, এই অভিজ্ঞতা অর্জন। কারণ উভয়ে মিলেই মানবাধিকার শব্দটিকে গুম করেছে। ১৭ কোটি মানুষের হাত-পায়ে, কণ্ঠযন্ত্রে শেকল দিয়েছে। চোখে দিয়েছে কালো কাপড়।

১৫
৭১এর শেকল ছিঁড়ে কিছুতেই বাইরে যেতে দেবে না আওয়ামী লীগ। এটাই ১/১১এর মাস্টারপ্লান। ১/১১ ভারতের সৃষ্টি, তখন থেকেই তারা ২০২১-২০৪১এর মাস্টারপ্লান দিয়ে যাচ্ছে। স্বাভাবিক হারে বড় হতে দিলে ৪৪ বছরে একটি সন্তানের চেহারা কেমন হয়, প্রমাণ সজীব কারণ সে এবং বাংলাদেশের জন্ম ৭১এ। কিন্তু দুঃখজনক, ৭১ নামের শিশুটিকে ৪৪ বছর ধরে, জরায়ুতেই আটক রেখেছে আওয়ামী লীগ। কিছুতেই একে বড় হতে দিচ্ছে না। এরই নাম “চেতনা।” এখন আমরা চেতনার ফাঁসিকাষ্ঠে দম আটকে মারা যাচ্ছি।
১৬
দেশটা গাধাদের রাজত্ব না হলে, ২০১৯ সনে নির্বাচন হবে কিন্তু ২০২১ সনে স্বাধীনতার রজতজয়ন্তী পালন করবে আওয়ামী লীগ… সামান্য অংক বুঝবো না কেন? ২০১৯ সনে নির্বাচন হলেও ২০২১ সনে আওয়ামী লীগই ক্ষমতায় থাকবে। এই ঘোষণা আমার নয় বরং নাসিমদের দূর্গ থেকে আসা। ২০২১ এবং ২০৪১ সনে যদি হাসিনাই ক্ষমতায় থাকে এবং থাকবে বলেই দাবি করছে, তাহলে, ভোটাররা ভোট দেবে কোন সালে? আবার বলছে, হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে। আমার প্রশ্ন, শেখ হাসিনাকে নির্বাচন করবে পাবলিক নাকি সে নিজেই? ৩০০ জনপ্রতিনিধি যদি ২০৪১ সন পর্যন্ত নিজেরাই নিজেদেরকে নির্বাচিত করতে থাকে, বলুন, জনগণ ভোট দেবে কোন সনে?
১৭
একথা বোঝার জন্য আইনস্টাইন হতে হবে না, সময়মত পরিস্তিতি এমন বানাবে, যখন গৃহযুদ্ধের প্রয়োজন হবে। সেই পরিসি’তি সৃষ্টির পর আধাসামরিক শাসন শেষে পুরোপুরি সামরিক শাসন কায়েম করবে। দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ভারতীয় রাষ্ট্রদূতদের অনুষ্ঠানে সুষমা সরাজকে এমন বার্তাই দিলেন পঙ্কজ শরণ। আরো বলেছেন, যে কোন পরিসি’তি মোকাবেলায় হাসিনা আরো কঠোর হাতে দমনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আমি মিথ্যা হলে প্রমাণ করুন। আমাদের দেশে সামরিক শাসনের প্রস্থতি শুরু হয়ে গেছে দিল্লিতে।
প্রাক্তন পররাষ্ট্র মন্ত্রী সালমান খুরশিদ হয় বোকা নয়, মহাত্মা গান্ধি। খোলামেলাই বলে দিলেন, ৫ জানুয়ারির জন্য আওয়ামী লীগকেই বেছে নিয়েছিলো ভারত। মানে? এটা কি পঙ্কজ শরণেরও বক্তব্য নয়? অর্থাৎ একই হারমোনিয়াম বাজাচ্ছে প্রণব আর হাসিনা। সুতরাং সামরিক শাসন জারি হলে, হাসিনাকে নয়, যা বলার দিল্লিকে বলুন। দিল্লিকে না বললে, অন্য কাউকে দিয়েই কিছু হবে না।
১৮
চিন্তা করতে শিখুন। তসলিমার মতো শরীর নয় বরং মনকে উন্মুক্ত করুন। ভালো-মন্দ, সাদা-কালো, নারী-পুরুষ, শৃঙ্খল-উচ্ছৃংখল… যতো বেশি মনকে উন্মুক্ত করবেন, ততো বেশি ভালো মানুষ হিসেবে বিকশিত হবেন।
সৈয়দ আলী আহসানের একটি লেখা থেকে… এখন পর্যন্ত আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের পরিবর্তন হয়নি। আমাদের দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোতে শব্দ পরিবর্তনের হিড়িক। যেমন, ইকবাল মুসলিম হল থেকে মুসলিম উধাও। স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মুসলিম উধাও। যারা অর্থ দিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলো দান করলেন, নামের অধিকারটুকু পর্যন্ত নেই? নাম কেন, এই দেশে কবরের লাশটিও নিরাপদ নয়। যে দিকেই তাকাই, শুধু একজনই নিরাপদ এবং সেটা এক ব্যক্তি এবং পরিবার। পত্রিকার ১ম থেকে শেষ পাতা পর্যন্ত দুই দখলদারের একজন মুজিব পরিবার, অন্যজন দুর্বৃত্তরা।
সেদিন গাছের শরীর থেকে জিন্না নামটি তুলে ফেলা নিয়ে, সেকি আনন্দ-উল্লাস!
১৯
আমি হিন্দু না মুসলমান, সেই বিশ্লেষণে না গিয়ে, আমি কি লিখছি সেটা বোঝার চেষ্টা করুন। অনেকের নোংরামো দেখে মাঝে মাঝে খুব বিরক্ত লাগে।
২০
ভোটের বাক্সে লাথি মারতে চেয়েছিলেন হুজুর ভাসানী। এখন বেঁচে থাকলে ওটাকে কাঠ মিস্ত্রির কারখানায় পাঠিয়ে দিতেন।
২১
ইদানিং মিডিয়ায় উদয় হয়েছে শেখ রেহানার এক্স হাজবেন্ড অধ্যাপক শফিক। সবাই যখন টকশো স্টার, এমনকি বিচারপতিরাও যখন স্টার, ড. শফিক কেন বাদ যাবেন? বউ ছেড়ে যাক, তবু তিনি রক্তমাংসেরই মানুষ। মাহফুজ আনামকে নিয়ে আমি তার বক্তব্যের পুরোটাই পড়েছি। যাদের প্রয়োজন পড়ে নেবেন। সারসংক্ষেপে বলছি, অধ্যাপকদের বুদ্ধির দৌড় যখন ধোলাইখালের কুলি-কামারদের মতো, তখন দেশের চেহারা হয় ২০ দল এবং ১৪ দলের বাংলাদেশের মতো।
২২
মালয়েশিয়ার সঙ্গে একই জি-টু-জি আর কতোবার করলে যথেষ্ট? বিষয়টি এখন, কুমিরের ৭ বাচ্চা দেখানোর মতো। যখনই অবৈধ সরকারের অবস্থা খারাপ হয়, তখনই নতুন করে জি-টু-জির প্রয়োজন দেখা দেয়।
২৩
গলাবাজি করলেই যদি দেশ স্বাধীন হতো, তাহলে আজকের শিয়া-সুন্নির পরিসি’তি সৃষ্টি হতো কি? বাংলার মানুষ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে, সাড়ে ৭ কোটির মধ্যে সাড়ে ৬ কোটি মানুষ কেন ৭১এ দেশেই ছিলো, এবং একটি গোষ্ঠি কেন ভারতীয় অকুপেশনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলো। দেশের মানুষ সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে। কারণ তারা দেখছে, যারাই ৭১এ ভারতীয় অকুপেশনের বিরোধিতা করেছিলো, একদিকে তাদেরকেই ফাঁসি দিচ্ছে, অন্যদিকে বাংলাদেশকে পাইকারি হারে তুলে দিয়েছে ভারতীয় উপনিবেশবাদির হাতে।

Loading

Comments are closed.